ক্যালিগ্রাফিক গ্যালিয়ন (মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট)
ক্যালিগ্রাফিক গ্যালিয়ন | |
---|---|
শিল্পী | আব্দ আল-কাদির হিসারি |
বছর | আনু. ১৭৬৬-৬৭ |
উপাদান | কাগজের উপর কালি এবং স্বর্ণ |
আয়তন | ৪৮.৩ সেমি × ৪৩.২ সেমি (১৯.০ ইঞ্চি × ১৭.০ ইঞ্চি) |
অবস্থান | মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট, নিউ ইয়র্ক (শহর) |
মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্টের সংগ্রহে একটি ইসলামি চারুলিপির উদাহরণ রয়েছে। মনে করা হয় চারুলিপিটি ১৮শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে তৈরী। উসমানীয় সাম্রাজ্যের একজন চারুলিপিবিদকে কাজটির জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়। এই কাজটি উসমানীয় নৌবাহিনীর একটি গ্যালিয়নকে চিত্রিত করেছে। জাহাজটি সাতজন ঘুমন্ত যুবকের (সাতজন পুরুষ যারা ইব্রাহিমীয় ঈশ্বর দ্বারা সুরক্ষিত ছিল) নামের সাথে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, যাতে জাহাজ সুরক্ষিত থাকে।[১]
বিবরণ
[সম্পাদনা]পটভূমি
[সম্পাদনা]চারুলিপির ইসলামিক বিশ্বে একটি দীর্ঘ ইতিহাস আছে।[২] যদিও এই শিল্প আকৃতিটি (আর্ট ফর্ম) লেখার জন্য বা লিপিবদ্ধ করার জন্য সর্বাধিক সংরক্ষিত ছিল, কয়েকটি স্বতন্ত্র কাজ সম্পূর্ণভাবে চারুলিপির ব্যবহারে তৈরি করা হয়েছিল। "ক্যালিগ্রাম" হিসেবে পরিচিত,[৩] এই ছবিগুলো বেশ কয়েকটি বিষয় চিত্রিত করত। এই ধরনের একটি বিষয় ছিল জাহাজ; উসমানীয় সাম্রাজ্যে বিশেষ করে জনপ্রিয় ছিল জাহাজের ক্যালিগ্রাম। সুফিবাদ বিশ্বাসী কিছুজন অনুশীলনকারী রহস্যময় গুরুত্ব যুক্ত করতেন এই কাজগুলোর সঙ্গে এবং এই কাজগুলো অনুষ্ঠানের স্থানগুলোর ভিতরে প্রদর্শিত হত।[১] একই ধরনের শিল্প আকৃতি- "পিকটোরিয়াল রাইটিং", যা পারস্য সাম্রাজ্যে প্রচলিত ছিল।[৩]
ক্যালিগ্রাফিক গ্যালিয়ন
[সম্পাদনা]মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্টের সংগ্রহে থাকা গ্যালিয়নের কাজটি কাগজের উপর করা, কালি ও সোনার মাধ্যমে। ক্যালিগ্রামে চিত্রিত জাহাজটি একটি গ্যালিয়ন। একটি গ্যালিয়ন একটি বড় যুদ্ধ-জাহাজ, যা স্পেনীয় ও পর্তুগীজ সাম্রাজ্য দ্বারা জাহাজের যুগে ব্যবহৃত হওয়ার জন্য বিখ্যাত।[৪] উসমানীয় নৌবাহিনী প্রায়ই ভূমধ্যসাগরে বৃহৎ স্পেনীয় জাহাজগুলোর সম্মুখীন হতো; এই কারণে উসমানীয় সাম্রাজ্যের নৌবাহিনী স্পেনীয় হামলার মোকাবিলা করার জন্য বেশ কয়েকটি গ্যালিয়ন তৈরি করে। সুতরাং, উসমানীয় নৌবাহিনীতে নতুন গ্যালিয়ন চালু করার সম্মতিতে সম্ভবত ক্যালিগ্রামটি তৈরি করা হয়েছিল। অনুরূপ কলিগ্রামের একটি উদাহরণ, যা একটি ১৭শ শতাব্দীর জাহাজকে চিত্রিত করে, তুরস্কের ইস্তানবুল শহরের টপকাপি প্রাসাদ জাদুঘরের সংগ্রহে রয়েছে।[১][৫]
কলিগ্রামের সৃষ্টিকর্তা সাতজন ঘুমন্ত যুবকের (আরবিতে আশাব আল-কাহফ) গল্পের প্রতিনিধিত্বকারী অক্ষরগুলোকে গ্যালিয়নে গ্রন্থভুক্ত করেছেন। এই সাতজন ঘুমন্ত যুবক হলেন সাতজন পুরুষের একটি দল যাদেরকে আল্লাহ গুহায় আশ্রয় দিয়েছিল। এটা মনে করা হয় যে কাজের উপর এমন একটি শিলালিপি জাহাজটিকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল, ঠিক যেমন ঈশ্বর সাতজন ঘুমন্ত যুবককে সুরক্ষিত করেছিলেন।[১] উপরন্তু, উসমানীয় নৌবাহিনী সাতজন ঘুমন্ত যুবককে উৎসর্গ করেছিল, যাদের সকলের নাম গ্যালিয়নের জাহাজের কাঠামো এবং পাটাতনের উপর দেখতে পাওয়া যায়।[১]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "Calligraphic Galleon"। www.metmuseum.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-০৫।
- ↑ "Art of Arabic Calligraphy"। www.sakkal.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-০৫।
- ↑ ক খ Blair, Sheila S. (২০০৬)। Islamic Calligraphy। এডিনবরা: এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা ৪৪৯-৫৬, ৫০৬-৮, ৫৫৮-৫৯।
- ↑ Little, Benerson (২০১০)। "Spanish Galleons and Portuguese Carracks". Pirate Hunting: The Fight Against Pirates, Privateers, and Sea Raiders from Antiquity to the Present। ওয়াশিংটন, ডি.সি.: Potomac। পৃষ্ঠা ১৪৫। আইএসবিএন 978-1-59797-291-8।
- ↑ Ekhtiar, Maryam, Sheila R. Canby, Navina Haidar, and Priscilla P. Soucek, ed. Masterpieces from the Department of Islamic Art in The Metropolitan Museum of Art. 1st ed. New York: The Metropolitan Museum of Art, 2011. no. 206, pp. 296–97, ill. p. 297.