গ্রেট সল্ট লেক

স্থানাঙ্ক: ৪১°১০′ উত্তর ১১২°৩৫′ পশ্চিম / ৪১.১৬৭° উত্তর ১১২.৫৮৩° পশ্চিম / 41.167; -112.583
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
গ্রেট সল্ট লেক
পাঁচ বছর খরার পর ২০০৩ সালে তোলা স্যাটেলাইট চিত্র। এসময় পানিপৃষ্ঠের উচ্চতা অন্যযেকোন সময়ের চেয়ে কম ছিল। হ্রদের উপর দিয়ে নির্মিত রেলপথের কারণে উত্তর ও দক্ষিণ অংশের পানির রঙের পার্থক্য দৃশ্যমান।
অবস্থানইউটা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
স্থানাঙ্ক৪১°১০′ উত্তর ১১২°৩৫′ পশ্চিম / ৪১.১৬৭° উত্তর ১১২.৫৮৩° পশ্চিম / 41.167; -112.583
ধরনলবণাক্ত হ্রদ, লবণাক্ততার গড় পরিমাণ ২৭%
প্রাথমিক অন্তর্প্রবাহবিয়ার নদী, জর্ডান নদী, ওয়েবার নদী
অববাহিকা২১,৫০০ বর্গ মাইল (৫৫,৬৮৫ বর্গকিমি)
অববাহিকার দেশসমূহযুক্তরাষ্ট্র
সর্বাধিক দৈর্ঘ্য৭৫ মাইল (১২০ কিমি)
সর্বাধিক প্রস্থ২৮ মাইল (৪৫ কিমি)
পৃষ্ঠতল অঞ্চল১,৭০০ বর্গ মাইল (৪,৪০০ বর্গকিমি)
গড় গভীরতা১৬ ফিট (৪.৯ মিটার), হ্রদের পানিপৃষ্ঠ স্বাভাবিক উচ্চতা থাকাকালীন
সর্বাধিক গভীরতা৩৩ ফিট (১০ মিটার) গড়, ১৯৮৭ সালে ৪৫ ফু (১৪ মি)-এর চেয়ে উচ্চ, ১৯৬৩ সালে ২৪ ফু (৭.৩ মি)-এর চেয়ে নিম্ন
পানির আয়তন১,৫৩,৩৮,৬৯৩.৬ acre·ft (১৮.৯২ কিমি)
পৃষ্ঠতলীয় উচ্চতাঐতিহাসিক গড় ৪,২০০ ফিট (১,২৮৩ মি.), ৪,১৯৬.৬ ফিট (১,২৭৯ মি.) অগাস্ট ২৪, ২০০৬ অবধি
দ্বীপপুঞ্জ৮-১৫ (পরিবর্তনশীল)
জনবসতিসল্ট লেক এবং অগডেন

গ্রেট সল্ট লেক যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরে ইউটা অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত পৃথিবীর পশ্চিম গোলার্ধের সর্ববৃহৎ লবণাক্ত হ্রদ[১] এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম টার্মিনাল হ্রদ[২] হ্রদটির গড় আয়তন প্রায় ১,৭০০ বর্গমাইল (৪,৪০০ কিমি),[২] তবে গভীরতার কারণে বছরের বিভিন্ন সময়ে এই আয়তনের তারতম্য ঘটে। ১৯৬৩ সালে হ্রদটির সবচেয়ে আয়তন নির্ণীত হয়, এই পরিমাণ ছিল ৯৫০ বর্গমাইল (২,৫০০ কিমি), তবে ১৯৮৮ সালে সর্বোচ্চ ৩,৩০০ বর্গমাইল (৮,৫০০ কিমি) নির্ণয় করা হয়।[২] ভূপৃষ্ঠ আয়তনের দিক থেকে এটি যুক্তরাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ হ্রদ, যা গ্রেট লেক অঞ্চলের অন্তর্গত নয়।

গ্রেট সল্ট লেক হল হ্রদ বনভিলের সবচেয়ে বড় অবশিষ্টাংশ, যা মূলত পশ্চিম ইউটা অঙ্গরাজ্যের পশ্চিমে বিশাল স্থানজুড়ে বিস্তৃত একটি প্রাগঐতিহাসিক আর্দ্র্র হ্রদ। গ্রেট সল্ট লেকের প্রধান উপনদীগুলো হল জর্ডান, ওয়েবার এবং বিয়ার নদী। এই তিনটি নদী থেকে একত্রে প্রতি বছরে প্রায় ১.১ মিলিয়ন টন খনিজ পদার্থ এই হ্রদে পতীত হয়।[১] হ্রদটি কোন শাখা নদী নেই, ফলে একমাত্র বাষ্পীভবন ছাড়া আর কোন উপায়ে জল এখান থেকে নির্গত হয় না। একারণে এর পানি বেশ লবণাক্ত। এর পানির লবণাক্ততা সমুদ্রের পানির চেয়েও বেশি। হ্রদটির পানিতে বিদ্যমান খনিজ পদার্থের পরিমাণ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গ্রেট সল্ট লেক যুক্তরাষ্ট্রের "মৃত সাগর"[৩] নামে পরিচিত হলেও হ্রদটি লক্ষাধিক পক্ষী, ব্রাইন চিংড়ি, অতিথি পাখিজলকুক্কুটের আবাস হিসেবে কাজ করে।[৪]

উৎস[সম্পাদনা]

লেক বনভিল-এর অবশিষ্ট জলাধারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় হল গ্রেট সল্ট লেক। বনভিল ইউটাতে অবস্থিত একটি প্রাগঐতিহাসিক হ্রদ। বনভিল হ্রদের সর্বোচ্চ নির্ণীত আয়তন ২২,৪০০ বর্গমাইল (৫৮,০০০ কিমি), যা বর্তমান লেক মিশিগানের আয়তনের প্রায় সমান এবং বর্তমান গ্রেট সল্ট লেকের আয়তনের দশগুণ।[২] বনভিলের সর্বোচ্চ ধারণকৃত গভীরতা ৯২৩ ফু (২৮১ মি)।[৫][৬] ইউটা অঙ্গরাজ্যের অধিকাংশ অঞ্চল জুড়ে বনভিল হ্রদ ছিল। এছাড়া প্লাইস্টোসিন যুগে আইডাহো এবং নেভাডা রাজ্যেও এই বনভিল হ্রদের অবস্থান ছিল।

বিগত ১৬,৮০০ বছর পূর্ব পর্যন্ত বনভিল লেকের অস্তিত্ব ছিল। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হ্রদটি শুকিয়ে যেতে থাকে, ফলে হ্রদটি থেকে বেশ কয়েকটি ছোট হ্রদের সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে গ্রেট সল্ট লেক, ইউটা লেক, সেভিয়ার লেক এবং রাশ লেক উল্লেখযোগ্য।[৫]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

মানচিত্র দেখানো হচ্ছে, ১৮৩৮ সালে মেক্সিকোতে অবস্থানকালীন সময়ে "লেক ইউটা বা লবণাক্ত হ্রদ"। ব্রিটানিকা ৭ম সংস্করণ থেকে।

স্থানীয় আমেরিকানদের কাছে গ্রেট সল্ট লেক আগে থেকেই পরিচিত ছিল। স্পেনীয় পর্যটক সিলভাস্ত্রে এসকালান্তে সর্বপ্রথম এই হ্রদের তথ্য লিখিতরূপে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন। তিনি স্থানীয় আদিবাসী টিমপানোগদের কাছ থেকে হ্রদটির তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন ১৭৭৬ সালের দিকে। সেসময় হ্রদটির বিশেষ কোন নাম ছিল না এবং বের্নার্ডো মিয়েরা ওয়াই পেচাকোর মানচিত্রেও সেটির স্থান ছিল না। ১৮২৪ সালে সর্বপ্রথম উত্তর আমেরিকানরা হ্রদটি দেখতে পায়, এরপরে জিম ব্রিজারএটিন প্রভোস্ট স্বতন্ত্রভাবে এটি দেখেন এবং হ্রদটি ক্রমেই পরিচিতি লাভ করতে থাকে।

সেসময় অধিকাংশ পর্যটকগণ অশিক্ষিত ছিলেন, ফলে তারা ঐসময়ের অবস্থা লিখিতরূপে সংরক্ষণ করে যেতে পারেননি। তবে তাদের মৌখিক ভাষ্য থেকে পরবর্তিতে শিক্ষিত পর্যটকগণ তথ্যাবলি সংরক্ষণ করেন, যদিও এতে কিছু ত্রুটি থাকতে পারে। এসকালান্তে ইউটা লেকের তীরে ভ্রমণ করেন, যেটির নাম তিনি রাখেছিলেন লাগুনা টিমপানোগোস। মানচিত্র আঁকিয়ে মিয়েরা কিছুকাল পরে একটি মানচিত্র তৈরি করেন যাতে হ্রদটি স্থান পেয়েছিল। অন্যান্য মানচিত্র আঁকিয়েরা মিয়েরার সেই মানচিত্র অবলম্বন করে পরবর্তিতে বিভিন্ন মানচিত্রে লেক টিমপানোগোস নামে হ্রদটির উল্লেখ করেন। যতই মানুষ গ্রেট সল্ট লেকের ব্যাপারে জানতে থাকলো, তারা ভাবতে শুরু করে যে, "টিমপানোগোস"-ই হল হ্রদটির নাম। কোন কোন মানচিত্রে দুইটি নামই একত্রে ব্যবহৃত হয়েছে। কালক্রমে "টিমপানোগোস" নাম এবং ইউটা লেকের সাথে হ্রদটির সম্পর্কের ইতিবৃত্ত হারিয়ে যায়।

১৮৪৩ সালে জন সি ফ্রেমন্ট সর্বপ্রথম গ্রেট সল্ট লেকে একটি বৈজ্ঞানিক অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু সেসময় শীতকালের দ্রুত আগমন ঘটায় তিনি পুরো হ্রদটির জরিপ শেষ করতে পারেননি। ১৮৫০ সালে হাওয়ার্ড স্টান্সবেরি এই কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন করেছিলেন।[৭] জন ফ্রেমন্টের জরিপের প্রতিবেদন সমসাময়িক বিভিন্ন প্রকাশনায় প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর স্টান্সবেরির জরিপের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় এবং তা জনপ্রিয়তও লাভ করে। এই প্রতিবেদন গ্রেট সল্ট লেক সিটির মরমন সম্প্রদ্বায়ের সাথে স্টান্সবেরির আলোচনার সারসংক্ষেপ উল্লেখ ছিল। এছাড়া তাদের ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কেও তথ্য ছিল। ১৮৪৭ সাল থেকে গ্রেট সল্ট লেক অঞ্চলে মরমন সম্প্রদ্বায় বসবাস করতে শুরু করে।[৮]

১৮৯৫ সালের নভেম্বরে শিল্পী এবং লেখক আলফ্রেড ল্যামবোর্ন গ্রেট সল্ট লেকের অন্যতম দ্বীপ গানিসন আইল্যান্ডে এক বছর থেকে আওয়ার ইনল্যান্ড সী নামে একটি অনুধ্যান ও কাব্য রচনা করেন। নভেম্বরে, ১৮৯৫ থেকে ১৮৯৬ পর্যন্ত তিনি একাই দ্বীপটিতে বাস করেছিলেন। একই বছরের মার্চ মাসে কয়েকজন গুয়ানো চাষী সেখানে আসে। তাদের জীবনগাথা এবং সংগ্রামের ঘটনা ল্যামবোর্ন তার গ্রন্থে উল্লেখ করেন। ১৮৯৬ সালের শীতে ল্যামবোর্ন কয়েকজন গুয়ানো চাষীর সাথে দ্বীপ ছেড়ে চলে যান।[৯]

ভূগোল[সম্পাদনা]

সল্ট লেক সিটির আকাশ থেকে দৃশ্যমান গ্রেট সল্ট লেক

গ্রেট সল্ট লেক অনুসারে সল্ট লেক সিটির নামকরণ হয়েছে। তবে শুরুতে শহরটির নাম “গ্রেট সল্ট লেক সিটি” রাখেন শহরটির একটি চার্চের প্রেসিডেন্ট ব্রিগহ্যাম ইয়াং[১০] তিনি ১৮৪৭ সালের ২৪ জুলাই মরমন সম্প্রদ্বায়কে সল্ট লেক উপত্যকায় নিয়ে আসেন।

গ্রেট সল্ট লেকটি পাঁচটি কাউন্টিজুড়ে অবস্থিত: বক্স এল্ডার, ডাভিস, টুয়েল, ওয়েবার এবং সল্ট লেক। সল্ট লেক সিটি এবং এর উপশহরগুলো গ্রেট সল্ট লেকের দক্ষিণ-পূর্বে ও পূর্বে অবস্থিত। হ্রদটির উত্তর এবং পশ্চিম অঞ্চলে জনবসতি নেই বললেই চলে। হ্রদের পশ্চিমে রয়েছে বনভিল সমভূমি। হ্রদের দক্ষিণে রয়েছে স্টান্সবেরি পর্বত।

তিনটি প্রধান নদী এবং কিছু ছোট আকৃতির নদী থেকে মূলত গ্রেট সল্ট লেকে পানি পতিত হয়। ঐ তিনটি নদীর উৎপত্তি হয়েছে ইউটা অঙ্গরাজ্যের উত্তর-পশ্চিমের উইন্টা পর্বতমালা থেকে। এদের মধ্যে বিয়ার নদী উইন্টা পর্বতমালার উত্তর থেকে শুরু হয়ে উত্তরে প্রবাহিত হয়েছে। প্রবাহের পথে বিয়ার লেকের অবস্থান রয়েছে। বিয়ার নদী থেকে মানবসৃষ্ট খাল দিয়ে বিয়ার লেকে পানি প্রবেশ করে।[১১] বিয়ার লেক অতিক্রম করে বিয়ার নদী আইডাহো অঙ্গরাজ্যের দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে অবশেষে গ্রেট সল্ট লেকের উত্তর-পূর্বে পতিত হয়েছে। ওয়েবার নদের উৎপত্তিও উইন্টা পর্বতের উত্তরে হয়েছে এবং এটি গ্রেট সল্ট লেকের পূর্ব পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। জর্ডান নদী অবশ্য সরাসরি উইন্টা পর্বতমালা থেকে উৎপত্তি হয়নি, বরং এর উৎপত্তি হয়েছে স্বাদু পানির ইউটা হ্রদ থেকে। এই ইউটা হ্রদে পতিত হয়েছে প্রোভো নদ, যার উৎপত্তি উইন্টা পর্বতমালায়।[৫] জর্ডান নদী ইউটা অঙ্গরাজ্যের উত্তর দিক থেকে প্রবাহিত হয়ে গ্রেট সল্ট লেকের দক্ষিণ-পূর্বে পতিত হয়েছে।

গ্রেট সল্ট লেকের মাঝ দিয়ে একটি রেলপথ প্রবাহিত হয়েছে। রেলপথটি গ্রেট সল্ট লেককে তিনটি অংশে বিভক্ত করেছে: উত্তর-পূর্ব অংশ, উত্তর-পশ্চিম অংশ এবং দক্ষিণ অংশ। উত্তর-পশ্চিম অংশটিতে কেবল ছোট কিছু জলস্রোত থেকে পানি পতিত হয়, তাই এই অংশের লবণাক্ততা হ্রদের অন্যান্য অংশের চেয়ে বেশি।

দ্বীপ[সম্পাদনা]

যেহেতু গ্রেট সল্ট লেকের পানিপৃষ্ঠের উচ্চতা সময়ভেদে পরিবর্তিত হয়, তাই কোন দ্বীপ যা বছরের কোন সময় উপদ্বীপ বলে মনে হতে পারে, আবার অল্প পানির অংশে অবস্থিত কোন দ্বীপ বছরের অন্য সময় পানি দিয়ে প্লাবিত হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তরাষ্ট্র দপ্তর এবং ভূতাত্ত্বিক জরিপ কর্তৃপক্ষের হিসেব অনুসারে গ্রেট সল্ট লেকে আটটি স্বতন্ত্র নামবিশিষ্ট দ্বীপ রয়েছে। এগুলোর কোনটিই কখনো প্লাবিত হয়নি। বছরের যে সময়ে হ্রদে পানিপৃষ্ঠের উচ্চতা কমে যায়, তখন আটটি দ্বীপের সবগুলোই মূল ভূখন্ডের সাথে ভূপৃষ্ঠ দ্বারা যুক্ত হয়েছে। এই আটটি দ্বীপ ছাড়াও গ্রেট সল্ট লেকে রয়েছে বেশ কিছু প্রবালপ্রাচীর। পানিপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে গেলে এগুলো তলিয়ে যায়। যেহেতু গ্রেট সল্ট লেকের পানিপৃষ্ঠের উচ্চতা সময়ভেদে পরিবর্তিত হয়, তাই কোন দ্বীপ যা বছরের কোন সময় উপদ্বীপ বলে মনে হতে পারে, আবার অল্প পানির অংশে অবস্থিত কোন দ্বীপ বছরের অন্য সময় পানি দিয়ে প্লাবিত হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তরাষ্ট্র দপ্তর এবং ভূতাত্ত্বিক জরিপ কর্তৃপক্ষের হিসেব অনুসারে গ্রেট সল্ট লেকে আটটি স্বতন্ত্র নামবিশিষ্ট দ্বীপ রয়েছে। এগুলোর কোনটিই কখনো প্লাবিত হয়নি। বছরের যে সময়ে হ্রদে পানিপৃষ্ঠের উচ্চতা কমে যায়, তখন আটটি দ্বীপের সবগুলোই মূল ভূখন্ডের সাথে ভূপৃষ্ঠ দ্বারা যুক্ত হয়েছে। এই আটটি দ্বীপ ছাড়াও গ্রেট সল্ট লেকে রয়েছে বেশ কিছু প্রবালপ্রাচীর। পানিপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে গেলে এগুলো তলিয়ে যায়।[১২]

অপরদিকে ইউটা ভূতাত্ত্বিক জরিপ কর্তৃপক্ষ বলেছে যে গ্রেট সল্ট লেকে ১১টি স্বীকৃত দ্বীপ রয়েছে, যদিও এই সংখ্যা হ্রদের পানিপৃষ্ঠের উপর নির্ভর করে। এদের মধ্যে সাতটি দ্বীপের অবস্থান হ্রদের দক্ষিণে এবং অপর চারটি হ্রদের উত্তর-পশ্চিমে।[১৩] দ্বীপগুলোর আকার এবং তাদের অবস্থা মূলত নির্ভর করে হ্রদের পানিপৃষ্ঠের উপর। আকারের দিক থেকে দ্বীপগুলো হল অ্যান্টেলোপ আইল্যান্ড, স্টান্সবেরি আইল্যান্ড, ফ্রেমন্ট আইল্যান্ড, কেরিংটন আইল্যান্ড, ডলফিন আইল্যান্ড, কাব আইল্যান্ড, ব্যাজার আইল্যান্ড।

অ্যান্টিলোপ আইল্যান্ডের পশ্চিম তীড় থেকে সূর্যাস্ত দৃশ্যমান। দূরে ক্যারিংটন আইল্যান্ড দৃশ্যমান

গ্রেট সল্ট লেকের পাশে অবস্থিত অকুইয়ার পর্বতমালার একটি অংশ হ্রদের তলদেশ পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে। এই পর্বতমালার কিছু অংশ, যেমন-ব্ল্যাক রক, অ্যান্টেলোপ আইল্যান্ড, হোয়াইট রক, এগ আইল্যান্ড, ফ্রেমন্ট আইল্যান্ড গ্রেট সল্ট লেকের দ্বীপ বা উপদ্বীপ। অপরদিকে স্টান্সবেরি পর্বতমালার অংশ হছে স্টান্সবেরি দ্বীপ, কেরিংটন দ্বীপ ও হ্যাট আইল্যান্ডস। লেকসাইড পর্বতের একটা প্রসারিত অংশ হচ্ছে স্ট্রং নব, যা হ্রদের পশ্চিম অংশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এসমস্ত দ্বীপের মাঝের অংশটি হ্রদের গভীরতম স্থান বলে গণনায় প্রমাণিত হয়েছে।[১৪] ১৮৫০ সালে হাওয়ার্ড স্টান্সবেরি এই স্থানে হ্রদের গভীরতা ৩৫ ফুট নির্ণয় করেন। হ্রদের গড় গভীরতা ১৩ ফুট।[১৪] হ্রদের পানিপৃষ্ঠের উচ্চতা কম থাকলে অ্যান্টেলোপ আইল্যান্ড, গুজ আইল্যান্ড, ব্রাউন্স আইল্যান্ড[১৫] ও অন্যান্য কিছু ছোট দ্বীপ তীরের সাথে উপদ্বীপ হিসেবে যুক্ত হয়। স্টান্সবেরি আইল্যান্ড ও স্ত্রং নব অধিকাংশ সময় উপদ্বীপ হিসেবেই থাকে, তবে পানিপৃষ্ঠের উচ্চতা গড় গভীরতা অতিক্রম করলে সেগুলো দ্বীপে পরিণত হয়।

তুষারপাত[সম্পাদনা]

গ্রেট সল্ট লেকের উষ্ণ পানির কারণে ঐ অঞ্চলে প্রায়ই তুষারপাত হয়ে থাকে। উত্তর, উত্তর-পশ্চিম ও পশ্চিম থেকে বাতাস হ্রদের উপরদিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় শীটল হয়। হ্রদের পানি ও বায়ুর তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে তুষারপাত ঘটে। হ্রদের পূর্বে টুয়েল কাউন্টি ও ডেভিস কাউন্টিতে এই ঘটনা বেশি হয়ে থাকে। অনেক সময়ই একারণে অধিক তুষারপাত ঘটে, তবে বায়ুর চলাচলের পথের উপর নির্ভর করে তুষারপাতও সেই দিক বরাবর হয়।

হ্রদের কারণে এই তুষারপাত সাধারণত শীতের প্রারম্ভে ও বসন্তের মাঝামাঝি ঘটে থাকে, কারণ ঐ সময়ে হ্রদের পানি ও তার উপর দিয়ে প্রবাহিত বায়ুর তাপমাত্রার তারতম্য বেশি থাকে। তবে গ্রীষ্মে এই কারণে হ্রদের উপরে বজ্রঝড় হয়। গড়ে প্রতি বছরে আট থেকে দশবার হ্রদের কারণে স্থানীয় তুষারঝড় হয়ে থাকে। এছাড়া সল্ট লেক সিটির গড় তুষার ও বৃষ্টিপাতের প্রায় ১০% উক্ত কারণে ঘটে।[১৬]

জলবিজ্ঞান[সম্পাদনা]

গ্রেট সল্ট লেকের মানচিত্র

হ্রদের পানিতে অধিক লবণের কারণে পানির ঘনত্ব বেশি। একারণে গ্রেট সল্ট লেকে মানুষ অনেক সহজেই ভেসে থাকতে পারে। বিশেষ করে হ্রদের উত্তরে অবস্থিতগানিসন বে-তে এই ঘনত্ব আরো বেশি।[১৭]

১৮৭৫ সাল থেকে গ্রেট সল্ট লেকের পানির উচ্চতা নির্ণয় করা হচ্ছে।[২] গড়ে পানিপৃষ্ঠের উচ্চতা ৪,২০০ ফিট (সমুদ্রপৃষ্ঠের উপর) নির্ণীত হয়েছে। গ্রেট সল্ট লেক একটি অগভীর হ্রদ, তাই পানিপৃষ্ঠের উচ্চতার সামান্য পরিবর্তনের কারণে তীরের আকৃতিতে পরিবর্তন ঘটে। বর্ষাকালে পানির উচ্চতা অধিক হয়ে থাকে এবং বছরের শুষ্ক সময়ে এই উচ্চতা নেমে যায়। এছাড়া হ্রদ থেকে কৃষিকাজের জন্য ও অন্যান্য কারণে পানির ব্যবহারের জন্যেও এই উচ্চতার পরিবর্তন ঘটে। জর্ডান ও ওয়েবার নদীর পানি শিল্পসহ বিভিন্ন কাজের উদ্দ্যেশে ব্যবহৃত হয়।[৫] ১৮৮০-এর দশকে বিশিষ্ট মার্কিন ভূতাত্ত্বিক গ্রুভ কার্ল গিলবার্ট ভবিষ্যৎ বাণী করেন যে গ্রেট সল্ট লেকের পানি কিছুকালের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে (সেসময় বছর শুষ্কতম ছিল এবং হ্রদের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকে চেয়ে কম ছিল)।[১৮]

২০১৪ সালে একটি গবেষণায় গাছের প্রস্থচ্ছেদের মাধ্যমে গ্রেট সল্ট লেকের ৫৭৬ বছরের গঠনের ইতিহাস অনুসন্ধান করা সম্ভব হয়।[১৯] এই অনুসন্ধানে হ্রদের পানির হ্রাস-বৃদ্ধি ও তীরের গঠন বিশেষভাবে জানা যায়। ঐ অঞ্চলের আবহাওয়ার তারতম্য ও সমুদ্র পৃষ্ঠের প্রভাবে হ্রদের সামগ্রিক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়।[২০][২১] জলবায়ুর প্রভাব[২২] ও গাহের প্রস্থচ্ছেদের পরীক্ষার মাধ্যমে[২৩] বিজ্ঞানীরা হ্রদের পানির হ্রাস-বৃদ্ধি সম্পর্কে ৫-৮ বছরের ভবিষ্যদ্বাণী করতে সক্ষম হন।[২৪]

গ্রেট সল্ট লেকের উত্তর ও দক্ষিণ অংশের পানিপৃষ্ঠের উচ্চতার মধ্যে সামান্য পার্থক্য দেখা যায়। হ্রদের দক্ষিণদিকের পানিপৃষ্ঠের গড় উচ্চতা উত্তরদিকের তুলনায় ০.৫ থেকে ২ ফিট (১৫-৬১ সেমি) বেশি। এর কারণ মূলত, হ্রদের ভেতরে পানি দক্ষিণ দিকের বিভিন্ন জলধারার মাধ্যমে প্রবেশ করে।[২]

লবণাক্ততা[সম্পাদনা]

মূলত বাষ্পীভবনের মাধ্যমে গ্রেট সল্ট লেক ও স্থানীয় মরু এলাকায় লবণ জমা হয়। গ্রেট সল্ট লেকের আদি অবস্থা লেক বনভিলের লবণাক্ততা মাত্রাতিরিক্ত ছিল না, তা মাছের জন্যে উপযুক্ত ছিল।[২৫][২৬] পরীক্ষায় দেখা যায় প্রতি বছর হ্রদে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়েই চলেছে, এর কারণ বিভিন্ন নদী ও জলধারা থেকে আসা লবণাক্ত পানি। তবে লেক বনভিলের তুলনায় এই হ্রদের লবণাক্ততা কম।[২৫]

গ্রেট সল্ট লেকের অন্যতম অববাহিকা গিলবার্ট বে-এর লবণাক্ততা বছরের সময়ভেদে পরিবর্তন ঘটে এবং তা অনেকাংশে হ্রদের লবণাক্ততার উপর নির্ভর করে। সাধারণত গিলবার্ট বে-তে লবণাক্ততার পরিমাণ ৫ থেকে ২৭%-এর মধ্যে হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে।[১৭] পৃথিবীর সামুদ্রিক লবণাক্ততা গড়ে ৩.৫%[২৭] এবং ডেড সীতে এর পরিমাণ প্রায় ৩৩.৭%। গ্রেট সল্ট লেকের পানিতে পটাশিয়ামের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।[১৭]

১৯৩০ সালের প্রকল্প[সম্পাদনা]

১৯৩০-এর প্রথমদিকে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ছিল গ্রেট সল্ট লেকের পূর্বে বাধ নির্মাণের মাধ্যমে স্বাদু পানির সংরক্ষণ এবং তা সেচকার্যে ব্যবহার করা। তবে পরিকল্পনা অবস্থাতেই প্রকল্পটি বাতিল হয়ে যায়।[২৮]

ওয়েস্ট ডেজার্ট পাম্পিং প্রকল্প[সম্পাদনা]

১৯৮০ সালের অতিরিক্ত পানিবৃদ্ধির কারণে গ্রেট সল্ট লেকের পূর্বাংশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ইন্টারস্টেট হাইওয়ে ৮০-এরও ক্ষতি হয়। ইউটা প্রাদেশিক সরকার সম্ভাব্য ভবিষ্যত ক্ষতি ঠেকাতে ওয়েস্ট ডেজার্ট পাম্পিং প্রকল্প হাতে নেয়। এই প্রকল্পের মধ্যে ছিল হ্রদের পশ্চিমে পাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা। এই পাম্পিং স্টেশনের অধীনে ছিল তিনটি পাম্প, যেগুলোর সর্বমোট পাম্পিং ক্ষমতা ১,৫০০,০০০ ইউএস গ্যালন প্রতি মিনিট। এছাড়া রয়েছে ২৫ মাইলবিশিষ্ট বাঁধ ও লেকসাইড শহর ও পাম্পিং স্টেশনের মধ্যে ১০ মাইলের প্রবেশ পথ।[২৯]

পাম্পিং প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল গ্রেট সল্ট লেকের পৃষ্ঠের আকার বৃদ্ধি করা, যাতে পানির বাষ্পীভবনের হার হ্রাস পায়। পাম্পগুলো হ্রদের পানি হ্রদের পশ্চিমে মরু এলাকার প্রায় ৩২০,০০০ একর জায়গায় ফেলতে পারতো। এর ফলে মাঝেমধ্যে কিছু পরিমাণ লবণাক্ত পানি মরু এলাকা থেকে হ্রদে প্রবেশ করতো।[২৯] এই প্রকল্পের শুরুর প্রথম বছরে পাম্পগুলো প্রায় ৫০০,০০০ একর ফিট পৃষ্ঠের পানি হ্রদ থেকে অপসারণ করে। ১৯৮৯ সালের জুনে এই প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়, কারণ হ্রদের পানিপৃষ্ঠের উচ্চতা প্রায় ছয় ফিট নেমে গিয়েছিলো। ইউটা ডিভিশন অফ ওয়াটার রিসোর্সেস হ্রদের এই পানিপৃষ্ঠ নেমে যাওয়ার এক-তৃতীয়াংশ কারণ হিসেবে প্রকল্পটিকে চিহ্ণিত করে।[২৯] পাম্পগুলো সর্বমোট ২,৭৩০,০০০ একর ফিট পানি হ্রদ থেকে অপসারণ করেছিলো।[৩০]

যদিও পাম্পগুলো পরবর্তিতে আর ব্যবহার করা হয়নি, তবে সেগুলো ঐ স্টেশনেই রাখা হয়েছে যাতে কখনো হ্রদের পানিপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে গেলে পাম্পের মাধ্যমে পানি অপসারণ করা সম্ভব হয়।[৩১]

বাস্তসংস্থান[সম্পাদনা]

বিয়ার রিভার মাইগ্রেটরি বার্ড রিফিউজিতে আমেরিকান অ্যাভোসেট
শীতকালে গ্রেট সল্ট লেক এলাকায় দৃশ্যমান পাহাড়

পানির অধিক লবণাক্ততা গ্রেট সল্ট লেকের পানিতে কিছু প্রজাতির প্রাণীর থাকার পক্ষে অনুপযোগী। যেমন- ব্রাইন চিংড়ি, ব্রাইন মাছি এবং কয়েক জাতের শৈবাল। গ্রেট সল্ট লেকে আগত অনেক অতিথি পাখি খাদ্য হিসেবে ব্রাইন মাছি গ্রহণ করে।[৩২] তবে হ্রদের পূর্বে এবং উত্তরের স্বাদু পানির অংশ বেশ কিছু প্রজাতির অসংখ্য অতিথি পাখির আবাস হিসেবে কাজ করে। এগুলো ইউটা অঙ্গরাজ্যের প্রায় ৭৫% জলাভূমি।[৩৩]

গ্রেট সল্ট লেকের তীরবর্তী এলাকায় বিশটি হংস ক্লাব, সাতটি সরকারি জলচর পাখি সংরক্ষণ এলাকা এবং একটি বড় রাজ্য পাখি অভয়াশ্রম রয়েছে।[৩৪] এছাড়া রয়েছে বেশ কয়েকটি বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রম। এদের মধ্যে আছে বিয়ার রিভার মাইগ্রেটরি বার্ড রিফিউজি, গিলমোর স্যাংচুয়ারি, গ্রেট সল্ট লেক শোরল্যান্ডস প্রিজার্ভ, সল্ট ক্রিক, হ্যারল্ড ক্রেন, টিমপি স্প্রিংস, ফার্মিংটন বে ওয়াটারফোল ম্যানেজমেন্ট এরিয়া।

গ্রেট সল্ট লেকের কয়েকটি দ্বীপ প্রচুর পাখির আবাস হিসেবে কাজ করে। হ্যাট, গানিসন এবং কাব দ্বিপে মানুষের প্রবেশাধিকার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এই দ্বীপগুলোতে বাস করে বিপন্নপ্রায় আমেরিকান হোয়াইট পেলিকান পাখি।[৩৫] এই হ্রদের দ্বীপগুলোতে অনেক প্রজাতির সরীসৃপ, স্তন্যপায়ী প্রাণীও বাস করে। এছাড়া রয়েছে বৈচিত্র্যময় প্রজাতির অনেক উদ্ভিদ। কিছু উদ্ভিদের প্রজাতি দ্বীপগুলো থেকে বিপন্ন হয়েছে। ১৮০০ সালে একটি অনুসন্ধানী দল এই হ্রদের দ্বীপগুলোতে হলুদ রঙের ফুলবিশিষ্ট উদ্ভিদ প্রচুর পরিমাণে দেখতে পেয়েছিলো, যা তারা ক্যালোকর্টাস লিউটাস নামে চিহ্ণিত করে।এই প্রজাতির উদ্ভিদ বর্তমানে কেবল ক্যালিফোর্নিয়াতে জন্মে।[৩৬][৩৭] এই উদ্ভিদগুলো বর্তমানে ইউটাতে জন্মালেও ঐ দ্বীপগুলোতে আর জন্মে না।[৩৮]

অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে গ্রেট সল্ট লেকেওল্প কিছু প্রজাতির মাছ বাস করে। তবে বিয়ার নদী এলাকা এবং ফার্মিংটন উপসাগরে অনেক মাছ রয়েছে। বিশেষ করে বসন্তে যখন হ্রদে স্বাদু পানির প্রবেশ ঘটে, সেসময় অনেক মাছের আগমন ঘটে। হ্রদের মূল এলাকায় অল্প কিছু প্রজাতির জলচর প্রাণী বাস করে। এদের মধ্যে রয়েছে ব্রাইন চিংড়ি। তারা শীতের প্রথমার্ধে এবং শীতের শেষের দিকে প্রচুর পরিমাণে ২০০ মাইক্রোমিটার আকারের ক্ষুদ্র, শক্ত আবরণবিশিষ্ট ডিম উৎপাদন করে।[৩৯] এই চিংড়িগুলো মাছের খাদ্য হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হয়। বিষাক্ত পদার্থ, ঔষধ ও অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থের শনাক্তকরণেও এগুলোর ব্যবহার রয়েছে। এছাড়া দুই প্রজাতির ব্রাইন মাছি, শৈবাল, ব্যাক্টেরিয়া ইত্যাদি এই হ্রদে পাওয়া যায়।[৪০]

গ্রেট সল্ট লেকের উপরে অবস্থিত রেলওয়ের দুইপাশের পানির লবণাক্ততার পার্থক্যের কারণে দুই অংশের প্রাণীজগতেও তারতম্য দেখা যায়। রেলপথের দক্ষিণে হ্রদের পানি তুলনামূলকভাবে বেশি সবুজ, এর কারণ ঐ অংশে একধরনের সবুজ রঙের শৈবালের উপস্থিতি। অপরদিকে রেলপথের উত্তরে হ্রদের অংশ কিছুটা লালচে। এর কারণ ঐ অংশীকধরনের শৈবাল রয়েছে যা বেটা-ক্যারোটিন নিঃসরণ করে।[৪১] এই বেটা-ক্যারোটিন একধরনের ব্যাকটেরিয়ার সাথে মিলে লালচে রঙের পানি তৈরি করে।[৪২]

রেলপথের উত্তরে হ্রদের অংশে ব্রাইন চিংড়ি পাওয়া গেলেও তা অস্থায়ী বলে ইউটা ডিভিশন অফ ওয়াইল্ডলাইফ রিসোর্সেস-এর পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে।[৪১] ব্রাইন চিংড়ির উপস্থিতি প্রধাণত হ্রদের দক্ষিণ অংশে সীমিত।

গ্রেট সল্ট লেকের যে অংশগুলোতে বেশি স্বাদু পানি প্রবেশ করে, তাদের মধ্যে বিয়ার রিভার বে এবং ফার্মিংটং বে-তে বিদ্যমান প্রাণীজগতের বৈচিত্র্য বেশি। এই দুই অংশের পানির লবণাক্ততা বসন্তে প্রায় স্বাদু পানির কাছাকাছি চলে আসে, বিশেষ করে যখন বরফ গলে। সেসময় কয়েক প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া এবং শৈবাল প্রচুর পরিমাণে প্রজনন ঘটায়। এই জায়গার মাছ জলচর পাখির খাদ্য।

উচ্চমাত্রার মার্কারির উপস্থিতি[সম্পাদনা]

ইউএস জিওলোজিক্যাল সার্ভে এবং ইউএস ফিশ এন্ড ওয়াইল্ডলাইফ গবেষকরা গ্রেট সল্ট লেকে সেলেনিয়ামের মাত্রা পরীক্ষণ করতে গিয়ে হ্রদের পানিতে উচ্চ মাত্রার মিথাইল-মার্কারির উপস্থিতি শনাক্ত করেন। এই মাত্রা ছিল প্রতি লিটার পানিতে ২৫ ন্যানোগ্রাম। ফ্লোরিডা এভারগ্লেডস-এ প্রতি লিটার পানিতে ১ ন্যানোগ্রাম মিথাইল-মার্কারি পাবার পর সেখানে মৎস্য আহোরণ সীমিত করা হয়েছিল।[৪৩] অতিরিক্ত মাত্রার এই পদার্থের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি পানির ৬ মিটার গভীরতা পর্যন্ত পাওয়া যায়। বিশেষ করে পানির যে স্থানগুলোতে অক্সিজেনের ঘনমাত্রা কম, সেখানে মিথাইল-মার্কারির উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে অধিক।

এই পরীক্ষণের ফলাফলের প্রকাশিত হবার পর আরো কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়।[৪৪] বিজ্ঞানীরা মানুষকে এই হ্রদের উত্তুরে খুন্তেহাঁস এবং গোল্ডেনআই হাস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেন। তবে ঐ পদার্থের উপস্থিতি ঐ দুই প্রজাতির হাস খাওয়া থেকে বিরত থাকা ছাড়া আর কোন ক্ষেত্রে (যেমন-হ্রদের বিনোদনমূলক কার্যক্রম) সমস্যার সৃষ্টি করেনি।[৪৫]

পরবর্তীতে আরো কয়েকটি পরীক্ষা সম্পাদন করা হয়। সিনামন টিল জাতের হাঁসকেও খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। অন্য সাতটি হাঁসের জাত পরীক্ষা করে দেখা আয় সেগুলোতে মার্কারির পরিমাণ নিম্ন মাত্রায় রয়েছে, যা খাওয়ার ক্ষেত্রে নিরাপদ।[৪৬]

২০১০ সালের একটি পরীক্ষায় প্রকাশিত হয় যে, গ্রেট সল্ট লেকের পানিতে উচ্চ মাত্রার মার্কারির কারণ শিল্পকারখানার বর্জ্য পদার্থ। বিশ্বব্যাপী সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির উচ্চতা হ্রাস-বৃদ্ধির সাথে সাথে মার্কারির পরিমাণেও তারতম্য লক্ষ্য করা যায়। প্রায় ১৬ শতাংশ মার্কারি আসে নদীর পানি থেকে। ৮৪ শতাংশ মার্কারি বাতাসে উপস্থিত ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থেকে পানিতে দ্রবীভূত হয়। বাতাসের এই অবিষাক্ত মার্কারি ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবে বিষাক্ত মিথাইল মার্কারিতে রূপান্তরিত হয়, যা গ্রেট সল্ট লেকের উত্তর অংশের লবণাক্ত পানিতে জমা হয়।[৪২]

বাণিজ্য[সম্পাদনা]

হ্রদের উত্তর-পশ্চিমে বাষ্পীভবন পুকুর। দক্ষিণে ফ্রেমন্ড দ্বীপ দৃশ্যমান (চিত্রের উপরে)।

ইউটা অঙ্গরাজ্যের অর্থনীতিতে গ্রেট সল্ট লেকের অবদান বার্ষিক ১.৩ বিলিয়ন ডলার।[৪৭] এছাড়া সংশ্লিষ্ট শিল্প থেকে বার্ষিক ১.১ বিলিয়ন, হ্রদের বিনোদনমূলক কার্যক্রম থেকে ১৩৬ মিলিয়ন, ব্রাইন চিংড়ির চাষ থেকে ৫৭ মিলিয়ন ডলার আয় হয়।[৪৮]

হ্রদের তীড় ঘেষে নির্মিত সৌর বাষ্পীভবন পুকুরগুলোতে লবণ এবং ব্রাইন উৎপন্ন হয়। হ্রদ থেকে আহোরিত হয় বিভিন্ন খনিজ পদার্থ; যেমন- সোডিয়াম ক্লোরাইড, সল্ট আইস, পটাশিয়াম সালফেট (বাণিজ্যিক সার হিসেবে ব্যবহৃত), ম্যাগনেসিয়াম-ক্লোরাইড ব্রাইন (ম্যাগনেশিয়াম ধাতুর উৎপাদনে ব্যবহৃত), ক্লোরিন গ্যাস। ইউএস ম্যাগনেশিয়াম কোম্পানি হ্রদের দক্ষিণ-পশ্চিম পার্শ্বে একটি কারখানাতে ম্যাগনেসিয়াম উৎপাদন করে। কোম্পানিটি বিশ্বের মোট উৎপাদিত ম্যাগনেশিয়ামের ১৪% উৎপাদন করে থাকে, যা অন্য যেকোন মার্কিন কোম্পানির চেয়ে বেশি।[৪৮] হ্রদের উপর নির্ভরশীল খনিজ সম্পদ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ইউটা অঙ্গরাজ্য সরকারকে রাজস্ব প্রদান করে, কারণ এই হ্রদের মালিকানা প্রাদেশিক সরকারের।[৪৯]

শীতের শুরু ও শেষের দিকে ব্রাইন চিংড়ির চাষ স্থানীয়ভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাত হিসেবে গড়ে উঠেছে। গ্রেট সল্ট লেক থেকে উৎপাদিত ব্রাইন চিংড়ি বিশ্বের মোট উৎপাদিত ব্রাইন চিংড়ির ৩৫ থেকে ৪৫ শতাংশ যোগান দেয়।[৪৮][৫০] ১৯৫০ এর দশকে প্রথম এ অঞ্চলে ব্রাইন চিংড়ির চাষ শুরু হয়, এগুলো তখন বাণিজ্যিকভাবে বিক্রয় করা হত। ১৯৭০ এর দশকে চিংড়ির পাশাপাশি চিংড়ির ডিমও বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। এই ডিম প্রধানত যুক্তরাষ্ট্রের বাহিরে মাছের খাদ্য হিসেবে বিক্রয় করা হয়। বর্তমানে পূর্ব-এশিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকাতে ব্রাইন চিংড়ির ডিম উল্লেখযোগ্য হারে বিক্রয় হয়।[৫১] এই ডিমের মান বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে, তবে পানির লবণাক্ততা অন্যতম। পানির লবণাক্ততা ২ থেকে ৩% এর মধ্যে থাকলে সাধারণত এই ডিম প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হয়, তবে লবণাক্ততা ১০%-এর উপরে থাকলে সর্বোচ্চ পরিমাণে ডিম উৎপাদন হয়। লবণাক্ততা কমলে ডিমের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয়।[৩৯]

হ্রদের উত্তরের অংশে খনিজ তেলের উপস্থিতি রয়েছে, তবে তা নিম্ন মানের বলে পরীক্ষায় প্রতীয়মান হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে এই তেল উত্তোলন লাভজনক নয়।[১০] ১৯৯৩ নাগাদ, গ্রেট সল্ট লেক থেকে প্রায় ৩,০০০ barrel (৪৮০ মি) অপোরিশোধিত তেল উত্তোলিত হয়েছে হ্রদের রোজেল পয়েন্ট এলাকার একটি তেল উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান।[৫২] হ্রদের ৩০-৫০টি কূপ থেকে প্রায় ১০,০০০ ব্যারেল তেল উত্তোলন করেছে, তবে এটি ১৯৮০-এর পর থেকে নিষ্ক্রিয় রয়েছে। ঊনবিংশ শতকের প্রথম থেকেই এই হ্রদে তেলের উপস্থিতি মানুষের জানা ছিল। ১৯০৪ সালে প্রথম তেল উত্তোলনের প্রচেষ্টা চালানো হয়।[৫৩] ২০০৫ সালে পরিচালিত একটি পরিষ্কার অভিযানে হ্রদের নিকটে তেল উত্তোলনকারী শিল্পকারখানার ধ্বংসাবসেস পাওয়া যায়।[৫৪]

রেলপথ[সম্পাদনা]

১৯৫০-এর দশকে গ্রেট সল্ট লেকের উপরে একটি রেলপথ নির্মাণ করা হয়। এর আগে হ্রদের উপরে একটি কাঠ-নির্মিত পথ ছিল, এর পরিবর্তেই সাউদার্ন প্যাসিফিক রেলওয়ের জন্যে ঐ রেলপথটি নির্মিত হয়। বর্তমানে ইউনিয়ন প্যাসিফিক রেইলরোড এই রেলওয়েটি পরিচালনা করছে।[৫৫] প্রতিদিন ২০ মেইল দীর্ঘ এই রেলপথ দিয়ে প্রায় ১৫টি ট্রেন অতিক্রম করে।[৪৭] হ্রদের পানির উপরে নির্মিত এই দীর্ঘ রেলপথটির কারণে হ্রদের সামগ্রিক অবস্থায় প্রভাব পড়ে।

যেমন- হ্রদের উত্তরের অংশ তুলনামূলকভাবে বেশি লবণাক্ত। এই অংশ ব্রাইন চিংড়ি বাসের পক্ষে অনুপোযোগী। অপরদিকে হ্রদের দক্ষিণাংশে স্বাদু পানির প্রভাব বেশি। সেখানে পানির লবণাক্ততা কম থাকায় তা ব্রাইন চিংড়ির পক্ষে উপযুক্ত নয়। তাই রেলপথের কারণে হ্রদের পানিপ্রবাহে বিঘ্ন ঘটায় তা চিংড়ি শিল্পের জন্যে ক্ষতিকর।[৪৭]

তবে অতিরিক্ত লবণাক্ততা ও খনিজ পদার্থের উপস্থিতি খনিজ পদার্থ আহোরনকারী কোম্পানিগুলোর পক্ষে সুবিধাজনক। মর্টন সল্ট, কার্গিল সল্ট, ব্রোকেন অ্যারো সল্ট, ইউএস ম্যাগনেশিয়াম কোম্পানিগুলো হ্রদের দক্ষিণ অংশ থেকে খনিজ পদার্থ উত্তোলন করে।[৫৫]

বিনোদন[সম্পাদনা]

গ্রেট সল্ট লেকের পানির অনিয়মিত হ্রাস-বৃদ্ধি হ্রদকে ঘিরে গড়ে ওঠা পর্যটন খাতের সহায়ক হয়েছে। তবে শিল্প-কারখানা ও নাগরিক বর্জ্য পদার্থের নিঃসরণ হ্রদের জন্য হুমকিস্বরূপ। বর্জ্যপদার্থের উপস্থিতি হ্রদের বিভিন্ন জীবের পক্ষে ক্ষতিকর, যা হ্রদের সামগ্রিক বাস্তসংস্থান বিনষ্ট করছে।

এসব সমস্যা সত্ত্বেও গ্রেট সল্ট লেক ইউটা অঙ্গরাজ্যের অন্যতম বৃহৎ পর্যটন আকর্ষণ।[৫৬] অ্যান্টিলোপ আইল্যান্ড স্টেট পার্ক এই অঙ্গরাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় পার্ক, এখান থেকে গ্রেট সল্ট লেকের প্যানোরামিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়। এছাড়া এই পার্কে পর্যটকদের জন্য রয়েছে হাইকিং, বাইকিং, বন্যপ্রাণী দর্শন এবং হ্রদের তীরে অবকাশ যাপনের সুবিধা।

ইউটা সরকার হ্রদের দক্ষিণে গ্রেট সল্ট লেক স্টেট পার্কে একটি এবং অ্যান্টিলোপ আইল্যান্ড স্টেট পার্কে আরেকটি পোতাশ্রয় পরিচালনা করে। হ্রদের পানির হ্রাস-বৃদ্ধি এবং ঝড়ের কারণে এখানে নৌকা চালনা ঝুঁকিপূর্ণ।[৫৭] এই হ্রদে এক মাস্তল বিশিষ্ট নৌকাই সবচেয়ে জনপ্রিয়। হ্রদে হঠাৎ ঝড় এবং শৌখিন নৌকাঁচালকদের উপস্থিতি এই হ্রদে নৌকাবিলাসের ক্ষেত্রে ঝুঁকির কারণ।[৫৮]

সল্টএয়ার[সম্পাদনা]

হ্রদের তীরের প্রথম সল্টএয়ারের একটি দৃশ্য , আনু. ১৯০০ সালের সমসাময়িক চিত্র।

১৮৯৩ সাল থেকে গ্রেট সল্ট লেকের তীর এলাকায় তিনটি অবকাশযাপন কেন্দ্র রয়েছে। এগুলোর প্রত্যেকটি সল্টএয়ার নামে পরিচিত। একটি আরেকটি উত্তরাধিকারী হিসেবে নির্মিত হয়েছে। হ্রদের পানির হঠাৎ হ্রাস-বৃধি এগুলোর নির্মাণের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করেছিল। প্রথম দুইটি কেন্দ্র অগ্নিসংযোগের কারণে ধ্বংস হয়েছিল।[৫৯]

১৯২৫ সালের ২২ এপ্রিল প্রথম সল্টএয়ারের প্যাভিলিয়ন ধ্বংস হয়ে যায়। ঐ অবকাশযাপন কেন্দ্রটি পরে আরো সম্প্রসারিত করা হয় এবং তাতে আবার একটি প্যাভিলিয়ন যুক্ত করা হয়। কিন্তু ১৯৭০ সালে আবার অগ্নিসংযোগের কারণে তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[৬০]

বর্তমানে হ্রদের তীরে অবস্থিত সল্টএয়ারটি একটি কনসার্টের স্থান হিসেবে সুপরিচিত।[৬১] নতুন এই অবকাশ কেন্দ্রটি ১৯৮১ সালে নির্মিত হয়। এটি মূল অবকাশ কেন্দ্র থেকে ১ মাইল পশ্চিমে।

অসাধারণ বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

রবার্ট স্মিথসনের স্পাইরাল জেটি
স্পাইরাল জেটি
গ্রেট সল্ট লেকের উত্তর-পশ্চিমে, রোজেল পয়েন্টের কাছে শিল্পী রবার্ট স্মিথসনের তৈরি একটি বিখ্যাত শিল্পকর্ম রয়েছে। এর নাম স্পাইরাল জেটি (১৯৭০)। হ্রদের পানিপৃষ্ঠের উচ্চতা নেমে ৪,১৯৭.৮ ফিট (সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উপরে) হলেই কেবল এই স্পাইরাল জেটি দৃশ্যমান হয়।[৬২]
উলিটিক বালি
গ্রেট সল্ট লেক ও এর তীরে উলিটিক বালি পাওয়া যায়। এই বালুর বৈষিষ্ট্য হল এর দানাগুলো খুবই ক্ষুদ্র ও আকারে গোলাকার হয়। এগুলো ক্যালসিয়াম কার্বনেটের একাধিক স্তরের সমন্বয়ে গঠিত হয়। দানাগুলো দেখতে অনেকটা মুক্তার মত।[৬৩]
গ্রেট সল্ট লেকের তিমি
স্থানীয়শভাবে প্রচলিত আছে যে, ১৮৭৫ সালে এক উদ্যোক্তা জেমস উইকহ্যাম গ্রেট সল্ট লেকে দুইটি তিমি অবমুক্ত করেছিলেন। তার উদ্দেশ্য ছিল এর মাধ্যমে পর্যটন আকর্ষণ হিসেবে গ্রেট সল্ট লেকের জনপ্রিয়তা আরো বৃদ্ধি করা।[৬৪][৬৫] তবে তিমি দুইটি কিছুদিন দেখা যাওয়ার পর আর হ্রদের পানিতে পাওয়া যায়নি, ধারণা করা হয় সেগুলো মারা গিয়েছে। সাম্প্রতিককালে তিমিগুলোর কোন উপস্থিতি জানা যায়নি।
হ্রদের জন্তু
১৮৭৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে বার্নস অ্যান্ড কো সল্ট ওয়ার্ক কোম্পানির কর্মকর্তা ম্যাক নিল ও আরো কয়েকজন হ্রদের উত্তর অংশে অবস্থানকালে একটি জন্তুর দেখা পায় বলে জানা যায়। সেটির দেহ অনেকটা কুমিরের মত এবং মস্তক ঘোরার মাথার মত। স্থানীয়ভাবে প্রচলিত আছে যে তারা ঐ জন্তুটির আক্রমণের শিকার হলে দৌড়ে কোথাও আশ্রয় নেয় এবং সকাল পর্যন্ত সেখানে লুকিয়ে ছিলেন। অনেকের ধারণা জন্তুটি একটি মহিষ ছিল। এই ঘটনার ত্রিশ বছর আগে ব্রাদার বেইনব্রিজ দাবী করেছিল যে সে হ্রদের অ্যান্টিলোপ আইল্যান্ড এলাকায় একটি ডলফিন সদৃশ জন্তুর দেখা পায়। ঐ জন্তটিকে অনেকে নর্থ শোর মন্সটার বলে ডাকে।[১০]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Great Salt Lake. Encyclopædia Britannica Online
  2. Great Salt Lake, Utah. U.S. Geological Survey.
  3. Great Salt Lake — a lively recreational jewel ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ মার্চ ২০০৬ তারিখে. Lynn Arave, Deseret News.
  4. Birds and Great Salt Lake. U.S. Geological Survey.
  5. Morgan, p. 22
  6. Arnow, T (১৯৮৪), "Water-level and water-quality changes in Great Salt Lake, Utah, 1847-1983", U.S. Geological Survey Circular 913, Washington, D.C.: U.S. Geological Survey 
  7. Encyclopædia Britannica, Volume 10, 1971
  8. Howard Stansbury, Army Corps of Engineers (১৮৫২)। Exploration and survey of the valley of the Great Salt Lake of Utah। Lippincott, Grambo & Co। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০১-২৩ 
  9. Carter, Lyndia (জুন ১৯৯৬)। "Guano Sifters on Gunnison Island"History Blazer। Utah State Historical Society। ২০১৩-১০-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১০-৩০ 
  10. Great tales surrounding the Great Salt Lake ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ জুন ২০০৬ তারিখে. Lynn Arave, Deseret News.
  11. Bear Lake ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৪ জুলাই ২০০৬ তারিখে by the Utah Division of Water Quality (PDF format)
  12. Hassible & Keck, pp. 11-12
  13. Commonly Asked Questions About Utah's Great Salt Lake and Ancient Lake Bonneville, pg 05. Utah Geological Survey.
  14. Morgan, pp 18-19
  15. Utah Islands
  16. - Lake has great impact on storms, weather ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ অক্টোবর ২০১২ তারিখে. Joe Bauman, Deseret Morning News.
  17. Can I float in Great Salt Lake? ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ আগস্ট ২০১০ তারিখে. Utah Geological Survey.
  18. Morgan (1947) p.23
  19. DeRose et al. 2014: http://hol.sagepub.com/content/early/2014/04/29/0959683614530441.abstract
  20. Wang et al. 2012: http://journals.ametsoc.org/doi/abs/10.1175/2011JCLI4225.1
  21. Wang et al. 2010: http://journals.ametsoc.org/doi/abs/10.1175/2009JCLI2979.1
  22. Gillies et al. 2011: http://journals.ametsoc.org/doi/abs/10.1175/2010JHM1352.1?journalCode=hydr
  23. Gillies et al. 2015: http://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0022169415006733
  24. Utah Climate Center prediction product: https://climate.usurf.usu.edu/GSL.php ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে
  25. "Commonly Asked Questions About Utah's Great Salt Lake and Ancient Lake Bonneville, pg 03"। ২২ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৫ 
  26. "Commonly Asked Questions About Utah's Great Salt Lake and Ancient Lake Bonneville, pg 02"। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৫ 
  27. "Ocean Water: Salinity" Accessed 7/31/07. http://www.onr.navy.mil/Focus/ocean/water/salinity1.htm ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ মার্চ ২০১২ তারিখে
  28. "Aim To Change Great Salt Lake Into Fresh Water" Popular Science, May 1932
  29. Hassible & Keck, p. 22
  30. Fact Sheet: West Desert Pumping Project ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ আগস্ট ২০১৩ তারিখে. Utah Division of Water Resources.
  31. Great Salt Lake Pumping Project ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৭ আগস্ট ২০১৩ তারিখে. Utah Division of Water Resources.
  32. Great Salt Lake Facts ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ জুলাই ২০১৪ তারিখে. Utah.com.
  33. Utah Wetlands Interpretive Network ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ জুন ২০০৬ তারিখে.
  34. Utah's Great Salt Lake: An Undervalued Resource ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ নভেম্বর ২০০৪ তারিখে. FRIENDS of Great Salt Lake.
  35. R657-15—Closure of Gunnison, Cub and Hat Islands ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ মার্চ ২০০৬ তারিখে. Utah Division of Wildlife Resources.
  36. C. Michael Hogan. 2009. Yellow Mariposa Lily: Calochortus luteus, GlobalTwitcher.com, ed. N. Stromberg ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ অক্টোবর ২০১১ তারিখে
  37. Fiedler, P. (১৯৯৩)। Flora of North America North of Mexico Volume 26। Zebell। Flora of North America Editorial Committee। 
  38. L.M. Shultz; R. D. Ramsey; W. Lindquist; C. Garrard (২০১০)। "Digital Atlas of the Vascular Plants of Utah"। Utah State University। ১১ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ৭, ২০১২ 
  39. Brine Shrimp and Ecology of Great Salt Lake. U.S. Geological Survey.
  40. Life in the Great Salt Lake, Weber State University Department of Botany
  41. North Arm (Gunnison Bay) ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ জুলাই ২০০৬ তারিখে. Utah Division of Wildlife Resources.
  42. Study says mercury in Great Salt Lake is global problem. John Hollenhorst, KSL
  43. Toxic mercury lurking in Great Salt Lake ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে. Salt Lake Tribune.
  44. Utah Waterfowl Advisory ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০০৬ তারিখে. Utah Office Of Epidemiology.
  45. High mercury levels found in two duck species ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ তারিখে. Utah Division of Wildlife Resources.
  46. Duck mercury advisories revised ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে. Utah Division of Wildlife Resources.
  47. Great Salt Lake causeway sinks, prompting emergency repairs. Judy Fahys, The Salt Lake Tribune
  48. "Great Salt Lake an economic powerhouse for the state" Judy Fahys, Salt Lake Tribune
  49. What minerals are produced from Great Salt Lake? ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ নভেম্বর ২০১০ তারিখে. Utah Geological Survey.
  50. Salt Lake Valley’s Leap of Faith ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে Lisa Moore LaRoe, National Geographic.
  51. South Arm (Gilbert Bay) ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ জুলাই ২০০৬ তারিখে. Utah Division of Wildlife Resources.
  52. Hassible & Keck, p. 20
  53. “Bubblin' Crude” at Rozel Point, Box Elder County, Utah ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ মার্চ ২০১১ তারিখে. Mark Milligan, Utah Geological Survey
  54. Rozel Point and Spiral Jetty Revisited, Box Elder County, Utah. Mark Milligan, Utah Geological Survey
  55. Union Pacific causeway upgrade proposal could change colors of the Great Salt Lake. John Hollenhorst, Deseret News
  56. Great Salt Lake ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ এপ্রিল ২০১০ তারিখে. Utah.com
  57. Stum, Marlin; Dan Miller (১৯৯৯)। Visions of Antelope Island and Great Salt LakeUtah State University Press। পৃষ্ঠা 4। আইএসবিএন 0-87421-269-3। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৯-০৩ 
  58. Peter G., Czerny (১৯৭৬)। The great Great Salt LakeBrigham Young University Press। পৃষ্ঠা 4। আইএসবিএন 0-8425-1073-7। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৯-০৩ 
  59. Strack, Don। "Salt Lake, Garfield & Western Railway"। ৩০ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০১১ 
  60. Utah History Encyclpedia। "Saltair"। ১ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০১১ 
  61. Saltair Resort[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]. Utah City Guide.
  62. Pink Water, White Salt Crystals, Black Boulders, and the Return of Spiral Jetty! ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ মে ২০০৮ তারিখে. William F. Case, Utah Geological Survey.
  63. What are the round, white sand grains that make up the beaches?. Utah Geological Survey.
  64. http://biologylabs.utah.edu/rose/about_us_location_salt_lake_city.html
  65. http://archive.sltrib.com/article.php?id=3440548&itype=NGPSID

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

বহিঃস্থ চিত্র
image icon মানচিত্র (FWS.gov)
image icon মানচিত্র (Friends of GSL
image icon মানচিত্র (MrHall.com)
image icon মানচিত্র (USGS.gov)
image icon দৈনিক পৃষ্ঠ স্তর
image icon ভলিউম ও এলাকা বনাম পৃষ্ঠ স্তর
image icon আলোকচিত্র জরিপ
image icon নাসার চিত্র
image icon গবেষণার চিত্র (ওয়েস্টমিনস্টার)
image icon নৌকাঁচালনার চিত্র (UTAH.com)
image icon গাংচিল