আবু লুবাবাহ আল-আনসারি রা.

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আবু লুবাবাহ আনসারি
জন্ম১০০০ ইয়াসরিব
মৃত্যু
আফ্রিকা
পেশামুহাদ্দিস
পিতা-মাতা
  • আব্দুল মুনজির বিন রিফাহ বিন জানবর বিন উমাইয়া বিন জায়েদ (পিতা)
  • নুসাইবা বিনতে জায়েদ বিন সুবাইয়াহ বিন জায়েদ (মাতা)
পরিবারমুবাশ্বির বিন আব্দুল মুনজির ও রিফাহ বিন আব্দুল মুনজির (ভাই)
সম্মাননাসাহাবি

আবু লুবাবা বিন আব্দুল মুনজির একজন আনসার সাহাবি ছিলেন আউস গোত্রের বনি উমাইয়া বিন জায়েদ থেকে । নবি মুহাম্মদ স. তাকে বদর ও সুওয়াইকের যুদ্ধে মদীনার খলিফা হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা তার সাথে সাক্ষী দিয়েছিলেন। কেউ কেউ বলেছেন, তিনি তাবুক যুদ্ধে পিছে পড়ে যাওয়ায় লজ্জিত হয়েছিলেন এবং তিনি নিজেকে মসজিদে নববির খুঁটির সাথে কয়েকদিন বেঁধে রেখেছিলেন নবি মুহাম্মদ স.নিজ হাতে তার বাঁধন খুলে না দেয়া পর্যন্ত। আর আলী বিন আবি তালিবের খিলাফতে আবু লুবাবা মারা যান।

জীবনী[সম্পাদনা]

[১] ইতিহাসবিদগণ ও পন্ডিতগণ আবু লুবাবা'র নামে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তাকে রিফাহ বিন আব্দুল মুনজিরের সাথে বিভ্রান্ত করেছেন। তাই ইবনে ইসহাক, আহমদ বিন হাম্বল, ইয়াহয়া বিন মুইন, আবু জারাহ আর-রাজি, মুসলিম বিন হাজ্জাজ বলেছেন যে, আবু লুবাবাহ হলেন রিফাহ। [২] মুসা বিন উকবা, ইবনে হিশাম, খলিফা বিন খয়্যাত, ইবনে হিশাম আজ-জুহরি বলেছেন, তার নাম বাশির। যারা দাবি করেন যে, তিনি রিফাহ ছিলেন তাদের কথা হল, যারা দ্বিতীয় আকাবার বাইয়াত প্রত্যক্ষ করেছিলেন তিনি তাদের মধ্যে হতে একজন ছিলেন। আর কেউ কেউ বলেছেন যে, তিনি বারো জন অধিনায়কের একজন ছিলেন।

[৩] যখন মুসলমানেরা বদরেরদিনে কুরাইশদের সাথে দেখা করতে বেরিয়েছিল, তখন নবি মুহাম্মদ স. আবু লুবাবাকে তার অনুপস্থিতিতে মদিনার আমির নিযুক্ত করেছিলেন এবং যুদ্ধের পরে তাকে একটি তীর দিয়ে আঘাত করেছিলেন যেন তিনি যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের মতই একজ ছিলেনন। যেমনিভাবে নবি মুহাম্মদ স. মদিনার খলিফা নিযুক্ত করেছিলেন যখন তনি সুওয়াইকের যুদ্ধে গিয়েছিলেন।

[৪]অতঃপর আবু লুবাবাহ নবি মুহাম্মদ স. এর সাথে তার বিজয়ের সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। কেউ কেউ বলেছেন যে, তিনি তাবুকের যুদ্ধে পিছে পড়ে গিয়েছিলেন এবং এতে লজ্জিত হয়েছিলেন। তাই তিনি নিজেকে মসজিদে নববির খুঁটির সাথে কয়েকদিন বেঁধে রেখেছিলেন নবি মুহাম্মদ স. নিজ হাতে তার বাঁধন খুলে না করে দেয়া অব্দি। বিজয়ের দিনে আবু লুবাবাহ বনি আমর বিন আওফ গোত্রের পতাকা বহনকারী ছিলেন।

আবু লুবাবাহ বিন আব্দুল মুনজির আলি বিন আবি তালিবের খিলাফতে মৃত্যুবরণ করেন।[৪] কেউ কেউ বলেছেন, ৫০ হিজরির পর মৃত্যুবরণ করেছেন। [৩] আবু লুবাবাহর স্থলাভিষিক্ত হয়েছিল তার ছেড়ে যাওয়া সন্তান, তার মা জয়নাব বিনতে খুজাম বিন খালিদ আল-আউসিয়া, লুবাবাহ, যাকে জায়েদ বিন খাত্তাব বিয়ে করেছিলেন এবং তার মা নুসায়বাহ বিনতে ফুজালা বিন নুমান আল- আউসিয়া। [৪]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

রসুল স. এর মৃত্যুর পর তিনি খালেদ বিন ওয়ালিদের সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছিলেন এবং মুসাইলিমার সাথে যুদ্ধ করার জন্য ইয়ামামায় ধর্মত্যাগের যুদ্ধে যান। তারপর ইরাক, সিরিয়া, ফিলিস্তিন, মিশর, দামেস্কর বিজয় এবং ইয়ারমুক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। অতঃপর তিনি ওসমান বিন আফফানের খিলাফতে আফ্রিকায় (বর্তমানে তিউনিসিয়া ) আসেন এবং ইমাম আলি বিন আবি তালিবের শাসনামলে প্রায় ৮০ বছর বয়সে ম্যারেথ অঞ্চলের পাশে ওয়াদি আল-গিরান নামক স্থানে ইন্তেকাল না করা পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন।আর তার মৃতদেহ কাবেস শহরের আবি লাবাবা পাহাড়ে স্থানান্তরিত করা হয়, যেখানে তার বর্তমান স্থান অবস্থিত। [৫]

বর্ণনা করা হাদিস[সম্পাদনা]

  • বর্ণিত : নবি মুহাম্মদ [৩]উমর বিন খাত্তাব । [২]
  • তাঁর সূত্রে বর্ণিত : তাঁর দুই পুত্র, আস-সাইব ও আব্দুর রহমান, আব্দুল্লাহ বিন উমর বিন খাত্তাব। তার পুত্র সালেম বিন আব্দুল্লাহ বিন উমর বিন খাত্তাব। তাঁর গোলাম নাফেহ, আব্দুল্লাহ বিন কা'ব বিন মালিক, আব্দুর রহমান বিন ইয়াজিদ বিন জাবের, উবায়দুল্লাহ বিন আবি ইয়াজিদ আল-মাক্কি [৩] এবং সালমান আল-আগার। [২]
  • আল-জারহ ওয়াত-তাদিল : আল- বুখারী , মুসলিম, আবু দাউদ এবং মুহাম্মদ বিন মাজাহ তাঁর কাছে বর্ণনা করেছেন। [২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]