বিষয়বস্তুতে চলুন

কেন্দুয়া জয়হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কেন্দুয়া জয়হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
অবস্থান
মানচিত্র

তথ্য
ধরনসরকারি
প্রতিষ্ঠাকাল১৮৩২; ১৯১ বছর আগে (1832)
বিদ্যালয় জেলানেত্রকোণা
বিদ্যালয় কোড১১৩০২৬
প্রধান শিক্ষকমো:রোকন উদ্দিন খান (ভারপ্রাপ্ত)
শিক্ষকমণ্ডলী১২ জন
শ্রেণি৬-১০
লিঙ্গছেলে ও মেয়ে
শিক্ষার্থী সংখ্যাপ্রায় ১০০০
ভাষাবাংলা
শিক্ষায়তন৪.১৩ একর
রং  সাদা
  খাকি
বোর্ডময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড
ওয়েবসাইটwww.kjsghs.edu.bd

কেন্দুয়া জয়হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলা সদরে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি বাংলাদেশের পুরাতন মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

১৮৬২ সালে ময়মনসিংহ জেলার তদানীন্তন জেলা-ম্যাজিষ্ট্রেত মিঃ বেব্রসের সহযোগিতায় বিদ্যালয়টি "মিডিল ভার্নাকুলার স্কুল" হিসেবে চালু করা হয়। তখন স্কুলটিতে ইংরেজি ভাষায় শিক্ষা দেওয়া হত। ১৮৯২ সালের দিকে "মিডিল ভার্নাকুলার স্কুলটি" "মিডিল ইংলিশ স্কুল" হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে। ইংরেজি ভাষায় নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। মিডিল ইংলিশ স্কুল হিসেবে ১৮৯২ থেকে ১৯১২ সাল পর্যন্ত সারা ময়মনসিংহ জেলার মধ্যে অনেক সুনাম অর্জন করে। বিষয়সমূহের মধ্যে ছিল বাংলা, ইংরেজি, গণিত, ইতিহাস, ভূগোল, ইসলাম ধর্ম এবং হিন্দু ধর্ম। তখন বিদ্যালয়টি "কান্দিউড়া এম.ই. স্কুল" নামে আখ্যায়িত লাভ করে। ১৮৪৪ সালে কান্দিউড়া এম.ই. স্কুলকে হাই ইংলিশ স্কুলে উন্নীত করার ব্যপারে ঢাকায় বসবাসরত সাড়ে চার আনির জমিদার "শ্রী রণদা কুমার চৌধুরী" ও কেন্দুয়া তদানীন্তন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা "শ্রী অক্ষয় কুমার গুপ্ত" উদ্যোগ গ্রহণ করেন। জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট "মিস্টার স্প্রাই-সস্ত্রীক" গ্রামে গ্রামে ঘুরে কেন্দুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্য চাঁদা তোলার ব্যাপারে অংশ গ্রহণ করেন। ১৯১৪ সালে হাই স্কুলে উন্নিত করার বিষয়ে স্প্রাই সাহেবের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ কেন্দুয়াবাসী ময়মনসিংহ জেলার তদানীন্তন জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মিঃ এইচ.ই. স্প্রাই আই.সি.এস. কে বিদ্যালয়ের নামের সহিত যুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।[]

ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের অবসানকলে ইংরেজি বিরোধী ভারতবর্ষ ব্যাপী "অসহযোগ আন্দোলন" এর সময় স্কুলের আর্থিক দৈন্যতা দেখা দেয়। স্কুলের আর্থিক দৈন্যতা কাটিয়ে উঠার উদ্দেশ্যে স্কুলের এলাকার ভিতর ও বাহিরে সাহায্য ও সহযোগিতার আবেদন করা হয়। ১৯২৬ সালে চিথোলিয়া গ্রামের "পাল চৌধুরী" পরিবারের জগন্নাথ কলেজের অধ্যাপক "মহিম চন্দ্র চৌধুরীর" পেশকৃত পত্রের মর্মানুযায়ী ০৬-০১-১৯২৬ তারিখেই অনুষ্ঠিত বিদ্যালয়ের কমিটির এক অধিবেশনে চার হাজার টাকা অনুদান প্রাপ্তির আশ্বাসের উপর ভিত্তি করে তিন হাজার টাকা পেয়েই বিদ্যালয়ের নামের সহিত পাল পরিবারের র্ভূতপূর্ব জনৈক পালের নাম সংযুক্ত করে বিদ্যালয়ের নাম "কেন্দুয়া স্প্রাই-ইনষ্টিটিউশন" এর স্থলে "কেন্দুয়া-জয়হরি-স্প্রাই ইনষ্টিটিউশন" রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।[]

১৯৬১ সাল হতে কেন্দুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ ঘটে। স্কুলটি দ্বিপাক্ষিক শিক্ষা পরিকল্পনার আওতাভুক্ত হওয়ার ফলে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি, আসবাব-পত্র ও স্কুল-গৃহের অনুদানের জন্য উল্লেখযোগ্য সরকারি অনুদান লাভ করে। ১৯৬৬ সালে বিদ্যালয়টি সরকারের বহুমুখী উন্নয়ন পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ফলে মানবিক, বিজ্ঞান ও কৃষি-বিজ্ঞান ও বাণিজ্যিক শাখায় লেখাপড়ার সুযোগ উন্নত হয়। ১৯৯১ সালের ১৯ মার্চ বিদ্যালয়টিকে জাতীয়করণ করা হয়।[] ২০১১ সাল থেকে বিদ্যালয়টিতে ছেলেদের পাশাপাশি পুনরায় মেয়েরাও পড়ালেখা করার সুযোগ লাভ করে। সে বছর ৩০ জন মেয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে ভর্তি হয়। বর্তমানে প্রায় ১০০ জন মেয়ে বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত রয়েছে।

বর্তমান অবস্থা

[সম্পাদনা]
শ্রেণী কক্ষ

শিক্ষক - শিক্ষার্থী

[সম্পাদনা]

বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৭১৭ জন শিক্ষার্থী ও ১২ জন শিক্ষক রয়েছেন।[]

অবকাঠামো

[সম্পাদনা]

একটি ৩ তলা ভবনের প্রধান শিক্ষকের কক্ষ ও শিক্ষক মিলনায়তন, কম্পিউটার ল্যাব, বিজ্ঞানাগার, লাইব্রেরী স্থাপিত হয়েছে। এছাড়াও ২ তলা একটি ভবনে ৬ টি এবং লম্বা এল-আকৃতির টিন শেড ভবনে ৭টি শ্রেণী কক্ষ রয়েছে। পশ্চিম-উত্তরাংশের দুইটি কক্ষকে একটি বিশেষ পদ্ধতিতে একত্রে করে হল রুম হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

বিভাগ সমূহ

[সম্পাদনা]
  1. বিজ্ঞান বিভাগ
  2. মানবিক বিভাগ

ফলাফল

[সম্পাদনা]

১৯৮৪ সালে দু'জন ছাত্রী কৃষি-বিজ্ঞানে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ২য় ও ৮ম স্থান অধিকার করে; এছাড়া আরও দুজন ছাত্র ১৯৭২ ও ১৯৮১ তে কৃষি শাখায় মেধাতালিকায় স্থান লাভ করে।

এস এস সি

[সম্পাদনা]

২০১১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল নিম্নরূপ:

শিক্ষাবর্ষ ছাত্র ছাত্রী সংখ্যা উত্তীর্ণ ছাত্র ছাত্রী পাসের শতকরা হার জি.পি.এ-৫ প্রাপ্ত ছাত্র ছাত্রী'র সংখ্যা বৃত্তি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে অবস্থান
২০১১ ১৩২ ১২০ ৯০.৯১%
২০১২ ১২০ ১১৪ ৯৫.০০% ১০
২০১৩ ১২৪ ১০৭ ৮৬.২৯% ১১
২০১৪ ১৩৭ ১২৭ ৯২.৭০% ২৫
২০১৫ ১৩৬ ১২৯ ৯৪.৮৫%
২০১৬ ১৬০ ১৫৬ ৯৭.৫০% ১৯
২০১৭ ১৫২ ১৫১ ৯৯.৩৪% ১৮
২০১৮ ১৬৫ ১৬১ ৯৭.৫৮ ৪৭

জে এস সি

[সম্পাদনা]

২০১৫ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত স্কুলের জেএসসি পরীক্ষার ফলাফল নিম্নরূপ:

শিক্ষাবর্ষ ছাত্র ছাত্রী সংখ্যা উত্তীর্ণ ছাত্র ছাত্রী পাসের শতকরা হার জি.পি.এ-৫ প্রাপ্ত ছাত্র ছাত্রী'র সংখ্যা বৃত্তি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে অবস্থান
২০১৫ ১৬৭ ১৬৭ ১০০% ৬৭ - -
২০১৬ ১৬৮ ১৬৮ ১০০% ৪২ ১৩ -
২০১৭ N/A N/A N/A N/A N/A N/A

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. সৈয়দ, আবু সাদেক (২০০১)। "কেন্দুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস"। উত্তর আকাশ: ২৬-২৮। 
  2. "প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস"কেন্দুয়া জয়হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-২৭