জাতক
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/5/53/Bhutanese_painted_thanka_of_the_Jataka_Tales%2C_18th-19th_Century%2C_Phajoding_Gonpa%2C_Thimphu%2C_Bhutan.jpg/220px-Bhutanese_painted_thanka_of_the_Jataka_Tales%2C_18th-19th_Century%2C_Phajoding_Gonpa%2C_Thimphu%2C_Bhutan.jpg)
চীনা বৌদ্ধশাস্ত্র |
---|
বিভাগ |
ভারতের প্রাচীনতম গল্পসংগ্রহের নাম হল "জাতক" বা পালি ভাষায় "জাতকত্থ বণ্ণণা"। জাতক হল ভগবান শাক্যমুনি বুদ্ধের পূর্বজন্মের কাহিনির সঙ্কলন। বুদ্ধ মহাধম্মপাল জাতক (৪৪৭) তার পিতাকে শুনিয়ে স্বদ্ধর্মে দীক্ষা দিয়েছিলেন। স্পন্দন জাতক (৪৭৫), দদ্দভ জাতক (৩২২), লটুকিক জাতক (৩৫৭), বৃক্ষধর্ম জাতক (৭৪) ও সম্মোদমন জাতক ( ৩৩) এই পাঁচটি জাতক শুনিয়ে শাক্য ও কোলিয়দের বিরোধ নিবারণ করেছিলেন। চন্দকিন্নর জাতক (৪৮৫) যশোধরাকে শুনিয়ে পাতিব্রত ধর্ম যে পূর্বজন্ম সংস্কারজ তা বুঝিয়েছিলেন।[১] জাতক বৌদ্ধধর্মের নবাঙ্গের এক অঙ্গ এবং সুত্তপিটক এর অন্তর্গত খুদ্দকনিকায় এর অন্যতম একটি শাখা। ত্রিপিটকের অন্যান্য গ্রন্থেও জাতকের অনেক রেফারেন্স পাওয়া যায়। অনেকের মতে 'জাতক' হল পৃথিবীর সমস্ত ছোট গল্পের উৎস। বৌদ্ধধর্ম প্রচারের জন্য সম্রাট অশোকের পুত্র মহেন্দ্র (পালি: মহেন্দ) ও তার সহযোগীরা যখন সিংহলে গিয়েছিলেন তখন তারা সমগ্র ত্রিপিটক কন্ঠষ্ঠ ও আত্মস্থ করে স্মৃতিতে ধারণ করে সিংহলে নিয়ে এসেছিলেন এবং বৌদ্ধ ধর্ম প্রতিষ্ঠা করেন ।চতুর্থ বৌদ্ধ সঙ্গীতিতে সমগ্র তিপিটক ও অট্ঠকথা সিংহলী ভাষায় অনূদিত করা হয়। পঞ্চম শতাব্দীতে সিংহলি ভাষা থেকে পালি ভাষায় বুদ্ধঘোষ রূপান্তর করেন অট্ঠকথা।যিনি মৈত্রেয় বুদ্ধ এর বোধিসত্ত্ব নামেও খ্যাত। এই গল্পগুলির রচনাকাল সম্পর্কে সাহিত্যিক নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় যা লিখেছিলেন তার কিছু অংশ এখানে তুলে দেওয়া হল -"বর্তমান জাতক কাহিনিমালা যাঁরই অনুদিত হোক এগুলি ভারতের প্রাচীনতম সঙ্কলন এবং খ্রিস্টজন্মের দ্বিতীয় বা তৃতীয় শতকের পূর্ববর্তী এ সম্বন্ধে সকলেই একমত হয়েছেন। " জাতকের রচনাকৌশল মধ্যযুগীয় ইউরোপের অনেক রচনাতে গ্রহণ করা হয়েছিল। মূল গল্পেরও অনেকগুলিই পাওয়া যায় 'আরব্য উপন্যাস' বা 'দেকামেরোন'-এ। আর্য জাতির প্রাচীনতম গল্প সঙ্কলন- এ সম্মান জাতকের যথার্থই প্রাপ্য। জাতকে প্রায় সাড়ে পাঁচশ গল্প অন্তর্ভুক্ত আছে। এ সব গল্পে ধরা পড়েছে প্রায় সহস্র বছর ব্যাপী ভারতে প্রচলিত বিভিন্ন রীতিনীতি, আচার ব্যবহার তথা জীবনচর্যা। প্রতিটি জাতকে আছে পাঁচটি অঙ্গ। সেগুলি হল: (১) পচ্চুপ্পন বত্থু (অর্থাৎ সূচনাপর্ব, বর্তমানের পটভূমি), (২) অতীত বত্থু (গদ্যে বোধিসত্ত্বের অতীত জন্মগত মূল কাহিনিটির বর্ণনা), (৩) গাথা-কবিতায় কাহিনির মর্মবীজ (এইগুলিই জাতকের প্রাচীনতম উপকরণ, এদের উপর ভিত্তি করেই পরবর্তীকালে কাহিনির ভাষ্যরূপ), (৪) বেজ্জকরণ (এতে গাথার আক্ষরিক অর্থ ব্যাখ্যা করা হয়েছে), (৫) সমবধান বা যোগ রচনা (পাত্রপাত্রীদের সঙ্গে বর্তমানের ঐক্য বিনিময় করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ Jatakas,1st,2nd part. Bangla, TPS,Bangladesh,p.60