খান বাহাদুর আবদুল মোমেন
খান বাহাদুর আবদুল মোমেন | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৮ জুন ১৯৪৬ | (বয়স ৬৯)
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত |
মাতৃশিক্ষায়তন | প্রেসিডেন্সি কলেজ |
পেশা | সরকারি কর্মকর্তা, রাজনীতি |
রাজনৈতিক দল | প্রজা পার্টি |
পিতা-মাতা | নওয়াব আবদুল জব্বার (পিতা) |
আত্মীয় | খান বাহাদুর গোলাম আসগর (দাদা) |
পুরস্কার | খান বাহাদুর, সিআইই |
খান বাহাদুর আবদুল মোমেন (২৪ জুন ১৮৭৬- ১৮ জুন ১৯৪৬) ছিলেন বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসের সদস্য, বিশ শতকের সার্ভে এন্ড সেটেলমেন্ট অপারেশনের অন্যতম প্রধান সেটেলমেন্ট অফিসার এবং রাজনীতিবিদ।[১]
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]আবদুল মোমেন ১৮৭৬ সালের ২৪ জুন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির বর্ধমান জেলার কাশীয়ারা গ্রামে (বর্তমান কাসেমনগর) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন নওয়াব আবদুল জব্বারের দ্বিতীয় পুত্র এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিচারবিভাগের প্রধান সদর আমিন আলি আসগরের নাতি। ১৮৯৬ সালে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বি.এ. পাস করেন।[১]
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]আবদুল মোমেন ১৮৯৭ সালে বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসে সাব ডেপটি কালেক্টর হিসেবে যোগ দেন। ১৯০৬ সালে তিনি ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে পদোন্নতি পান। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের সময় তিনি চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ছিলেন।[১]
সমসাময়িক মুসলিমদের শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। অবসর গ্রহণের পর তিনি কলকাতা ইম্প্রুভমেন্ট ট্রাস্টের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। ১৯৩১ সালে তিনি মুসলিম শিক্ষা কমিশন কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন এবং এই কমিশন পরবর্তীকালে মোমেন কমিশন নামে পরিচিতি পায়। কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন আজিজুল হক, তমিজউদ্দিন খান, খান বাহাদুর আফাজউদ্দিন আহমেদ এবং আবুল কাসেম।[১]
আবদুল মোমেন ওয়াকফ ব্যবস্থা সংস্কার ও বিধিবদ্ধকরণের সমর্থক ছিলেন। তার প্রচেষ্টায় ১৯৩৪ সালে ওয়াকফ আইন বিধিবদ্ধ হয় এবং ১৯৩৬ সালে বেঙ্গল ওয়াকাফ বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয়। মুসলিম বীমা উদ্যোক্তাদের মধ্যে তিনি প্রথমদিককার অন্যতম উদ্যোক্তা। তিনি আর্যস্থান বীমা কোম্পানির তহবিল গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেচনে।[১]
তিনি বাংলার ভূমি ব্যবস্থা নিয়ে আগ্রহী ছিলেন এবং এই বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তার জ্ঞানের কারণে তিনি যশোর জেলার সার্ভে এন্ড সেটেলমেন্টের প্রধান অফিসার নিয়োগ পেয়েছিলেন। ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত সেটেলমেন্ট অফিসারের পদটি ব্রিটিশদের জন্য সংরক্ষিত হলেও তার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দেখা দেয়। তার প্রণীত ফাইনাল রিপোর্ট অন সার্ভে এন্ড সেটেলমেন্ট অপারেশন্স ইন দ্য যশোর ডিস্ট্রিক্ট ১৯২০-১৯২৪-এ ইনি জেলার ভূমির প্রজাস্বত্ত্ব এবং আর্থিক বিষয়াদির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তার জরিপে ভূমির স্বত্ব আরোপ, মধ্যস্বত্বভোগী, রায়তদের অধিকার এবং অবস্থা, হাট-বাজার, জনসংখ্যা, সকল শ্রেণীর অর্থব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত ছিল।[১]
রাজনীতি
[সম্পাদনা]১৯২৯ সালে নিখিল বঙ্গ প্রজা সমিতি গঠিত হওয়ার পর তিনি দলের পাঁচজন সহসভাপতির অন্যতম হন। ১৯৩৪ সালে সভাপতি স্যার আবদুর রহিম ভারতীয় আইন সভার স্পিকার নির্বাচিত হওয়ার কারণে সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন। এসময় সভাপতির পদ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনের উদ্দেশ্যে সিদ্ধান্ত হয় যে সাবেক সভাপতিই নতুন সভাপতিকে নির্বাচন করবেন। স্যার আবদুর রহিম এসময় আবদুল মোমেনকে মনোনয়ন দিলেও পরের বছর ১৯৩৫ সালে ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত দলের বার্ষিক সম্মেলনে এ. কে. ফজলুল হক নিজেকে সভাপতি ঘোষণা করেন।[১]
সম্মাননা
[সম্পাদনা]ব্রিটিশ সরকার তাকে খান বাহাদুর এবং সিআইই খেতাব প্রদান করে।[১]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]আবদুল মোমেন ১৯৪৬ সালের ১৮ জুন মৃত্যুবরণ করেন।[১]