আরকানে আরবাআ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আরকানে আরবাআ
বাংলা সংস্করণের প্রচ্ছদ
লেখকআবুল হাসান আলী হাসানী নদভী
মূল শিরোনামউর্দু: ارکان اربعہ‎‎
অনুবাদকআবু তাহের মিসবাহ
দেশভারত
ভাষাআরবি
বিষয়ইসলামের পঞ্চস্তম্ভ
প্রকাশিত১৯৬৭
প্রকাশকমাকতাবা দারুল কলম কুয়েত; মজলিসে তাহকিকাত ওয়া নাশরিয়াতে ইসলাম
মিডিয়া ধরনশক্তমলাট
পৃষ্ঠাসংখ্যা৩৮৮
আইএসবিএন৯৭৮-৯৮৪-৯১৮৪১-২-৬ বাংলা সংস্করণ
ওসিএলসি৭০০৬০০
এলসি শ্রেণীবিপি১৭৬ .এন৩২১৩ ১৯৮৮
ওয়েবসাইটabulhasanalinadwi.org

আরকানে আরবাআ (উর্দু: ارکان اربعہ‎‎) ভারতীয় দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত আবুল হাসান আলী হাসানী নদভীর আরবি ভাষায় রচিত একটি বই।[১] এই বইয়ে ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের ৪টি রোকন, যথা: নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এতে রোকনগুলোর লক্ষ্য, গূঢ়তত্ত্ব ও কার্যকারিতা বর্ণনার পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মে এই ইবাদাতগুলো কোনভাবে পাওয়া যায়, সেগুলো ও ইসলামের এই রোকনগুলোর মাঝে আকার, গঠন ও কার্যকারিতায় পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে।[২]

প্রেক্ষাপট[সম্পাদনা]

নদভী অসুস্থ হয়ে সীতাপুর হাসপাতালে অবস্থানকালীন বইটি লেখার প্রেরণা লাভ করেন। নামায, রোজা, হজ্জ ও যাকাত, ইসলামের এই মৌলিক ইবাদতগুলোর আত্মা, তাৎপর্য, স্বরূপ, উপকারিতা ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বোঝা ও বর্ণনার ক্ষেত্রে তৎকালীন লেখক সম্প্রদায়ের মাঝে একধরনের বিশৃঙ্খলা পরিলক্ষিত হচ্ছিল। অত্যন্ত লৌকিকতার সঙ্গে এই রোকনগুলোকে সমকালের দার্শনিক, রাজনীতি ও অর্থনীতিবিদগণের চিন্তা-চেতনা ও পরিভাষার অনুগামী বানানোর একটা প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছিল। ফলে নদভীর মনে শঙ্কা জাগল, এই বিশেষ চিন্তাধারায় প্রভাবিত হয়ে পাঠকগণ দ্বীনের এই মৌলিক রোকনগুলোর আসল রূপ ও সেগুলোর প্রকৃত শক্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়বে এবং সেগুলোর লক্ষ্য-উদ্দেশ্য থেকে হাত ধুয়ে বসবে। আধুনিক বস্তুগত ব্যাখ্যায় প্রভাবিত হয়ে যদি ঈমান ও ইহুতিসাবের মর্মই মানুষের মন-মস্তিষ্ক থেকে বেরিয়ে যায় এবং ইবাদাত ও ইখলাসের আত্মার ওপর বস্তুগত চিন্তাধারা বিজয়ী হয়ে যায়, তাহলে এটি উম্মাহর জন্য বিরাট এক ঝুঁকি ও গভীর এক তাত্ত্বিক বিকৃতি বলে বিবেচিত হবে।

এর পূর্বে এই বিষয়ে তিনি সাঈদ রমজানের অনুরোধে হজ্জের লক্ষ্য ও তাৎপর্য বিষয়ে একটি ধারাবাহিক নিবন্ধ রচনা করেছিলেন, যেটি তিন কিস্তিতে তিন বছরে হজ্জের সময় আল মুসলিমুন পত্রিকা প্রকাশ করেছে এবং সৌদি রেডিও স্টেশন থেকে কয়েকবার প্রচারিত হয়েছে। শিক্ষিত যুবসমাজ ও সচেতন শিক্ষিতসমাজের কাছে এই নিবন্ধটি সমাদৃত হয়েছে। এই নিবন্ধে এমন একটি নতুন রচনাশৈলি পরিলক্ষিত হয়, যেটি বর্তমান আরবি রচনারীতি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। হজ্জ ছাড়া দু বছর আল মুসলিমুনের ফরমায়েশে রোজা ও তার তাৎপর্য বিষয়ে নদভীর আরও দুটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল।[৩]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

নদভী ১৯৬৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পান। ৮ এপ্রিল তিনি গ্রন্থটি রচনার কাজ শুরু করেন। নদভী মুখে বলতেন আর নেছারুল হক নদভী তা হাতে লিখত। ১৯৬৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি গ্রন্থটির রচনার কাজ সমাপ্ত হয়। মাকতাবা দারুল কলম কুয়েত থেকে ১৯৬৭ সালে এর প্রথম সংস্করণটি প্রকাশিত হয় এবং একই বছর এই সংস্করণটি নিঃশেষ হয়ে গেলে ১৯৬৮ সালে এর দ্বিতীয় মুদ্রণ প্রকাশিত হয়। দারুল মুসান্নিফীন শিবলী একাডেমির ব্যবস্থাপক শাহ মুঈনুদ্দীন আহমদ নদভী আরবি সংস্করণের ওপর একটি পর্যালোচনা লিখেন।[৩]

উৎস[সম্পাদনা]

গ্রন্থটির প্রধান উৎস কুরআন। হাদিসের জন্য নির্ভর করা হয়েছে জাউল ফাওয়ায়েদমাজমাউল ফাওয়ায়েদ- এর সেই অধ্যায়গুলোর ওপর, যেগুলোতে এই রোকনগুলোর ফজিলত, লক্ষ্য ও উপকারিতা বর্ণিত হয়েছে। তারপরে সবচেয়ে বেশি সাহায্য গ্রহণ করা হয়েছে শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভীর হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা থেকে। এছাড়া অন্যান্য উৎসের মধ্যে ইয়াহিয়া উলুমুদ্দীন, যাদুল মাআদ উল্লেখযোগ্য।[৩]

অনুবাদ[সম্পাদনা]

মুহাম্মাদ মিয়া গ্রন্থটির উর্দু অনুবাদ করেন যা ১৯৬৯ সালে মজলিসে তাহকিকাত ওয়া নাশরিয়াতে ইসলাম থেকে প্রকাশিত হয়। এই উর্দু সংস্করণে বুরহান-এর সম্পাদক সাইদ আহমদ আকবরাবাদীযিন্দেগীর সম্পাদক সাইয়িদ আহমাদ আরুজ কাদেরী পর্যালোচনা লিখেছেন। তারপর অল্প সময়ের মধ্যে এর ইংরেজি ও তুর্কি অনুবাদও প্রকাশিত হয়। Four Pillars of Islam নামে মুহাম্মাদ আসিফ এর ইংরেজি অনুবাদ করেন। তুর্কি অনুবাদটি কেনিয়ার নাশরিয়াতে ইসলামের পক্ষ থেকে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটির বঙ্গানুবাদ করেন আবু তাহের মিসবাহ[৩]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

উদ্ধৃতি[সম্পাদনা]

  1. আহমেদ, আব্দুস সগির (২০১২)। Contribution Of Abul Hasan Ali Nadwi To The Development Of Arabic Childrens Literature A Study [আরবি শিশু সাহিত্যের বিকাশে আবুল হাসান আলী নদভীর অবদান একটি অধ্যয়ন] (গবেষণাপত্র)। ভারত: আরবি বিভাগ, গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ১৫৯। hdl:10603/382062 
  2. নদভী, মুহসিন উসমান (২০০২)। মুতালায়ে তাসানিফাত মুফাক্কিরে ইসলাম আবুল হাসান আলী নদভী [আবুল হাসান আলী নদভীর রচনাবলির গবেষণা] (উর্দু ভাষায়)। ভারত: আরশি পাবলিকেশন্স। পৃষ্ঠা ১৬৪–১৭৮। 
  3. নদভী, আবুল হাসান আলী (২০১৫)। কারওয়ানে যিন্দেগী। বাংলাবাজার, ঢাকা: মুহাম্মদ ব্রাদার্স। পৃষ্ঠা ২৫–৩০। আইএসবিএন 978-984-91840-1-0 

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]