ইস্তিকলাল মসজিদ
ইস্তিকলাল মসজিদ | |
---|---|
Istiqlal džamija | |
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | ইসলাম |
শাখা/ঐতিহ্য | সুন্নী ইসলাম |
অবস্থান | |
অবস্থান | বুলেভার মেসে সেলিমোভিকা ৮৫, সারায়েভো ৩৮৭ ৩৩, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা |
বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার মানচিত্রে মসজিদের অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক | ৪৩°৫০′৪৭″ উত্তর ১৮°২১′৩৯″ পূর্ব / ৪৩.৮৪৬৩৫০° উত্তর ১৮.৩৬০৮৩৩° পূর্ব |
স্থাপত্য | |
স্থপতি | ফৌজান নো'মান |
ধরন | মসজিদ |
স্থাপত্য শৈলী | আধুনিকোত্তর |
সাধারণ ঠিকাদার | ইন্দোনেশিয়া প্রজাতন্ত্র |
প্রতিষ্ঠার তারিখ | ২০০১ |
নির্মাণ ব্যয় | $ ২.৭ মিলিয়ন |
বিনির্দেশ | |
অভ্যন্তরীণ | ২,৫০০ মি২ (২৭,০০০ ফু২) |
গম্বুজসমূহ | ১ |
গম্বুজের উচ্চতা (বাহিরে) | ২৭ মিটার |
গম্বুজের ব্যাস (বাহিরে) | ২৭ মিটার |
মিনার | ২ |
মিনারের উচ্চতা | ৪৮ মিটার |
ইস্তিকলাল মসজিদ (বসনীয়: Istiqlal Džamija) বসনিয়া এবং হার্জেগোভিনার রাজধানী সারায়েভো শহরের পশ্চিমাঞ্চলে ওটোকাতে অবস্থিত দেশটির অন্যতম বৃহৎ মসজিদ। মসজিদটি বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার জন্য ইন্দোনেশিয়ার জনগণ এবং সরকারের পক্ষ থেকে দুই দেশের সংহতি ও সৌহার্দ্যের উপহার ছিল, তাই ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় মসজিদ ইস্তিকলাল মসজিদের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে।[১] ইস্তিকলাল একটি আরবি শব্দ। এই শব্দের অর্থ "স্বাধীনতা", এ অর্থে মসজিদটি বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার স্বাধীনতার অর্জনের স্মারক হিসেবে গণ্য। মসজিদটি নির্মাণে ইন্দোনেশিয়দের ভূমিকা থাকায়, অনানুষ্ঠানিকভাবে এটা "ইন্দোনেশিয়ার মসজিদ" ও "সুহার্তো মসজিদ" নামেও পরিচিত।
কার্যক্রম
[সম্পাদনা]দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ও অন্যান্য সালাত (জুম্মা ও ইদের সালাত) আদায়ের জন্য ব্যবহার ছাড়াও ইস্তিকলাল মসজিদে শিশু-কিশোর ও প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমদের আল-কোরআন শেখার জন্য একটি নিয়মিত মক্তব রয়েছে। মক্তব পরিচালনার পাশাপাশি এই মসজিদটি নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াতের প্রতিযোগিতা আয়োজন করে। এছাড়াও মসজিদে শরিয়াহ ভিত্তিক বিবাহ সম্পাদন করা হয়। মসজিদটিতে বসনিয়ার ইসলামী স্থাপনা প্রকল্প ব্যুরো'র কার্যালয়, ও ইন্দোনেশীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল।[২]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৯৯৫ সালের মার্চে যুদ্ধ বিধ্বস্ত বসনিয়ার তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আলিয়া ইজেতবেগভিচের আমন্ত্রণে ইন্দোনেশিয়ার তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সুহার্তো ভ্রমণে আসলে তিনি ইন্দোনেশিয়ার পক্ষ থেকে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার জনগণের জন্য উপহারস্বরূপ এই মসজিদ নির্মাণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সুহার্তো তার প্রশাসনের মাধ্যমে এই মসজিদ নির্মাণের জন্য যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করেন। মসজিদের স্থাপত্য নকশা প্রণয়ন ও নির্মাণকাজ তত্ত্বাবধনের জন্য তিনি ইন্দোনেশিয়ার প্রখ্যাত স্থাপত্যবিদ ফৌজান নু'মানকে নিয়োগ করেছিলেন। ফৌজান ইতোপূর্বে ইন্দোনেশিয়ায় বাটাম গ্র্যান্ড মসজিদ, রাষ্ট্রপতির কার্যালয় মারদেকা প্রাসাদের বাইতুর-রহিম মসজিদ এবং পূর্ব জাকার্তার আত-তীন মসজিদ নির্মাণে ভূমিকা রাখেন।
১৯৯৫ সালে ইস্তিকলাল মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে সুহার্তো সরকারের পতনের কারণে মসজিদের নির্মাণকাজ সাময়িকভাবে স্থগিত ছিল। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মসজিদের নির্মাণকাজ সম্পন্ন ও উদ্বোধন করা হয়েছে।[১]
স্থাপত্য
[সম্পাদনা]ইস্তিকলাল মসজিদের স্থাপত্যে নকশায় ইন্দোনেশিয়ার স্থাপত্যরীতির প্রত্যক্ষরূপ দেখা যায়। মসজিদটি ইসলামী স্থাপত্যরীতির উত্তরাধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির অনন্য নিদর্শন। মসজিদের সম্মুখভাগ, জানালা ও খিলানসমূহের নকশায় সাধারণ জ্যামিতিক আদর্শ অনুসরণ করা হয়েছে। জানালা, খিলানসমূহ নিষ্কলুষ ইস্পাত, অ্যালুমেনিয়াম ও কাঁচ দ্বারা নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদের বহিরাবরণ সাদা টাইলে আবৃত, ভিতরের দেয়াল, বিশেষ করে মিহরাব, মিম্বর এবং জানালার চৌকাঠ ইন্দোনেশিয়ার কাঠের খোদাই করা ফুলের অলংকরণে সজ্জিত।[২]
সারায়েভোর পশ্চিমে ওটোকায় ২,৮০০ বর্গমিটার নির্মিত মসজিদটি সারায়েভোর বৃহত্তম মসজিদগুলির মধ্যে অন্যতম এবং এটির অবস্থান আশেপাশের এলাকা হতে সহজে শনাক্ত করা যায়। মসজিদের একমাত্র গম্বুজটি তামাটে রঙের। গম্বুজটি ২৭ মিটার উচ্চতা ও ২৭ মিটার ব্যাস বিশিষ্ট। জাকার্তার আত-তীন মসজিদের ন্যায় ইস্তিকলাল মসজিদের গম্বুজটির মাধ্যমে মসজিদের অভ্যন্তরে প্রাকৃতিক আলো প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার জন্য গম্বুজটি চারদিকে তিনটি আনুভূমিক চক্রাকার জানালা রয়েছে। মসজিদের প্রধান প্রবেশ দরজার দুইপাশে, ইরানের আইয়ান স্থাপত্য নকশা অনুযায়ী দুইটি ৪৮ মিটার উচ্চতার মিনার রয়েছে। গম্বুজ এবং দ্বৈত মিনারগুলির অগ্রভাগটি তিনটি গোলক শোভিত রয়েছে, যার উপরে তারা এবং অর্ধচন্দ্র যুক্ত আছে। মসজিদটি ইন্দোনেশিয়া এবং বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার মধ্যে বন্ধুত্ব এবং সংহতির প্রতিনিধিত্ব করে, তাই মিনার দুইটি দুই জাতির প্রতীক হিসেবে দেখা হয়।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ "Kerjasama Bilateral, Bosnia-Herzegovina" (Indonesian ভাষায়)। Ministry of Foreign Affairs, Republic of Indonesia। ২৪ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১৩।
- ↑ ক খ "Istiqlal Mosque"। Islamic Finder। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০১৩।