কেই ওকামি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কেই ওকামি
岡見 京
১৮৮৫ সালের ১০ অক্টোবর তোলা একটি স্থিরচিত্রে আনন্দী গোপাল জোশী (বামে) ও সাবাত ইসলামবুলির (ডানে) সাথে কেই ওকামি (মাঝে)
জন্ম(১৮৫৯-০৯-১১)১১ সেপ্টেম্বর ১৮৫৯
মৃত্যু২ সেপ্টেম্বর ১৯৪১(1941-09-02) (বয়স ৮২)
জাতীয়তাজাপানি
অন্যান্য নামনিশিদা কেইকো, কেইকো ওকামি, কেই নিশিদা ওকামি, কয়োকো ওকামি
মাতৃশিক্ষায়তনপেনসিলভেনিয়া মহিলা মেডিকেল কলেজ, ১৮৮৯
পেশাচিকিৎসক
পরিচিতির কারণপাশ্চাত্যের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যার স্নাতক লাভ করা প্রথম জাপানি নারী। জাপানের প্রথম নারী চিকিৎসক।

কেই ওকামি (岡見 京, ওকামি কেই, ১১ সেপ্টেম্বর ১৮৫৯[১][২] – ২ সেপ্টেম্বর ১৯৪১[১]) মেইজি যুগের একজন জাপানি চিকিৎসক ছিলেন। তিনি জাপানের প্রথম নারী যিনি পাশ্চাত্যের শিক্ষায়তন থেকে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের স্নাতক অর্জন করেন। তিনি একই সাথে জাপানের বাইরে চিকিৎসাবিদ্যায় শিক্ষাগ্রহণ করা এবং প্রথম নারী চিকিৎসক।[৩][৪][৫]

জীবনের প্রথমার্ধ[সম্পাদনা]

কেই ওকামি ১৮৫৮ সালে আওমোরি প্রশাসনিক অঞ্চলে নিশিদা কেইকো নামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৭৮ সালে ইয়োকোহামা কিয়োরিতসু নারীদের বিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন এবং তারপর সাকুরাই নারী বিদ্যালয়ে ইংরেজি পড়ান। ২৫ বছর বয়সে তিনি শিল্পকলা শিক্ষক ওকামি সেনকিচিরোকে বিয়ে করেছিলেন। দম্পতি পরবর্তীকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন।[৬]

চিকিৎসা প্রশিক্ষণ[সম্পাদনা]

যুক্তরাষ্ট্রে কেই ওকামি পেনসিলভেনিয়ার মহিলা মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন। অধ্যায়নের জন্য তিনি প্রেসবিটারিয়ান চার্চের বিদেশী মহিলা মিশনারি সোসাইটির আর্থিক সহায়তা পেয়েছিলেন। চার বছর অধ্যয়নের পরে, তিনি ১৮৮৯ সালে সুসান লা ফ্লেশে পিকোটের সাথে স্নাতক হন।[৭][৮] এভাবে তিনি প্রথম জাপানি নারী হিসেবে পাশ্চাত্যের কোন চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যায় পাশ্চাত্য স্নাতক অর্জন করেন।[৬]

পেশাগত জীবন[সম্পাদনা]

জাপানে ফিরে আসার পর, কেই ওকামি তাকাকি কানেহিরোর আমন্ত্রণে জিকেই হাসপাতালে (বর্তমানে জিকেই ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিন হাসপাতাল) কাজ করেছিলেন। সম্রাট মেইজি কোন মহিলা হতে চিকিৎসা গ্রহণে অনিচ্ছুক ছিলেন, সম্রাট ওকামির পথ্য গ্রহণ করেননি, তাই তিনি জিকেই হাসপাতাল থেকে পদত্যাগ করেন।[৯][১০][১১] তারপর, তিনি মিনাতোর আকাসাকা তামেইকে এলাকায় প্রথম মহিলা চিকিৎসক হিসেবে নিজ বাড়িতে নিজস্ব ক্লিনিক খোলেন।[৩] কেই ওকামি ধাত্রীবিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন এবং যক্ষ্মা রোগীদেরও চিকিৎসা করেছেন।[১০]

পরে, তিনি ব্যক্তিগত অনুশীলন বন্ধ করে শোই বালিকা বিদ্যালয়ের সহ-অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেন, যেটি তার শ্যালক কিয়োমুনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৮৯৭ সালে, তিনি তার বন্ধু মিসেস ট্রুর সাথে অংশীদারিত্বে অসুস্থ মহিলাদের জন্য একটি ছোট হাসপাতাল খোলেন। তিনি একই প্রাঙ্গণে একটি নার্সিং স্কুলও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। হাসপাতালটি নয় বছর পর বন্ধ হয়ে যায়, কারণ সেখানে খুব কম রোগী ছিল, বেশিরভাগই ছিলেন বিদেশী মহিলা ধর্ম প্রচারক। জাপানে মিশনারি কাজে অংশ নিয়েছিলেন, সেইসাথে জাপানের বৃহত্তম হাসপাতালে নার্সদের শারীরবিদ্যা শেখাতেন।[১২]

মৃত্যু ও কিংবদন্তি[সম্পাদনা]

ওকামি তিনি স্তন ক্যান্সারের কারণে অবসর গ্রহণ করেন।[৩] তিনি ১৮৭২ সালের মার্চে জপানে থাকা অবস্থায় খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন। একজন ধর্মপ্রাণ খ্রিস্টান ছিলেন।[১২] অবসর সময়ে বাগান করে সময় কাটাতেন।[৩] ১৯৪১ সালের ২ সেপ্টেম্বর ৮৩ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।[৬]

১৮৮৫ সালের ১০ অক্টোবর মেডিকেল কলেজে অধ্যায়নের সময় অনুষদ ডিনের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে গৃহীত স্থিরচিত্রটি কেই ওকামির একটি ঐতিহাসিক ছবি। এছবিতে তাকে আনন্দী গোপাল জোশীসাবাত ইসলামবুলির সাথে নিজ অঞ্চলের সংস্কৃতি অনুযায়ী উপস্থাপিত পোশাকে দেখা যায়। চিত্রের প্রত্যেক নারী- আনন্দী ভারতের, কেই জাপানের এবং সাবাত সিরিয়ার তথা নিজ দেশের প্রথম নারী যারা পাশ্চাত্যের বিদ্যালয় হতে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে স্নাতক অর্জন করে চিকিৎসক হয়েছিলেন।[৫][১৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Kyōko Okami"Nihon jinmei daijiten+Plus (Japanese ভাষায়)। Kōdansha। ২৬ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  2. 三﨑 裕子 (২০০৮)। "明治女医の基礎資料" (পিডিএফ)日本医史学雑誌 (Japanese ভাষায়)। 54 (3)। পৃষ্ঠা 282। ২০২২-০৩-০২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-১৯ 
  3. "Prominent People of Minato City: Keiko Okami"। Minato City Administration। ২০১৬-১১-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-২৬ 
  4. "Historical Photos Depict Women Medical Pioneers"The World from PRX (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৪-০৩-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৯ 
  5. Rao, Mallika (৮ এপ্রিল ২০১৪)। "Meet The Three Female Medical Students Who Destroyed Gender Norms A Century Ago"। ৭ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০২৪হাফপোস্ট-এর মাধ্যমে। 
  6. Hamish Ion (২০১০)। American Missionaries, Christian Oyatoi, and Japan, 1859-73। UBC Press। পৃষ্ঠা 230। আইএসবিএন 978-0-7748-5899-1। ১২ মার্চ ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০২৪ 
  7. JAMA: The Journal of the American Medical Association। American Medical Association। ১৮৮৯। পৃষ্ঠা 455। ১২ মার্চ ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০২৪ 
  8. "Dr. Kei Okami"Woman's Medical College of Pennsylvania: Photograph Collection. 1850-presentDrexel University। ২০১৪-০২-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-২৬ 
  9. Starita, Joe (২০১৬)। A warrior of the people : how Susan La Flesche overcame racial and gender inequality to become America's first Indian doctor। পৃষ্ঠা 156। আইএসবিএন 978-1-250-08534-4ওসিএলসি 959372317। ২৫ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০২৪ 
  10. "The Graduates - The Triangle"The Triangle (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৪-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-০৯ 
  11. "ANANDI GOPAL JOSHI, KEI OKAMI, SABAT ISLAMBOOLY"ইগনাইট। ২০২৩-০৩-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৯ 
  12. "Women's Foreign Missionary Society of the Presbyterian Church"। Women's Foreign Missionary Societies of the Presbyterian Church। ১৮৮৯: 136, 333। ১২ মার্চ ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০২৪ 
  13. "A memento of the Dean's reception, held Oct 10, 1885"ড্রেক্সেল বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার আর্কাইভ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-৩০