গরিফা উচ্চ বিদ্যালয়
গরিফা উচ্চ বিদ্যালয় | |
---|---|
ঠিকানা | |
৭৪৩১৬৫ | |
তথ্য | |
বিদ্যালয়ের ধরন | সরকারি প্রাথমিক,মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং উচ্চ বিদ্যালয় |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৮৪৫ |
প্রতিষ্ঠাতা | দ্বাকানাথ সেন |
অবস্থা | সক্রিয় |
বিদ্যালয় বোর্ড | মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড পশ্চিমবঙ্গ |
বিদ্যালয় জেলা | উত্তর ২৪ পরগনা জেলা |
অধ্যক্ষ | সঞ্জয় মন্ডল |
কর্মকর্তা | ১২ জন |
অনুষদ | মানবিক, বিজ্ঞান, বাণিজ্য |
শিক্ষকমণ্ডলী | ৩৬ জন |
শ্রেণি | শিশু থেকে দ্বাদশ |
লিঙ্গ | সকল |
শিক্ষার্থী সংখ্যা | ৮৫০ জন |
ভাষা | বাংলা |
বিদ্যালয়ের কার্যসময় | ৫ ঘণ্টা |
শ্রেণিকক্ষ | ৫০ টি |
রং | হলুদ |
ক্রীড়া | কুইজ[১], ফুটবল, ক্রিকেট ইত্যাদি |
ডাকনাম | GHS |
গরিফা উচ্চ বিদ্যালয় নৈহাটি তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মধ্যে অবস্থিত একটি উল্লেখযোগ্য প্রাচীন উচ্চবিদ্যালয়৷ এই বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৮৪৫ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের স্বাধীনতা লাভের ১০২ বছর পূর্বে৷ এই বিদ্যালয়ে শিশুবিভাগে প্রথম শ্রেণী থেকে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগ পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যয়নের সুযোগ আছে।[২]
বিদ্যালয় সূচনার ইতিহাস
[সম্পাদনা]শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা শুরুর পূর্বেকার যুগে গরিফা এম.ই.স্কুলের সূচনা৷ এর সূচনালগ্নের ইতিহাস অনধিগম্য কারণ বেশির ভাগ প্রাচীন নথিপত্র আজ আর খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ তবে মনে করা হয় যে, ঐ সময় এই অঞ্চলের সেন, রায়দের মত বিদ্যোৎসাহী ও কিছু পরিমানে সংস্কার মুক্ত পরিবারেরযে সকল সন্তান কেউ ঘটনাচক্রে কলকাতায় ইংরাজী শিক্ষা গ্রহণ করেন তারাই পরবর্তীকালে গ্রামে ফিরে এসে জীবনের নানা ক্ষেত্রে ইংরেজি জানার ব্যবহারিক প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করেন এবং স্থানীয় ছেলেদের ইংরেজি শেখানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সম্ভবত সেই উদ্যোগেরই বাস্তব ফসল গরিফা এম.ই.স্কুল যা বর্তমানে গরিফা উচ্চ বিদ্যালয় নামে পরিচিত৷[৩]
বিদ্যালয় স্থাপনের ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৮৪৫ সালে গরিফা এম.ই.স্কুলটির পত্তন হয়েছিল গৌরীভা (যা বর্তমানে গরিফা) গ্রামের এক বিদ্যোৎসাহী মানুষ দ্বারকানাথ সেনের প্রচেষ্টায়৷ এ ব্যাপারে তিনিই ছিলেন প্রধান উদ্যোক্তা৷ সেন পাড়ায় তার বাড়ীর একতলার দুটি ঘর ও সংলগ্ন বারান্দায় তিনি কয়েক জন উৎসাহী গ্রামবাসীদের নিয়ে স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন৷ যতদূর জানা গেছে তখন গ্রামের শিক্ষিত যুবকরাই ছাত্রদের শিক্ষা দেওয়ার কাজ শুরু করেছিলেন৷ প্রাথমিক স্থরে ইংরেজি পড়ানো হত৷ তার সঙ্গে বাংলা ও অন্যান্য বিষয়৷ উনিশ শতকের ছয় দশক পর্যন্ত বিদ্যালয়টি এভাবেই শিক্ষা বিস্তারের কাজ করে আসছিল যদিও তার তেমন স্থায়িত্ব লাভ হয়নি৷ উনিশ শতকের ছয় দশক পর্যন্ত বিদ্যালয়টি এভাবে নিরবে শিক্ষা বিস্তারের কাজ করে আসছিল যদিও তখনও তার তেমন স্থায়িত্ব লাভ হয়নি৷ নানা বাধা বিঘ্নের মধ্যেও দ্বারকানাথ সেনের বাসভবন থেকে প্রথমে নীলকন্ঠ পুরহিতের বাড়ী এবং পড়ে সেখান থেকে আনন্দ মজুমদারের গৃহে স্থানান্তরিত হয়ে স্কুল চলেছিল৷ শেষে ত্রৈলোক্য স্যাকরা নামে এক ব্যক্তির বাড়ীর দক্ষিণের একটি একতলা ঘরে ও তৎসংলগ্ন চালাঘরে স্কুলটি বেশ কিছু দিন চলে৷ এই ভাবে চলতে চলতে সম্ভবত ১৮৬০-৭০ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিদ্যালয়ের নিজেস্ব ভবন নির্মত হয়৷ এ সময় সরকারী অর্থ সাহায্য পাওয়া যায়৷ গৌরীপুর চটকল (১৮৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত)ও অন্যান্য স্থানীয় ইউরোপীয় মিল মালিকদের আর্থিক সাহায্যে গ্রামের জমিদার নন্দলাল সেনের প্রদত্ত জমির উপর Ferry Fund Road (বর্তমানে R.B.C Road) -এর পশ্চিম ধারেগরিফা এম.ই.স্কুলর নিজেস্ব একতলা পাকা বাড়ী নির্মিত হয়৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সমগ্র বঙ্গের অন্যান্য বিদ্যালয়ের মতো গরিফা এম.ই স্কুল বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে এবং এটি সাময়িক ভাবে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়, কারণ বিদ্যালয় ভবন যুদ্ধের প্রয়োজনে ARP অধিকৃত হয়েছিল৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে সেদিন এগিয়ে এসেছিল তৎকালীন গ্রামের কল্যাণ কারিনী সমাজ সেবিকা নগেন্দ্র বালা রায়৷ তার চেষ্টায় ঐ সঙ্কটময় এম.ই স্কুলটি সেন পাড়ায়তার পিতা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বন্ধু স্থানীয় সাবজজ কুমার সেনের পৈতৃক গৃহে স্থানান্তরিত হয়৷ যুদ্ধের সময় এই বাড়ীতেই বিদ্যালয় স্থানান্তরিত হয় এবং যুদ্ধ শেষে মিলিটারি দখল উঠে গেলে বিদ্যালয় অাবার নিজ ভবনে স্থিত হয়৷ এ ভাবেই নদীর স্রোতধারার মতো বয়ে চলতে থাকে বিদ্যালয়ের স্থাপনের ইতিহাস৷[৪]
স্বাধীনতার পরবর্তী সময়
[সম্পাদনা]১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে অনেক অান্দোলন ও রক্ত ক্ষয়ী যুদ্ধের পর অবষেশে ভারত একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে এর সাথে সাথেই গরিফা উচ্চ বিদ্যালয়ও নতুন ভাবে এক পরিপূর্ণ রূপ ধারণ করেছিল৷ প্রথমে,১৯৪৮ সালে গরিফা Middle English(ME) দশ ক্লাসের Higher English(HE) স্কুল-এ উন্নীত হওয়ার অনুমোদন পায় এবং ১৯৪৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় -এর অন্তভূক্ত বিদ্যালয় রূপে পরিগণিত হয়৷ এই প্রচেষ্টা সে সময় যে সকল উৎসাহী গ্রামবাসীর দ্বারা সফল হয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন কাশীপতি মজুমদার, কবি বিজয়কৃষ্ঞ ঘোষ, প্রধান শিক্ষক বলাইচাঁদ মল্লিক ও অনাদিনাথ মিত্র এদের ঐকান্তিক চেষ্টায় নানা উপায় অর্থ সংগ্রহ করে একতলা বিদ্যাভবনের উপর দ্বিতল নির্মিত হয়৷ ১৯৪৮ সালের পূর্ব পর্যন্ত বিদ্যালয়টি ছিল Middle English স্কুল, তার পরবর্তী কালে এর নাম পরিবর্তন করা হয় গরিফা উচ্চ বিদ্যালয়। সেই সময় থেকে বিদ্যালয়টি প্রাথমিক স্তর থেকেই ছাত্রদের ইংরাজী শিক্ষা ও সমসাময়িক সিলেবাস অনুযায়ী অন্যান্য পাঠ্য বিষয়ে শিক্ষিত করে উচ্চতর শিক্ষার জন্য নির্ধারিত বিদ্যালয় গুলিতে ভর্তি হওয়ার উপযুক্ত করার দায়িত্ব এই বিদ্যালয়টি কৃতিত্বের সঙ্গে পালন করে এসেছে৷ সে সময় বিদ্যালয়ের ছাত্ররা ৪ টাকা করে জলপানি পেত এবং তখন একই স্কুলে সকালে ক্লাস চলতো মেয়েদের এবং ১১ টার পর থেকে শুরু হত ছেলেদের ক্লাস৷
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কার্যকাল
[সম্পাদনা]ক্রম | নাম | সময় কাল(ইংরেজি সাল) |
---|---|---|
১তম | শ্রী উপেন দাস | অজানা-১৯৪২ |
২য় | শ্রী বলাই চাঁদ মল্লিক | ১৯৪২-১৯৭৩ ফেব্রুয়ারি |
৩য় | অজিত কুমার ভট্টাচার্য | ১৯৭৩-১৯৭৯ |
৪থ | তীর্থঙ্কর ব্যানার্জী | ২০০০-২০০৩ |
৫ম | অনিরুদ্ধ গাঙ্গুলি | ২০০৩-২০১৬ |
বর্তমান | সঞ্জয় মন্ডল(ভারপ্রাপ্ত) | ২০১৬-বর্তমান |
শিক্ষা সুবিধাসমূহ
[সম্পাদনা]দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থসহ একটি গ্রন্থাগার,আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ একটি বিজ্ঞানাগার,কম্পিউটার ল্যাব,জিওগ্রাফি ল্যাব,খেলার মাঠ সহ খেলার সরঞ্জাম রয়েছে বিদ্যালয়টিতে। বিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি সহপাঠ্যক্রমিক কার্য্যক্রম যেমন বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,রবীন্দ্র জয়ন্তি,মাতৃভাষা দিবস,হিরোসিমা ও নাগাসাকি দিবস,শিক্ষক দিবস,বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।[৫]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "GARIFA HIGH SCHOOL এর কুইজে অংশগ্রহন"। www.dailyhunt.in। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-১৭।
- ↑ "GARIFA HIGH SCHOOL, NAIHATI MUNICIPALITY"। www.schoolsworld.in। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২২।
- ↑ targetstudy.com। "Garifa High School - North 24 Parganas, West Bengal 743166 - contacts, profile and courses"। targetstudy.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২২।
- ↑ "Garifa High School-Youtube.com"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২৬।
- ↑ "A Complete List of CBSE Affiliated Schools in India & Abroad"। iCBSE (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২২।