বিজারক শর্করা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
গ্লুকোজের বিজারক অবস্থা (অ্যালডিহাইড গ্রুপ ডানদিকে অবস্থিত)

বিজারক শর্করা বা রিডিউসিং শুগার হল যেকোন শর্করা যা বিজারক পদার্থ হিসাবে কাজ করতে সক্ষম কারণ সেটিতে একটি মুক্ত অ্যালডিহাইড গ্রুপ বা একটি মুক্ত কিটোন গ্রুপ রয়েছে।[১] সমস্ত মনোস্যাকারাইডস সহ কিছু ডাইস্যাকারাইডস, অলিগোস্যাকারাইডস এবং পলিস্যাকারাইডস বিজারক শর্করার মধ্যে পড়ে। মনোস্যাকারাইডগুলিকে দুটি গ্রুপে বিভক্ত করা যেতে পারে। যথা: অ্যালডোজ (যাদের অ্যালডিহাইড গ্রুপ রয়েছে) এবং কিটোজ (যাদের কিটোন গ্রুপ রয়েছে)। কিটোজ বিজারক শর্করা হিসেবে ক্রিয়া করার আগে অবশ্যই তাকে টটোমারিজম প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে অ্য়ালডোজে পরিণত হতে হবে। (উল্লেখ্য টটোমারিজম হল একটি বিশেষ ধরনের কার্যকরী মূলক সমাণুতা। এ প্রক্রিয়ায় সমাণুগুলো এক প্রকার কার্যকরী মূলক বিশিষ্ট গঠন থেকে স্বতঃস্ফুর্তভাবে অন্য প্রকার কার্যকরী মূলক বিশিষ্ট গঠনে রূপান্তরিত হয় এবং উভয় গঠনের মধ্যে সাম্যাবস্থা বিরাজমান থাকে। তাই টটোমারিজম কে গতিশীল কার্যকরী মূলক সমাণুতাও বলা হয়) সাধারণ খাদ্যতালিকাগত মনোস্যাকারাইডস যেমনঃ গ্যালাকটোজ, গ্লুকোজ এবং ফ্রুক্টোজ সবই বিজারক শর্করার অন্তর্গত।

ডাইস্যাকারাইডস দুটি মনোস্যাকারাইডস এর সমন্বয়ে গঠিত হয় এবং এরা বিজারক হতে পারে আবার অ-বিজারক ও হতে পারে। সুক্রোজ এবং ট্রিহ্যালোজ এর মত অ-বিজারক ডাইস্যাকারাইডসের অ্যানোমেরিক কার্বনের মধ্যে গ্লাইকোসাইটিক বন্ড আছে আর তাই একটি অ্যালডিহাইড গ্রুপযুক্ত কোন ওপেন-চেইন ফর্মে রূপান্তরিত হতে পারে না; ফলে তারা চক্রাকারে বিন্যস্ত হয়। অপরপক্ষে ল্যাকটোজ এবং ম্যালটোজ এর মত বিজারক ডাইস্যাকারাইডগুলোর ক্ষেত্রে তাদের দুইটি অ্যানোমেরিক কার্বনের মধ্যে একটিমাত্র কার্বন গ্লাইকোসাইটিক বন্ধনে যুক্ত থাকে, যার মানে হল তারা একটি অ্যালডিহাইড গ্রুপযুক্ত একটি ওপেন-চেইন ফর্মে রূপান্তরিত হতে পারে।

অ্যালডিহাইড কার্যকরী গ্রুপ, শর্করাকে বিজারক পদার্থ হিসেবে বিক্রিয়া করার সক্ষমতা প্রদান করে। এরূপ উদাহরণ দেখা যায় টলেনের পরীক্ষা বা বেনেডিক্টের পরীক্ষার ক্ষেত্রে। অ্যালডোজসমূহ আবর্তনশীল হেমিঅ্যাসিটাল গঠনে থাকা অবস্থায় একটি অ্যালডিহাইড সৃষ্টির জন্য ভেঙে যেতে পারে, এবং কিছু কিটোজ অ্যালডোজে রূপান্তরিত হবার জন্য টটোমারিজম প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে পারে। যাইহোক, অ্যাসিটাল (পলিস্যাকারাইড লিংকেজসমূহে প্রাপ্ত গুলো সহ) সহজেই মুক্ত অ্যালডিহাইডে পরিণত হতে পারে না।

বিজারক শর্করাসমূহ মাইলার্ড বিক্রিয়াতে (এমন ধরনের একটি সিরিজ বিক্রিয়া যা উচ্চতর তাপমাত্রায় খাবার রান্না করার সময় ঘটে এবং খাবারের স্বাদ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে) অ্যামিনো অ্যাসিডের সাথে বিক্রিয়া প্রদর্শন করে। এছাড়াও, ওয়াইন, ফলের রস এবং আখের মধ্যে অবস্থিত বিভিন্ন মাত্রার বিজারক শর্করা এই খাদ্য পণ্যগুলির গুণমানের পরিচায়ক।

পরিভাষাসমূহ[সম্পাদনা]

জারণ-বিজারণ[সম্পাদনা]

বিজারক শর্করা বা রিডিউসিং শুগার এমন এক ধরনের শর্করা যা অন্য যৌগকে বিজারিত করে এবং নিজে জারিত হয়; অর্থাৎ শর্করার কার্বনিল কার্বন একটি কারবক্সিল গ্রুপ দ্বারা জারিত হয়।[২]

অ্যালডোজ এবং কিটোজ[সম্পাদনা]

একটি মুক্ত অ্যালডিহাইড গ্রুপ কিংবা হেমিঅ্যাসিটাল গ্রুপযুক্ত একটি ওপেন-চেইন ফর্মে থাকলেই কেবল একটি শর্করাকে বিজারক শর্করা হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়।[৩] যেসকলমনোস্যাকারাইডস অ্যালডিহাইড গ্রুপকে ধারণ করে তারা অ্যালডোজ নামে পরিচিত, এবং মনোস্যাকারাইডসগুলো কিটোন গ্রুপকে ধারণ করলে তাদের বলা হয় কিটোজ । অ্যালডিহাইডকে জারণ বিক্রিয়ার মাধ্যমে জারিত করা যেতে পারে এবং তাতে অপর একটি যৌগ বিজারিত হয়। অর্থাৎ বিজারক শর্করা এমন এক ধরনের যৌগ যারা নির্দিষ্ট রাসায়নিক যৌগকে বিজারিত করতে পারে। ওপেন-চেইন ফর্মের কিটোন গ্রুপযুক্ত শর্করাগুলো দ্রবীভূত অবস্থায় একাধিক টটোমেরিক শিফটের মাধ্যমে আইসোমারাইজিং করে দ্রবণে অ্যালডিহাইড গ্রুপ তৈরি করতে সক্ষম। তাই ফ্রুকটোজের মতো কিটোন বহনকারী শর্করাকে বিজারক শর্করা হিসাবে বিবেচনা করা হয়, তবে একটি অ্যালডিহাইড গ্রুপযুক্ত আইসোমারই প্রকৃতপক্ষে বিজারন ঘটায় কারণ কিটোনসমূহ শর্করার বিশ্লেষিত হওয়া ব্যতীত জারিত হতে পারে না। এই জাতীয় আইসোমারাইজেশনসমূহে দ্রবণে উপস্থিত ক্ষার প্রভাবক হিসেবে কাজ করে যা অ্যালডিহাইডের উপস্থিতি প্রমাণ করে। অ্যালডোজ বা অ্যালডিহাইড বহনকারী শর্করাগুলোও বিজারন ঘটায় কারণ অ্যালডোজসমূহের জারণের সময় কিছু নির্দিষ্ট জারক পদার্থ উপস্থিত থাকে যারা বিজারিত হয়।[৩]

বিজারক প্রান্ত[সম্পাদনা]

ডাইস্যাকারাইডসের বিজারক প্রান্তটি হল একটি মুক্ত অ্যানোমেরিক কার্বনযুক্ত মনোস্যাকারাইড যা গ্লাইকোসিডিক বন্ডের সাথে যুক্ত নয় এবং তাই ওপেন-চেইন ফর্মে রূপান্তরিত হতে সক্ষম। এখানে মনে রাখা প্রয়োজন যে ডাইস্যাকারাইডসে দুটি মনোস্যাকারাইডস রয়েছে এবং এটি বিজারক বা অ-বিজারক হতে পারে। তবে একটি বিজারক ডাইস্যাকারাইডসের কেবলমাত্র একটি বিজারক প্রান্ত থাকবে, কারণ ডাইস্যাকারাইডসমূহ গ্লাইকোসাইডিক বন্ড দ্বারা একত্রে যুক্ত থাকে, যাতে অন্তত একটি অ্যানোমেরিক কার্বন প্রয়োজন। একটি অ্যানোমেরিক কার্বন ওপেন-চেইন ফর্মে রূপান্তরিত হতে অক্ষম হওয়ায় কেবল মুক্ত অ্যানোমেরিক কার্বনটিই অপর যৌগটিকে বিজারিত করতে পারে। একটি অ-বিজারক ডাইস্যাকারাইডে উভয় অ্যানোমেরিক কার্বনই গ্লাইকোসাইডিক বন্ধনে আবদ্ধ থাকে।[৪]

একইভাবে বিজারক পলিস্যাকারাইডগুলিরও একটি মাত্র বিজারক প্রান্ত রয়েছে এবং ধরে নেওয়া হয় যে তার কোনও শাখা নেই।

উদাহরণ[সম্পাদনা]

সকল মনোস্যাকারাইডসমূহ বিজারক শর্করা কারণ সকল মনোস্যাকারাইডসের একটি অ্যালডিহাইড গ্রুপ রয়েছে (যদি তারা অ্যালডোজ হয়) বা অ্যালডিহাইড গ্রুপ গঠনের জন্য টটোমারাইজ করতে পারে (যদি তারা কিটোজ হয়)। এর মধ্যে গ্যালাকটোজ, গ্লুকোজ, গ্লিসার‍্যালডিহাইড, ফ্রুক্টোজ, রাইবোজ এবং জাইলোজের মতো সাধারণ মনোস্যাকারাইডসমূহ অন্যতম।

সেলোবায়োজ, ল্যাকটোজ এবং মলটোজের মতো অনেক ডাইস্যাকারাইডসও বিজারক ফর্ম ধারণ করতে পারে, কারণ দুটি ইউনিটের একটির মধ্যে একটি অ্যালডিহাইড গ্রুপ সহ একটি ওপেন-চেইন ফর্ম থাকতে পারে।[৫] তবে, সুক্রোজ এবং ট্রিহ্যালোজের ক্ষেত্রে দুটি ইউনিটের অ্যানোমেরিক কার্বন একসঙ্গে সংযুক্ত থাকে বলে এরা অ-বিজারক ডাইস্যাকারাইডস; যেহেতু কোন ইউনিটই মুক্ত হতে সক্ষম নয়।

ম্যালটোজের[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] একটি ইউনিটের সাইক্লিক এবং ওপেন-চেইন ফর্মের মধ্যে সাম্যাবস্থা

গ্লুকোজ পলিমার, যেমন গ্লুকোজ সিরাপ, ম্যালটোডেক্সট্রিন এবং ডেক্সট্রিনের মতো স্টার্চ এবং স্টার্চের ডেরিভেটিভসসমূহের আণবিক গঠন শুরু হয় একটি মুক্ত অ্যালডিহাইড দিয়ে। আর তাই তারা হলো বিজারক শর্করা। বেশি আর্দ্র-বিশ্লেষিত স্টার্চে বেশি পরিমাণে বিজারক শর্করা থাকে। এই স্টার্চ ডেরিভেটিভগুলিতে উপস্থিত বিজারক শর্করার শতকরা হারকে ডেক্সট্রোজ ইকুইভ্যালেন্ট (ডি.ই) বলে।

গ্লাইকোজেন হল গ্লুকোজের একটি উচ্চ শাখাযুক্ত পলিমার যা প্রাণিদেহে শর্করা সংরক্ষণের মূল গঠন হিসাবে কাজ করে। এটি একটিমাত্র বিজারক প্রান্তবিশিষ্ট বিজারক শর্করা; গ্লাইকোজেন অণুর আকার যতই বৃহৎ হোক না কেন কিংবা এর যতগুলি শাখাই থাকুক না কেন, প্রতিটি শাখার শেষপ্রান্তে একটি অ-বিজারক শর্করার অবশিষ্টাংশ রয়েছে। গ্লাইকোজেন যখন শক্তির উৎপন্ন করার জন্য ভেঙ্গে যায় তখন অ-বিজারক প্রান্ত থেকে গ্লুকোজ ইউনিটগুলি এনজাইমের সহায়তায় প্রতিবারে একটি করে পৃথক হয়ে যায়।[২]

বৈশিষ্ট্যসমূহ[সম্পাদনা]

বিজারক শর্করার উপস্থিতি শনাক্তকরণে বেশ কয়েকটি বৈশিষ্টমূলক পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। তাদের মধ্যে দুটি পরীক্ষায় ব্যবহৃত দুটি দ্রবণ হলো কপার (II) আয়ন: বেনেডিক্টের বিকারক (জলীয় সোডিয়াম সাইট্রেট দ্রবণে Cu2+) এবং ফেলিং দ্রবণ (জলীয় সোডিয়াম টারট্রেট দ্রবণে Cu2+)।[৬] বিজারক শর্করা পরীক্ষণীয় দ্রবণগুলোতে উপস্থিত কপার (II) কে বিজারিত করে কপার (I) আয়নে পরিণত করে, যা পরবর্তীতে ইটের মত লাল রঙের কপার (I) অক্সাইড গঠন করে। জলীয় অ্যামোনিয়াতে রৌপ্য আয়ন (Ag+) দ্বারা গঠিত টলেন বিকারক যুক্ত করার মাধ্যমেও বিজারক শর্করা শনাক্ত করা যায়।[৬] যখন কোন অ্যালডিহাইডে টলেন বিকারক যুক্ত করা হয় তখন তা রৌপ্যধাতুর অধঃক্ষেপ সৃষ্টি করে, বেশিরভাগ সময়েই তা পরিষ্কার কাঁচের পাত্রে রূপার আয়না মত দেখায়।[৩]

৩,৫-ডাইনাইট্রোসালিসাইক্লিক অ্যাসিড হল আরও একটি বিকারক, যা পরিমাণগত শনাক্তকরণে সহায়তা করে। এটি বিজারক শর্করার সাথে বিক্রিয়া করে ৩-অ্যামিনো-৫-নাইট্রোসালিসাইক্লিক অ্যাসিড তৈরি করে, যা থেকে নির্গত বর্ণালী দ্বারা উপস্থিত বিজারক শর্করার পরিমাণ নির্ণয় করা যেতে পারে।[৭]

অ্যাসিটাল বা কিটাল লিংকেজযুক্ত শর্করাসমূহ বিজারক শর্করা নয়, কারণ তাদের কোন মুক্ত অ্যালডিহাইড শিকল নেই। তাই তারা বিজারক শর্করার পরীক্ষণীয় দ্রবণগুলোর কোনটির সাথেই বিক্রিয়া করে না। তবে কোন অ-বিজারক শর্করাকে লঘু হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড দ্বারা আর্দ্র-বিশ্লেষিত করা যেতে পারে। অ্যাসিডের আর্দ্রবিশ্লেষণ এবং প্রশমনের পরে উৎপাদটি বিজারক শর্করা হতে পারে যা পরীক্ষার দ্রবণগুলোর সাথে স্বাভাবিক বিক্রিয়া প্রদর্শন করে।

সকল কার্বোহাইড্রেট মোলিশের বিকারকের সাথে বিক্রিয়া করে থাকে তবে মনোস্যাকারাইডসগুলোর ক্ষেত্রে পরীক্ষণের হার বেশ দ্রুত হয়।

ঔষধে গুরুত্ব[সম্পাদনা]

ফেলিং দ্রবণ বহু বছর ধরে ডায়াবেটিস নির্ণয় সংক্রান্ত পরীক্ষায় ব্যবহৃত হত। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যাতে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যায় যা মূলত যথেষ্ট পরিমাণে ইনসুলিন উৎপাদন করতে না পারা (টাইপ ১ ডায়াবেটিস) বা ইনসুলিনের প্রতি সাড়া প্রদানে অক্ষমতার (টাইপ ২ ডায়াবেটিস) দরুন হয়। গ্লুকোজ দ্বারা জারিত জারক পদার্থের (এই ক্ষেত্রে, ফেলিং দ্রবণ) পরিমাণ নির্ণয় করে রক্তে বা প্রস্রাবে গ্লুকোজের ঘনত্ব নির্ণয় করা সম্ভব। এটি রক্তের গ্লুকোজের মাত্রাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রবিষ্ট প্রয়োজনীয় ইনসুলিনের সঠিক পরিমাণ জানাতে সহায়তা করে।[২]

খাদ্য রসায়নে গুরুত্ব[সম্পাদনা]

মাইলার্ড বিক্রিয়া[সম্পাদনা]

বিজারক শর্করার কার্বনিল গ্রুপগুলো মাইলার্ড বিক্রিয়াতে অ্যামাইনো অ্যাসিডের অ্যামাইনো গ্রুপগুলির সাথে বিক্রিয়া প্রদর্শন করে। মাইলার্ড বিক্রিয়া একটি জটিল সিরিজ বিক্রিয়া যেটি খাদ্য রান্না করার সময় ঘটে।[৮] মাইলার্ড বিক্রিয়ার উৎপাদসমূহ বিচিত্র; এদের কিছু মানব স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী, আবার কিছু বিষাক্ত। তবে মাইলার্ড বিক্রিয়ার সামগ্রিক ফলাফল হল এটি খাদ্যের পুষ্টিমান হ্রাস করে।[৯] মাইলার্ড বিক্রিয়ার বিষাক্ত উৎপাদের একটি উদাহরণ হলো অ্যাক্রিলামাইড, একটি নিউরোটক্সিন (স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতিসাধক) এবং সম্ভবত ক্যান্সার সৃষ্টিকারী; যা উচ্চ তাপমাত্রায় (১২০° সেঃ এর উপরে) স্টার্চযুক্ত খাদ্য রান্না করার সময় মুক্ত অ্যাস্পারাগাইন এবং বিজারক শর্করা থেকে সৃষ্ট।[১০]

খাদ্যমান[সম্পাদনা]

ওয়াইন, ফলের রস এবং আখের মধ্যে অবস্থিত বিভিন্ন মাত্রার বিজারক শর্করা এই খাদ্য পণ্যগুলির গুণমানের পরিচায়ক এবং খাদ্য উৎপাদনের সময় বিজারক শর্করার মাত্রা পর্যবেক্ষণ পণ্যগুলোর বাজারমানের উন্নতির জন্য সহায়ক। এটি করার প্রচলিত পদ্ধতিটি হল লেন-আইনন পদ্ধতি, যা মিথিলিন ব্লুর (একটি সাধারণ জারণ-বিজারণ নির্দেশক) উপস্থিতিতে ফেলিং দ্রবণে কপার (II) এর সাথে বিজারক চিনির টাইট্রেশনের মাধ্যমে করা হয়। তবে এটি ত্রুটিযুক্ত, ব্যয়বহুল এবং সঠিকতার দিক থেকে সংবেদনশীল।[১১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Pratt, Charlotte W.; Cornely, Kathleen (২০১৩)। Essential Biochemistry (Third সংস্করণ)। Wiley। পৃষ্ঠা 626। আইএসবিএন 978-1118083505 
  2. Nelson, David L.; Cox, Michael M. (২০০৮)। Lehnniger: Principles of Biochemistry (Fifth সংস্করণ)। W.H. Freeman and Company। পৃষ্ঠা 241আইএসবিএন 978-0716771081 
  3. Campbell, Mary K.; Farrell, Shawn O. (২০১২)। Biochemistry। Cengage Learning। পৃষ্ঠা 459আইএসবিএন 978-0840068583 
  4. Nelson, David L.; Cox, Michael M. (২০০৮)। Lehnniger: Principles of Biochemistry (Fifth সংস্করণ)। W.H. Freeman and Company। পৃষ্ঠা 243আইএসবিএন 978-0716771081 
  5. Klein, David. (২০১২)। Organic Chemistry (First সংস্করণ)। John Wiley & Sons। পৃষ্ঠা 1162-1165। আইএসবিএন 978-0471756149 
  6. Klein, David. (২০১২)। Organic Chemistry (First সংস্করণ)। John Wiley & Sons। পৃষ্ঠা 1159আইএসবিএন 978-0471756149 
  7. Leung, David W. M.; Thorpe, Trevor A. (এপ্রিল ১৯৮৪)। "Interference by edta and calcium ions of the 3,5-dinitrosalicylate reducing sugar assay"। Pergamon Press: 2949–2950। আইএসএসএন 0031-9422ডিওআই:10.1016/0031-9422(84)83048-4 
  8. Dills, William L. Jr. (নভেম্বর ১৯৯৩)। "Protein fructosylation: fructose and the Maillard reaction"। American Society for Nutrition: 779S–87। আইএসএসএন 0002-9165 
  9. Jiang, Zhanmei; Wang, Lizhe (জুন ২০১৩)। "Biological activities and physicochemical properties of Maillard reaction products in sugar–bovine casein peptide model systems"। Elsevier: 3837–3845। আইএসএসএন 0308-8146ডিওআই:10.1016/j.foodchem.2013.06.041 
  10. Pedreschi, Franco; Mariotti, María Salomé (আগস্ট ২০১৩)। "Current issues in dietary acrylamide: formation, mitigation and risk assessment"। Society of Chemical Industry: 9–20। আইএসএসএন 0022-5142ডিওআই:10.1002/jsfa.6349 
  11. Leotério, Dilmo M.S.; Silva, Paulo (নভেম্বর ২০১৫)। "Copper–4,4′-dipyridyl coordination compound as solid reagent for spectrophotometric determination of reducing sugar employing a multicommutation approach"। European Federation of Food Science and Technology; International Union of Food Science and Technology: 225–231। আইএসএসএন 0956-7135ডিওআই:10.1016/j.foodcont.2015.04.017