দূর্গা ভাগবত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দুর্গা নারায়ণ ভাগবত
জন্ম১৯১০
মৃত্যু২০০২
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিপাইস, ব্যাস পর্ব, ভাবমুদ্রা, ঋতুচক্র
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারসাহিত্য একাডেমি (পাইস)
আত্মীয়কমলা সোহিনী, বোন

দুর্গা নারায়ণ ভাগবত (১০ ফেব্রুয়ারি ১৯১০ - ৭ মে ২০০২), দুর্গা ভাগবত নামে অধিক পরিচিত, একজন ভারতীয় পণ্ডিত, সমাজতান্ত্রিক এবং লেখক ছিলেন। তিনি সংস্কৃত এবং বৌদ্ধ সাহিত্য অধ্যয়ন করেছেন এবং উপজাতীয়দের জীবন সম্পর্কে অধ্যয়নের জন্য মধ্য প্রদেশের জঙ্গলে সময় কাটাতেন। পরে তিনি গবেষক হিসাবে মুম্বাইতে ফিরে আসেন এবং মারাঠি ভাষায় বই লিখেন। তিনি মারাঠি ভাষার শীর্ষস্থানীয় নারী লেখক ছিলেন। তিনি জরুরি অবস্থার (ভারত) বিরোধিতা করা বিশিষ্ট লেখকদের মধ্যে একজন ছিলেন। তিনি পদ্মশ্রীজ্ঞানপীঠ এর মতো প্রাতিষ্ঠানিক ও বেসামরিক সম্মান গ্রহণ থেকেও বিরত ছিলেন।

প্রারম্ভিক বছরগুলি[সম্পাদনা]

দুর্গা ভাগবত ১৯১০ সালে, তৎকালীন দেশীয় রাজ্য বরোদাতে বসতি স্থাপনকারী, এক কারহাদে ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। প্রবীণ সংস্কৃত পণ্ডিত এবং সমাজকর্মী রাজারাম শাস্ত্রী ভাগবত ছিলেন তাঁর দাদীর ভাই। তাঁর বোন কমলা সোহিনী ভারতের প্রথম মহিলা বিজ্ঞানী ছিলেন। তাঁর বাবা একজন বিজ্ঞানী ছিলেন, যিনি তেল থেকে ঘি তৈরির পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন।[১]

দুর্গাবাই গান্ধীবাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন এবং খুব অল্প সময়ের জন্য তিনি ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। যখন তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি আর বেশি দিন এটি করতে পারবেন না তখন তিনি তা ছেড়ে দেন এবং সেন্ট জেভিয়ার কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করেন। কিন্তু তিনি সেই সময়েও খাদিবস্ত্র পরিধান করা চালিয়ে যান। তাঁর পিতার দিকের ফুফু সীতাবাই ভাগবত দুর্গাবাইয়ের উপর বিরাট প্রভাব ফেলেছিলেন। দুর্গাবাই উপজাতীয় সংস্কৃতি অধ্যয়নের জন্য মধ্য প্রদেশে গিয়েছিলেন। সেখানে ইয়াম থেকে তাঁর প্রতিকুল ওষুধ প্রতিক্রিয়া (হাতির পা) হয়েছিল, যার জন্য তিনি ছয় বছর ধরে শয্যাশায়ী ছিলেন। তিনি তাঁর ডক্টরেট কোর্স শেষ করতে পারেন নি।[১]

পরবর্তী বছরগুলি[সম্পাদনা]

দুর্গা ভাগবত ১৯৭৫ সালে কারাদে অনুষ্ঠিত ৫১ তম মারাঠি সাহিত্য সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত হন।[২] ১৮৭৮ সালে এই সম্মেলন শুরুর পর থেকে কুসুমাবতী দেশপান্ডের পর তিনি সম্মেলনের দ্বিতীয় মহিলা সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। দুর্গাবাই ইন্দিরা গান্ধীর জারি করা জরুরি অবস্থা এবং জয়প্রকাশ নারায়ণের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছিলেন এবং সরকার তাঁকে কারাগারে বন্দী করেছিল। জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের পর তিনি ১৯৭৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস পার্টির বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়েছিলেন এবং সারাজীবন এর বিরোধী ছিলেন। জরুরি অবস্থার পরে তৎকালীন ক্ষমতাসীন জনতা পার্টি তাঁকে প্রভাবশালী সরকারি আসনের প্রস্তাব দেয় কিন্ত তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি রাষ্ট্র কর্তৃক দেওয়া কোন সম্মাননা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং জ্ঞান পীঠ পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন।

মারাঠি সাহিত্য সম্মেলনে সভাপতিত্ব করার আগে তিনি তমাসগীর সভার সভাপতি পদে নির্বাচিত হন এবং এটিকে একটি বড় সম্মান বলে মনে করেন।[১]

দুর্গা ভাগবত কখনও বিয়ে করেননি। তাঁর সারা জীবনে শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন ব্যাস, গৌতম বুদ্ধ, আদি শঙ্করাচার্য, আমেরিকান দার্শনিক হেনরি ডেভিড থোরিও এবং ভারতীয় লেখক শ্রীধর ভেঙ্কটেশ কেতকর

তাঁর অবদান[সম্পাদনা]

দুর্গা ভাগবতের উল্লেখযোগ্য রচনাগুলির মধ্যে রয়েছে রাজরাম শাস্ত্রী ভাগবত, ধর্ম, তাদের সাহিত্য এবং প্রার্থনা বা অনুশীলন নিয়ে নিবন্ধসমূহের সংকলন- পাইস এবং তাঁর মহাভারতের গবেষণা সম্পর্কে একটি বই ব্যাস পর্ব। তিনি ধর্মীয় সাহিত্য, বিশেষত বৌদ্ধশাস্ত্র, জ্ঞানেশ্বর থেকে তুকারাম পর্যন্ত মারাঠি সাধুদের কাজ, ব্যাস এর প্রধান সংস্কৃত রচনা এবং আদি শঙ্করাচার্য অধ্যয়ন করেন। তাঁর গ্রন্থ ঋতু-চক্রতে প্রতিটি ভারতীয় মাসে প্রকৃতি (বিশেষত গাছ এবং ফুল) সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা করেন, সম্ভবত এটি তাঁর সবচেয়ে বিখ্যাত রচনা। মধ্য প্রদেশে খাদ্যে বিষক্রিয়া হওয়ার পরে তাঁর দীর্ঘকালীন স্বাস্থ পুনরূদ্ধারের সময় তিনি ১২ মাসের চক্রের মধ্যে প্রকৃতির পরিবর্তনগুলি পর্যবেক্ষণ করেন এবং প্রতিটি ঋতু নিয়ে নিবন্ধ লেখার জন্য তা তাঁকে উৎসাহিত করেছে।

ভাগবত রান্না ও কারুকাজ বিষয়ে অনেক নিবন্ধ লিখেছেন এবং 'মারাঠি সরস্বতাচি সরস্বতী' নামে পরিচিত ছিলেন।

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

ছোট গল্প[সম্পাদনা]

  • প্রভা

উপন্যাস[সম্পাদনা]

  • মহানাদিচ্য তিরওয়ার

শিশুসাহিত্য[সম্পাদনা]

  • তুলশিচে লগ্ন
  • বানভাসি রাজপুত্র
  • চন্দ্রলেখা অনি আথ চোর

অন্যান্য কাজ[সম্পাদনা]

  • লোকসাহিত্যচি রূপরেখা
  • ধর্ম আনি লোকসাহিত্য
  • ব্যাস পর্ব
  • রুপরাঙ্গা
  • পাইস
  • প্রসঙ্গিকা
  • ডু্ব
  • ভাবমুদ্রা
  • খামঙ্গা
  • সত্যম শিবম সুন্দরম
  • কেতকি কদম্বরী
  • রাজারাম শাস্ত্রী ভাগবত ইয়াঞ্চে চরিত্র
  • ঋতুচক্র
  • গোধাদি
  • দুপানী
  • নিসর্গোৎসব
  • শোধ রামায়ণাচ

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Durga Bhagwat"। ২ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মার্চ ২০২০ 
  2. "President of Marathi Sahitya Sammelan, Durga Bhagwat"। ১৪ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৯-১২ 
পূর্বসূরী
পুরুষোত্তম লক্ষ্মণ দেশপাণ্ডে
মারাঠি সাহিত্য সম্মেলন - সভাপতি
১৯৭৫ সালে কারাদ
উত্তরসূরী
পুরুষোত্তম ভাস্কর বাভে