ইরানে নারীর অধিকার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ইরানে ২০শ শতাব্দীর শেষের দিকে ও ২১ শতকের প্রথম দিকে, বেশিরভাগ উন্নত দেশের তুলনায় নারীর অধিকারসমূহকে কঠোরভাবে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ২০১৭ সালের গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট লিঙ্গ সমতার জন্য ১৪৪ টি দেশের মধ্যে ইরানকে ১৪০ তম স্থান দিয়েছে। ইরানে ২০১৭ সালে, নারীরা ১৯৯০ সালের পর থেকে সাত শতাংশ বৃদ্ধির সাথে বেতনভোগী কর্মীদের মাত্র ১৯% গঠন করে। [১] জর্জটাউন ইনস্টিটিউট ফর উইমেন, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি (ডব্লিউপিএস) সূচক ২০১৭ সালে ইরানকে ১৫৩ টি দেশের তালিকায় নীচের দিকে স্থান দিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় ইরানে নারীদের আর্থিক, শিক্ষা ও সেলফোনে আরও ভালো প্রবেশাধিকার রয়েছে। নারীদের প্রতি আইনি বৈষম্যের দিক থেকে ১৫৩ টি দেশের মধ্যে ইরানের অবস্থান ১১৬ ছিল।

ইরানে, নারীর অধিকার পরিবর্তিত হয়েছে সরকারের শাসন পদ্ধতি অনুযায়ী এবং নারীর স্বাধীনতা ও স্ব-সিদ্ধান্তের অধিকার সম্পর্কে মনোভাব ঘন ঘন পরিবর্তিত হয়েছে। [২] প্রতিটি সরকারের উত্থানের সাথে সাথে, নারীর অধিকারের জন্য একের পর এক ম্যান্ডেট ভোটাধিকার থেকে শুরু করে পোশাক-বিধি পর্যন্ত বিস্তৃত বিষয়কে প্রভাবিত করেছে।

বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিক থেকে, বিশেষ করে বিগত তিনটি সরকার ব্যবস্থায় ইরানি নারীদের অধিকার ও আইনগত অবস্থা পরিবর্তিত হয়েছে। কাজার রাজবংশের সময় নারীরা বিচ্ছিন্ন ছিল, যারা ১৮০০-এর দশকের শেষ থেকে ২০তম শতকের গোড়ার দিকে ইরান শাসন করেছিল; সেই সময়ে নারীরা রাজনীতিতে নিয়োজিত ছিল না এবং তাদের অর্থনৈতিক অবদান গৃহস্থালি কাজে সীমাবদ্ধ ছিল। ১৯২৫ সাল থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত দেশ শাসনকারী পাহলভী রাজবংশের সময় এই অবস্থার পরিবর্তন হয়; নারীরা অনেক বেশি স্বাধীনতা অর্জন করে। ইরানের আরও আধুনিক, ইউরোপীয় ধাঁচের দেশে পরিণত হওয়া জন্য নেতার ইচ্ছার মাধ্যমে নারীর অধিকার ও স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। যদিও এটি বেশিরভাগ জনসংখ্যাকে উপেক্ষা করে দেশের অভিজাতদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল।[৩] এই স্বাধীনতাগুলি ১৯৭৯ সালের ইরানি বিপ্লবের পরে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ২০১৫ সালে বলেছিল, "ইরানে নারীর অধিকার মারাত্মকভাবে সীমাবদ্ধ"। [৪]

নারীর বিরুদ্ধে অপরাধ[সম্পাদনা]

কিছু রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বছর শত শত ইরানি নারী অনার কিলিংয়ে নিহত হয়। [৫] ২০১৯ সালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "ইরানে যত হত্যার ঘটনা ঘটেছে তার প্রায় ৩০ শতাংশই ছিল নারী ও মেয়েদের অনার হত্যাকাণ্ড।" [৬]

ইরানে, কিছু গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে যে ইরাকি অভিবাসী ও কুর্দি সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলির মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় প্রকারের মহিলা যৌনাঙ্গ বিকৃতি (এফজিএম) ৪০% থেকে ৮৫% পর্যন্ত। [৭][৮][৯] ২০১৯ সালে, জাতিসংঘ ইরানের মানবাধিকার রেকর্ডের সমালোচনা করে এবং সেখানে মহিলাদের অধিকারের উন্নতির পরামর্শ দেয়। [১০]

একটি বইয়ের দোকানের মালিক কিভান ইমামভার্দি ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে ৩০০ নারীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন। [১১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "World Economic Forum"। ২০১৮-০৪-১৭। এপ্রিল ১৮, ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. Osanloo, Arzoo (২০০৯)। The Politics of Women's Rights in Iran। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 20আইএসবিএন 978-1-4008-3316-0জেস্টোর j.ctt7sqth 
  3. Osanloo, Arzoo (২০০৯)। The Politics of Women's Rights in Iran। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 21আইএসবিএন 978-1-4008-3316-0 
  4. Women’s Rights in Iran
  5. "How outrage over killing of Iranian girl is helping women's rights" 
  6. "A Daughter Is Beheaded, and Iran Asks if Women Have a Right to Safety" 
  7. "» Iran"। Stopfgmmideast.org। আগস্ট ৩০, ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১১-১৪ 
  8. Golnaz Esfandiari (2009-03-10). "Female Genital Mutilation Said To Be Widespread In Iraq's, Iran's Kurdistan". Radio Free Europe / Radio Liberty
  9. Saleem, R. A., Othman, N., Fattah, F. H., Hazim, L., & Adnan, B. (2013). Female Genital Mutilation in Iraqi Kurdistan: description and associated factors. Women & health, 53(6), 537–551
  10. "UN Panel Asks Iran To Protect Women, Minors And Improve Human Rights"। নভেম্বর ১২, ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৯ 
  11. In Iran, Aydin Aghdashloo Is Accused of Sexual Misconduct by 13 Women The New York Times, 2020