বিষয়বস্তুতে চলুন

জুবায়ের আহমেদ হত্যাকাণ্ড

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জুবায়ের আহমেদ হত্যাকাণ্ড
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহিংসতা-এর অংশ
জুবায়ের আহমেদ
স্থানজাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
তারিখ৯ জানুয়ারি ২০১২ (2012-01-09)
বিকাল থেকে রাত
লক্ষ্যজুবায়ের আহমেদ
হামলার ধরনহামলা, পেটানো,
নিহত১ জন
আহতমারা যায়
ভুক্তভোগীজুবায়ের আহমেদ
হামলাকারী দল
  • ইশতিয়াক মেহবুব অরূপ
  • আশিকুল ইসলাম আশিক
  • জাহিদ হাসান
  • রাশেদুল ইসলাম রাজু প্রভৃতি
অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা
১২-১৬ জন
কারণহল দখল, ক্ষমতার বিস্তার

জুবায়ের আহমেদ হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠিত একটি হত্যাকাণ্ড[][] জুবায়ের আহমেদ ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র।[] ২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে অন্তর্কলহে একপক্ষের হামলায় অপরপক্ষের ছাত্রলীগ কর্মী জুবায়ের আহত হয়ে মারা যান। পুলিশ বলেছে, প্রথমবর্ষের ছাত্রদের র‍্যাগিং এর শিকার হওয়া একদল ছাত্রলীগ সদস্য প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।[] এমনকি বিচার চলাকালে জুবায়ের হত্যাকারীরা বাদি পক্ষদের আরো কয়েকজনে হত্যার হুমকি দেয়।[] এই হত্যাকাণ্ডে ১৩ জন ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।[] ২০১৫ সালে পাঁচ জন আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন।[]এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৭ ছাত্রলীগ কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন ছাত্রত্ব বাতিল এবং অন্য ৬ জনকে দুই বছরের জন্য বহিস্কার করে।

প্রেক্ষাপট

[সম্পাদনা]

জুবায়ের আহমেদ ৩৭ তম ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র ছিলো, সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র ছিলো। তার বাড়ি ছিলো পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপেজলায়। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের আগে তৎকালীন ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটির সভাপতি রাশেদুল ইসলাম শাফিন ও তার অনুসারীরা ক্যাম্পাসের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের কর্তৃত্বে ছিলো। সেই সময়ে নিহত জুবায়ের আহমেদ সভাপতি শাফিন গ্রুপের সক্রিয় কর্মী ছিলো। ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে ক্যাম্পাসজুড়ে সন্ত্রাসবিরোধী মিছিলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের গ্রুপিং তীব্র আকার ধারণ করে। ২ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাহায্যে ও ঢাকা জেলা পুলিশের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল থেকে শাফিন গ্রুপকে বিতাড়িত করা হয়। সাথে সাথে শামীম-শরিফ গ্রুপকে হলে উঠিয়ে দেওয়া হয়, কথিত রয়েছে এই গ্রুপের সাথে তৎকালীন উপাচার্য শরীফ এনামুল কবিরের সুসম্পর্ক ছিলো।[]

জুবায়ের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার সময় নিজ ব্যাচের ছাত্রদের র‍্যাগিং করেছিলো, এরমধ্যে তার অভিযুক্ত হত্যাকারী আশিকুল ইসলাম আশিকও ছিলো। তিনি ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত হবার পরে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পরে। তিনি ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে যাতায়াত করতো এবং লেখাপড়ায় পূর্ণ মনোনিবেশ করেছিলেন। তিনি রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণ দূরত্ব বজায় রাখলেও দূরে থাকলেও তার বন্ধুদের কাছ থেকে মাঝে মাঝেই হামলার হুমকি এবং মার খাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করতেন।

আক্রমণ

[সম্পাদনা]

২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি ইশতিয়াক মেহবুব অরূপের নেতৃত্বে রফিক-জব্বার হলের দ্বিতীয় বর্ষের ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী মিলে জুবায়েরের উপর হামলা চালায়। তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার আরো অবনতি হলে ওই দিন রাতেই তাকে ঢাকা শহরের ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।[] সেখানে ৯ জানুয়ারি ভোরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। হত্যাকারী ছাত্রলীগের পক্ষ এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পরে, পরদিন সকালে ছাত্রলীগের একটি দল উপাচার্য শরীফ এনামুল কবিরের সঙ্গে দেখা করেন।

মামলা

[সম্পাদনা]

২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি হত্যাকাণ্ডের পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন নিবন্ধক হামিদুর রহমান আশুলিয়া থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশ অফিসার মীর শাহীন শাহ পারভেজের এই তদন্ত কার্যক্রমের দায়িত্ব পান। তদন্ত শেষে ৮ এপ্রিল ঢাকার হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭ তম ব্যাচের ১৩ জন ছাত্রকে অভিযুক্ত করা হয়। ৮ সেপ্টেম্বর ২০১২ সালে মামলার বিচার কার্য শুরু করা হয়। মামলা ধীর গতিতে অগ্রসর হলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট মামলাটি ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর নিকট পাঠানো হয়। এই ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবিএম নিজামুল হক শুনানি শেষে আসামিদের দ্রুত বিচার শুরু করার আদেশ দেন।[১০]

বিচারকার্য

[সম্পাদনা]

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে, যাদের প্রত্যেকেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলো। প্রথম দিকে আসামি জাহিদ হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়, এবং তিনদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।[১১] ২০১৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মামলায় বাদীপক্ষের ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ১০ জন ব্যক্তি সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়। এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য মো. ফরহাদ হোসেনও সাক্ষ্য প্রদান করেন। ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি, এই মামলার ৬ আসামি বিচারের দাবীতে আন্দোলরত দুইজন শিক্ষার্থী সৈয়দ নাজমুল হোসাইন এবং রাজীবুল ইসলাম হত্যার হুমকি প্রদান করে। এই ৬ জন আসামি হলো - আশিকুল ইসলাম আশিক, খান মোহাম্মদ রইস, জাহিদুল ইসলাম, ইশতিয়াক মেহবুব অরূপ, রাশেদুল ইসলাম রাজু, মাহবুব আকরাম। ফলে দুই শিক্ষার্থী আতংকিত হয়ে ঢাকার কোতয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরবর্তীতে মামলার বিচারক ৬ ফেব্রুয়ারি ঐ ছয়জন আসামির জামিন কেন বাতিল করা হবে না তার কারণ দর্শাতে বলেন।[১২] পরে ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বিচারক ৪ আসামির জামিন বাতিল করে। ঐদিন আদালত কর্তৃপক্ষের অবহেলায় বিচারকের কাঠগড়া থেকে উক্ত ৪ জন আসামি পালিয়ে যায়। ২০১৪ সালের ২৮ নভেম্বরের মধ্যে ২৭ জন ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্ত হয়। ঐদিন মাত্র দুইজন আসামি (তপু ও প্লাবন) আদালতে উপস্থিত ছিলো, বাকি সবাই পলাতক অ-গ্রেপ্তারকৃত ছিলো।[১৩]

মামলার রায়

[সম্পাদনা]

বিচারকার্য শেষে মামলার রায় বারবার পেছানো হয়। ২০১৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মামলার রায় করা হয়।[১৪] সেটা পেছানো হলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভোক্ষ মিছিল করে।[১৫] অবশেষে ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সালে মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয়।[১৬][১৭] রায়ে পাঁচ জন আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন।[১৮] চূড়ান্ত রায়ের দিন মাত্র ৫ জন (সোহাগ, মাজহারুল, সেতু, অভিনন্দন ও তপু) উপস্থিত ছিলো, বাকি সবাই পলাতক ছিলো। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এটাই ছিলো প্রথম রায়, যেখানে হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ সাজার রায় দেওয়া হয়। তবে হত্যার ১২ বছর পর, জানুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত মামলার রায় কার্যকর করা হয়নি।[১৯] বিচারক এবিএম নিজামুল হক চূড়ান্ত বিচারের দিন মামলাটি সম্পর্কে একটি মন্তব্য করেন, তিনি বলেন:

২০১৮ সালের ২ জানুয়ারি মামালার আপিল বিভাগে শুনানি শুরু হয়। মামলায় নাজমুল হাসান প্লাবন ও মাহমুদুল হাসান মাসুদকে হত্যাকাণ্ডে সম্পকৃক্ততা না থাকায় খালাস দেওয়া হয়। আর ১৩ জন আসামির মাত্র ৭ জন কারাগারে আটক অবস্থায় ছিলো, বাকিরা পলাতক ছিলো।[২০] ২৪ তারিখের শুনানিতে মাজহারুল ইসলাম, শফিউল আলম, কামরুজ্জামান ও অভিনন্দন কুণ্ডু নামে আরো ৪ জন আসামীকে খালাস দেওয়া হয়।[২১]

অভিযুক্তদের তালিকা

[সম্পাদনা]

এই হত্যাকাণ্ডে ১৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়, এরা সকলেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং সবাই রফিক-জব্বার হলে অবস্থান করেন।[] অভিযুক্ত সকল শিক্ষার্থী ৩৭ ব্যাচের ছাত্র এবং সেই সময়ে সবাই ২য় বর্ষে পড়াশোনা করতো।

নাম বিভাগ রায় বর্তমান অবস্থা
শফিউল আলম সেতু পরিসংখ্যান যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
অভিনন্দন কুণ্ডু অফি পরিসংখ্যান যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
আশিকুল ইসলাম আশিক প্রাণীবিজ্ঞান মৃত্যুদণ্ড মালয়েশিয়ায় পলাতক
খান মুহামাদ রিয়াজ সোহান প্রাণীবিজ্ঞান মৃত্যুদণ্ড মালয়েশিয়ায় পলাতক
জাহিদ হাসান প্রাণীবিজ্ঞান মৃত্যুদণ্ড
কামরুজ্জামান সোহাগ দর্শন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ইশতিয়াক মেহবুব অরূপ দর্শন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মালয়েশিয়ায় পলাতক
রাশেদুল ইসলাম রাজু দর্শন মৃত্যুদণ্ড
মাহবুব আকরাম সরকার ও রাজনীতি মৃত্যুদণ্ড মালয়েশিয়ায় পলাতক
মাহমুদুল হাসান ইতিহাস খালাস
মাজহারুল ইসলাম ইতিহাস যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নাজমুস সাকিব তপু অণুজীব বিজ্ঞান যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নাজমুল হাসান প্লাবন লোকপ্রশাসন খালাস

প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ

[সম্পাদনা]

হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় উত্তপ্ত হয়ে পরে।[২২] ছাত্রলীগের একাংশ, অন্যান্য ছাত্র সংগঠন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবং শিক্ষকগণ সবাই মিলে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনর নামক সংগঠন সংগঠনের বিবৃতি দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। এই আন্দোলনের সংগঠক ছিলো তৎকালীন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি সৌমিত জয়দ্বীপ। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ ব্যানারে কিছু শিক্ষক সংবাদ সম্মেলন করে হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবী জানান।[২৩] বিচারের দাবীতে শিক্ষকরাও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলো। শিক্ষার্থীরা ১৫ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে চার দফা দাবী নিয়ে বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল করে।[২৪] ৯ জানুয়ারি ২০১৪ সালে দিনব্যাপী ক্যাম্পাসে সংহতি প্রকাশ সমাবেশ, আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। এসকল কর্মসূচি শহীদ মিনারের পাদদেশে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারের মাধ্যমে আয়োজন করা হয়।[২৫] ২০১৫ সালের ৯ জানুয়ারি সন্ত্রাসবিরোধী দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনী, সন্ধ্যায় জুবায়ের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ এবং একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।[২৬]

আন্দোলন কর্মীরা হত্যাকারী ছাত্রলীগ গোষ্ঠীকে উপাচার্য শরীফ এনামুল কবিরের মদদপুষ্ট বলে উল্লেখ করেন। শিক্ষক সমাজের আহবায়ক অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন বলেন, “হত্যা মামলায় নতুন কোনো গ্রেপ্তার নেই, এদের অনেকেই প্রকাশ্যে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে, প্রশাসন সব জেনেও চুপ রয়েছে। এ থেকেই প্রশাসনের ভূমিকা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।”[২৭] শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে উপাচার্য শরীফ এনামুল কবির, নিরাপত্তা কর্মকর্তা আজিম উদ্দিন, প্রক্টর আরজু মিয়া এবং প্রক্টরিয়াল কমিটির অন্যান্য সদস্যরা পদত্যাগ করেন।[২৮]

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট সভাপতি নাসির উদ্দিন প্রিন্স বলেন, “জুবায়ের হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় আমরা আন্দোলন স্থগিত করেছিলাম। তবে রাষ্ট্রীয় আইনে হত্যাকারীদের বিচারের ব্যাপারে প্রশাসনের যে চাপ থাকা উচিত ছিলো, তা মনে হচ্ছে অনেকটাই শিথিল।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কর্মকর্তা মাহতাব উজ জাহিদ বলেন, “আদালতে সাক্ষ্য-প্রমাণের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছি। আদালতের কাছে এখন দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি আশা করছি।”[২৯]

বাম শিক্ষকদের সংগঠন ‘শিক্ষক মঞ্চ’ এর মুখপাত্র সহযোগী অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, “দোষীদের সর্বোচ্চ এবং যথাযথ শাস্তি দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে যে, বিশ্ববিদ্যালয় হত্যাকাণ্ড ঘটানোর স্থান নয়।”

পরবর্তী প্রতিক্রিয়া

[সম্পাদনা]

হত্যাকাণ্ডের পর বছর পেরিয়ে গেলেও মামলার অগ্রগতি না হওয়ায় জুবায়েরের পরিবার হতাশা প্রকাশ করেন। জুবায়েরের বড় সিলেটের লিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বলেন, প্রয়োজনে কোনো তথ্য চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোন সহযোগিতা করা হয়না।[৩০] তিনি আরো বলেন, “মামলায় নতুন করে কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি, ঘটনার এতো দিন পরেও পুলিশ বলছে আসামিরা পলাতক। বোঝাই যাচ্ছে তাদের চেষ্টার অভাব রয়েছে।” ৯ জানুয়ারি ২০২৩ সালে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারের সমাবেশ অনুষ্ঠানে অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, জুবায়ের হত্যাকারীদের পাখি মারার সমান শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।[৩১]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "জুবায়ের হত্যা: 'ছাত্র সংগঠনগুলোর অনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিণতি'"। বিবিসি বাংলা। ২৪ জানুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০১৯ 
  2. "ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে খুন, নির্যাতন, নৃশংসতার পাঁচ চাঞ্চল্যকর অভিযোগ"BBC News বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৯ 
  3. "জুবায়ের হত্যার এক যুগ: রায় কার্যকর না হওয়ায় পরিবারের ক্ষোভ"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-১৮ 
  4. "জুবায়ের হত্যার কারণ নিয়ে এখনও অস্পষ্ট পুলিশ"banglanews24.com। ২০১২-০১-১০। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-১৮ 
  5. "আরো লাশ ফেলার 'হুমকি' জুবায়ের হত্যার আসামির"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-১৮ 
  6. "জুবায়ের হত্যা: ১৩ ছাত্রলীগ কর্মী অভিযুক্ত"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ সেপ্টে ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-১৮ 
  7. রিপোর্টার, স্টাফ। "জাবির ছাত্র জুবায়ের হত্যা ৫ জনের মৃত্যুদন্ড বহাল"DailyInqilabOnline (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৯ 
  8. সাদ, মুনতাকিম (২০১৭-০১-০৯)। "'পাখির মত মুক্ত' জুবায়েরের খুনিরা"The Daily Star Bangla (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৮ 
  9. "জুবায়ের হত্যা মামলায় ৫ ফাঁসি, ৬ যাবজ্জীবন"এনটিভি বাংলাদেশ। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ 
  10. "জুবায়ের হত্যাকাণ্ড দ্রুত বিচারে"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৮ 
  11. "জুবায়ের হত্যা: ছাত্রলীগকর্মী জাহিদ রিমান্ডে"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৮ 
  12. "জুবায়ের হত্যা: ৬ আসামির বিষয়ে আদেশ ১৮ ফেব্রুয়ারি"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৮ 
  13. "জুবায়ের হত্যা: সাক্ষ্য শেষে আত্মপক্ষ সমর্থনে তারিখ"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৮ 
  14. "জুবায়ের হত্যার রায় ৪ ফেব্রুয়ারি"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৮ 
  15. "জুবায়ের হত্যার রায় পেছানোয় ক্ষোভ জাবিতে"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৮ 
  16. অনলাইন, চ্যানেল আই (২০১৮-০১-২৪)। "জুবায়ের হত্যায় পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল"চ্যানেল আই অনলাইন (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৯ 
  17. "জুবায়ের হত্যায় ৫ জনের ফাঁসি বহাল"RTV Online। ২৪ জানুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৯ 
  18. "জুবায়ের হত্যা মামলায় ৫ জনের ফাঁসি বহাল"জাগো নিউজ২৪। ২৪ জানুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ 
  19. "জুবায়ের হত্যার এক যুগ: রায় কার্যকর না হওয়ায় পরিবারের ক্ষোভ"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৮ 
  20. "জাবি শিক্ষার্থী জুবায়ের হত্যা মামলায় আপিল শুনানি শুরু"Bangla Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৯ 
  21. প্রতিবেদক, নিজস্ব (২০১৮-০১-২৪)। "জুবায়ের হত্যা মামলায় খালাস পেলেন ৪ জন"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৯ 
  22. "জুবায়ের হত্যার বিচারের দাবিতে সমাবেশ"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৮ 
  23. "জুবায়ের হত্যা: বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৮ 
  24. "জুবায়ের হত্যা: জাবি শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৮ 
  25. প্রতিবেদক, নিজস্ব (২০১৪-০১-১০)। "জুবায়ের হত্যার বিচারের দাবিতে সংহতি সমাবেশ"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৯ 
  26. "জুবায়ের হত্যার বিচার চাইলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৮ 
  27. "জুবায়ের হত্যা মামলা আসামি গ্রেপ্তারে অবহেলার অভিযোগ"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৮ 
  28. "জাবি: প্রক্টর পদ ছাড়লেন আরজু মিয়া"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৮ 
  29. "জুবায়েরের খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তির আশা"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৮ 
  30. "আশা হারাচ্ছে জুবায়েরের পরিবার"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৮ 
  31. "'জুবায়ের হত্যাকারীদের পাখি মারার শাস্তি দেয় জাবি প্রশাসন'"thedailycampus.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৯-০৯