কাসারগড় জেলা
কাসারগড় জেলা | |
---|---|
কেরালার জেলা | |
কেরালায় কাসারগড় জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ১২°৩০′ উত্তর ৭৫°০০′ পূর্ব / ১২.৫° উত্তর ৭৫° পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | কেরল |
জেলা | কাসারগড় |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১,৯৮৪ মে ২৪ |
প্রতিষ্ঠাতা | কেরল সরকার |
সদর | কাসারগড় |
তালুক | মঞ্জেশ্বরম, কাসারগড়, বেল্লারীকুণ্ড, হোসদুর্গ |
আয়তন | |
• কেরালার জেলা | ১,৯৯২ বর্গকিমি (৭৬৯ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• কেরালার জেলা | ১৩,০৭,৩৭৫ |
• জনঘনত্ব | ৬৬০/বর্গকিমি (১,৭০০/বর্গমাইল) |
• মহানগর | ১৬,৪২,৮৯২ |
জনতত্ত্ব | |
• ভাষা (২০১১) | |
• ধর্ম (২০১১) | |
মানবোন্নয়ন | |
• লিঙ্গানুপাত (২০১১) | ১০৪০ ♀/১০০০ ♂[৩] |
• সাক্ষরতার হার (২০১১) | ৯০.০৯%[৪] |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০) |
পিন | ৬৭১১২১ |
টেলিফোন কোড | ০৪৯৯ |
যানবাহন নিবন্ধন | KL-14 (কেএল-১৪), KL-60 (কেএল-৬০), KL-79 (কেএল-৭৯) |
ওয়েবসাইট | kasargod |
কাসারগড় জেলা হলো দক্ষিণ ভারতে অবস্থিত কেরল রাজ্যের ১৪ টি জেলার একটি জেলা৷ জেলাটির জেলাসদর কাসারগড় শহরে অবস্থিত৷
পূর্বতন মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সীর উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত দক্ষিণ কন্নড় জেলার অংশ ছিলো এই কাসারগড় জেলা৷ ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে রাজ্য পুনর্গঠন আইন বলবৎ হলে এই অঞ্চলটি নবগঠিত কেরল রাজ্যের কণ্ণুর জেলার একটি অংশ বলে ঘোষিত হয়৷ ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ২৪শে মে তারিখে কাসারগড় পূর্ণাঙ্গ জেলার মর্যাদা লাভ করে৷
ভূগোল
[সম্পাদনা]জেলাটির দক্ষিণ দিকে রয়েছে কেরালা রাজ্যের কণ্ণুর জেলা, দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রয়েছে কর্ণাটক রাজ্যের কোড়গু জেলা এবং উত্তর ও পূর্ব দিকে রয়েছে দক্ষিণ কন্নড় জেলা। প্রাকৃতিকভাবে জেলাটির পূর্ব দিকে রয়েছে পশ্চিমঘাট পর্বতমালা এবং পশ্চিম দিকে রয়েছে আরব সাগরের লাক্ষাদ্বীপ সাগর।[৫]
জেলাটি ১৯৯২ বর্গ কিলোমিটার ক্ষেত্রফল জুড়ে বিস্তৃত এবং ২০১১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুযায়ী জনসংখ্যা ছিল ১৩,০৭,৩৭৫ জন। এখানে চারটি তালুক রয়েছে, যথা কাসারগড়, হোসদুর্গ, বেল্লারীকুণ্ড এবং মঞ্জেশ্বরম। এছাড়াও রয়েছে তিনটি পৌরসভা যথাক্রমে কাসারগড়, কাঞ্জনগড় এবং নীলেশ্বরম সহ আরো ৩৮ টি গ্রাম পঞ্চায়েত৷[৬]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]আরব জাতির কাছে কাসারগড় হার্কউইল্লিয়া নামে পরিচিত ছিলো৷ [৭] বহু আরব পর্যটক খ্রিস্টীয় নবম থেকে চতুর্দশ শতাব্দীর মধ্যে কেরালা ভ্রমণে কাসারগড়কে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতেন, সেসময়ে এটি ছিলো পণ্যবিক্রয়ের কেন্দ্র৷ একজন পর্তুগীজ পর্যটক দুয়ার্তে বোরবোসা ১৫১৪ খ্রিস্টাব্দে কাসারগড় শহরের নিকট কুম্বল থেকে নারিকেল ছোবড়ার বিনিময়ে মালদ্বীপে চাউল বিক্রির ঘটনা লিপিভুক্ত করেন৷ [৭]
কাসারগড় ছিলো মালয়ালম এবং তুলু জনসংখ্যা বিশিষ্ট ৬৪ টি গ্রাম, যা কুম্বল রাজত্বের অংশ ছিলো৷ [৭] বিজয়নগর সাম্রাজ্যর রাজারা কাসারগড়ে আক্রমণ করেন এবং রাজা কোলাদ্রী থেকে তার রাজ্য ও রাজধানী নীলেশ্বরম অধিকার করেন৷ বিজয়নগর সাম্রাজ্যের পতনের সাথে সাথে এই অঞ্চলের প্রশাসনিক অধিকার ইক্কেরি কেলাড়ির নায়কদের অধীনস্থ হয়৷[৭] বিজয়নগর সাম্রাজ্যের পতনের পর নায়কদের রাজা বেঙ্কটাপ্পা নায়ক ইক্কেরির সহিত এই অঞ্চলের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন৷ শাসক শিবাপ্পা নায়ক নির্মিত ও সংস্কারকৃত কুম্বল, চন্দ্রগিরি এবং বেকালের দুর্গগুলিকে তৎকালে দুর্গশৃঙ্খল বলে মনে করা হতো৷ [৭]
ওয়েলিংটনের প্রথম ডিউক আর্থার ওয়েলেসলির পারিবারিক চিকিৎসক ফ্রাঁসিস বাকানন ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে কাসারগড়ে ভ্রমণে আসেন৷ [৭] তার ভ্রমণবৃত্তান্তে তিনি আদিরাপরম্ব, কাব্বাই, নীলেশ্বরম, বেকাল, চন্দ্রগিরি, মঞ্জেশ্বরম প্রভৃৃতি স্থানের বিবরণ দিয়েছেন৷ [৭] চন্দ্রগিরি নদীর দক্ষিণ কূলে অবস্থিত হোসদূর্গ ও বেল্লারীকুণ্ড কোলাদুনাড়ু অঞ্চল এবং চন্দ্রগিরি নদীর উত্তর কূলে অবস্থিত মঞ্জেশ্বরম ও কাসারগড় তুলুনাড়ু অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত ছিলো৷ ১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দে হায়দার আলী ইক্কেরি নায়কদের রাজধানী বিদনূরে নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হন৷ তার পুত্র টিপু সুলতান উত্তর কেরালার মালাবারের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে রাজ্যবিস্তার করেন৷ ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে সাক্ষরিত শ্রীরঙ্গপত্তনমের সন্ধি অনুসারে টিপু সুলতান কানাড়া বাদে মালাবার অঞ্চল ব্রিটিশদের হস্তোগত করতে বাধ্য হয়েছিলেন৷ টিপু সুলতানের মৃত্যুর পর ব্রিটিশরা কানাড়া দখল করে৷ [৭] জনশ্রুতি রয়েছে যে, কীনবূর মূলম (শ্রীধর্ম ষষ্ঠ মন্দির) ছিলো কেরলে ব্রাহ্মণদের মূল ৬৪ টি গ্রাম করিন্তলম-এর একটি৷
কেরালা গঠনের পূর্বে, কাসারগড় পূর্বতন মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সীর দক্ষিণ কন্নড় জেলার অংশ ছিলো৷ পরে ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে এটি কেরলের কণ্ণুর জেলার অন্তর্ভুক্ত হয়৷ [৮] পরে ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে এটি জেলায় উন্নীত হয়৷ এই জেলায় বিপুল সংখ্যক কন্নড় ও তুলুভাষী থাকার ফলে এই জেলার কেরালার সাথে যুক্ত হওয়া নিয়ে যথেষ্ট মতবাদ রয়েছে৷ তবে ২০১১ খ্রিস্টাব্দে জনগণনা অনুসারে এই জেলার সিংহভাগই মালয়ালমভাষী বলে নথিভুক্ত হয়েছে৷
অবস্থান
[সম্পাদনা]কেরালা রাজ্যের উত্তরতম জেলাটি হলো কাসারগড়৷ জেলাটির অবস্থান ১২°৩০′ উত্তর ৭৫°০০′ পূর্ব / ১২.৫° উত্তর ৭৫.০° পূর্ব৷[৯] জেলাটির গড় উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৯ মিটার বা ৬২ ফুট৷ রাণীপুরম বা মদতুমালা শৃঙ্গ হলো কাসারগড় জেলার উচ্চতম শৃঙ্গ, যা ১০১৬ মিটার উচ্চ৷ এখানে রয়েছে রাণীপুরম বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য৷
আবহাওয়া
[সম্পাদনা]কাসারগড়-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) | ৩৩.১ (৯১.৬) |
৩৩.৩ (৯১.৯) |
৩৩.৯ (৯৩.০) |
৩৪.৩ (৯৩.৭) |
৩৩.৪ (৯২.১) |
২৯.৮ (৮৫.৬) |
২৮.৭ (৮৩.৭) |
২৮.৮ (৮৩.৮) |
৩০.১ (৮৬.২) |
৩১.২ (৮৮.২) |
৩২.৭ (৯০.৯) |
৩৩.১ (৯১.৬) |
৩১.৯ (৮৯.৪) |
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) | ২১.১ (৭০.০) |
২১.৯ (৭১.৪) |
২৩.৭ (৭৪.৭) |
২৪.৯ (৭৬.৮) |
২৪.৯ (৭৬.৮) |
২৩.৫ (৭৪.৩) |
২৩ (৭৩) |
২৩ (৭৩) |
২৩.২ (৭৩.৮) |
২৩.২ (৭৩.৮) |
২২.৭ (৭২.৯) |
২১.৩ (৭০.৩) |
২৩.০ (৭৩.৪) |
অধঃক্ষেপণের গড় মিমি (ইঞ্চি) | ০.৮ (০.০৩) |
০ (০) |
১৭.৩ (০.৬৮) |
৩২.৭ (১.২৯) |
১৮২.৯ (৭.২০) |
১,০১০.৫ (৩৯.৭৮) |
১,০০২.৮ (৩৯.৪৮) |
৬৬৩.৬ (২৬.১৩) |
২৪৬.৫ (৯.৭০) |
২২২.৬ (৮.৭৬) |
৬৯ (২.৭) |
১২.৪ (০.৪৯) |
৩,৪৬১.১ (১৩৬.২৪) |
উৎস: Meo Weather |
জনতত্ত্ব
[সম্পাদনা]২০১১ খ্রিস্টাব্দের ২০১১ ভারতের জনগণনা ভারতের জনগণনা অনুসারে কেরালার কাসারগড় জেলার মোট জনসংখ্যা ছিল ১৩,০৭,৩৭৫ জন,[১১] যা আফ্রিকা মহাদেশের দ্বীপরাষ্ট্র মরিশাস [১২] বা আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্প্শায়ার রাজ্যের জনসংখ্যার সমতুল্য। [১৩] ওই বছর ভারতের মোট ৬৪০ টি জেলার মধ্যে জনসংখ্যার বিচারে কাসারগড় জেলা ৩৭৫তম স্থান অধিকার করেছে। [১১] জেলাটির জনঘনত্ব ৬৫৪ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (১,৬৯০ জন/বর্গমাইল)। [১১] ২০০১ থেকে ২০১১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দশ বছরে এই যে জেলাটির জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ৮.১৮ শতাংশ।[১১] প্রতি হাজার পুরুষে এই জেলায় ১০৮০ জন নারী বাস করেন। [১১] জেলাটির সাক্ষরতার হার ৯০.০৯ শতাংশ, যা কেরালা রাজ্যের গড় সাক্ষরতার হার এর থেকে কম।[১৪]
বছর | জন. | ব.প্র. ±% |
---|---|---|
১৯০১ | ২,৩১,২৮০ | — |
১৯১১ | ২,৪৭,৪৬৭ | +০.৬৮% |
১৯২১ | ২,৫৬,৯৩১ | +০.৩৮% |
১৯৩১ | ৩,০২,০৪৩ | +১.৬৩% |
১৯৪১ | ৩,৪২,৩০১ | +১.২৬% |
১৯৫১ | ৪,১১,০৩১ | +১.৮৫% |
১৯৬২ | ৫,১২,১৪৬ | +২.০২% |
১৯৭১ | ৬,৮৩,০২০ | +৩.২৫% |
১৯৮১ | ৮,৭২,৭৪১ | +২.৪৮% |
১৯৯১ | ১০,৭১,৫০৮ | +২.০৭% |
২০০১ | ১২,০৪,০৭৮ | +১.১৭% |
২০১১ | ১৩,০৭,৩৭৫ | +০.৮৩% |
উৎস:[১৫] |
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Language – Kerala, Districts and Sub-districts"। Census of India 2011। Office of the Registrar General।
- ↑ ক খ "Religion – Kerala, Districts and Sub-districts"। Census of India 2011। Office of the Registrar General।
- ↑ "Sex Ratio" (পিডিএফ)। censusindia.gov.in।
- ↑ "Literacy" (পিডিএফ)। censusindia.gov.in।
- ↑ https://www.mapsofindia.com/maps/kerala/tehsil/
- ↑ There are 38 Grama Panchayats in Kasaragod District ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে (kasaragod.nic.in).
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ "Kasaragod History"। Government of Kerala। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৩-১১।
- ↑ "Kasaragod - After District Formation"। Kasaragod District। ১০ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৩-১১।
- ↑ Falling Rain Genomics, Inc - Kasaragod
- ↑ "Census of India - Language"। censusindia.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "District Census 2011"। Census2011.co.in। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-৩০।
- ↑ US Directorate of Intelligence। "Country Comparison:Population"। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-০১।
Mauritius 1,303,717 July 2011 est.
- ↑ "2010 Resident Population Data"। U. S. Census Bureau। ১ জানুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-৩০।
New Hampshire 1,316,470
- ↑ "Literacy and Sex Ratio - 2011" (পিডিএফ)। censusindia.gov.in।
- ↑ Decadal Variation In Population Since 1901