আলি আঃয়ে লৃগাং

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আলি আঃয়ে লৃগাং উৎসবে নৃত্যরতা মিশিং মহিলারা

আলি আঃয়ে লৃগাং অসমের মিছিং বা মিরি জনজাতির বসন্ত ঋতুতে পালন করা উৎসব। ফাল্গুনৰ প্ৰথম বুধবারে এই উৎসব পালন করা হয়।[১][২] ইহার অপর নাম শস্য বা কঠিয়া সিঁচার আরম্ভনি উৎসব। প্রথম অবস্থায় এই উৎসব ফাল্গুন, চৈত্র ও বৈশাখ মাসের প্রথম বুধবারে পালন করা হতো, যদিও ১৯৫৫ সাল থেকে এই উৎসব ফাল্গুন মাসের প্রথম বুধবার থেকে পালিত হয়ে আসছে। মিসিং ভাষায় আলি অর্থ শস্য, আঃয়ে অর্থ ফল, লৃগাং অর্থ রোপণ করা।[৩][৪] শস্য রোপণ করার পর পুরুয়-মহিলা, বয়স্ক, বৃদ্ধেরা সমবেত হয়ে ভোজন করে ও নানান নৃত্য পরিবেশন করনে।

বিশ্বাস[সম্পাদনা]

মিসিং লোকবিশ্বাস মতে দেবতাদের সন্তুষ্ট নাকরলে পৃথিবীতে বৃষ্টি হয়না, আর বৃষ্টি না হলে শস্য উৎপাদন হবেনা। তাই দেবতাদের নাচ-গানের মাধ্যমে প্রসন্ন করাতে হয় ।

উৎসবের বিবরণ[সম্পাদনা]

উৎসবের প্রায় তিন সপ্তাহ আগের থেকে মিসিং মহিলারা আপং নামক সুরা বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী জোগাড় করতে থাকেন। মিসিং মেয়েরা হস্তশিল্পে নানান মনোহর প্রাকৃতিক চিত্র বিশিষ্ট মসাং, এগ, রি বি গাছেম, গেরঃ দুমরি বা মনর ইত্যাদি তৈরী করে নিজেদেরকে উপহার দেন। গৃহিণীরা প্রাতঃকালে উঠে উঠান, ঘর পরিষ্কার করেন ও নদী-খাল,বিল থেকে মাছ ধরেন। মিসিং মেয়ে ও মহিলারা ভাত দিয়ে পোরো আপং ও নগীন আপং নামক সুরা প্রস্তুত করেন। তারা জলে চাল সিদ্ধ করে পাতায় মুড়ে পুরাং আপিন নামক এক বিশেষ ধরনের খাবার প্রস্তুৎ করেন। ঘরের অভিভাবকের উপস্থিতিতে অন্যান্য সদস্যেরা ধানখেতে ধানের বীজ রোপণ করেন। চাঁরটি মেডেলা গাছের ডাল খেতের চারদিকে গর্ত খুঁড়ে উলম্ব অবস্থায় রাখা হয়।[৫] সাদা সুতা দিয়ে মেডেলা গাছের পাতা একত্রিত করে বেঁধে আপং ঢালা হয় ও প্রার্থনা করা হয়।[৬] এই অনুষ্ঠান প্রতিটি মিসিং পরিবারে পালন করা হয় । খেত থেকে এসে সবাই ভোজন করেন। সন্ধ্যাকালে "গুমরাগ" নৃত্যে সবাই অংশগ্রহণ করেন। এই নৃত্য গ্রামের পূর্বপ্রান্তের বাড়ি থেকে শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে নদীর তীর পর্যন্ত করা হয়। এই নাচ প্রতিটি বাড়ির উঠোনে চক্রাকারে ঘুরে ঘুরে করা হয়। এই উৎসবের গানে মানুষের প্রেম, দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা ও প্রতিদিনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা উঠে আসে।[৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. February 16, 2011 (২০১১-০২-১৬)। "Today is Ali Ai Ligang Festival for Misings in Assam"। Northeastblog.in। ২০১৪-০৩-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-১০ 
  2. "Welcome to Assam Tourism Official website of Deptt. of Tourism, Assam, India"। Assamtourism.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-১০ 
  3. "Ali-ai-Ligang being celebrated in Assam"। Zeenews.india.com। ২০১১-০২-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-১০ 
  4. "Festivals of Mishing Tribes of Assam"। Vedanti.com। ২০১১-০১-২০। ২০১৪-০৩-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-১০ 
  5. "Ali-ai-Ligang being celebrated in Assam - Oneindia News"। News.oneindia.in। ২০১১-০২-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-১০ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. আলি-আয়ে-লৃগাের, লেখক - বিজু বরি, দৈনিক জনমভূমি, সংগ্রের সময়- ১৫ ফেব্রুৱারী ২০১২
  7. "Ali- ai- Ligang: The Festival of the Miris"। Informationkhazana.com। ২০১২-০৫-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-১০ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]