পূর্ণিমা মাহাতো

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পূর্ণিমা মাহাতো
ইস্তাম্বুলে বিশ্বকাপ ফাইনালে দীপিকা কুমারীর সাথে মাহাতো (ডানে)
ব্যক্তিগত তথ্য
জাতীয়তাভারতীয়
জন্মজামশেদপুর
ক্রীড়া
দেশভারত
ক্রীড়াতীরন্দাজী
ক্লাবটাটা আর্চারি অ্যাকাডেমি
দলভারতীয় আর্চারি দলের কোচ
অভিষেক১৯৯৩
সাফল্য ও খেতাব
সর্বোচ্চ স্থানজাতীয় চ্যাম্পিয়ন
পদকের তথ্য
মহিলাদের তীরন্দাজী
 ভারত-এর প্রতিনিধিত্বকারী

পূর্ণিমা মাহাতো ভারতের জামশেদপুরের একজন তীরন্দাজ এবং তীরন্দাজী প্রশিক্ষক।[১] তিনি ভারতীয় জাতীয় তীরন্দাজ চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ১৯৯৮ সালের কমনওয়েলথ গেমসে রৌপ্য পদক জিতেছেন। তিনি ২০০৮ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে ভারতীয় জাতীয় দলের প্রশিক্ষক ছিলেন এবং ২০১২ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকেও দলের প্রশিক্ষণার জন্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৩ সালের ২৯শে আগস্ট তারিখে ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে দ্রোণাচার্য পুরস্কারে ভূষিত হন।[২][৩][৪][৫]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

ছোটবেলায়, মাহাতো জামশেদপুরের বিরসানগরের একটি রেঞ্জে তীরন্দাজী অনুশীলন করতেন।[৬] বিরসানগর বন্ধ হয়ে গেলে তিনি জামশেদপুরের বার্মামাইনসে একটি রেঞ্জে চলে যান, তবে যাওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি সেখানেই প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।[৬] তিনি ১৯৯২ সালে ভারতীয় জাতীয় দলে যোগ দেন এবং দলের সাথে প্রশিক্ষণের জন্য দিল্লিতে চলে যান।[৬]

একজন তীরন্দাজ হিসেবে, মাহাতো জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় ধরনের তীরন্দাজী প্রতিযোগিতায় পদক অর্জন করেছিলেন।[৭] তিনি একজন ভারতীয় জাতীয় চ্যাম্পিয়নও ছিলেন।[৬] ১৯৯৩ সালের আন্তর্জাতিক তীরন্দাজী প্রতিযোগিতায়, তিনি দলগত ইভেন্টে একটি স্বর্ণপদক অর্জন করেন।[১] ১৯৯৪ সালে পুনে জাতীয় গেমসে, তিনি তীরন্দাজে ছয়টি স্বর্ণপদক জিতেছিলেন।[৬][৮] তিনি ১৯৯৪ সালের এশিয়ান গেমসে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন কিন্তু পদক পাননি।[৬] ১৯৯৭ সালে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে, তিনি দুটি স্বর্ণপদক অর্জন করেন এবং দুটি জাতীয় রেকর্ড স্থাপন করেন।[৯] তিনি ১৯৯৮ কমনওয়েলথ গেমসে রৌপ্য পদক অর্জন করেন।[৬] ১৯৯৯ সালের ভারতীয় জাতীয় গেমসে, দোলা ব্যানার্জী ৩০ মিটার তীরন্দাজী ইভেন্টে দুই বছর আগে করা মাহাতোর একটি জাতীয় রেকর্ড ভেঙেছিলেন।[১০]

প্রশিক্ষণ[সম্পাদনা]

মাহাতো একজন তীরন্দাজ প্রশিক্ষক। ১৯৯৪ সালে শুরু করে, ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি টাটা আর্চারি একাডেমিতে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।[১][৭][১১] ২০১২ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিয়ান দীপিকা কুমারীকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।[১২][১৩][১৪][১৫][১৬][১৭]

মাহাতো বেশ কয়েকটি ইভেন্টে ভারতীয় জাতীয় দলের প্রশিক্ষক ছিলেন।[১] স্পেনে, ২০০৫ সালের সিনিয়র ওয়ার্ল্ড আউটডোর আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে, তাঁর প্রশিক্ষণে তাঁর দল রৌপ্য পদক জিতেছিল।[১] এছাড়াও তিনি চীনে ২০০৭ সালের সিনিয়র এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতীয় পুরুষ ও মহিলা উভয় দলের প্রশিক্ষক ছিলেন।[১] সেখানে তিনি যে পুরুষ দলের প্রশিক্ষক ছিলেন তারা প্রথম এবং মহিলা দলটি তৃতীয় স্থান অর্জন করেছিল।[১] তিনি ২০০৮ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে ভারতের একজন সহকারী কোচ ছিলেন।[১৮][১৯] তিনি ক্রোয়েশিয়ায় ২০০৮ সালের বিশ্বকাপেও ভারতীয় দলের প্রশিক্ষক ছিলেন,[১] সেখানে তাঁর তীরন্দাজেরা ইভেন্টে একটি রৌপ্য পদক এবং একটি ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করেছিল।[১] তিনি ২০০৯ সালে বিশ্ব যুব তীরন্দাজী চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের প্রশিক্ষক ছিলেন।[২০] তিনি ২০১০ সালের আর্চারি ওয়ার্ল্ড কাপ গ্র্যান্ডে তিন ভারতীয় তীরন্দাজকে প্রশিক্ষন দিয়েছিলেন।[২১] তিনি ২০১০ এশিয়ান গেমসে ভারতীয় জাতীয় দলের কোচ ছিলেন, যেখানে তাঁর তীরন্দাজরা পৃথক ইভেন্টে দুটি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিল।[২২] তিনি ২০১০ কমনওয়েলথ গেমসে ভারতীয় জাতীয় দলের প্রশিক্ষক ছিলেন, তাঁর তীরন্দাজেরা তিনটি স্বর্ণ এবং দুটি ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করেছিলেন।[৭] গ্লোবাল স্পোর্টস সামিট টার্ফ-২০১১-এ, তিনি বর্ষসেরা প্রশিক্ষক নির্বাচিত হন।[১১] [১] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ জুন ২০১২ তারিখে ২০১২ সালের ২৩শে জুন, তিনি রাঁচিতে অলিম্পিক ডে রান উদযাপনে ঝাড়খণ্ড সরকারের কাছ থেকে বছরের সেরা প্রশিক্ষক হিসেবে রাম দয়াল মুন্ডা পুরস্কার পান।[২৩] [২] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে

মাহাতো ২০১২ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য জাতীয় দলের প্রশিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হন।[১][২৪][২৫]

পুরস্কার[সম্পাদনা]

রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে দোনাচার্য পুরস্কার পাচ্ছেন পূর্ণিমা মাহাতো

পূর্ণিমা মাহাতো ২০১৩ সালের ২৯শে আগস্ট তারিখে ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে দ্রোণাচার্য পুরস্কারে ভূষিত হন।[২][৩][৪][৫][২৬] পূর্ণিমা মাহাতো ঝাড়খণ্ডের প্রথম মহিলা যিনি মর্যাদাপূর্ণ দ্রোণাচার্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।[৫][২৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Social Post (৩০ জুলাই ২০০৮)। "Purnima Mahato selected as Indian Archery team coach"। One India। ১৬ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  2. "hindu – Five nominated for Dronacharya Awards"। Hindu। ৮ আগস্ট ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৩ 
  3. "TATA STEEL – Ms. Purnima Mahato, Tata Steel Employee and Senior Coach at Tata Archery Academy has been bestowed with the prestigious Dronacharya Award"। TATA STEEL। ৩১ আগস্ট ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০১৩ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "Calcutta : Jharkhand"। The Telegraph (India)। ২৮ ডিসেম্বর ২০০৪। ৪ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  5. "What's New"। Tata Steel। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  6. "Pune Khel"। Pune Khel। ২১ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  7. "Sport Events in 1997"। Hindu.com। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  8. "Millet wins three more gold medals, State shooters excel"। Express India। ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৯। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  9. "Tata Steel Newsroom – Press Releases"। Tata Steel Newsroom। ২১ অক্টোবর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  10. Aprameya (৯ জুলাই ২০১২)। "London Olympics 2012: Who is Deepika Kumari?"। One India। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  11. "The powerpuff girls"। Hindustan Times। ৪ জুলাই ২০১২। ৫ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  12. "Deepika Kumari leads Indian archers' Olympic dream in London"The Times of India। ৫ জুলাই ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  13. "Ace archer Deepika Kumari will shoot for Olympic glory"The Times of India। ১৭ জুলাই ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  14. "Baby Deepika set to take the big step"। Indian Express। ৩ অক্টোবর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  15. "Winning an Olympic medal is my only goal: Deepika Kumari"। India News। ৫ জুলাই ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  16. Jayesh Thaker (১ আগস্ট ২০০৮)। "Purnima raring to go"। The Telegraph (India)। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  17. "Dola & Co. bow out in quarter finals"। The Telegraph (India)। ১১ আগস্ট ২০০৮। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  18. "Sport / Archery : Indian squad leaves"The Hindu। ১২ জুলাই ২০০৯। ১৬ জুলাই ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  19. PTI (১৩ সেপ্টেম্বর ২০১০)। "Indian archers confident before Archery World Cup Grand Final"The Times of India। ৩ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  20. "Sport : Indian archers take bronze"The Hindu। ২৩ নভেম্বর ২০১০। ২৭ নভেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  21. "Sports Personnel Received Awards"। The Prabhat Khabar। ২৪ জুন ২০১২। ৬ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১২ 
  22. Special Correspondent (১৫ জুলাই ২০১২)। "Sport / Other Sports : Warm send-off for Indian archery squad"The Hindu। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  23. "Pune Mirror – Pune Mirror"। Punemirror.in। ১৬ জুলাই ২০১২। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১২ 
  24. "Telegraph – Purnima bags Dronacharya with ace pupils in quiver"। Telegraph। ২৪ আগস্ট ২০১৩। ১৪ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩ 
  25. "Times Of India – A great honour for me: Purnima Mahato"The Times of India। ১ সেপ্টেম্বর ২০১৩। ১৬ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]