আল-আসকারী মাজার

স্থানাঙ্ক: ৩৪°১১′৫৬″ উত্তর ৪৩°৫২′২৫″ পূর্ব / ৩৪.১৯৮৯° উত্তর ৪৩.৮৭৩৫° পূর্ব / 34.1989; 43.8735
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আল-আসকারী মাজার
আরবি: مَرْقَد ٱلْإِمَامَيْن عَلِيّ ٱلْهَادِي وَٱلْحَسَن ٱلْعَسْكَرِيّ
Marqad al-ʾImāmayn ʿAlī al-Hādī wal-Ḥasan al-ʿAskarī
২০২১ সালে আল-আসকারী মসজিদ
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিশিয়া ইসলাম
ধর্মীয় অনুষ্ঠানইসনা আশারিয়া
যাজকীয় বা
সাংগঠনিক অবস্থা
মসজিদ এবং মাজার
অবস্থাচালু
অবস্থান
অবস্থানসামাররা, ইরাক
আল-আসকারী মাজার ইরাক-এ অবস্থিত
আল-আসকারী মাজার
ইরাকে অবস্থিত
স্থানাঙ্ক৩৪°১১′৫৬″ উত্তর ৪৩°৫২′২৫″ পূর্ব / ৩৪.১৯৮৯° উত্তর ৪৩.৮৭৩৫° পূর্ব / 34.1989; 43.8735
স্থাপত্য
সম্পূর্ণ হয়৯৪৪ খ্রিস্টাব্দ
ধ্বংস
বিনির্দেশ
গম্বুজসমূহ
গম্বুজের উচ্চতা (বাহিরে)৬৮ মিটার (২২৩ ফু)
গম্বুজের ব্যাস (বাহিরে)২০ মিটার (৬৬ ফু)
মিনার
মিনারের উচ্চতা৩৬ মিটার (১১৮ ফু)
মোচাকার চূড়া(ধ্বংস)
মঠ

আল-আসকারী মাজার, আসকারীয়া মাজার, বা আল-আসকারী মসজিদ নামে পরিচিত।[ক] এটি বাগদাদ থেকে ১২৫ কিলোমিটার (৭৮ মাইল) দূরে ইরাকের সামাররা শহরে অবস্থিত একটি শিয়া মসজিদ এবং সমাধিসৌধ। এটি বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিয়া মাজার। এটি ৯৪৪ সালে নির্মাণ করা হয়েছিলো।[১] ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুন্নি চরমপন্থীদের বোমা হামলায় মসজিদের গম্বুজটি ধ্বংস হয়ে যায় এবং ২০০৭ সালের জুনে আরেকটি বোমা হামলায় এর অবশিষ্ট দুটি মিনার ধ্বংস হয়ে যায়, যার ফলে শিয়াদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয় এবং দেশটির শিয়াসুন্নিদের মধ্যে ইরাকি গৃহযুদ্ধ হতে থাকে। এমনকি সেখানে যে ক্লক টাওয়ারটি ছিলো সেটিও ২০০৭ সালের জুলাই মাসে ধ্বংস হয়ে যায়।[২] পরবর্তীতে গম্বুজ এবং মিনারগুলি মেরামত করা হয়েছিল এবং ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে মসজিদটি পুনরায় চালু করা হয়েছিলো।[৩]

দশম ও একাদশ শিয়া ইমাম আলী আল-হাদী ("আন-নাকি") এবং তাঁর পুত্র হাসান আল-আসকারী, যিনি আল-আসকারীয়ান ("দুই আসকারী") নামে পরিচিত, এবং তাদেরকে এ মসজিদে দাফন করা হয়েছে।[৪] এমনকি আলী আল-হাদীর বোন হাকিমা খাতুনহাসান আল-আসকারীর স্ত্রী নার্জিস খাতুনকে এ মসজিদে দাফন করা হয়েছে।[৫]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

সামাররা শহরের যে জায়গাটি খলিফা আল-মুতাসিমের সামরিক শিবির ছিলো, সেখানে ইমাম আলী আল-হাদী ("আন-নাকি") এবং হাসান আল-আসকারী গৃহবন্দী অবস্থায় থাকতেন। তারা সেখানে মারা যান এবং তাদেরকে তাদের বাড়ির আবি আহমদ সড়কের পাশে দাফন করা হয় এবং সেখানে আল-আসকারী মসজিদটি নির্মাণ করা হয়, যেটি আল-মুতাসিম নির্মাণ করেছিলেন।

নাসের আল-দীন শাহ কাজর ১৮৬৮ সালে মাজারটির সর্বশেষ পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন, এবং সেখানে ১৯০৫ সালে একটি সোনার গম্বুজ নির্মাণ করা হয়েছিলো। ৭২ হাজার সোনার টুকরা দিয়ে তৈরি এবং হালকা নীল টাইলসের দেয়াল দিয়ে ঘেরা গম্বুজটি সামাররা শহরের আকাশপথের একটি প্রভাবশালী বৈশিষ্ট্য ছিলো। গম্বুজটি প্রায় ২০ মিটার (৬৬ ফুট) ব্যাস এবং ৬৮ মিটার (২২৩ ফুট) উঁচু ছিল।

বোমা হামলা[সম্পাদনা]

২০০৬ সালে আক্রমণ[সম্পাদনা]

২০০৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় সকাল ৬:৫৫ মিনিটে (০৩:৫৫ ইউটিসি) মাজারে বিস্ফোরণ ঘটে, যার ফলে সোনার গম্বুজটি ধ্বংস হয়ে যায় এবং মাজারটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। জানা যায় যে, ঐদিন আল-কায়েদার সাথে সম্পর্কিত ইরাকি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ও একজন ব্যক্তি সামরিক পোশাক পরে মসজিদে প্রবেশ করেছিলো এবং সেখানে নিরাপত্তা রক্ষীদের বেঁধে রেখেছিলো এবং বিস্ফোরক স্থাপন করেছিল, যার ফলে বিস্ফোরণ ঘটে।[৬][৭] আবার কেউ কেউ বলেন, ঐদিন ইরাকি বিশেষ বাহিনী কর্মীদের পোশাক পরা পাঁচ থেকে সাতজন ব্যক্তি সকালে মাজারে প্রবেশ করে এবং দুটি বিস্ফোরক স্থাপন করেছিলো, যার ফলে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে।[৮][৯][১০][১১]

টাইম (পত্রিকা) ২০০৬ সালে বোমা হামলার সময় রিপোর্ট করেছিল যে:

আল-আসকারী হলো শিয়াদের পবিত্রতম স্থানগুলির মধ্যে একটি। এমনকি সামাররা শহরের সুন্নিরাও আল-আসকারীকে উচ্চ সম্মানে দেখেন।

[১২]

২০০৭ সালে আক্রমণ[সম্পাদনা]

২০০৭ সালের ১৩ জুন সকাল ৮টার দিকে, ইরাকের আল-কায়েদার সদস্যরা গম্বুজের ধ্বংসাবশেষের পাশে থাকা অবশিষ্ট ৩৬ মিটার উঁচু (১১৮ ফুট) সোনার মিনারটি ধ্বংস করে দেয়। এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ইরাকি পুলিশ জানিয়েছে, সকাল ৮টার দিকে মসজিদের ভেতর থেকে প্রায় একই সঙ্গে দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।[১৩] ইরাকের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, মিনার দুটি লক্ষ্য করে দুটি মর্টার হামলা চালানো হয়েছে।[১৩]

পুনরায় চালু[সম্পাদনা]

২০০৭ সালের শেষের দিকে, ইরাকি সরকার মাজারটি পুনর্নির্মাণের জন্য একটি তুর্কি সংস্থার সাথে একটি চুক্তি পরিচালনা করে। পরে তুর্কি সংস্থার কোনো সাড়া না পাওয়ায় ইরাকি সরকার চুক্তি বাতিল করে।[৩] ২০০৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত, সোনার গম্বুজ এবং মিনারগুলি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে এবং মাজারটি দর্শনার্থীদের জন্য পুনরায় চালু করা হয়েছে।[৩]

উল্লেখযোগ্য সমাধি[সম্পাদনা]

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

মন্তব্য[সম্পাদনা]

  1. আরবি: مَرْقَد ٱلْإِمَامَيْن عَلِيّ ٱلْهَادِي وَٱلْحَسَن ٱلْعَسْكَرِيّ, Marqad al-ʾImāmayn ʿAlī al-Hādī wal-Ḥasan al-ʿAskarī, যার অর্থ "দুই ইমাম আলী আল-হাদী এবং হাসান আল-আসকারীর বিশ্রামের স্থান"

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. নাইট, স্যাম (২২ ফেব্রুয়ারি ২০০৬)। "আল-আসকারিয়া মাজার: 'শুধু একটি প্রধান ক্যাথেড্রাল নয়'"দ্য টাইমস। লন্ডন। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ 
  2. "ইরাকে বিস্ফোরণে শিয়া মাজারের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে"। বিবিসি নিউজ। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০০৬। 
  3. "ইরাকিরা আল-আসকারী মসজিদ পুনঃনির্মাণ করছে"। আল জাজিরা। 
  4. "ইমাম আলী আল-নাকী ও ইমাম হাসান আল-আসকারীর মাজারের ইতিহাস, তাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক"। al-Islam.org। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ 
  5. "ইমাম আল-হাদী ও ইমাম আল-আসকারীর মাজার"। আর্চনেট ডিজিটাল লাইব্রেরি। ৪ মার্চ ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  6. "বিস্ফোরণে শিয়া মাজারের সোনালী গম্বুজ ধ্বংস"আয়ারল্যান্ড অনলাইন। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ 
  7. "ইরাকে শিয়া সমাধিতে বোমা হামলা"আইবিএন লাইভ। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ 
  8. নিকমায়ার, এলেন (২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৬)। "ইরাকে মসজিদে বোমা হামলা"দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ 
  9. "বিস্ফোরণে ইরাকের মাজারের সোনার গম্বুজ ধ্বংস হয়ে গেছে"হিন্দুস্তান টাইমস। ৬ মার্চ ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ 
  10. নাইট, স্যাম (২২ ফেব্রুয়ারি ২০০৬)। "শিয়া মাজারে বোমা হামলা, প্রতিশোধের ঢেউ"দ্য টাইমস। লন্ডন। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ 
  11. "ইরাকে মাজারে বোমা হামলা, সাম্প্রদায়িক প্রতিহিংসার ঢেউ"। সিবিসি নিউজ। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ 
  12. ""চোখের বদলে চোখ""। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৬। ১৪ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  13. গ্রাহাম বাউলি (১৩ জুন ২০০৭)। "ইরাকে শিয়া মাজারে হামলায় মিনার ধ্বংস"দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস 

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]