ইউটেকটিক ব্যবস্থা
ইউটেকটিক শব্দটি( /juːˈtɛktɪk/ yoo-TEK-tik ) [১] গ্রিক "εύ" (ইউ = ভালভাবে) এবং "τήξις" (tēxis = গলানো) শব্দ দুটি থেকে এসেছে। ইউটেকটিক ব্যবস্থা হল দুইটি পদার্থের সমসত্ত্ব মিশ্রণ যা একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় তরলে বা কঠিন অবস্থায় পরিণত হয় এবং এই তাপমাত্রাটি পদার্থ দুটির নিজেদের গলনাঙ্ক অপেক্ষা কম। [২] এই তাপমাত্রাটি ইউটেকটিক তাপমাত্রা হিসাবে পরিচিত এবং তা ঐ দুইটি পদার্থের অন্যান্য যেকোন সংযুতিতে মিশ্রণের গলনাঙ্ক অপেক্ষা কম। একটি ফেজ ডায়াগ্রামে, ইউটেকটিক তাপমাত্রাটি ইউটেকটিক বিন্দু হিসাবে দেখানো হয় (ডানদিকের চিত্র দেখুন)। [৩]
নন-ইউটেকটিক সংযুতিতে মিশ্রিত পদার্থের গলনাঙ্ক ভিন্ন উপাদানের উপর ভিত্তি করে ভিন্ন ভিন্ন হবে যেহেতু একটি পদার্থের ল্যাটিস অপর পদার্থের চেয়ে কম তাপমাত্রায় গলে যাবে। অপরদিকে যখন একটি নন-ইউটেকটিক মিশ্রণ ঠান্ডা হতে থাকে, মিশ্রণের প্রত্যেকটি উপাদান তাদের নিজেদের আলাদা আলাদা তাপমাত্রায় ঘনীভূত হয়ে আলাদা ল্যাটিস তৈরি করতে থাকে যতক্ষণ না পর্যন্ত পুরো পদার্থটি কঠিন অবস্থায় পরিণত হয়।
সমস্ত বাইনারি সংকর ধাতুর ইউটেকটিক বিন্দু থাকেনা যেহেতু উপাদানগুলির যোজনী ইলেকট্রন সর্বদা সকল অনুপাতে মিশ্রিত হয়ে নতুন ক্রিস্টাল ল্যাটিস তৈরি করার ক্ষেত্রে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়না[স্পষ্টকরণ প্রয়োজন] ।উদাহরণস্বরূপ, রূপা-সোনা সংকর ব্যবস্থায় গলনাঙ্ক ( তরলীকরণ রেখা ) এবং হিমাঙ্ক ( ঘনীভবন রেখা ) বিন্দু পারমাণবিক অনুপাত অক্ষের শেষ বিন্দুতে তথা খাঁটি মৌলের বিন্দুতে মিলিত হয় এবং সেই অক্ষের মিশ্রণ অঞ্চলে সামান্য আলাদা হয়ে যায়।[৪]
ইউটেকটিক শব্দটি ১৮৮৪ সালে ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী এবং রসায়নবিদ ফ্রেডরিক গুথ্রি (1833-1886) দ্বারা সূচিত হয়েছিল। [৫]
ইউটেকটিক দশা রূপান্তর
[সম্পাদনা]ইউটেকটিক ঘনীভবন নিম্নোক্ত উপায়ে নির্ধারিত করা হয় :[৬]
এ ধরনের বিক্রিয়ার স্বাধীনতার মাত্রা শূণ্য কারণ এরা তাপীয় সাম্যাবস্থায় থাকে তথা এদের গিবসের মুক্ত শক্তির পরিমাণ শূণ্য। স্পষ্টতই এ দ্বারা বোঝা যায় যে তরল অবস্থা এবং দুইটি ভিন্ন কঠিন দ্রবণ দশা এখানে একই সময়ে রাসায়নিক সাম্যাবস্থায় সহাবস্থান করে। দশার পরিবর্তনের সময়টুকু তে সিস্টেমের তাপমাত্রার কোন পরিবর্তন হয়না তথা এখানে তাপীয় আবদ্ধতা থাকে। [৬]
সংকর ধাতু সিরিজের কোন উপাদানের কঠিন দশার ক্রিস্টাল আগে রূপান্তরিত হবে তার উপর ভিত্তি করে ফেজ ডায়াগ্রামে তরলীকরণ বক্ররেখার অবস্থান নির্ধারন করা হয়। নিউক্লিয়াই গঠনের উপর ভিত্তি করে কোন ক্রিস্টালের কঠিন দশার বৃদ্ধি হবে এবং এর জন্য সময়ের প্রয়োজন হয়। সুতরাং, অসাম্যাবস্থায় শীতলীকরণ করা হলে তা তরল দশাকে পুরোপুরি শীতল করতে পারেনা যার ফলে ঘনীভবন তাপমাত্রার পরিবর্তন আসে। দুইটি দশারই যদি ঘনীভবন তাপমাত্রা একই পরিমাণে পরিবর্তন হয়, তখন দুটি উপাদানেরই তরলীকরণ বক্ররেখাটি ফেজ ডায়াগ্রামে সাম্যাবস্থার চেয়ে নিচে নেমে আসে এবং এদের ছেদবিন্দু, যা মূলত ইউটেকটিক বিন্দুর অবস্থান নির্দেশ করে তার তাপমাত্রাও কমে যায়। এভাবেই অসাম্য শীতলীকরণের মাধ্যমে ইউটেকটিক বিন্দুর অবস্থানের পরিবর্তন ঘটে। [৭]
ইউটেকটিক বিক্রিয়ার ফলে যে কঠিন দশা তৈরি হয় তার কাঠামো কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল কঠিন দ্রবণ দুটির উৎপত্তি এবং বৃদ্ধির প্রক্রিয়া। সবচেয়ে প্রচলিত কাঠামোটি হল ল্যামেলার কাঠামো। অন্যান্য সম্ভাব্য কাঠামো গুলোর মধ্যে রয়েছে দন্ডাকার, গোলাকার ও সূচালাকার কাঠামো। [৬]
নন-ইউটেকটিক সংযুতি
[সম্পাদনা]ইউটেকটিক সিস্টেমের যেসব কম্পোজিশন ইউটেকটিক কম্পোজিশন না, তাদেরকে হাইপোইউটেকটিক অথবা হাইপারিউটেকটিক নামে শ্রেনীবিভক্ত করা হয়। ইউটেকটিক কম্পোজিশনে (E) যে পরিমাণে α ও β প্রজাতি থাকে, হাইপোইউটেকটিকে তার চেয়ে কম পরিমাণে β ও বেশি পরিমাণে α থাকে যেখানে হাইপারইউটেকটিক দ্রবণ দ্বারা এমন কম্পোজিশন বোঝানো হয় যাতে ইউটেকটিক কম্পোজিশন অপেক্ষা বেশি পরিমাণে β ও অপেক্ষাকৃত কম পরিমাণে α থাকে। নন-ইউটেকটিক কম্পোজিশনের তাপমাত্রা কমানো হলে তরল মিশ্রণ থেকে একটি উপাদান অপরটির চেয়ে আগে অধঃক্ষিপ্ত হবে। একটি হাইপারইউটেকটিক দ্রবণে ঘনীভূত হওয়ার পরে β প্রজাতির উপাদানের প্রোইউটেকটয়েড দশা পাওয়া যাবে পক্ষান্তরে হাইপোইউটেকটিক দ্রবণে α প্রজাতির উপাদানের প্রোইউটেকটিক দশা পাওয়া যাবে।[৬]
প্রকারভেদ
[সম্পাদনা]সংকর ধাতু
[সম্পাদনা]ইউটেকটিক সংকরগুলোর মধ্যে দুই বা ততোধিক উপাদান রয়েছে এবং একটি নির্দিষ্ট ইউটেকটিক কম্পোজিশন রয়েছে। যখন একটি নন-ইউটেকটিক সংকর ঘনীভূত হয়, তখন এর উপাদানগুলো ভিন্ন ভিন্ন তাপমাত্রায় ঘনীভূত হয় যার কারণে এদের গলনাঙ্কের একটি পরিসর থাকে। বিপরীতক্রমে, যখন একটি সুমিশ্রিত ইউটেকটিক সংকর তরল হতে থাকে, এটির একটি সুনির্দিষ্ট গলনাঙ্ক থাকে। একটি নির্দিষ্ট সংকর ধাতুর কম্পোজিশনের ঘনীভবনের সময় যেসব ভিন্ন ধরনের দশা রূপান্তর হতে থাকে তা ওই সংকর ধাতুর ফেজ ডায়াগ্রামে ঐ কম্পোজিশনের তরল দশা থেকে কঠিন দশা পর্যন্ত একটি উল্লম্ব রেখা আঁকার মাধ্যমে বোঝা যায়।
ইউটেকটিক সংকর ধাতুর কিছু ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে:
- NEMA ইউটেকটিক সংকর ধাতুর ওভারলোড রিলে ব্যবহার করা হয় পাম্প, বৈস্যুতিক পাখা, কনভেয়র এবং অন্যান্য কারখানার যন্ত্রপাতির ত্রি-দশাযুক্ত মোটরের বৈদ্যুতিক সুরক্ষার জন্য। [৮]
- ঝালাই করার জন্য ইউটেকটিক সংকর ব্যবহার করা হয়। প্রচলিত সংকর যেমনঃ টিন (Sn) ও সীসার সংকর যার সাথে কখনো রৌপ্য (Ag) অথবা স্বর্ণ (Au) মিশ্রিত করা হয় - বিশেষত Sn63Pb37 একটি বৈদ্যুতির যন্ত্রের জন্য সংকর ধাতুর ফরমুলা, এবং নতুন ধরনের সীসাবিহীন ঝালাই করার সংকর ধাতু যা প্রধানত টিন (Sn), সিলভার (Ag) এবং তামা (Cu) দিয়ে তৈরি করা হয়।
- অ্যালুমিনিয়াম-সিলিকন ও ঢালাই লোহা (৪.৩% কার্বন কম্পোজিশন যেখানে অস্টেনাইট-সিমেন্টাইট ইউটেকটিক পাওয়া যায়) এমন ধরনের ঢালাই সংকর ধাতুসমূহ সাধারণত ইউটেকটিক সংকর।
- সিলিকন চিপগুলোকে, সিলিকন-সোনা ইউটেকটিক সংকরের মাধ্যমে এবং শ্রবণাতীত শব্দতরঙ্গের শক্তির প্রয়োগের দ্বারা সোনার প্রলেপযুক্ত স্তরের সাথে যুক্ত করা হয়। ইউটেকটিক বন্ধন দেখুন।
- ব্রেজিং, তথা ব্যাপনের মাধ্যমে কোন সংযোগস্থল থেকে সংকর উপাদান সরিয়ে ফেলার প্রক্রিয়ায় এর ব্যবহার রয়েছে যেখানে ইউটেকটিক গলন ব্রেজিং প্রক্রিয়ার প্রাথমিক অংশে সম্ভব হয়।
- তাপমাত্রা প্রতিক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয় যেমনঃ আগুন নিভানোর জন্য পানি ছড়ানো যন্ত্রের উডস ধাতু ও ফিল্ডস ধাতুর ক্ষেত্রে।
- গ্যালিনস্টানের মতো বিষাক্তহীন ধাতু যা পারদ কে প্রতিস্থাপন করতে পারে।
- পরীক্ষামূলক গ্লাসি ধাতু(ক্রিস্টাল কাঠামোবিহীন ধাতু) হিসেবে যার প্রচুর পরিমাণে শক্তি এবং ক্ষয়প্রতিরোধ ধর্ম রয়েছে।
- সোডিয়াম এবং পটাশিয়াম ( NaK ) এর ইউটেকটিক সংকর ধাতু যা কক্ষ তাপমাত্রায় তরল থাকে এবং এদেরকে শীতলীকারক হিসেবে পরীক্ষামূলক দ্রুতগতির নিউট্রন পারমাণবিক চুল্লীতে ব্যবহার করা হয়।
অন্যান্য
[সম্পাদনা]- সোডিয়াম ক্লোরাইড এবং পানির একটি ইউটেকটিক মিশ্রণ তৈরি হয় যার ইউটেকটিক বিন্দুর তাপমাত্রা -২১.২ ° সেলসিয়াস [৯] এবং ভরের ২৩.৩% লবণ থাকে। [১০] রাস্তা থেকে তুষারপাতের বরফ সরানোর সময় রাস্তায় লবণ ছিটিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে লবণ-পানির এই ইউটেকটিক ধর্মকে ব্যবহার করা হয়। আইসক্রিম তৈরির সময় বরফের সাথে লবণ মিশিয়েও এই ধর্মটির ব্যবহার করা হয়।
- ইথানল-পানি ব্যবস্থার একটি অস্বাভাবিক পক্ষপাতী ইউটেকটিক বিন্দু রয়েছে যেটি খাঁটি ইথানলের অনেক কাছাকাছি অবস্থান করে যার জন্যে সর্বোচ্চ প্রুফ পেতে হলে আংশিক ঘনীভবন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়।
- সৌর লবণঃ 60% NaNO3 এবং 40% KNO3 এর মিশ্রণ একটি ইউটেকটিক গলিত লবনের মিশ্রণ যা ঘনীভূত সৌরশক্তি উৎপাদন কেন্দ্রে তাপীয় শক্তি সংরক্ষনের জন্য ব্যবহার করা হয়। [১১] গলিত সৌর লবনের ইউটেকটিক গলনাঙ্ক কমানোর জন্য ক্যালসিয়াম নাইট্রেট নিম্নোক্ত অনুপাতে ব্যবহার করা হয়ঃ : 42% Ca (NO 3 ) 2, 43% KNO3, এবং 15% NaNO 3।
- লিডোকেইন এবং প্রিলোকেইন - উভয়ই কক্ষ তাপমাত্রায় কঠিন দশায় থাকে এবং একটি ইউটেকটিক মিশ্রনের তেল গঠন করে যার গলনাঙ্ক ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৬১ ডিগ্রী ফারেনহাইট) এবং এটি স্থানিক অনুভূতিনাশক (EMLA) তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
- মেন্থল এবং কর্পূর, উভয়ই কক্ষ তাপমাত্রায় কঠিন এবং এরা ৮: ২, ৭: ৩, ৬: ৪, এবং ৫: ৫ অনুপাতে একটি ইউটেকটিক গঠন করে যা কক্ষ তাপমাত্রায় তরল দশায় থাকে। একটি ইউটেকটিক গঠন করে যা নীচের অনুপাতে ঘরের তাপমাত্রায় তরল থাকে: 8: 2, 7: 3, 6: 4, এবং 5: 5। উভয় পদার্থই ফার্মাসি এক্সটেম্পোরেনিয়াস প্রস্তুতির প্রচলিত উপাদান। [১২]
- খনিজ পদার্থও ইউটেকটিক মিশ্রণ তৈরি করতে পারে যেমনঃ আগ্নেয় শিলা এবং এর বৈশিষ্ট্যগত অন্তঃর্বৃদ্ধি গঠনবিন্যাস।উদাহরণস্বরূপ, গ্র্যানোফাইর । [১৩]
- কিছু ধরনের কালি হ'ল ইউটেকটিক মিশ্রণ যার মাধ্যমে ইঙ্কজেট প্রিন্টারগুলি নিম্ন তাপমাত্রায় পরিচালনা করতে পারে। [১৪]
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
[সম্পাদনা]ইউটেকটয়েড
[সম্পাদনা]রূপান্তর বিন্দুর উপরের দ্রবণ যখন তরলের পরিবর্তে কঠিন দশায় থাকে, তখন ইউটেকটিক রূপান্তরের সাদৃশ্যপূর্ণ রূপান্তর ঘটতে পারে যা ইউটেকটয়েড রূপান্তর হিসেবে পরিচিত। উদাহরণস্বরূপ, লোহা-কার্বন ব্যবস্থার মধ্যে, অস্টেনাইট দশাটি ইউটেকটয়েড রূপান্তরের মাধ্যমে ফেরাইট এবং সিমেন্টাইট দশা দুইটির উৎপত্তি করতে পারে যা প্রায়ই পার্লাইট এবং বেনাইট এর মত ল্যামেলার কাঠামোর হয়ে থাকে। এই ইউটেকটয়েড বিন্দুটির তাপমাত্রা ৭২৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস(১৩৩৩ ডিগ্রী ফারেনহাইট) এবং এর কম্পোজিশনে প্রায় ০.৮% কার্বন থাকে। [১৫]
পেরিটেকটয়েড
[সম্পাদনা]পেরিটেকটয়েড রূপান্তর এক ধরনের সমোষ্ণ উভমুখী বিক্রিয়া যেখানে দুইটি কঠিন দশার পদার্থ একে অপরের সাথে বিক্রিয়া করে একটিমাত্র কঠিন দশায় পরিণত হয় বাইনারি, টার্নারি, ... -আরি সংকর এর তরল এর ঘনীভবনের মাধ্যমে। [১৬] বিভিন্ন সংকর ধাতুর কোয়াসিক্রিস্টালাইন দশার ডিকম্পোজিশন এবং সুনির্দিষ্ট কাঠামোর ক্ষেত্রে এই বিক্রিয়াটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।[১৭] ঘূর্নায়মান কলামার ক্রিস্টাল এর জন্যও অনুরূপ কাঠামোগত রূপান্তরের সম্ভাবনা রয়েছে।
পেরিটেকটিক
[সম্পাদনা]পেরিটেকটিক রূপান্তর সমূহ ইউটেকটিক রূপান্তরেরই অনুরূপ। এখানে,একটি নির্দিষ্ট অনুপাতের তরল ও কঠিন দশা পরস্পরের সাথে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বিক্রিয়া করে একটিমাত্র কঠিন দশায় পরিণত হয়। যেহেতু বিক্রিয়ক দুটির সংযোগস্তরে কঠিন দশা গঠিত হয়, সেহেতু এখানে একটি ব্যাপন বেষ্টনীর উৎপত্তি হতে পারে যা সাধারণত এমন বিক্রিয়ার গতি ইউটেকটিক বা ইউটেকটয়েড বিক্রিয়া অপেক্ষা অনেক কমিয়ে দেয়। এ কারণে, যখন পেরিটেকটিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে ঘনীভবন হয় তখন ল্যামেলার গঠন দৃশ্যমান হয়না যেমনটা ইউটেকটিক ঘনীভবনের সময় দেখা যায়।
এমন একটি রূপান্তর লোহা-কার্বন ব্যবস্থায় দেখা যায় যেমনটা চিত্রের উপরের বাম পাশে দেখা যাচ্ছে। এটিকে কিছুটা উলটো ইউটেকটিক এর মত দেখায় যা ১৪৯৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস(২৭২৩ ডিগ্রী ফারেনহাইট) তাপমাত্রা ও ০.১৭% কার্বন সংযুতিতে δ দশা ও তরল দশার বিক্রিয়ার মাধ্যেম অস্টেনাইট দশা তৈরি করে।
পেরিট্বকটিক বিক্রিয়ার তাপমাত্রায় যৌগটি গলনের বদলে একটি কঠিন দশা এবং একটি তরল দশায় রূপান্তরিত হয়। কোন দশা কি পরিমাণে উৎপন্ন হয়েছে তা লিভার নীতি দ্বারা নির্ধারণ করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, সোনা-অ্যালুমিনিয়াম ফেজ ডায়াগ্রামে দেখা যায় যে কেবলমাত্র দুটি দশা একইসাথে তরলে পরিণত হয়ঃ AuAl2 এবং Au2Al, যখন বাকি অংশটুকু পেরিটেকটিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে রূপান্তরিত হয়।
ইউটেকটিক গণনা
[সম্পাদনা]একটি ইউটেকটিকের প্রতিটি উপাদানের এনথালপি এবং গলনের এনট্রপির মাধ্যমে এর কম্পোজিশন এবং তাপমাত্রা গণনা করা যায়। [১৮]
গিবসের মুক্ত শক্তি এর নিজের অন্তরকের উপর নির্ভর করেঃ
সুতরাং, ধ্রুব চাপে গিবসের মুক্ত শক্তি/তাপমাত্রা (G/T) এর অন্তরককে নিম্নলিখিত সমীকরণ দ্বারা গণনা করা হয়ঃ
রাসায়নিক বিভব গণনা করা যায় যদি আমরা ধরে নিই যে রাসায়নিক সক্রিয়তা রাসায়নিক ঘনত্বের সমানঃ
সাম্যাবস্থায়, । সুতরাং এভাবে পাওয়া যায়ঃ
উপরোক্ব্যত সমীকরণ ব্যবহার করে [স্পষ্টকরণ প্রয়োজন] এবং সমাকলন করে পাওয়া যায়ঃ
একটি খাঁটি উপাদানের জন্য সমাকলন ধ্রুবক K নির্ধারিত করা যায় এবং এর গলনাঙ্ক ও গলনের এনথালপি হলেঃ
এখন আমরা একটি সম্পর্ক পাই যা প্রতিটি উপাদানের মোল ভগ্নাংশ কে তাপমাত্রায় ফাংশন হিসাবে প্রকাশ কোঁড়েঃ
n সংখ্যক উপাদানের মিশ্রণ সিস্টেম বর্ণিত করা হয়ঃ
যা কে সমাধান করা যায়ঃ
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- অ্যাজিওট্রোপ, বা সর্বদা ফুটন্ত দ্রবণ
- হিমাংক বিন্দুর নিম্নতা
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "eutectic"। মেরিয়াম-ওয়েবস্টার ডিকশনারি (ইংরেজি ভাষায়)।
- ↑ Guthrie, F. (১৮৮৪)। "On Eutexia": 462–482।
- ↑ Smith ও Hashemi 2006
- ↑ "Collection of Phase Diagrams"। www.crct.polymtl.ca।
- ↑ Guthrie, Frederick (1884) "On eutexia", Philosophical Magazine, 5th series, 17 : 462–482. From p. 462: "The main argument of the present communication hinges upon the existence of compound bodies, whose chief characteristic is the lowness of their temperatures of fusion. This property of the bodies may be called Eutexia †, the bodies possessing it eutectic bodies or eutectics (εύ τήκειν)."
- ↑ ক খ গ ঘ Smith ও Hashemi 2006.
- ↑ ASW Kurny। Fundamentals of Phase Diagram and Transformation।
- ↑ "Operation of the Overloads"। ২০১৫-০৭-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৮-০৫।
- ↑ Muldrew, Ken; Locksley E. McGann (১৯৯৭)। "Phase Diagrams"। Cryobiology—A Short Course। University of Calgary। ২০০৬-০৬-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৯।
- ↑ Senese, Fred (১৯৯৯)। "Does salt water expand as much as fresh water does when it freezes?"। Solutions: Frequently asked questions। Department of Chemistry, Frostburg State University। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৯।
- ↑ "Molten salts properties"। Archimede Solar Plant Specs। ২০ এপ্রিল ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০২১।
- ↑ Phaechamud, Thawatchai; Tuntarawongsa, Sarun (অক্টোবর ২০১৬)। "Evaporation Behavior and Characterization of Eutectic Solvent and Ibuprofen Eutectic Solution": 1213–1220। আইএসএসএন 1530-9932। ডিওআই:10.1208/s12249-015-0459-x । পিএমআইডি 26669887।
- ↑ Fichter, Lynn S. (২০০০)। "Igneous Phase Diagrams"। Igneous Rocks। James Madison University। ২০১১-০৬-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৯।
- ↑ Davies, Nicholas A.; Beatrice M. Nicholas (১৯৯২)। "Eutectic compositions for hot melt jet inks"। US Patent & Trademark Office, Patent Full Text and Image Database। United States Patent and Trademark Office। ২০১৭-০৫-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-২৯।
- ↑ "Iron-Iron Carbide Phase Diagram Example"। ২০০৮-০২-১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ IUPAC Compendium of Chemical Terminology, Electronic version. "Peritectoid Reaction" Retrieved May 22, 2007.
- ↑ Numerical Model of Peritectoid Transformation. Peritectoid Transformation Retrieved May 22, 2007. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত সেপ্টেম্বর ২৮, ২০০৭ তারিখে
- ↑ International Journal of Modern Physics C, Vol. 15, No. 5. (2004), pp. 675–687.
গ্রন্থাগার
[সম্পাদনা]- Smith, William F.; Hashemi, Javad (২০০৬), Foundations of Materials Science and Engineering (4th সংস্করণ), McGraw-Hill, আইএসবিএন 978-0-07-295358-9.
আরও পড়া
[সম্পাদনা]- Askeland, Donald R.; Pradeep P. Phule (২০০৫)। The Science and Engineering of Materials। Thomson-Engineering। আইএসবিএন 978-0-534-55396-8।
- Easterling, Edward (১৯৯২)। Phase Transformations in Metals and Alloys। CRC। আইএসবিএন 978-0-7487-5741-1।
- Mortimer, Robert G. (২০০০)। Physical Chemistry। Academic Press। আইএসবিএন 978-0-12-508345-4।
- Reed-Hill, R. E.; Reza Abbaschian (১৯৯২)। Physical Metallurgy Principles। Thomson-Engineering। আইএসবিএন 978-0-534-92173-6।
- Sadoway, Donald (২০০৪)। "Phase Equilibria and Phase Diagrams" (পিডিএফ)। 3.091 Introduction to Solid State Chemistry, Fall 2004। MIT Open Courseware। ২০০৫-১০-২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-০৪-১২।