চুনিমুখো মৌটুসি
চুনিমুখো মৌটুসি Anthreptes singalensis | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণী জগৎ |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | পক্ষী |
বর্গ: | প্যাসারিফর্মিস |
পরিবার: | Nectariniidae |
গণ: | Anthreptes |
প্রজাতি: | A. singalensis |
দ্বিপদী নাম | |
Anthreptes singalensis (মালিন, ১৭৮৮) | |
প্রতিশব্দ | |
Chalcoparia singalensis |
চুনিমুখো মৌটুসি, চুনিমুখি মৌটুসি বা সবুজাভ মৌটুসি (বৈজ্ঞানিক নাম: Anthreptes singalensis) Nectariniidae (নেক্টার্নিডাই) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত Anthreptes (অ্যানথ্রেপ্টেজ) গণের অন্তর্গত এক প্রজাতির মৌপায়ী পাখি।[১][২] পাখিটি বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে দেখা যায়। সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এদের আবাস, প্রায় ২৮ লাখ ৩০ হাজার বর্গ কিলোমিটার।[৩] বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা স্থিতিশীল রয়েছে, বাড়েনি আবার আশঙ্কাজনক হারে কমেও যায়নি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে।[৪] বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত নয়।[২]
বিস্তৃতি
[সম্পাদনা]বাংলাদেশ ও ভারত ছাড়াও ভুটান, কম্বোডিয়া, চীন, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, নেপাল, ব্রুনাই, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে নিয়মিত এদের দেখা যায়। এসব দেশে এরা স্থায়ী পাখি।[৪]
বিবরণ
[সম্পাদনা]চুনিমুখো মৌটুসি অত্যন্ত ক্ষুদ্রকায় চকচকে সবুজ বর্ণের পাখি। এর দৈর্ঘ্য কমবেশি ১১ সেন্টিমিটার, ডানা ৫.৩ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ১.৫ সেন্টিমিটার, লেজ ৪.২ সেন্টিমিটার ও পা ১.৬ সেন্টিমিটার।[২] স্ত্রী ও পুরুষ পাখির চেহারায় পার্থক্য রয়েছে। পুরুষ মৌটুসির মাথার চাঁদি, ঘাড়, পিঠ, কোমর ও লেজের উপরের আচ্ছাদক ধাতব সবুজ। জানা ও লেজ কালচে। রোদে এর গাল উজ্জ্বল লাল থেকে কিছুটা বেগুনি দেখায়। গলা ও বুক লালচে-কমলা, পেট হলুদ।[২]
স্ত্রী মৌটুসির পিঠ অনুজ্জ্বল জলপাই সবুজ। গলা ও বুক হালকা লালচে-কমলা। গালে লাল রঙ থাকে না। পেট পুরুষ মৌটুসির মতই হলুদ। স্ত্রী ও পুরুষ পাখি উভয়ের চোখ লাল। ঠোঁট অপেক্ষাকৃত খাটো ও সোজা। ঠোঁটের রঙ কালচে। পা ও পায়ের পাতা সবজে-ধূসর। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির চেহারা অবিকল স্ত্রী মৌটুসির মত, কেবল দেহতলে হলুদ রঙ থাকে না।[২]
স্বভাব
[সম্পাদনা]চুনিমুখো মৌটুসি পাতলা বন, বনের আশেপাশে চাষাবাদের জন্য পরিষ্কার জায়গা, বনপ্রান্ত, চিরসবুজ বন, ক্ষুদ্র ঝোপ ও প্যারাবনে বিচরণ করে। সচরাচর একা বা জোড়ায় জোড়ায় থাকে। শীতকালে ছোট পতঙ্গভূক পাখির দলে যোগ দেয়। ঝোপঝাড়ে ও গাছে গাছে এরা খাবারের খোঁজে ঘুরে বেড়ায়। গাছের পাতা, ফুল ও মুকুলে খাদ্য খোঁজে। এদের প্রধান খাদ্য পোকামাকড় ও ফুলের মধু। সচরাচর তীব্র স্বরে শিস দেয়ঃ সুইটি-টি-চি-চিউ...টিউসি-টিটসুইটি-সুইটি...সুইটি-টি-চি-চিউ...।
প্রজনন
[সম্পাদনা]মার্চ থেকে জুন মাস এদের প্রজনন মৌসুম। এসময় ঝোপে ফার্ন ও আঁশ দিয়ে ছোট থলের মত বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো সংখ্যায় ২টি ও সাদা রঙের, তাতে বাদামি-ধূসর দাগ থাকে। ডিমের মাপ ১.৬ × ১.২ সেমি।[২]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ রেজা খান (২০০৮)। বাংলাদেশের পাখি। ঢাকা: বাংলা একাডেমী। পৃষ্ঠা ২৫৩। আইএসবিএন 9840746901।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ জিয়া উদ্দিন আহমেদ (সম্পা.) (২০০৯)। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ: পাখি, খণ্ড: ২৬। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৫১৯–২০।
- ↑ Anthreptes singalensis ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে, BirdLife International এ চুনিমুখো মৌটুসি বিষয়ক পাতা।
- ↑ ক খ Anthreptes singalensis[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], The IUCN Red List of Threatened Species এ চুনিমুখো মৌটুসি বিষয়ক পাতা।
- আইইউসিএন লাল তালিকার ন্যূনতম উদ্বেগজনক প্রজাতি
- অ্যানথ্রেপ্টেজ
- এশিয়ার পাখি
- ভারতের পাখি
- বাংলাদেশের পাখি
- ইন্দোনেশিয়ার পাখি
- নেপালের পাখি
- ভুটানের পাখি
- ব্রুনাইয়ের পাখি
- মিয়ানমারের পাখি
- মালয়েশিয়ার পাখি
- কম্বোডিয়ার পাখি
- চীনের পাখি
- ভিয়েতনামের পাখি
- থাইল্যান্ডের পাখি
- ১৭৮৮-এ বর্ণিত পাখি
- দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পাখি
- ইয়োহান ফ্রিডরিশ মালিন কর্তৃক নামকরণকৃত ট্যাক্সা