এডিনবরা কেন্দ্রীয় মসজিদ
এডিনবরা কেন্দ্রীয় মসজিদ | |
---|---|
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | ইসলাম |
শাখা/ঐতিহ্য | সুন্নি |
অবস্থান | |
অবস্থান | পটাররো, এডিনবরা, স্কটল্যান্ড, যুক্তরাজ্য |
লুয়া ত্রুটি মডিউল:অবস্থান_মানচিত্ এর 480 নং লাইনে: নির্দিষ্ট অবস্থান মানচিত্রের সংজ্ঞা খুঁজে পাওয়া যায়নি। "মডিউল:অবস্থান মানচিত্র/উপাত্ত/এডিনবরা" বা "টেমপ্লেট:অবস্থান মানচিত্র এডিনবরা" দুটির একটিও বিদ্যমান নয়। | |
স্থানাঙ্ক | ৫৫°৫৬′৪২″ উত্তর ৩°১১′১০″ পশ্চিম / ৫৫.৯৪৫০০° উত্তর ৩.১৮৬১১° পশ্চিম |
স্থাপত্য | |
স্থপতি | বাসিল আল-বায়াতি |
ধরন | মসজিদ |
স্থাপত্য শৈলী | আধুনিক যা স্কটস ব্যারোনিয়াল এবং ইসলামি উভয় বৈশিষ্ট্যই অন্তর্ভুক্ত করে |
নির্মাণ ব্যয় | £ ৩.৫ মিলিয়ন |
বিনির্দেশ | |
ধারণক্ষমতা | ১,২৫০ (মহিলাদের স্থানসহ) [১] |
গম্বুজসমূহ | ২ |
মিনার | ১ (এছাড়াও কোণায় ৩ টি টাওয়ার রয়েছে) [২] |
ওয়েবসাইট | |
www |
এডিনবরা কেন্দ্রীয় মসজিদ (আনুষ্ঠানিকভাবে কিং ফাহাদ মসজিদ এবং এডিনবার্গের ইসলামিক সেন্টার নামে পরিচিত) এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় এলাকা এবং স্কটল্যান্ডের জাতীয় জাদুঘর কাছে পটাররোতে অবস্থিত। মসজিদ এবং ইসলামিক কেন্দ্রটি ডিজাইন করেন ড. বাসিল আল বায়াতি। ৩.৫ ইউরো মিলিয়ন ব্যয়ে স্থাপনাটি সম্পূর্ণ হতে ছয় বছরেরও বেশি সময় লেগেছিল।[৩] মূল হলটি এক হাজারেরও বেশি মুসল্লি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন;[৪] মহিলারা হলের দৃষ্টি সীমানার বাইরে থাকা একটি বারান্দায় নামাজ আদায় করেন। মসজিদটিতে ঝাড়বাতি এবং একটি বিস্তীর্ণ কার্পেট এবং খুব সামান্য আসবাবপত্র রয়েছে।
স্থাপত্যটি কিছুটা স্কটিষ ব্যারোনিয়াল শৈলীর সাথে ঐতিহ্যবাহী ইসলামি বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি মেলবন্ধন।
নকশাটি সম্পর্কে লন্ডন ইউনিভার্সিটির ইসলামিক আর্ট অ্যান্ড আর্কিওলজির অধ্যাপক গেজা ফেহেরওয়ারি বলেছেন, "স্থাপত্যের উপাদান এবং আলংকারিক বিবরণ মূলত ইসলামি―যা প্রধানত তুর্কি ঐতিহ্যের উপর নির্ভরশীল থেকে স্কটল্যান্ডের স্থাপত্য এবং আলংকারিক প্রাচীন রীতিনীতির সাথে সফলভাবে সংযোগ করেছে।"[৫]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]এটির নির্মাণের আগে এডিনবরা শহরের কেন্দ্রস্থলে মুসলমানদের চাহিদা মেটানোর মতো বড় কোনো মসজিদ ছিল না। মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে একটি বড় মসজিদের যৌক্তিকতা তৈরি হয়। অবশেষে, প্রকল্পটি সিটি কাউন্সিলের কাছ থেকে জমি ক্রয় করতে সক্ষম হয় এই শর্তে যে একটি বিদ্যমান তালিকাভুক্ত ভবন সংরক্ষণ এবং ব্যবহার করা হবে। প্রকল্পটি কিছু তহবিল অসুবিধার মধ্যে পড়ে; কিন্তু সৌদি আরবের বাদশাহ ফাহাদ প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ৯০% অনুদান দিলে এ সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে যায়। ৩১ জুলাই ১৯৯৮ (৮ রবিউস সানি ১৪১৯) তারিখে তার পুত্র প্রিন্স আব্দুল আজিজ বিন ফাহাদ মসজিদটি উদ্বোধন করেন, যিনি প্রকল্পটির পৃষ্ঠপোষকও ছিলেন।[৬]
মসজিদ
[সম্পাদনা]বহির্ভাগ
[সম্পাদনা]মসজিদটি পাথর দিয়ে তৈরি এবং প্রাঙ্গণের দিকে মুখ করে নকশায় ক্যালিগ্রাফি করা হয়েছে। মসজিদে পাওয়া ক্যালিগ্রাফিটি বর্গাকার কুফী লিপিতে আরবীতে আল্লাহর নাম ফুটিয়ে তলে।
প্রধান নামাজের জায়গা
[সম্পাদনা]মূল হলটিতে জুমার নামাজ (জুমা) এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ (সালাত) অনুষ্ঠিত হয়। এখানে দুটি ঝাড়বাতি, একটি সুবিশাল কার্পেট এবং বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য চেয়ার রয়েছে। এখানে অনেক সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা এবং ছোট ছোট দলে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, যদিও এই ধরনের দলগুলোকে অবশ্যই পূর্ব-ঘোষণা দিতে হয়। মসজিদটিতে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া পালন করা যায় এবং জানাজার নামাজ নামাজও পড়ানো হয়। হলের দুটি পাশের প্রবেশপথ এবং একটি ছোট কাচের ঘর রয়েছে যাতে প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি র্যাম্পসহ একটি পৃথক প্রবেশ/প্রস্থান রয়েছে।
অযুখানা
[সম্পাদনা]পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্য আলাদা অজুখানা রয়েছে। পুরুষদের অংশে ২১ টি অজু ওয়াশার, নয়টি ফ্লাশ টয়লেট, চারটি স্কোয়াট টয়লেট এবং ছয়টি সিঙ্ক রয়েছে। ২০১০ সাল পর্যন্ত, মসজিদটি অতিরিক্ত তহবিল পেয়ে আসছে এবং আরও বেশি লোকের থাকার জন্য ওযু সুবিধা উন্নত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে; ইসলামি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য মৃতদেহকে গোসল করানো ও আচ্ছাদনের জন্য একটি পৃথক কক্ষও থাকবে।
বহুমুখী হল
[সম্পাদনা]নীচে দ্বিতীয় একটি হল রয়েছে; এটি প্রধান প্রার্থনা হল থেকে অনেক ছোট। মাঝে মাঝে জুমার নামাজ ও ঈদের নামাজের জন্য কক্ষটি খোলা হয়। রুমটি মূলত মালামাল রাখার জন্য ব্যবহার করা হয় কিন্তু প্রতি বছর এডিনবরার ইসলাম উৎসবের জন্য খোলা হয়।
গ্রন্থাগার
[সম্পাদনা]এখানে একটি মাঝারি আকারের লাইব্রেরি রয়েছে যেখানে বিক্রি এবং ধার দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ইসলামিক বই রয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লাইব্রেরি খোলা থাকে। দুটি মাঝারি আকারের টেবিল এবং চেয়ার থাকার কারণে এটি আরবি এবং কুরআনের ক্লাসের পাশাপাশি "ব্রাদার সার্কেল" এর মতো দলীয় আলোচনার মতো অনেক পরিষেবাও দেয়।
মসজিদের রান্নাঘর
[সম্পাদনা]মসজিদের রান্নাঘর (পূর্বে লাঞ্চ বক্স বলা হত) ২০০৪ সালে জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয়। এটি টেকওয়ে, আউটডোর টেবিল এবং ক্যাটারিং এর মতো সুবিধা দেয়। ধারণক্ষমতা প্রায় ৮০-১০০ জন। মেনুতে রয়েছে হালাল দক্ষিণ এশীয় এবং মধ্যপ্রাচ্যের খাবার, বিভিন্ন মাংস এবং সবজির তরকারি, পাশাপাশি ভাত বা নান রুটি। বারবিকিউ করা মুরগি, শিক কাবাব এবং ভুট্টার কাবাব কিছু কিছু দিনে পাওয়া যায় পাশাপাশি শনিবারে বারবিকিউ পাওয়া যায়।[৭] রমজান মাসে ইফতারের সময় বসার জায়গা বিশেষভাবে খুলে দেয়া হয় মুসলমানদের জন্য তাদের ইফতার করার জন্য। ২০০৭ সালের আগস্ট মাসে, দ্য স্কটসম্যান সংবাদপত্র এডিনবরা কেন্দ্রীয় মসজিদের পার্শ্ববর্তী রেস্তোরাঁকে তাদের সেরা উৎসবের খাবারের তালিকার শীর্ষে রাখে। ২০১১ সালের গ্রীষ্মে, যে দলটি মূলত মসজিদ রান্নাঘরটি পরিচালনা করত তাদের মসজিদের সাথে বিরোধ তৈরি হয় এবং তারা নিকলসন স্কয়ারের একটি অধিক প্রচলিত রেস্তোরাঁয় (এখনও মসজিদ রান্নাঘর নামে পরিচিত [৮]) চলে যায়; মসজিদের রান্নাঘরটি এখন আলাদা ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয় এবং এটি 'দ্য অরিজিনাল মস্ক কিচেন অ্যান্ড ক্যাফে' নামে কাজ করে।[৭]
এডিনবরা ইসলাম উৎসব
[সম্পাদনা]ইসলাম ফেস্টিভ্যাল এডিনবরা (আইএফই, এবং এটি ডিসকভার ইসলাম এক্সহিবিশন নামেও পরিচিত) এডিনবরা উৎসবের অংশ। এসময় মসজিদটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয় এবং শিক্ষামূলক আলোচনা এবং নির্দেশিত সফরের আয়োজন করা হয়।[৯]
সাধারণত শনিবারে বিশেষ ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়, যেমন আরবি ক্যালিগ্রাফির ক্লাস এবং আরবি শিল্পের উপস্থাপনা। এছাড়াও বিভিন্ন বক্তা বক্তৃতা করে থাকেন, যাদের মধ্যে কেউ কেউ, যেমন ফারখন্দা চৌধুরী, প্রতি বছর বক্তৃতা দেন। উদাহরণস্বরূপ, চৌধুরী ২০০৪ সালে "নারী এবং ইসলাম" এবং ২০০৯ সালে "নারী, ইসলাম এবং মুক্তি" বিষয়ে বক্তৃতা করেছিলেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন][ উদ্ধৃতি প্রয়োজন ] একইভাবে, ইদ্রিস তৌফিক "শরিয়া আইন কে ভয় পায়?" এবং "মুসলিম যিশু" শীর্ষক বক্তব্য বেশ কয়েকবার উপস্থাপন করেছেন। প্রথম মন্ত্রীর উপদেষ্টাসহ সুপরিচিত ব্যক্তিরা এবং স্যার মেনজিস ক্যাম্পবেলসহ সংসদ সদস্যরা প্রদর্শনীটি পরিদর্শন করেছেন।
সংখ্যালঘু জাতিগত স্বাস্থ্য অন্তর্ভুক্তি প্রকল্প (এমইএইচআইপি)
[সম্পাদনা]মসজিদটি সংখ্যালঘু জাতিগত স্বাস্থ্য অন্তর্ভুক্তি প্রকল্পের (এমইআইএইচপি) সাথে তাদের সহযোগিতার জন্য উল্লেখযোগ্যভাবে স্বীকৃত। এমইআইএইচপি একটি স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে চেয়েছিল।[১০] স্বাস্থ্য মেলাটি একাধিক সংস্থার মাধ্যমে আয়োজিত হয়েছিল এবং ২০০২ সালের নভেম্বর মাসে (রমজানের সময়) এডিনবরা কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মেলাটি ছিল এই ধরনের প্রথম কোন পরীক্ষামূলক প্রকল্প। এটি নৃতাত্ত্বিক সম্প্রদায় এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মধ্যে আস্থা তৈরি করে।
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]-
মসজিদের প্রবেশ পথ
-
২০০৯ সালে ডিসেম্বরে তুষারপাতের সময়
-
মসজিদের পেছনের দরজা
-
এডিনবরা সেন্ট্রাল মসজিদের মিনার
-
মসজিদের ভিতরের অংশ
-
মসজিদের সামনের প্রাঙ্গণ
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- যুক্তরাজ্যে ইসলাম
- ইসলামী স্কুল ও শাখা
- ইসলামবাদ
- মসজিদের তালিকা
- সৌদি রাজাদের নামে নামকরণকৃত জিনিসের তালিকা
- ইসলামের ইতিহাসের সময়রেখা
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Google Mosque Map - UK Mosques Directory"।
- ↑ "Colour Correction"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-২৬।
- ↑ "UK Edinburgh mosque opens"। BBC News। ১৯৯৮-০৭-৩১। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-০২।
- ↑ "Muslim Directory"। ৩ অক্টোবর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-০২।
- ↑ Fehervari, Geza (৯ জুন ১৯৮৯)। "Faith in Tradition" (No. 940 সংস্করণ)। Building Design magazine। পৃষ্ঠা 26।
- ↑ "Bryophytes and Buildings of the Southside"। ৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-২৬।
- ↑ ক খ "The Original Mosque Kitchen by The List"। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০১-০৬।
- ↑ "Mosque Kitchen by The List"। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০১-০৬।
- ↑ "Discover Islam Exhibition (Islam Festival Edinburgh)"। ThreeWeeks Edinburgh। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০২০।
- ↑ Ghouri, Nazim (২০০৫-০৩-০১)। "Health fair in a mosque: putting policy into practice" (ইংরেজি ভাষায়): 197–201। আইএসএসএন 0033-3506। ডিওআই:10.1016/j.puhe.2004.05.009। পিএমআইডি 15661130।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- বাসিল আল বায়াতি স্থপতির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট