গ্রেইম ফাওলার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
গ্রেইম ফাওলার
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামগ্রেইম ফাওলার
জন্ম (1957-04-20) ২০ এপ্রিল ১৯৫৭ (বয়স ৬৭)
অ্যাক্রিংটন, ল্যাঙ্কাশায়ার, ইংল্যান্ড
ডাকনামফক্সি
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই
ম্যাচ সংখ্যা ২১ ২৬
রানের সংখ্যা ১৩০৭ ৭৪৪
ব্যাটিং গড় ৩৫.৩২ ৩১.০০
১০০/৫০ ৩/৮ –/৪
সর্বোচ্চ রান ২০১ ৮১*
বল করেছে
উইকেট
বোলিং গড়
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১০/– ৪/২
উৎস: ক্রিকইনফো, ১৫ অক্টোবর ২০১৬

গ্রেইম ‘ফক্সি’ ফাওলার (ইংরেজি: Graeme Fowler; জন্ম: ২০ এপ্রিল, ১৯৫৭) ল্যাঙ্কাশায়ারের অ্যাক্রিংটনে জন্মগ্রহণকারী সাবেক পেশাদার ইংরেজ ক্রিকেটার[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ইংল্যান্ডের পক্ষে ২৬ টেস্টে অংশগ্রহণ করেন ও ৩৫.৩২ ব্যাটিং গড়ে রান তোলেন।[১] ২৬টি একদিনের আন্তর্জাতিকেও অংশ নিয়েছেন গ্রেইম ফাওলার। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ার ও পরবর্তীতে ডারহামের পক্ষাবলম্বন করেন।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

অ্যাক্রিংটন গ্রামার স্কুল ও ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেছেন। ১৯৭৯ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। সচরাচর নিজ কাউন্টি ও ইংল্যান্ড দলে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামতেন তিনি। তন্মধ্যে, ১৯৮৬ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত গেহান মেন্ডিসের সাথে উদ্বোধনী জুটি গড়ে সর্বাধিক সফলতা পেয়েছেন।

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

১৯৮২ সালে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ঐ সময় বর্ণবৈষম্যবাদের সাথে জড়িত দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদ্রোহী দলের সফরে অংশগ্রহণের অভিযোগে ষোলজন ইংরেজ খেলোয়াড়কে তিন বছরের জন্য খেলায় নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়।

১৯৮৩ সালে ওভালে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট শতক ১০৫ করেন ৩০৩ বলে। তেইশ বছর পর প্রথম ইংরেজ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি ও ক্রিস টাভারে একই টেস্ট ইনিংসে শতক হাঁকিয়েছিলেন।[২] ১৯৮৪ সালে লর্ডসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় শতক করেন।[৩]

মাদ্রাজে প্রায় নয় ঘণ্টা ব্যাটিং করে নিজস্ব সর্বোচ্চ ২০১ রান তোলেন। এটিই ভারতে কোন ইংরেজ ক্রিকেটারের প্রথম দ্বি-শতক। একই ইনিংসে মাইক গ্যাটিংও দ্বি-শতক হাঁকিয়েছিলেন। এরফলে এটি একই ইনিংসে দুই ইংরেজ ব্যাটসম্যানের দ্বি-শতক হাঁকানোর প্রথম ঘটনা ছিল।[৪]

কিন্তু, নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দলের সদস্যদের পুণর্বহাল করলে তিনি ইংল্যান্ড দল থেকে স্থানচ্যুত হন। ঐ সময়ে তার ঘাড়ের সমস্যাও বিদ্যমান ছিল।[৫] এরপর তার খেলোয়াড়ী জীবনে তাকে আর কোন টেস্টের জন্য মনোনীত করা হয়নি।

ক্রিকেট বিশ্বকাপ[সম্পাদনা]

১৯৮৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন ফাওলার। পাকিস্তানের বিপক্ষে অপরাজিত ৮১ রান করেন যা ওডিআইয়ে তার সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল। ঐ প্রতিযোগিতায় উপর্যুপরি চারটি অর্ধ-শতক হাঁকিয়ে ইংল্যান্ডকে সেমি-ফাইনালে নিয়ে যেতে সহায়তা করেন। প্রতিযোগিতায় তার ব্যাটিং গড় ছিল ৭২.০০।[৬] যদিও বিশ্বকাপে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ধারাবাহিকভাবে চারটি অর্ধ-শতক করেছেন, তা স্বত্ত্বেও ওডিআইয়ে এগুলোই ছিল তার সেরা সাফল্য।

অবসর[সম্পাদনা]

১৯৮৩ সালে লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে দশ ছক্কা ও পাঁচ চারে সেঞ্চুরি করেন। কিন্তু এগুলোয় কোন দক্ষ বোলার ছিল না।[৭] ল্যাঙ্কাশায়ার থেকে চলে আসার পর ডারহামের পক্ষে খেলেন ও তাদের একাডেমিতে কোচিং করান। ১৯৯৬ সালে ক্রিকেট স্কুল অব এক্সিলেন্স প্রতিষ্ঠা করেন।[৮] অ্যান্ড্রু স্ট্রসরবিন মার্টিন-জেনকিন্সকে তিনি প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।[৯][১০][১১] ১৯৮৭ সাল থেকে ক্রিকেট ধারাভাষ্যকর্মে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। মাঝে-মধ্যে টেস্ট ম্যাচ স্পেশালটেস্ট ম্যাচ সোফায় অংশ নিতেন।[৩] মে, ২০১৫ সাল পর্যন্ত ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্যেষ্ঠ ক্রিকেট কোচের দায়িত্ব পালন করেন।

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

‘ফক্স অন দ্য রান’ শিরোনামে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন তিনি। ইংল্যান্ড দল থেকে বাদ পড়ার পর কাউন্টি মৌসুমের প্রতিকূলতার দিকগুলো এতে তুলে ধরেন। লিচেস্টারশায়ারের তৎকালীন দলীয় সঙ্গী মাইকেল অ্যাথারটন জানান যে, তিনি সর্বক্ষণ ধূমপানে ব্যস্ত থাকতেন।[১২] ফাওলার নিজের অবসাদের বিষয়ে ২০১৬ সালে প্রকাশিত ‘অ্যাবসুলেটলি ফক্সড’ গ্রন্থে তুলে ধরেছেন।[১৩]

ক্রিকেট গ্রন্থ লেখক কলিন বেটম্যান মন্তব্য করেন যে, ঝুঁকি গ্রহণকারী বামহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন ফাওলার। তার ব্যাটিংয়ে খুব কমই দর্শকেরা বিরক্তি পোষণ করতেন।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 70আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  2. Cricinfo – The real deal. Content-usa.cricinfo.com. Retrieved on 26 August 2011.
  3. "Graeme Fowler"BBC News। ৩ মে ২০০৩। 
  4. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১২ আগস্ট ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০১৬ 
  5. "Frozen in time: 18 January 1985"The Observer। London। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৬। 
  6. The Sunday Tribune – Spectrum – Lead Article. Tribuneindia.com. Retrieved on 26 August 2011.
  7. Cricinfo – The record that never was আর্কাইভইজে আর্কাইভকৃত ১৬ জুলাই ২০১২ তারিখে. Content-usa.cricinfo.com. Retrieved on 26 August 2011.
  8. "Graeme Fowler to lead graduate cricketer project at Durham University"Durham MCC UniversityDurham University। ২ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬। ২০০৫-০৪-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  9. "Cricket chiefs view success at the Centre of Excellence"Durham MCC University। Durham University। ২১ নভেম্বর ১৯৯৭। ২০০৪-০৯-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  10. Berry, Scyld (৭ নভেম্বর ২০০৪)। "Strauss right at home on world stage"The Daily Telegraph। London। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  11. Berry, Scyld (অক্টো ২৮, ২০১২)। "We won in India without a coach: Graeme Fowler"Daily News and Analysis। London। Daily Telegraph। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  12. Atherton, Mike (৮ জুলাই ২০০৭)। "Smoking ban a drag for changing-room addicts"The Daily Telegraph। London। ৮ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০২১ 
  13. http://www.bbc.co.uk/sport/cricket/36314152

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]