ইসরায়েলে পতিতাবৃত্তি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ইসরায়েলে পতিতাবৃত্তি বৈধ, কিন্তু সংগঠিত আকারে পতিতাবৃত্তি, যেমনঃ পতিতালয় ইত্যাদি নিষিদ্ধ।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯৪৯ সালে ইসরায়েলে পতিতাবৃত্তি বৈধ ছিলো। যদিও ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত সমকামী পতিতাবৃত্তি ছিল নিষিদ্ধ। তবে ১৯৬২ সালে ইন্ডোর পতিতাবৃত্তি নিষিদ্ধ, কিন্তু রাস্তায় পতিতাবৃত্তি নিষিদ্ধ ছিল না, এটি ইসরায়েলি ফৌজদারী আইন ১৯৬৬, ধারা ১৯৯-২০২ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল। গৃহমধ্যস্থ পতিতাবৃত্তির ক্রমবর্ধমানতা অব্যাহত আছে। ১৯৭০ এর দশক পর্যন্ত এটিকে একটি বড় সমস্যা হিসাবে অনুভূত হয় নি।পতিতাবৃত্তি নীতিকে "নিখুঁত অবহেলা" হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছিলো। ১৯৭৫ সালের তদন্ত (বেন-ইয়াটো) একে আইনসঙ্গত প্রস্তাব করেছিলো, কিন্তু এটি বাস্তবায়ন করা হয় নি।

১৯৯০ এর দশকে অন্যান্য দেশের মতো, নারী নির্যাতন, নারী পাচার একটি রাজনৈতিক বিষয় হয়ে ওঠে। ২০০৩ সালে, ইসরায়েল একটি আইন পাস করে, যা রাষ্ট্রকে পাচারের মুনাফা বাজেয়াপ্ত করার অনুমতি দেয়। কিন্তু নজরদারি গোষ্ঠী দাবি করে যে এটি খুব কমই কার্যকর।[২]

২০০৭ সালে একটি বিজ্ঞাপনকে নিষিদ্ধ করা হয়। এটি নিয়ে অনেক বিতর্ক শুরু হয়।[৩] ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ইসরায়েলের সংসদে একটি বিল উত্থাপন করা হয়, যা ছিলো যৌন সংশ্লিষ্ট ক্রয় বিষয়ক।[৪] ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আরেকটি খসড়া বিল মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেয়েছিলো।[৫][৬]

দণ্ডবিধি থাকা সত্ত্বেও, পতিতাবৃত্তি ব্যাপক বৈধতা লাভ করে এবং সামাজিক নিয়মকানুন পতিতাবৃত্তি এবং পাচারের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে।[৭]

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

যৌন বাণিজ্য থেকে ইসরায়েল প্রতি বছর ৫০০ মিলিয়ন ডলার রাজস্ব আয় করে থাকে।[৮]

অভিবাসন [সম্পাদনা]

ইসরায়েল অভিবাসীদের একটি দেশ। এখানে অধিবাসীদের একটি বড় অংশ ইউরোপ থেকে আসা, বিশেষতঃ রাশিয়ান। অভিবাসী মেয়েরা সহজেই পতিতাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ে তাদের অর্থনৈতিক কষ্টের কারণে। ১৯৯০ এর দশকে রাশিয়া থেকে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে যে ব্যাপকহারে অভিবাসী আসা শুরু হয়, তাদের মধ্যে পতিতাবৃত্তির হার অনেক বেশি। ২০০৫ সালের হিসেব অনুযায়ী ইসরায়েলে ১ হাজার রাশিয়ান মেয়ে পতিতাবৃত্তির সাথে জড়িত। তাদের বেশিরভাগকে মূলত তেল আবিব ও জেরুজালেমে দেখা যায়। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত, রাশিয়ান অভিবাসী দ্বারা পরিচালিত "ম্যাসেজ পার্লার্স" সংখ্যা ১৪ থেকে ১১১ পর্যন্ত বেড়েছে।[৯]

পাচার[সম্পাদনা]

মার্চ ২০০৫ সালের একটি সংসদীয় তদন্ত কমিটির মাধ্যমে প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, গত চার বছরে ৩০০০ থেকে ৫০০০ নারীকে ইসরায়েলে চোরাচালান করা হয়েছিল এবং তাদের পতিতা হিসেবে বিক্রি করা হয়েছে। বেশিরভাগ পতিতা ইউক্রেন, মোল্দাভিয়া, উজবেকিস্তান, চীনরাশিয়া থেকে এসেছিল এবং অনেককে মিসরের মাধ্যমে চোরাচালান করা হয়েছিল। [১০][১১]

২০০৭ সালে, নেসেট কমিটির তথ্য অনুযায়ী সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাচারকারী নারীর সংখ্যা ১০০০ থেকে কমে এসেছে।[১২] ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে "টিয়ার ২" হিসেবে উল্লেখ করে, যার অর্থ হচ্ছে এটি পাচার দূর করার জন্য সম্পূর্ণভাবে আইন মেনে চলছে না।[১৩]

মানব পাচারের টাস্ক ফোর্স দাবীদার এক প্রতিষ্ঠান বলে যে, প্রতি মাসে ইসরাইলি পুরুষরা ১ মিলিয়ন বার পতিতালয়ে গমন করে।[১৪]

রাজনীতি[সম্পাদনা]

বিভিন্ন গোষ্ঠী পতিতাবৃত্তি বৈধকরণ বা ক্রেতাদের অপরাধবোধকে সমর্থন করেছে। রক্ষনশীল ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলি ক্রমাগত অনৈতিকতার ভিত্তিতে পতিতাবৃত্তি বৈধকরণের বিরোধিতা করেছে।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Berg, Raffi (২০০৭-১১-০৬)। "Israel's fight against sex trafficking"। Jerusalem: BBC News। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০১-১৪ 
  2. "Israel's sex trade booming"। Tel Aviv: Yedioth Internet। ২০০৫-০৩-২৩। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০১-১৪ 
  3. "Selling Their Bodies and Their Souls - Haaretz - Israel News Haaretz.com"Haaretz.com। ২০০৭-০৭-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-০৪ 
  4. [১][অকার্যকর সংযোগ]
  5. "Should Israel Make Paying for Sex a Criminal Offense?"Huffingtonpost.com। ২০১২-০৪-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-০৪ 
  6. "Israel Cabinet Approves Bill That Criminalizes Soliciting Prostitution"Haaretz.com। ২০১২-০২-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-০৪ 
  7. "Encyclopedia of Prostitution and Sex Work"Books.google.co.uk। পৃষ্ঠা 419। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-০৪ 
  8. "Prostitution Revenue By Country"Havocscope.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-০৪ 
  9. Patrick Cockburn (১৯৯৫-০৯-২১)। "Sex slur enrages Russian Jews | World | News"। The Independent। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-০৪ 
  10. "Israel women trafficking soars"। BBC News। ২০০৫-০৩-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১১-২৬ 
  11. "Trafficking in Persons Report" (পিডিএফ)State.gov। জুন ২০০৯। ২০১৮-০৭-২৭ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-০৪ 
  12. Frenkel, Sheera Claire (২০০৭-১০-১৫)। "Israelis against punishing prostitutes"। The Jerusalem Post। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০১-১৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ][অকার্যকর সংযোগ]
  13. "Victims of Trafficking and Violence Protection Act of 2000: Trafficking in Persons Report 2007"। U.S. State Department। জুন ২০০৭। 
  14. "Archived copy"। আগস্ট ২১, ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ৭, ২০১০