মেকনেস গ্র্যান্ড মসজিদ
মেকনেস গ্র্যান্ড মসজিদ | |
---|---|
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | সুন্নি (মালিকি) |
অবস্থা | সক্রিয় |
অবস্থান | |
অবস্থান | মেকনেস, মরক্কো |
স্থানাঙ্ক | ৩৩°৫৩′৪১.৫″ উত্তর ৫°৩৩′৫৩.৮″ পশ্চিম / ৩৩.৮৯৪৮৬১° উত্তর ৫.৫৬৪৯৪৪° পশ্চিম |
স্থাপত্য | |
ধরন | মসজিদ |
স্থাপত্য শৈলী | মরক্কান, মুরিশ, ইসলামি |
প্রতিষ্ঠার তারিখ | ১২ তম শতাব্দী (আলমোরাভিদ যুগ) |
মিনার | ১ |
মেকনেস গ্র্যান্ড মসজিদ মরক্কোর প্রাচীন শহর মেকনেসের প্রধান ও ঐতিহাসিক মসজিদ। এটি প্রাচীন শহরটির বৃহত্তম ও গুরুত্বপূর্ণ মসজিদ এবং প্রাচীনতম নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম।[১][২]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]মরক্কোর অন্য শহরগুলোর গ্র্যান্ড মসজিদের মতো, এটি প্রাচীন শহরের কেন্দ্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও ধর্মীয় জেলায় অবস্থিত। শহরটির প্রধান ও ঐতিহাসিক মাদ্রাসাগুলো মসজিদের নিকটে অবস্থিত।[১][২]
মসজিদটি ১২ তম শতাব্দীতে আলমোরাভিদ রাজবংশের অধীনে নির্মিত বলে মনে করা হয়।[১][২] আলমোহাদ খলিফা মুহাম্মদ আল-নাসিরের (রাজত্বকাল ১১৯৯-১২১৩) অধীনে এর উল্লেখযোগ্য সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হয়।[৩] আলমোহাদ যুগ থেকে মসজিদটিতে ফেজের আল-কারাওইন মসজিদের গ্রেট আলমোহাদ ঝাড়বাতির অনুরূপ একটি বৃহৎ ও সুসজ্জিত তামার ঝাড়বাতি রয়েছে।[৩]
আবার মেরিনিডদের অধীনে ১৪ তম শতাব্দীতে মসজিদটি পুনঃসংস্কার করা হয়।[২] মিনারটি ধসে পড়ে ৭ জন মুসল্লির মৃত্যু হলে পরবর্তীতে এটি মেরামত করা হয়।[৩] মেরিনিডরা বিশেষত শহরের প্রধান মাদ্রাসাগুলো তৈরি করে যেগুলো মসজিদের চারদিক জুড়ে আছে। মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে নিকটস্থ আবু ইনানিয়া মাদ্রাসা (১৩৩৬ সালে নির্মিত) এবং সুলতান আবু আল-হাসান কর্তৃক নির্মিত দুটি মাদ্রাসা, মাদ্রাসা আল-কাদী ও মাদ্রাসা শুহুদ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।[৩] আবু আল-হাসান মসজিদে একটি গ্রন্থাগার যুক্ত করেন এবং শিক্ষকতার জন্য বেশ কয়েকজন ইসলামি পণ্ডিতের ব্যবস্থা করেন।[৩]
সর্বশেষ অ্যালৌউত সুলতানদের অধীনে আরও পুনঃসংস্কার করা হয়। মৌলে ইসমাইল (রাজত্বকাল ১৬৭২-১৭২৭) মিহরাবের অংশটি পুনর্নির্মাণ করেন এবং মসজিদটিতে মিম্বার, আনজা ও প্রাঙ্গণে ঝর্ণা যুক্ত করেন।[২][৩] মৌলে মোহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ (রাজত্বকাল ১৭৫৭-১৭৯০) বর্তমান মিনারটি নির্মাণ করেন।[২]
স্থাপত্য
[সম্পাদনা]মসজিদটির গঠন ও বিন্যাস ঐতিহ্যবাহী মরক্কান বা উত্তর আফ্রিকার মসজিদগুলোর অনুরূপ। এর আয়তন প্রায় ৩৫০০ বর্গমিটার।[৩] এটি একটি বিশাল অভ্যন্তরীণ প্রার্থনা কক্ষ যার মূল অংশ (প্রাঙ্গণের দক্ষিণে) ৯ টি বারান্দায় বিভক্ত যেগুলো দক্ষিণ-পূর্ব প্রাচীরের সমান্তরালে বিস্তৃত। খিলান ও কলামগুলো সমতল এবং মেঝে মাদুর দিয়ে ঢাকা। মৌলে ইসমাইলের অধীনে পুনর্নির্মাণের সময় থেকে মিহরাবটি রঙিন প্লাস্টার দিয়ে সজ্জিত। মিম্বরটিও একই সময় ধরে আছে।[২]
মসজিদের উত্তর দিকে বৃহৎ প্রাঙ্গণের কেন্দ্রে একটি ফোয়ারা আছে। প্রাঙ্গণটি মোজাইক টালি দিয়ে বাঁধানো এবং প্রার্থনা কক্ষ ও এর খিলানগুলোর চারদিক জুড়ে বিস্তৃত। উত্তর দিকের প্রবেশপথটি মসজিদের অন্যতম প্রধান প্রবেশপথ।[২] এর সামনের অংশটি একটি অলঙ্কৃত কাঠের পর্দা দ্বারা আচ্ছাদিত যা আনাজা নামে পরিচিত। এটি প্রাঙ্গণে প্রার্থনা করার জন্য বাইরের মিহরাব হিসেবে কাজ করে।[৩] আনাজাটি সম্পূর্ণ খোদাই করা এবং মেরিনিড যুগের আনাজাগুলোর অনুরূপ।[৪]
মসজিদের বাইরের অংশটি আশেপাশের ভবনগুলোর জন্য অস্পষ্ট। মসজিদটির ১১ টি দরজা আছে[৩] এবং পশ্চিম পাশের প্রধান প্রবেশদ্বারগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি প্রবেশদ্বার হলো বাব আল-কুতুব।[৪] এটিতে সবুজ টালিযুক্ত ছাদের পাশাপাশি একটি বৃহৎ ও লক্ষণীয় মিনার রয়েছে। বর্তমান মিনারটি অ্যালৌউত সুলতান মৌলে মোহাম্মদ বিন আবদুল্লাহর শাসনামল থেকে আছে। অন্যান্য মরক্কান মিনারগুলোর মতো এটি বর্গাকার ও দীর্ঘ এবং এর শীর্ষে একটি ছোট ও খাটো টাওয়ার রয়েছে, ফলে এই ছোট টাওয়ারটির শীর্ষে চারটি সোনালী তামার বল আছে।[২] ছোট মিনারের সম্মুখভাগ চারটি চকচকে সবুজ টালির বেড়া দ্বারা আবৃত, যা মেকনেসের মিনারগুলোর একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য।[৫] মিনারের গোড়ায় একটি দার আল-মুওয়াক্কিত বা ঐতিহ্যবাহী কক্ষ রয়েছে।[৪]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- মসজিদের তালিকা
- মরক্কোর মসজিদের তালিকা
- আফ্রিকার মসজিদের তালিকা
- আল ফাস মসজিদ
- ঔজদার বড় মসজিদ
- আল-কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয়
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ Francis., Ramirez, (২০০৪)। Meknès, cité impériale : histoire d'une mélancolie। ACR। আইএসবিএন 2-86770-170-8। ওসিএলসি 57057118।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ Metalsi, Mohamed; Tréal, Cécile; Ruiz, Jean-Michel (১৯৯৯)। Les villes impériales du Maroc Texte imprimé। Terrail। ওসিএলসি 1009795950।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ Le Maroc andalou : à la découverte d'un art de vivre.। Museum With No Frontiers (Deuxième édition সংস্করণ)। Aix-en-Provence, France। ২০১০। আইএসবিএন 978-3-902782-31-1। ওসিএলসি 857904262।
- ↑ ক খ গ El khammar, Abdeltif (২০০৬)। Mosquées et oratoires de Meknès (IXe-XVIIIe siècle) : géographie religieuse, architecture et problème de la Qibla। Atelier national de reproduction des Thèses। ওসিএলসি 494639148।
- ↑ Guides., Rough (২০১৬)। The rough guide to morocco। Rough Guides। আইএসবিএন 978-0-241-27653-2। ওসিএলসি 999492389।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- Cityseeker-এ মেকনেস গ্র্যান্ড মসজিদ (ইংরেজি)