কুইচা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

কুইচা
Monopterus
Monopterus cuchia
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণী জগৎ
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: Actinopterygii
বর্গ: Synbranchiformes
পরিবার: Synbranchidae
গণ: Monopterus
Lacepède, 1800
প্রজাতি: Monopterus cuchia
দ্বিপদী নাম
Monopterus cuchia
(Hamilton, 1822)
প্রতিশব্দ

Pneumabranchus striatus McClelland, 1844[১]
Pneumabranchus leprosus McClelland, 1844[২]
Pneumabranchus albinus McClelland, 1844[২]
Ophichthys punctata Swainson, 1839[২]
Ophichthys punctatus Swainson, 1839[২]
Amphipnous cuchia (Hamilton, 1822)[৩]
Unibranchapertura cuchia Hamilton, 1822[৪]

কুইচা (ইংরেজি: Asian swamp eel) একটি ইল-প্রজাতির মাছ। Sybranchidae পরিবারের অন্তর্গত এই মাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Monopterus cuchia। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের রক্ষিত বন্যপ্রাণীর তালিকার তফসিল ২ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৫]

আঞ্চলিক নাম[সম্পাদনা]

অঞ্চলভেদে একে কুইচা বা কুঁইচা[৫] কুঁচে, কুঁচে মাছ, কুচিয়া, কুইচ্চা বা কুচে বাইম নামে ডাকা হয়। ময়মনসিংহে স্থানীয়ভাবে এটি কুচ্চা মাছ নামেও পরিচিত।

শারীরিক গঠন[সম্পাদনা]

কুঁচে মাছের দেহ লম্বা এবং নলাকার। এদের লেজ খাড়াখাড়ি ভাবে চাপা এবং প্রান্তের দিকে ক্রমশ সরু। মাছটির ত্বক স্যাঁতস্যাঁতে ও পিচ্ছিল। এদের বক্ষ, শ্রোণী, পায়ু ও পুচ্ছ পাখনা অনুপস্থিত হলেও অতি ক্ষুদ্র একটি পৃষ্ঠ পাখনা আছে। এদের একটি চোখ অন্ধ। কুঁচে মাছের শরীরের আঁইশ অতি ক্ষুদ্র, গোলাকার এবং অষ্পষ্ট; লম্বালম্বিভাবে সজ্জিত। এদের দেহ গাঢ় বাদামী রংয়ের; উদর হালকা লাল এবং পার্শ্ব রেখার উপরের অংশে ও লেজে অসংখ্য ক্ষুদ্র গোলাকার ফোঁটা থাকে। লম্বায় এরা ৬০ থেকে ৭০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই মাছটির শারীরিক সক্ষমতা বেশ।

এই প্রাণীর পায়ু ও পুচ্ছ অনুপস্থিত। দেহের রঙ গাঢ় খয়েরি বা বাদামি। কোন পার্শ্বরেখা নেই। মাথা সম্পূর্ণ দৈর্ঘের ১১%, উচ্চতা সম্পূর্ণ দৈর্ঘের ৬.১% এবং চোখ মাথার দৈর্ঘের ৩.৩%। স্থানীয় একটি বিল থেকে ধৃত একটি কুইচা মাছের দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা হয় ৮৩ সেন্টিমিটার (সেমি)। বেশকিছু বইপত্রে মাছটির সর্বোচ্চ দৈঘ্য ৬৬ সেমি (বাংলাদেশ ফিসারিজ ক্যাম্পাসে রেকর্ডকৃত)।

আবাস[সম্পাদনা]

দেশের প্রায় সব স্বাদুপানির জলাশয়েই যেমন, বিল, হাওর-বাঁওর, ডোবা নালায় এই মাছ দেখা যায়। পানির অগভীর ও তীরবর্তী অংশ ও পাড়ে মাটির গর্তে এই মাছের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। অনেক সময় এরা মাটির ওপরে এসে রোদে অবস্থানও করে। অনেক সময় পুকুর খননে মাটির অনেক গভীরেও এদের দেখা মেলে।

এই মাছটি বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, মায়ানমার অঞ্চলে পাওয়া যায়।[৬] ভারতীয় উপমহদেশের ভারত ও বাংলাদেশের পাহাড়ী অঞ্চলের অগভীর খাল, বিল, হাওড়, বাওড়, পুকুর ও মাটির গর্তে বাস করে। শুকনো মৌসুমে পুকুর কিংবা ডোবায় যখন পানি শুকিয়ে যায় তখন এরা কাদার নিচে অনেক দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।

খাদ্যাভ্যাস[সম্পাদনা]

এর প্রধান খাদ্য বিভিন্ন প্রজাতির ছোট মাছ। এছাড়াও জলজ পোকা ও প্রাণী খায়। এরা খুব রাক্ষুসে স্বভাবের মাছ।

বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থা এবং সংরক্ষণ[সম্পাদনা]

আইইউসিএন বাংলাদেশ (২০০০) এর লাল তালিকা অনুযায়ী এই প্রজাতিটি বাংলাদেশে এখনও আশংকাজনক বলে চিহ্নিত।[৬]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Eschmeyer, W.N. (ed.) (1998) Catalog of fishes., Special Publication, California Academy of Sciences, San Francisco. 3 vols. 2905 p.
  2. Menon, A.G.K. (1999) Check list - fresh water fishes of India., Rec. Zool. Surv. India, Misc. Publ., Occas. Pap. No. 175, 366 p.
  3. Talwar, P.K. and A.G. Jhingran (1991) Inland fishes of India and adjacent countries. Volume 2., A.A. Balkema, Rotterdam.
  4. Rahman, A.K.A. (1989) Freshwater fishes of Bangladesh., Zoological Society of Bangladesh. Department of Zoology, University of Dhaka. 364 p.
  5. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জুলাই ১০ ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা- ১১৮৫১৪
  6. হক, ওয়াহিদা (অক্টোবর ২০০৯)। "স্বাদুপানির মাছ"। আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; আবু তৈয়ব, আবু আহমদ; হুমায়ুন কবির, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমাদ, মোনাওয়ার। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ২৩ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ২১২–২১৩। আইএসবিএন 984-30000-0286-0 |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: invalid prefix (সাহায্য)