তুর্বসুবংশ এবং দ্রুহ্যুবংশ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

মহারাজ যযাতি-র দুই পুত্র তুর্বসু ও দ্রুহ্যু। এঁদের নামেই তুর্বসুবংশ এবং দ্রুহ্যুবংশ। তুর্বসু ও দ্রুহ্যু যযাতির জরা গ্রহণ করতে না চাওয়ায় যযাতি এদের নিজ রাজ্যে অভিষিক্ত না করে অন্যত্র রাজ্য দিয়েছিলেন। এঁরা বিভিন্ন অনার্য জাতির রাজা হয়েছিলেন।

তুর্বসুবংশের বিবরণ[সম্পাদনা]

যযাতি ও দৈত্যগুরু শুক্রাচার্য'র কন্যা দেবযানীর দ্বিতীয় পুত্র তুর্বসু। তুর্বসুর পাঁচ পুরুষ পরেই এ বংশ পুরুবংশে গিয়ে মিশেছে। তুর্বসুর বংশধরেরা বেলুচিস্তানে ম্লেচ্ছদের অধিপতি ছিল।[১][২][৩][৪]

বিষ্ণুপুরাণ ভাগবত পুরাণ মৎস্যপুরাণ ব্রহ্মপুরাণ
বহ্নি

গোভানু

ত্রৈশ্বাম্ব

করন্ধম

মরুত্ত

বহ্নি

বর্গ

ভানুমান

ত্রিভানু

করন্ধম

মরুত্ত

গর্ভ

গোভানু

ত্রিসারি

করন্ধম

বহ্নি

গোভানু

ঐশানু

করন্ধম

অবিক্ষিত মরুত্ত

মরুত্তের পুত্র ছিল না। তাঁর এক কন্যা নাম-সংযতা। রাজা মরুত্ত একটি যজ্ঞ করেন, যেখানে পুরোহিত নিযুক্ত হন দেবগুরু বৃহস্পতির ভ্রাতা সংবর্ত। যজ্ঞ শেষে যজ্ঞের দক্ষিণাস্বরূপ সংবর্ত-কে কন্যাসম্প্রদান করেন।

এর পরে মরুত্ত পুরুবংশীয় দুষ্মন্তকে নিজের পুত্রের মতো মানুষ করেছিলেন।

দ্রুহ্যুবংশের বিবরণ[সম্পাদনা]

দ্রুহ্যু, যিনি স্বভাবে অতি কঠোর। সংস্কৃত ব্যকরণে 'দ্রুহ্যতি(द्रुह्यति)' মানে 'আঘাত'। তিনি ছিলেন প্রথম এমন ক্ষত্রিয় রাজা, যিনি বেদ-বিরুদ্ধ সংস্কৃতির পালন করা শুরু করেছিলেন। দ্রুহ্যুর বংশধারায় প্রথম দুই-তিন পুরুষ বর্তমান পাঞ্জাবের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে রাজত্ব করতেন। কিন্তু তারপরে দ্রুহ্যুবংশীয় দের সাথে শিবি রাজার (দ্রুহ্যুর ভ্রাতা অনুর বংশধারায় জাত) যুদ্ধ হয়। ফলে দ্রুহ্যুরা আরও পশ্চিমে গান্ধারে চলে যায়। দ্রুহ্যুর বংশধর গান্ধারের নামেই গান্ধার দেশ(বর্তমান-আফগানিস্তান)।

রামায়ণের যুগে একবার রামের ভাই ভরতের সঙ্গে গান্ধার রাজ প্রথম নগ্নজিৎ'র যুদ্ধ হয়েছিল। সে যুদ্ধ নগ্নজিত হেরে গেলে ভরতের পুত্র তক্ষ পেল তক্ষশীলা এবং পুষ্কলা পেল পুরুষপুর(বর্তমান-পেশাওয়ার)।

দ্বাপর যুগে দ্রুহ্যুবংশীয়রা পুনরায় গান্ধার দখল করল। গান্ধার রাজা দ্বিতীয় নগ্নজিৎ ছিলেন সুবলের পিতা এবং দুর্যোধনের মামা শকুনির পিতামহ।[৫][৬][৭][৮]

[বিষ্ণুভাগবত পুরাণের বিবরণ একই কলামে দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় বন্ধনীর ভিতরে বিষ্ণু পুরাণের বিবরণ]

ভাগবতবিষ্ণু পুরাণ মৎস্যপুরাণ ব্রহ্মপুরাণ
বভ্রু

সেতু

আরব্ধ[আরদ্বান]

গান্ধার

ধর্ম

ধৃত

দুর্মদ[দুর্গম]

প্রচেতা

সেতু ও কেতু

শরদ্বান(সেতুর পুত্র)

গান্ধার

ধর্ম

ধৃত

বিদুষ

প্রচেতা#

বভ্রু ও সেতু

মরুৎপতি অঙ্গার সেতু

গান্ধার

#প্রচেতার ১০০ পুত্র। সকলেই উত্তরদিকে ম্লেচ্ছদের রাজা হয়

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. শ্রী পঞ্চানন তর্করত্ন বঙ্গানুবাদিত, বিষ্ণুপুরাণম্ , আর্যশাস্ত্র। পরাশর বলিলেন, এই যদুবংশের...। এক্ষণে তুর্বসু বংশ শ্রবণ কর। চতুর্থাংশ, অধ্যায়_১৬, শ্লোক_১-২ 
  2. শ্রী রামনারায়ণ বিদ্যারত্ন বঙ্গানুবাদিত, শ্রীমদ্ভগবত পুরাণ। তুর্বসুর সন্তান বহ্নি, তাঁহার সূত বর্গ...। নবম স্কন্ধ, অধ্যায়_২৩, শ্লোক_৩ 
  3. শ্রী রামনারায়ণ বিদ্যারত্ন বঙ্গানুবাদিত, মৎস্যপুরাণম্। সূত বলিলেন,- তুর্বসুর পুত্র গর্ভ...। অধ্যায়_৪৮, শ্লোক_১-৩ 
  4. শ্রী পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত, ব্রহ্মপুরাণম্। এক্ষণে তুর্বসু বংশ কীর্তন করিতেছি, তুর্বসুর পুত্র বহ্নি...। অধ্যায়_১৩, শ্লোক_১৪১-১৪৫ 
  5. শ্রী পঞ্চানন তর্করত্ন বঙ্গানুবাদিত, বিষ্ণুপুরাণম্। পরাশর বলিলেন,- দ্রুহ্যুর পুত্র বভ্রু...। চতুর্থাংশ, অধ্যায়_১৭ 
  6. শ্রী রামনারায়ণ বিদ্যারত্ন কৃত বঙ্গানুবাদিত, শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ। যযাতির পুত্র দ্রুহ্যুর পুত্র বভ্রু...। নবম স্কন্ধ, অধ্যায়_২৩, শ্লোক_৩ 
  7. শ্রী পঞ্চানন তর্করত্ন বঙ্গানুবাদিত, মৎস্যপুরাণম্। দ্রুহ্যুর দুই পুত্র সেতু ও কেতু...। অধ্যায়_৪৮, শ্লোক_৬-৯ 
  8. শ্রী পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত, ব্রহ্মপুরাণ। হে বিপ্রগণ দ্রুহ্যুর তনয় বভ্রু ও সেতু...। অধ্যায়_১৩, শ্লোক_১৪৮-১৫২