মান্দালয়

স্থানাঙ্ক: ২১°৫৮′৩০″ উত্তর ৯৬°৫′০″ পূর্ব / ২১.৯৭৫০০° উত্তর ৯৬.০৮৩৩৩° পূর্ব / 21.97500; 96.08333
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মান্দালয়
မန္တလေး
সাংস্কৃতিক শহর
মান্দালয়ের পতাকা
পতাকা
মান্দালয়ের অফিসিয়াল সীলমোহর
সীলমোহর
মান্দালয় মিয়ানমার-এ অবস্থিত
মান্দালয়
মান্দালয়
মায়ানমারে (বার্মা) মান্দালয়ের অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২১°৫৮′৩০″ উত্তর ৯৬°৫′০″ পূর্ব / ২১.৯৭৫০০° উত্তর ৯৬.০৮৩৩৩° পূর্ব / 21.97500; 96.08333
দেশ মিয়ানমার
প্রশাসনিক অঞ্চলমান্দালয় অঞ্চল
জেলামান্দালয় জেলা
প্রতিষ্ঠাতারাজা মিন্ডন
সরকার
 • মেয়রই লুইন
আয়তন[১]
 • সাংস্কৃতিক শহর১৬৩.৮৪ বর্গকিমি (৬৩.২৬ বর্গমাইল)
উচ্চতা২২ মিটার (৭০ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১৪ সালের আদমশুমারি)[২]
 • সাংস্কৃতিক শহর১৭,২৬,৮৮৯
 • জনঘনত্ব১১,০০০/বর্গকিমি (২৭,০০০/বর্গমাইল)
 • পৌর এলাকা১৩,১৯,৪৫২
 • গ্রামীণ৪,০৭,৪৩৭
 • জাতিগোষ্ঠীরBamars Indian Chinese Shan
 • ReligionsTheravada Buddhism Christianity Hinduism Islam
সময় অঞ্চলএমএমটি (ইউটিসি+৬:৩০)
এলাকা কোড০২[৩]
যানবাহন নিবন্ধনএমডিওয়াই
ওয়েবসাইটwww.mdyregion.gov.mm

মান্দালয় (/ˌmændəˈl/ বা /ˈmændəl/; বর্মী: မန္တလေး; এমএলসিটিএস: manta.le: [màɴdəlé]) মায়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং শেষ রাজকীয় রাজধানী (বার্মা)। ইরাওয়াদি নদীর পূর্ব তীরে ইয়াঙ্গুন শহরের ৭১৬ কিলোমিটার (৪৪৫ মাইল) উত্তরে অবস্থিত। শহরটির মোট জনসংখ্যা ১২,২৫,৫৫৩ জন (২০১৪ সালের আদমশুমারি)।

মান্দালয় বার্মার অর্থনৈতিক কেন্দ্র এবং বার্মিজ সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত। বিগত বিশ বছরে চীনের ইউন্নান প্রদেশ থেকে চীনা অভিবাসীদের ধারাবাহিক আগমন শহরটির জাতিগত বৈচিত্রের পরিবর্তন করেছে এবং চীনের সাথে বাণিজ্য বৃদ্ধি করেছে।[৪][৫] নেপিডো শহরের সাম্প্রতিক বৃদ্ধি সত্ত্বেও মান্দালয় এখনও একটি বড় ব্যবসা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কেন্দ্র হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

প্রারম্ভিক ইতিহাস[সম্পাদনা]

বার্মার বেশিরভাগ প্রাক্তন (এবং বর্তমান) রাজধানীগুলোর মতো মান্দালায় শহরটিও শাসকের ইচ্ছায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৮৫৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি রাজা মিন্ডন বৌদ্ধধর্মের ২,৪০০ তম জন্মদিন উপলক্ষে বৌদ্ধধর্মের একটি মহানগরীর প্রতিষ্ঠার বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী পূরণ করার জন্য মান্দালয় পাহাড়ের পাদদেশে একটি নতুন রাজকীয় রাজধানী প্রতিষ্ঠা করেন।[৬]

নতুন রাজধানী শহরটি ছিল ৬৬ বর্গ কিলোমিটার (২৫.৫ বর্গ মাইল) বিস্তৃত এবং চারটি নদী দ্বারা বেষ্টিত। শহরের পরিকল্পনাটি ১৪৪টি বর্গাকার ক্ষেত্র নিয়ে গঠিত হয়েছিল, যার মধ্যে মান্দালয় পাহাড়ের কেন্দ্রে ১৬টি বর্গাকার ক্ষেত্র নিয়ে রাজকীয় প্রাসাদ গঠিত হয়েছিল।[৭] ১,০২০ একর (৪১৩ হেক্টর) ক্ষেত্রফলের দুর্গটি চার দিকে ২২০ মিটার (৬,৬৬৬ ফুট) দীর্ঘ এবং ৬৪ মিটার (২১০ ফুট) প্রশস্ত, ৪.৬ মিটার (১৫ ফুট) গভীরতার দেয়াল দ্বারা বেষ্টিত ছিল। প্রাচীর বরাবর ১৬৯ মিটার (৫৫৫ ফুট) ব্যবধানে পাহারাদারদের জন্য সোনার ঝুলন্ত স্পিয়ারগুলোর সাথে ঘূর্ণায়মান ছিল।[৮] প্রতি পাশের দেওয়ালে তিনটি দরজা ছিল এবং পাঁচটি সেতু দ্বারা পরিখা বা খাল অতিক্রম করতে হয়েছিল।[৭] উপরন্তু, রাজা কুথোডো পাগোদা, পাহানান-হা শওয়ে থিন উপসম্পদা ঘর বা বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারের জন্য জনসাধারণের ঘর এবং পালি ক্যাননের জন্য একটি গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

ভূগোল[সম্পাদনা]

মান্দালয় বার্মার কেন্দ্রীয় শুকনো অঞ্চলে ইরাবতদী নদীর তীরে অবস্থিত। স্থানাঙ্ক অনুসারে এটি ২১.৯৮° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯৬.৮° পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৮০ মিটার বা ২৬০ ফুট। ইয়াঙ্গুন থেকে এর দুরত্ব ৬২৬ কিলোমিটার।

জনসংখ্যা[সম্পাদনা]

জাতিসংঘের প্রদিবেদন অনুযায়ী, ২০০৭ সালে মান্দালয়ের জনসংখ্যা প্রায় ১ মিলিয়নে কাছাকাছি ছিল। ২০২২ সালের মধ্যে শহরের জনসংখ্যা প্রায় দেড় মিলিয়ন পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।[৯] যদিও মান্দালয় ঐতিহ্যগতভাবে বামার (বর্মণ) সংস্কৃতি এবং জনগোষ্ঠীর ঘাঁটি হয়ে রয়েছে, গত ২০ বছরে হান-চীনা নৃ-গোষ্ঠীর ব্যাপক আগমন, সেখানে জাতিগত-বামার সংখ্যাগরিষ্ঠকে কার্যকরভাবে প্রভাবিত করেছে।[৪][৫][১০] যদিও অনেক দেশীয় জাতিগত হান-চীনা বার্মিজ নাগরিকত্ব পেতে পারে না, তবে বিদেশী বংশোদ্ভূত ইউনানিজ সহজেই কালো বাজারে বার্মিজ নাগরিকত্ব কার্ড পেতে পারে। স্থানীয় সাংবাদিক মান্ডালে লুডু দা আমর একে "ইউনানের অঘোষিত উপনিবেশ" বলে উল্লেখ্য করেছিলেন। আজ শহরটির আনুমানিক ৪০% থেকে ৫০% জনসংখ্যা হান-চীনা (মান্দালয়ে ইউনানিজ জনসংখ্যার প্রায় ৩০% গঠন করেছে),[১১] যা জাতিগত-বার্মাদের মতো প্রায় বলে মনে করা হয়। মান্দালয়ে ভারতীয় অভিবাসীদের একটি বিশাল জনগোষ্ঠীও বাস করে।

বার্মিজ হল শহরের প্রধান ভাষা এবং চায়না টাউন এবং জেজিও মার্কেটের মতো শহরের বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলিতে চীনা উপভাষাগুলি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, ইংরেজি একটি তৃতীয় ভাষা, যা কেবল কিছু শহুরে মানুষই জানেন।

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

শীতকালে মান্দালয়ে চীনা কম্বল।

মান্দালয় শহরটি উত্তর এবং কেন্দ্রীয় বার্মার জন্য প্রধান বাণিজ্য এবং যোগাযোগ কেন্দ্র। চীনভারতের সঙ্গে বার্মার বহির্মুখী বাণিজ্য মান্দালয় শহরের দ্বারা সংগঠিত হয়।

শহরটির নেতৃস্থানীয় ঐতিহ্যবাহী শিল্পগুলোর মধ্যে রেশম বয়ন, টেপেষ্ট্রি, জেড কাটিয়া এবং মসৃণতা, পাথর ও কাঠের খোদাই করা, মার্বেল এবং ব্রোঞ্জের মূর্তি, মন্দিরের অলঙ্কার এবং প্যারাপেরালিয়া, স্বর্ণের পাতা ও রূপা তৈরির কাজ, দেশলাই উৎপাদন উল্লেখযোগ্য।

যোগাযোগ[সম্পাদনা]

মধ্য বার্মায় মান্দালয়ের কৌশলগত অবস্থান এটিকে মানুষ ও পণ্য পরিবহনের গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলেছে। শহরটি দেশের অন্যান্য অঞ্চল এবং একাধিক পরিবহনের মাধ্যমে চীন এবং ভারতের সাথে সংযুক্ত।

মান্দালয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (এমডিএল) ২০০৮ সালে ইয়াঙ্গুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ পর্যন্ত মিয়ানমারের বৃহত্তম ও আধুনিক বিমানবন্দরগুলির মধ্যে একটি ছিল। ২০০ সালে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিত, এটি অত্যন্ত ব্যবহারযোগ্য; এ বিমানবন্দর থেকে এয়ার এশিয়া এবং ব্যাংকক এয়ারওয়েজে প্রতিদিনের কুনমিং এবং ব্যাংকক এবং চিয়াং মাই সহ বেশিরভাগ অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা করে।[১২] বিমানবন্দরটি সাদা হাতির প্রকল্পগুলির জন্য খারাপ পরিকল্পনা এবং কলুষিত করার জন্য সামরিক শাসকের প্রচারের প্রতিনিধিত্ব করে এসেছে।[১৩] বিমানবন্দরটি শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার (২৮ মাইল) অনেক দূরে একটি আধুনিক মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। এই বিমানবন্দরটি নির্মাণের আগে মানদালয়ে চানমিয়াঠাজী বিমানবন্দর ছিল শহরের প্রধান বিমানবন্দর। এ বিমানবন্দর থেকেও মিয়ানমারের কয়েকটি শহরে কিছু ফ্লাইট পরিচালনা করে।


তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Water Purification Plant No. 8 in Aungmyethazan Township 60% Complete"। Bi-Weekly Eleven (Burmese ভাষায়)। Eleven Media Group। ২৮ এপ্রিল ২০১১। 
  2. Census Report। The 2014 Myanmar Population and Housing Census। 2। Naypyitaw: Ministry of Immigration and Population। মে ২০১৫। পৃষ্ঠা 57। 
  3. "Myanmar Area Codes"। ১ ডিসেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ এপ্রিল ২০০৯ 
  4. China's Ambitions in Myanmar (জুলাই ২০০০)। "China's Ambitions in Myanmar"। IISS Strategic Comments। 
  5. Stephen Mansfield (১৩ মে ১৯৯৯)। "Myanmar's Chinese connection"Japan Times 
  6. "Mandalay Palace" (PDF)। Directorate of Archaeological Survey, Burma। ১৯৬৩। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০০৬ 
  7. Kyaw Thein (১৯৯৬)। The Management of Secondary Cities in south-east Asia. Case Study: MandalayUnited Nations Centre for Human Settlements। UN-Habitat। আইএসবিএন 9789211313130 
  8. Vincent Clarence Scott O'Connor (১৯০৭)। Mandalay: And Other Cities of the Past in Burma। Hutchinson & Co.। পৃষ্ঠা 6–9। 
  9. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; un নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  10. Forbes, Andrew ; Henley, David (2011). Traders of the Golden Triangle. Chiang Mai: Cognoscenti Books. ASIN: B006GMID5
  11. Rieffel, Lex (২০১০)। Myanmar/Burma: inside challenges, outside interests। Brookings Institution Press। পৃষ্ঠা 95–97। আইএসবিএন 978-0-8157-0505-5 
  12. "Archived copy"। ৫ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৫-০৫ 
  13. Maung Maung Oo (২৬ নভেম্বর ২০০১)। "Junta's New White Elephant Project is Paying Off"The Irrawaddy। ২৩ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০১৯ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]