গ্র্যাপলিং

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আগস্ট, ২০০৪ এ হাওয়াইয়ান রাষ্ট্র গ্র্যাপলিং চ্যাম্পিয়নশিপ 

হাতাহাতির লড়াইয়ে, গ্র্যাপলিং বা কুস্তি হল সম্মুখ লড়াইয়ের কৌশল যা শারীরিক সুবিধা যেমন আপেক্ষিক অবস্থান এর উন্নতি, প্রতিপক্ষকে আহত করতে ব্যবহার করা হয়। গ্র্যাপলিং এ বিভিন্ন কৌশল, শৈলী এবং মার্শাল আর্টের কৌশল হিসাবে লড়াই এবং আত্মরক্ষা উভয়ের জন্যই অনুশীলন করা হয়।

গ্র্যাপলিং এর মধ্যে সাধারণত আঘাত (আক্রমণ) বা অস্ত্র ব্যবহার করা হয় না। যাইহোক, কিছু যুদ্ধ শৈলী বা মার্শাল আর্ট বিশেষত তাদের গ্র্যাপলিং কৌশল শেখানোর জন্য পরিচিত যাতে গ্র্যাপলিং এর পাশাপাশি বা একই সাথে আঘাত এবং অস্ত্র ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত।[১]

জুডো

ধরন[সম্পাদনা]

প্রাচীন মিশরীয় দঙ্গল

গ্র্যাপলিং কৌশলগুলিকে দৃঢ়মুষ্টিতে আঁকড়ে ধরা লড়াই; টেকডাউন এবং থ্রো; নতি ধরে রাখা ও পিন বা নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল; দ্রুতবেগে যাত্তয়া, রদ, ডিগবাজি এবং বেরিয়ে আসা এ বিভক্ত করা যায়।

  • দৃঢ়মুষ্টিতে আঁকড়ে ধরা: পায়ের উপর দাঁড়ানো দুই প্রতিযোগী বিভিন্ন আঁকড়ে ধরার পদ্ধতি প্রতিপক্ষের শরীরের উপরের অংশে ব্যবহার করে। সাধারণত থ্রো বা টেকডাউনের বিরুদ্ধে টিকে থাকা বা রক্ষা পেতে ব্যবহৃত হয়।
  • টেকডাউন: বা নিচে ফেলা হল একজন গ্র্যাপলার এর প্রতিপক্ষকে দাঁড়ানো অবস্থা থেকে মাটিতে সুনিপুণ ভাবে ফেলার কৌশল। প্রতিদ্বন্দ্বীর আপেক্ষিক নিয়ন্ত্রণের শীর্ষ অবস্থান গ্র্যাপলার টাকডাউন দিয়ে শেষ করে।
  • থ্রো: বা ছুড়ে ফেলার কৌশলটি হল, একজন গ্র্যাপলার প্রতিদ্বন্দ্বীকে তুলে বা ভারসাম্য নষ্ট করে তাকে বাতাসে বা ভুমিতে ডিগবাজি খেতে বাধ্য করে। গ্র্যাপলিং এর বিভিন্ন ডিসিপ্লিনে থ্রো এর উদ্দেশ্য পরিবর্তিত হয়, কিছু জোড়াল থ্রো নিক্ষেপকারীর দাড়ান অবস্থায়ই প্রতিপক্ষকে অক্ষম করে, টেকডাউন বা নিয়ন্ত্রণযোগ্য অবস্থান পেতে সাহায্য করে।
  • হামাগুড়ি: হামাগুড়ি হল প্রতিদ্বন্দ্বীর টেকডাউন পাওয়ার চেষ্টাকালীন একটি প্রতিরক্ষা কৌশল। এই কৌশলে পা পিছনে দিয়ে দিয়ে দ্রুত ছড়িয়ে ফেলতে হয়। সঠিকভাবে করতে পারলে প্রতিপক্ষের উপর ভর করবে এবং নিয়ন্ত্রণ লাভ হবে।
  • নতিতে আঁকড়ে ধরা: এটা দুই ধরনেরঃ সম্ভাব্য শ্বাসরোধ বা প্রতিদ্বন্দ্বীর শ্বাসরোধ করা (চোক) এবং জয়েন্ট বা অন্যান্য শরীরের অংশ জখম হতে পারে এমন (লক)। গ্র্যাপ্লিং এ, প্রতিযোগী যখন নতিতে আটকে যায় (caught in a submission hold) তখন তা থেকে বের হতে না পারলে, হার মেনে, হয় মুখে না হয় প্রতিপক্ষকে টোকা বা ট্যাপিং করে নিজেকে সমর্পন করে। প্রতিদ্বন্দ্বী যারা "ট্যাপ আউট" না করার ঝুঁকি নেয় তারা অজ্ঞান বা গুরুতর আহত হয়।
  • সুরক্ষিত বা নিয়ন্ত্রণ কৌশল: আঘাত করতে পারবে না এমন ভাবে প্রতিপক্ষকে পিঠে আটকে রাখাই হল পিন। প্রতিযোগিতামূলক গ্র্যাপলিং এর কিছু ধরনে পিন হল তাৎক্ষনিক বিজয় এবং অন্য ধরনে একে কর্তৃত্বপূর্ণ অবস্থান বলে মনে করা হয় এবং এর জন্য পয়েন্টও মেলে। অন্য কৌশলে প্রতিপক্ষের মুখ ভুমিতে চেপে ধরে বা চার হাত পায়ে আটকে রেখে আক্রমণ বা ছুটে যাওয়া প্রতিহত করতে হয়। এগুলো নতিতে আটকানোর আগেই করা যেতে পারে।
  • বেরিয়ে আসা (Escapes): সাধরনত বেরিয়ে আসা বলতে বিপদ বা অধীন অবস্থা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া বুঝায়; যেমন গ্র্যাপলার নিচে চাপা পড়লে(side control) নিজের পায়ের মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা বা নিরাপদে দাড়িয়ে যাওয়া অথবা যখন গ্র্যাপলার নতিতে নেয়ার আগেই বেরিয়ে আসতে পারে এবং তাৎক্ষনিক চাপে পড়ার বিপদ নেই এমন অবস্থানে ফিরতে পারে।
  • টার্নওভার: পয়েন্ট পেতে, পিন করতে বা আরো অধীন অবস্থান পেতে চার পায়ে বা পিঠ থেকে পেটে চিত হয়ে থাকা প্রতিপক্ষের প্রতি চালানো কৌশল।
  • উলটান বা দ্রুতবেগে বেরিয়া যাত্তয়া: একজন গ্র্যাপলার যখন প্রতিপক্ষের নিচে ভুমিতে থেকে ডিগবাজি দিতে সক্ষম যাতে সে প্রতিপক্ষের উপড়ে উঠতে পারে তখন এটা ঘটে।

ব্যবহার[সম্পাদনা]

লড়াই ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে গ্র্যাপলিং এর মাত্রা পরিবর্তিত হয়। কিছু ব্যবস্থা যেমন অপেশাদার কুস্তি, পেহলওয়ানি, পেহলওয়ানি সাবমিশন কুস্তি, জুডো, সুমো, এবং ব্রাজিলীয় জিউ-জিৎসু একচেটিয়াভাবে গ্র্যাপলিং হয় এবং আঘাত নিষিদ্ধ। অনেক লড়াই এর খেলায়, সোতো এবং মিশ্র মার্শাল আর্ট প্রতিযোগিতায় গ্র্যাপলিং এর সাথে খেলার আকর্ষনের জন্য আঘাত করা যায়।[২]

আক্রমণে দুই কুস্তিগিরG

সাধারণত লড়াইয়ের অন্যান্য দিকগুলির উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার জন্য গ্র্যাপলিং কিছু মার্শাল আর্ট এবং যুদ্ধ ক্রীড়াতে অনুমোদিত নয় যেমন ঘুষি, লাথি , বা এলোমেলো লড়াইয়ের অস্ত্রের দিক। এই ধরনের ম্যাচগুলির মধ্যে প্রতিপক্ষরা, মাঝে মাঝে ব্যাথা বা ক্লান্ত হলে গ্র্যাপলিং ব্যবহার করে; এমন হলে রেফারি এসে আবার ম্যাচ শুরু করে, মাঝে মাঝে একজন বা দুই জনকেই সতর্ক করে। যেমন মুষ্টিযুদ্ধ, কিকবক্সিং তায়কোয়ান্দো কারাতে এবং ফেন্সিং। মুই থাই য়ে দীর্ঘ গ্র্যাপলিং এর ফল হল প্রতিযোগীদের আলাদাকরণ, এই খেলায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত দৃঢ়মুষ্টিতে আঁকড়ে ধরাকে ডাবল কলার টাই বলে।

গ্র্যাপলিং কৌশল এবং গ্র্যাপলিং কৌশল থেকে আত্মরক্ষা, নিজেকে রক্ষা এবং আইন প্রয়োগকারীদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়। আত্মরক্ষার জন্য শেখানো সর্বাধিক প্রচলিত কৌশলগুলি হল দৃঢ়মুষ্টিতে আঁকড়ে ধরা থেকে বেরিয়ে আসা ও ব্যথা অনুপযোগী কৌশল প্রয়োগ।

গ্র্যাপলিং আত্মরক্ষা, খেলাধুলা এবং মিশ্র মার্শাল আর্ট (এমএমএ) প্রতিযোগিতার জন্য প্রশিক্ষিত করা যেতে পারে।

দাঁড়ানো গ্র্যাপলিং[সম্পাদনা]

দাঁড়ানো গ্র্যাপলিং  হল সকল কুস্তির অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং  দৃঢ়মুষ্টিতে আঁকড়ে ধরার নৈপুণ্য যা দুই কুস্তিগির দাঁড়ানো অবস্থায় লড়াই শুরু আগে করে। দাঁড়ানো কুস্তির উদ্দেশ্য মার্শাল আর্ট বা লড়াই অনুসারে পরিবর্তিত হয়। প্রতিরক্ষামূলক দাঁড়ানো কুস্তিতে নিজেকে ব্যাথা যুক্ত আঁকড়ে ধরার থেকে বাঁচানো এবং প্রতিপক্ষের সম্ভাব্য কুস্তির আঁকড়ে ধরা থেকে বেরিয়ে আসার কথা ভাবতে হয়, যেখানে আক্রমণাত্মক কুস্তির কৌশল  হল নতিতে আঁকড়ে ধরা, ফাদে ফেলা, নিচে ফেলা এবং ছুড়ে ফেলা, এর সবগুলোই মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে বা ভুমিতে লড়াই চালিয়ে যেতে ব্যবহার করা যেতে পারে। আঘাতের সাথে দাঁড়ানো কুস্তি আক্রমণাত্মক এবং প্রতিরক্ষা উভয় ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে, হয় প্রতিপক্ষের হাত আঘাতের সময় ফাঁদে ফেলে না হয় ভাল ভাবে আঘাত করার দুরত্বে সরে যাওয়া থেকে ফেরাতে বা কাছে এনে প্রয়োগ করতে যেমন হাঁটুর আঘাত।

লড়াইয়ে, দাঁড়ানো কুস্তি প্রায়শই সফলভাবে নিচে নেয়া বা ছুড়ে ফেলার কাছাকাছি ঘুরে বেড়ায়। গ্লিমা এবং Løse-tak গ্লিমা লড়াইয়ে কুস্তি প্রধান অংশ এবং যদি ভুমিতে লড়াই শেষ হয় তবে সেখান থেকেই লড়াই চলতে থাকে অন্যান্য খেলা যেমন এম এম এ তে ভুমিতে লড়াই চলতে পারে।

জুডোর উদ্দেশ্য হল চোক হোল্ড, জোড়া লক বা পিন প্রাপ্তি।

স্থল কুস্তি[সম্পাদনা]

স্থল কুস্তি হল যখন কুস্তিগির দাঁড়ানো অবস্থায় থাকে না তখন প্রয়োগকৃত কুস্তির কৌশল। বেশিরভাগ মার্শাল আর্ট এবং লড়াইয়ের খেলাগুলির একটি বড় অংশ হল স্থল কুস্তি যা অবস্থান নির্ণয় এবং প্রভাবশালী অবস্থান অর্জন করার উপায়। অধীন অবস্থায়(উপরে থাকাকালীন) একজন নিচে থাকা কুস্তিগিরকে বিভিন্ন অপশন দেয় যেমন দাঁড়িয়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা, পিন অর্জন বা নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখে প্রতিপক্ষকে ক্লান্ত করা এবং নতিতে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা বা আঘাত করা। অন্যদিকে নিচের কুস্তিগির অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা এবং অবস্থা উন্নতির চিন্তা করে সাধারনত উলটান বা দ্রুত বেরিয়ে আসা ব্যবহার করে। গার্ড অনুমোদিত কুস্তির কিছু ডিসিপ্লিনে নিচের প্রতিযোগী নতিতে আঁকড়ে ধরে লড়াই শেষ করতে পারে। কিছু মানুষ নিচে স্বস্তি বোধ করে কারণ প্রতিপক্ষকের ফুল গার্ডে থাকা অবস্থায়ই বেশ কিছু সংখ্যক নতি অর্জন করা যায়।

প্রয়োগ[সম্পাদনা]

অদক্ষ লড়াকু লড়াইয়ে জড়িয়ে পরলে, একটি সাধারন প্রতিক্রিয়া হল প্রতিপক্ষকে ধরে থামিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি ধীর করা যা পাশবিক বল নির্ভর নিয়মবহির্ভুত লড়াইয়ে পরিনত হয়। বিপরীতে, একজন দক্ষ লড়াকু টেকডাউনকে অগ্রগতির একটি উপায় হিসাবে যেমন মাউন্ট বা পার্শ্ব নিয়ন্ত্রণকে ব্যবহার করতে পারে বা আঘাত, শ্বাসরোধ করে ধরা এবং জয়েন্ট লক স্থাপনের জন্য দৃঢ়মুষ্টিতে আঁকড়ে ধরা এবং স্থল অবস্থানগুলি ব্যবহার করে। নিচে থাকা গ্র্যাপলার রক্ষাকবচ হিসেবে গার্ড ব্যবহার করতে পারে যাতে আঘাত বা চড়ে বসা থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারে। যদি গ্র্যাপলার শক্তিশালী এবং সহজেই তুলতে পারে তবে থ্রো বা টেকডাউন ব্যবহার করতে পারে যা প্রতিপক্ষকে অজ্ঞান করে দিতে পারে। অন্য দিকে গ্র্যাপলিং এ প্রতিপক্ষকে আহত না করে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এজন্য অধিকাংশ পুলিশকে গ্র্যাপলিং এর উপর কিছুটা প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। অনুরূপভাবে, গ্র্যাপলিং প্রতিযোগিতায় ক্রীড়াবিদরা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীকে আঘাত না করেই পূর্ণ শারীরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।

গ্র্যাপলিংকে এসক্রিমায় ডুমগ বলা হয়। চীনা মার্শাল আর্টের চিন না শব্দটি প্রতিপক্ষের সাব-মিশন বা অসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য ব্যবহার করে (আকুপ্রেসার বিন্দুর ব্যবহার জড়িত)। কিছু চীনা মার্শাল আর্টে, আইকিদো, কিছু এসক্রিমা ব্যবস্থা, গ্লিমার ভাইকিং মার্শাল আর্টের পাশাপাশি মধ্যযুগীয় এবং রেসিনাস ইউরোপীয় মার্শাল আর্টে একজন বা উভয় অংশগ্রহণকারী সশস্ত্র হয়ে গ্র্যাপলিং অনুশীলন করে। এই অনুশীলন নিরস্ত্র গ্র্যাপলিং এর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বিপজ্জনক এবং সাধারণত এর জন্য ভাল প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।

গ্র্যাপলিং এর ধরন[সম্পাদনা]

বিশ্বজুড়ে সীমিত ভৌগোলিক এলাকা বা দেশের মধ্যে অনুশীলন করা হয় গ্র্যাপলিং এর এমন অনেক আঞ্চলিক ধরন রয়েছে। কিছু গ্র্যাপলিং খেলার মত যেমন জুডো, শুট কুস্তি, ক্যাচ কুস্তি, গ্র্যাপলিং, ব্রাজিলীয় জিউ-জিৎসু, সাম্বো খেলা এবং কিছু কুস্তির মত যেমন ফ্রিস্টাইল এবং গ্রেকো-রোমান বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়। জুডো, ফ্রিস্টাইল রেসলিং, এবং গ্রেকো-রোমান রেসলিং অলিম্পিক গেমস এ অনুষ্ঠিত হয় যেখানে গ্র্যাপলিং, ব্রাজিলিয়ান জিও-জিতসু এবং সাম্বোর নিজস্ব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতা রয়েছে। অন্যান্য পরিচিত গ্র্যাপলিং-ভিত্তিক খেলা গুলো হল শুয়াই জিয়াও, মল্ল-যুদ্ধ এবং আইকিদো।

এই শিল্পে লক্ষ্য থাকে প্রতিপক্ষকে হয় নিচে নিয়ে আটকে ফেলা না হয় বিশেষ চোকহোল্ড(শ্বাসরোধ করে ধরা) বা জয়েন্ট লকে (জোড়া আটকে ফেলা) ধরা যাতে প্রতিপক্ষ পরাজয় মেনে নিয়ে নিজেকে সমর্পন করে বা অসহায় হয়ে পড়ে (অজ্ঞান বা ভাঙ্গা অঙ্গ)। গ্র্যাপলিং এ দুই ধরনের পোশাক ব্যবহার করা হয় যা শান্তি ও আক্রমণের ধরন প্রকাশ করেঃ জ্যাকেট সহ যেমন জিআই বা কুর্তা[৩] এবং জ্যাকেট ছাড়া। জ্যাকেট বা জিআই এ প্রতিপক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করতে কাপড় সাহায্য করে, যেখানে জিআইহীন ধরনে দেহকে স্বাভাবিকভাবে ধরে শরীরের ধড় ও মাথা নিয়ন্ত্রণে জোড় দেয়। জ্যাকেটের ব্যবহার জুডো, সাম্বো, ব্রাজিলিয়ান জু-জুতসু ছাড়াও সারা বিশ্বের মানুষের বিভিন্ন কুস্তি শৈলীতে বাধ্যতামূলক। কুস্তির বিভিন্ন কৌশলে যেমন অলিম্পিক ফ্রি স্টাইল, গ্রেকো-রোমান কুস্তি এবং গ্র্যাপলিং এ জ্যাকেট ব্যবহার করা হয় না।

মিশ্র মার্শাল আর্ট সঙ্গে আঘাত কৌশল গ্র্যাপলিং এ ব্যবহার করা হয়। আঘাত বিপরীত ভাবে এবং গ্র্যাপলিং কৌশল প্রতিষ্ঠা করতে ব্যবহার করা হয়।

এডিসিসি[সম্পাদনা]

এডিসিসি সাবমিশন কুস্তি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ হল বিশ্বের সবথেকে সম্মানজনক পূর্ণসীমার(নিচে নেয়া, অবস্থান এবং নতিতে আঁকড়ে ধরা অন্তর্ভুক্ত) গ্র্যাপলিং প্রতিযোগিতা এবং দুই বছরে একবার হয়।

মন্ডিলস[সম্পাদনা]

বিশ্ব জুজুৎসু চ্যাম্পিয়নশিপ, মন্ডিলস (পর্তুগিজ=বিশ্ব) নামেও পরিচিত, যা বিশ্বের সবথেকে সম্মান জনক জ্যাকেট সহ পূর্ণ সীমার(নিচে নেয়া, অবস্থান এবং নতিতে আঁকড়ে ধরা অন্তর্ভুক্ত) গ্র্যাপলিং টুর্নামেন্ট। এই প্রতিযোগিতায় জ্যাকেট ছাড়া বিভাগও (জিআইহীন) আয়োজন করে যা আদর্শ জ্যাকেট ছাড়া প্রতিযোগিতা, এডিসিসির মত সম্মান জনক নয়।

সম্মিলিত বিশ্ব কুস্তি[সম্পাদনা]

সম্মিলিত বিশ্ব কুস্তি হল কুস্তি খেলার আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক। এটি পুরুষদের এবং মহিলাদের গ্র্যাপলিংসহ কুস্তির বিভিন্ন ধরনের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার সভাপতি। গ্র্যাপলিং এর জন্য এর আয়োজিত প্রতিযোগিতার নাম হল, গ্র্যাপলিং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ।

নাগা[সম্পাদনা]

১৯৯৫ এ চালু হওয়া উত্তর আমেরিকান গ্র্যাপলিং সমিতি (নাগা) উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপ জুড়ে নতি আঁকড়ে ধরা গ্র্যাপলিং এবং ব্রাজিলিয়ান জু-জিতসু টুর্নামেন্ট আয়োজন করে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নতি আঁকড়ে ধরা গ্র্যাপলার এবং এমএমএ যোদ্ধাদের মধ্যে কয়েকজন সহ নাগা বিশ্বব্যাপী ১৭৫০০০ অংশগ্রহণকারীদের সর্বোচ্চ নতি আঁকড়ে ধরা গ্র্যাপলিং সংস্থা।[৪] নাগা গ্র্যাপলিং প্রতিযোগিতায় জিআই ও জিআইহীন বিভাগ অন্তর্ভুক্ত। নাগা কর্তৃক খসড়া আইনের অধীনে জিআইহীন প্রতিযোগী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। জিআই প্রতিযোগী প্রমিত ব্রাজিলিয়ান জু-জিতসু নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ফ্রাংক মীর, জোই ফিওরেন্টিনো এবং আন্থোনী পরসেলী উল্লেখযোগ্য চ্যাম্পিয়ন।

গ্রিন্ড[সম্পাদনা]

গ্রিন্ড হল প্রথম ভারতীয় পেশাদার গ্র্যাপলিং টুর্নামেন্ট সিরিজ যা ২০১৭ এর মে মাসে শুরু হয় (অবস্থান এবং নতি আঁকড়ে ধরা অন্তর্ভুক্ত)। এটি ভারতের প্রথম "জিআইহীন" ইভেন্ট সিরিজ।[৫]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Judo Self-Defense Forms: Goshin Jutsu"judoinfo.com 
  2. Krauss, Erich (১ ডিসেম্বর ২০০৪)। Warriors of the Ultimate Fighting Championship। U.S.: Citadel Press Inc.,। আইএসবিএন 0-8065-2657-2 
  3. "The Judo Rank System - Belts"judoinfo.com 
  4. "NAGA Submission Grappling, BJJ Tournaments & Reality Fighting - NagaFighter.com"nagafighter.com 
  5. "ग्राइंड - भारत का प्रथम पेशेवर कुश्ती टूर्नामेंट" [Grind - India's first professional grappling tournament]। Samagya Hindi Daily। ৯ মে ২০১৭। পৃষ্ঠা 5। আগস্ট ১৩, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ৯, ২০১৭