বাহরাইনে পতিতাবৃত্তি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বাহরাইনে পতিতাবৃত্তি অবৈধ। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের দেশ গুলোর মধ্যে বাহরাইনে সবচেয়ে বেশি যৌন পর্যটকরা ভ্রমণ করতে যায়।[১][২][৩] বাহরাইন ইয়ুথ সোসাইটি ফর হিউম্যান রাইটস(Bahrain Youth Society for Human Rights ) ২০০৭ সালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে বলা হয় বাহরাইনে ১৩,৫০০ জন পতিতা রয়েছে এবং এই সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছেই।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

২০০৯ সালে আস্কমেন সাময়িকীর জরিপ অনুসারে সারা বিশ্বের ১০ টি পাপের শহর এর তালিকায় বাহরাইনের রাজধানী মানাম শহর ৮ম অবস্থানে ছিলো। এরপর পতিতাবৃত্তিকে শক্ত হাটে দমনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে প্রথম সপ্তাহেই ৩০০ জন পতিতা ও দালাল গ্রেফতার হয়।[৪] বাহরাইনে প্রতি বছর প্রায় ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের মাদক ব্যবসা হয়ে থাকে।[৪] প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর অনেক বিদেশী কর্মী, বিশেষত ইরাক, ইরান ও ভারত থেকে বাহরাইনে যায় পতিতাবৃত্তির জন্য। বাহরাইনে গুলবা ও মুহাররক নামে দুইটি এলাকা ছিলো পতিতাদের মূল আবাসস্থল। ১৯৩৭ সালে একটি ডিক্রি জারী করে বলা হয় এই এলাকায় আর পতিতারা বসবাস অথবা কাজ করতে পারবে না। ১৯৭০ এর দশকে বিভিন্ন হোটেল ও ভবনে পতিতারা যাতায়াত শুরু করে। ১৯৬১ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে বাহরাইন স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পর ব্রিটিশরা ভিসা ছাড়া বাহরাইনে ৩মাস থাকতে পারতো। এই সময় ব্রিটিশ পতিতারা বাহরাইনে প্রবেশ করতো ও ৩ মাস পতিতাবৃত্তি করার পর চলে যেতো। অনেকে আবার পর্যায়ক্রমে বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৩ মাস করে পতিতাবৃত্তি করতো। তবে ১৯৯৬ সালে এই ভিসা সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে ব্রিটিশ পতিতাদের পতিতাদের অবাধ যাতায়াত বন্ধ হয়।

১৯৮৬ সালের পর সৌদি আরববাহরাইনের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়। তখন অনেক সৌদি নাগরিক ছুটি কাটানোর জন্য বাহরাইনের আসতেন। তারা অনেক বিলাসীতা করতো। তাদের ঘিরে বাহরাইনে পতিতাবৃত্তির প্রসার ঘটতে থাকে। ৮০ ও ৯০ এর দশকে ফিলিপাইনশ্রীলঙ্কা থেকে বাহরাইনে পতিতা নিয়ে আসা হয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর প্রচুর রুশ মেয়ে পতিতা হিসেবে বাহরাইনে আসে, যেমনটি হয়েছিলো ১৯৯৬ সালে বসনিয়া থেকে নারীরা এসে পতিতাবৃত্তিতে যোগ দিতো।

পাচার[সম্পাদনা]

পতিতাবৃত্তির প্রসারের জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে নারী পাচারের লক্ষ্যস্থল হয়ে উঠে বাহরাইন। মূলত বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, নেপাল, মিশর, জর্ডান, ইয়েমেন, ফিলিপাইন ইত্যাদি দেশ থেকে নারী পাচার করে নিয়ে আসা হতো। ২০১৫ সালে বাহরাইন সরকার ১৭ জন পাচারকারীকে আটক করে। তাদের ১০ বছরের জেল, জরিমানা ও নির্বাসন দেওয়া হয়। ২০১৬ সালে ২জন রুশ মহিলাকে রাশিয়ায় নির্বাসন পাঠানো হয়, তারা পাচারের সাথে জড়িত ছিলো।

আইনি ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

বাহরাইনে পতিতাবৃত্তির অভিযোগে জেল, জরিমানাসহ মৃত্যুদন্ড পর্যন্ত দেওয়া হয়।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Trofimov, Yaroslav (২০০৯-০৬-০৯)। "Upon Sober Reflection, Bahrain Reconsiders the Wages of Sin"Wall Street Journal। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-২৫ 
  2. "Embassies mum as Bahrain curbs prostitution"Yahoo News। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-১৮ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. Ditmore, Melissa Hope (১ জানুয়ারি ২০০৬)। "Encyclopedia of Prostitution and Sex Work: A-N. Vol. 1"। Greenwood Publishing Group। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০১৭ – Google Books-এর মাধ্যমে। 
  4. 0। "Bahrain makes the list of Top 10 "Sin Cities""। ২০১৭-১২-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-০৬