রেমাক্রী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রেমাক্রী
রেমাক্রী'র আনুষ্ঠানিক পোস্টার
পরিচালকমাকসুদ হোসাইন
প্রযোজকআরিফুর রহমান
তামিম আরিফ
আব্দুল মজিদ
চিত্রনাট্যকারমাকসুদ হোসাইন
কাহিনিকারমাকসুদ হোসাইন
শ্রেষ্ঠাংশে
চিত্রগ্রাহকনেহাল কুরেশী
প্রযোজনা
কোম্পানি
৪৬৫পিকচার্স
পরিবেশক৪৬৫ পিকচার্স
মুক্তি
  • ১৮ মার্চ ২০১৯ (2019-03-18)

২৫তম আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সপ্তাহ

রেগেন্সবোর্গ, জার্মানী
স্থিতিকাল১৫ মিনিট
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা

রেমাক্রী ২০১৮ সালে নির্মিত একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। নিজস্ব গল্প ও চিত্রনাট্যের ভিত্তিতে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন মাকসুদ হোসাইন। ১৫ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই ছায়াচিত্রে একটি পরিবারের বাবা ও ছেলের গল্প চিত্রিত হয়েছে।[১] আরিফুর রহমান, তামিম আরিফ ও আব্দুল মজিদ প্রযোজিত ছবির মুখ্য দুইটি চরিত্র পিতা ও পুত্রের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু ও শরিফুল ইসলাম।[২] ছেলে বিখ্যাত ফুটবল খেলোয়াড় লিওনেল মেসির অন্ধ ভক্ত। মেসি তার স্বপ্নের নায়ক ও জীবনের আদর্শ। সে নিয়মিত টেলিভিশনে মেসির খেলা দেখে। মেসির একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলার আগে বাড়ির টেলিভিশনটি যান্ত্রিকভাবে বিকল হয়ে যায়। খেলা দেখার জন্য টেলিভিশন সচল করতে হবে। গ্রামে টেলিভিশন ঠিক করার মত কারিগর নেই। এমন পরিস্থিতিতে নষ্ট টেলিভিশন কাঁধে নিয়ে রেমাক্রীর দুর্গম পথ অতিক্রম করে বাবা ও ছেলে।[৩][৪] সম্পূর্ণ চলচ্চিত্রটি বান্দরবান জেলারেমাক্রী ইউনিয়নের পাহাড়ী এলাকায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে চিত্রিত হয়েছে। চলচ্চিত্রের নামও এই স্থানের নামে করা হয়েছে।[২] ১৮ মার্চ ২০১৯ তারিখে জার্মানির রেগেন্সবোর্গে অনুষ্ঠিত ২৫তম আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সপ্তাহে রেমাক্রী'র উদ্বোধনী প্রদর্শণী হয়।[১]

কাহিনি[সম্পাদনা]

রেমাক্রীর এক অজপাড়ায় এক বৃষ্টিস্নাত শুক্রবারের ভোরবেলা কিশোর শরিফুল তার বাবা আব্বাসকে ঘুম থেকে জাগায়। শরিফুল লিওনেল মেসির ভক্ত। মেসির খেলা শুরু হবে বিকাল ছয়টায়। তাদের ঘরে লটারিতে পাওয়া টেলিভিশন আছে, কিন্তু নস্ট। খেলা দেখার জন্য এই ভোরবেলায় শরিফুল শার্ট পরে টেলিভিশন সারানোর যাওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে। আকাশের অবস্থা ভাল নয়। অবিরাম বৃষ্টি দেখে তার আব্বাস তাকে বাইরে যেতে বারণ করে। শরিফুলের মা, আব্বাসকে বিকল টিভি ঠিক করার জন্য ছেলেকে নিয়ে বের হতে বলে। পাহাড়ের ঢাল বেয়ে বাবা-ছেলে কাঁথা মোড়ানো টিভি বহন করে নিয়ে যায়। পথে যেতে যেতে তারা টিভি কোন যন্ত্রাংশ নস্ট হয়েছে, তা নিয়ে আলাপ করে। যাত্রাপথে পাহাড়ি নদী পরে। কখনো হেঁটে, কখনো ট্রলারে করে তারা রেমাক্রীর পৌর এলাকায় আসে জসিম নামের এক মেকানিকের দোকানে। এতো ভোরে জসিম ঘুমায়। বাবা-ছেলে অপেক্ষা করে। ঘুম থেকে উঠে জসিম টিভি ঠিক করতে শুরু করে। টিভির পিকচার টিউব নস্ট। জসিমের কাছে টিউব নেই। এটা জানার পর শরিফুলের মন খারাপ হয়। ছেলের মন ভাল করতে আব্বাস আরো দূরে থানচি বাজারে যায়। শরিফুল দোকানের সামনে বসে নস্ট টিভি পাহারা দেয়। এসময় তার বাবা একটা নতুন পিকচার টিউব কিনে ফিরে। জসিম টিভি ঠিক করে দেয়। বাবা শরিফুলকে মিস্টি খাওয়ায়, অতঃপর তারা আবার ট্রলারে করে টিভি নিয়ে বাড়ির পথে রওনা হয়। নদীর নাব্যতা কম থাকায় নৌকা ঠেলে নিয়ে যায়। বেলা গড়িয়ে বিকাল হয়, খেলা শুরু হয়ে গেছে, কিন্তু বাড়ি ফেরা হয়নি এখনো। পাহাড়ি নদী পায়ে হেঁটে পার হওয়ার সময় আব্বাসের কাঁধ থেকে টেলিভিশন পানিতে পরে যায়। মনমরা হয়ে বাসায় ফিরে তারা। এসময় শরিফুলের মনে হয় টিভি হয়তো পানিতে পরেও আবার নস্ট হয়নি। সে আব্বাসকে টিভিতে ব্যাটারির সংযোগ দিতে বলে। টিভিতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিলেও চালু হয়না। আব্বাসের বারণ সত্ত্বেও শরিফুল টিভি নিজে খুলে ঠিক করার বায়না ধরে। আব্বাস টিভি খুলে দেখে। হারিকেনের আলোয় পিতা-পুত্র মিলে টিভি খুলে। পিকচার টিউবের টুপি খোলা ছিল। আব্বাস ঠিক করে দেয়। নতুন করে টিভি চালু করা হয়। প্রথমে না চললেও কয়েক সেকেন্ড পরে টিভির আলো ফুটে ওঠে। উৎফুল্ল শরিফুল চেয়ার টেনে টিভি দেখতে বসে। তার বাবা নিজ হাতে পানিতে পরা টিভি ঠিক করলেও জসিমকে কৃতিত্ব দেয়। এরিমাঝে মা সবাইকে ভাত খেতে ডাকে। শরিফুল মগ্নচিত্তে টিভি দেখতে থাকে।

কুশীলব[সম্পাদনা]

  1. ফজলুর রহমান বাবু[৪] - আব্বাস, শরিফুলের বাবা। ছেলেকে নিয়ে লটারিতে পাওয়া টেলিভিশন ঠিক করতে দুর্গম পথ পাড়ি দেয়।
  2. শরিফুল ইসলাম[৪] - নাম ভূমিকায়। মেসিভক্ত কিশোর। টেলিভিশন ঠিক করতে বাবার সাথে যায়। বার বার টিভি নিয়ে মন খারাপ হলেও হাল ছাড়ে না।
  3. মাহমুদুল ইসলাম মিঠু[৪] - জসিম। টিভি সারানোর কারিগর।
  4. রশিদা রাখি।[৪] - শরিফুলের মা। একজন গৃহিনী। আব্বাসকে টিভি ঠিক করতে উৎসাহ দেয়।

প্রদর্শনী[সম্পাদনা]

জার্মানীর রেগেন্সবোর্গে অনুষ্ঠিত ২৫তম আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সপ্তাহে রেমাক্রী চলচ্চিত্রটির প্রথম প্রদর্শন ঘটে। চলচ্চিত্রটি ঐ উৎসবের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগে অংশগ্রহণ করে এবং ১৮ মার্চ ২০১৯ তারিখে প্রথম প্রদর্শন করা হয়।[৩] এছাড়াও ৩-৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ তারিখে আয়োজিত একাদশ সিউল 'ইন্টারন্যাশনাল এক্সট্রিম শর্ট ইমেজ এন্ড ফিল্ম ফেস্টিভালের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগে প্রদর্শনের জন্য 'রেমাক্রী' নির্বাচিত হয়।[৫] ২০ আগস্ট, ২০২০ সালে রেমাক্রী টরন্টো 'ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভাল অব সাউথ এশিয়া'য় প্রদর্শিত হয়।[৬]

একনজরে রেমাক্রী'র আন্তর্জাতিক উৎসবে প্রদর্শিত হওয়ার তালিকাঃ

ক্রম তারিখ উৎসব স্থান সূত্র
১৮ মার্চ, ২০১৯ ২৫তম আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সপ্তাহ রেগেন্সবোর্গ, জার্মানি [১]
৩-৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১১তম 'ইন্টারন্যাশনাল এক্সট্রিম শর্ট ইমেজ এন্ড ফিল্ম ফেস্টিভাল সিউল, দক্ষিণ কোরিয়া [২]
১৪ আগস্ট, ২০২০ 'ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভাল অব সাউথ এশিয়া' টরন্টো, কানাডা [৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "International Competition 7 – Media" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৭-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২০ 
  2. "30 Short Films you cannot miss at the 11th Seoul International Extreme – Short Image & Film Festival (Part 2)"Asian Film Festivals (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৮-২৫। ২০২০-০৬-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২০ 
  3. "'REMAKRI' শর্টফিল্ম"FILMCAST। ২০১৯-০৩-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২০ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "Student Oscar winner Maksud Hossain competing in Germany"Dhaka Tribune। ২০১৯-০৩-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২০ 
  5. "Call for entry"www.sesiff.org। ২০২০-০৬-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২১ 
  6. "2020 SCHEDULE – IFFSA Toronto" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-১৭