সেরি বাহলোল
ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান | |
---|---|
অবস্থান | মর্দান, খাইবার পাখতুনখোয়া, পাকিস্তান |
এর অংশ | তখতি বহির ও পার্শ্ববর্তী শহরের বৌদ্ধ ধর্মীয় অবশেষ বা ধ্বংসাবশেষ |
মানদণ্ড | সাংস্কৃতিক: (iv) |
সূত্র | 140-002 |
তালিকাভুক্তকরণ | ১৯৮০ (৪র্থ সভা) |
স্থানাঙ্ক | ৩৪°১৫′১৯.৭১″ উত্তর ৭১°৫৭′০২.৪৮″ পূর্ব / ৩৪.২৫৫৪৭৫০° উত্তর ৭১.৯৫০৬৮৮৯° পূর্ব |
সেরি বাহলোল (উর্দু: سری بہلول), সাহর ই বাহলোল বা সাহরি বাহলোল নামেও পরিচিত, হলো পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মর্দান জেলার তখতি বহির নিকটে অবস্থিত একটি শহর ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ার থেকে ৭০ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]সেরি বাহলোল একটি ঐতিহাসিক স্থান এবং ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে এটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য স্থানের তালিকাভুক্ত আছে।[১] সেরি বাহলোলের ধ্বংসাবশেষ হলো মূলত কুষাণ সাম্রাজ্যের সময়ে নির্মিত একটি ক্ষুদ্র প্রাচীন দুর্গ নগরের অবশিষ্টাংশ বা ধ্বংসাবশেষ।[১][২] এটি দ্বিতীয় বা তৃতীয় শতকে নির্মিত হয়। প্রত্নতাত্ত্বিক জন মার্শালের সময়ে নগরটিকে সংরক্ষিত করা হয়।[৩] তখতি বহি থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সেরি বাহলোলের আয়তন প্রায় ৯.৭ হেক্টর। সেরি বাহলোলের ধ্বংসাবশেষের গঠন কাঠামো, স্থাপত্যশৈলী, নকশা ও নির্মাণশৈলী খ্রিষ্টীয় ১ম থেকে ৭ম শতকের গান্ধার অঞ্চলের বিরাজমান রাজকীয় ও নাগরিক সম্প্রদায়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।[১]
সেরি বাহলোলে গৌতম বুদ্ধের মূর্তির অবশিষ্টাংশ রয়েছে, যা সম্পূর্ণ রূপে উৎখনন করা হয় নি। মূর্তি, মুদ্রা, তৈজসপত্র ও অলঙ্কার প্রভৃতি প্রাচীন নিদর্শন প্রাপ্তি এখানে খুবই সাধারণ।[৪] স্থানীয় অধিবাসীরা তাদের ঘর ও মালিকানাধীন ভূমিতে অবৈধভাবে উৎখনন করে ঐতিহাসিক স্থাপনার ক্ষতিসাধন করে। কিছু স্থানীয় অসাধু পুরাতত্ত্ব ব্যবসায়ীরা স্থানীয়দের ভুল বুঝিয়ে অবৈধ উৎখননে প্ররোচিত করে। সেরি বাহলোলের পুরাতত্ত্ব অবশিষ্টাংশ সংরক্ষণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।[১]
স্থানীয়দের দ্বারা "সেরি বাহলোল" শব্দটির বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। স্থানীয়দের মতে, শব্দটি দুইটি হিন্দি শব্দ "শেরি" এবং "বাহলোল" সমন্বয়ে গঠিত। "শেরি" শব্দের অর্থ সম্মানিত ব্যক্তি এবং "বাহলোল" হলো এলাকার স্থানীয় রাজনৈতিক ও ধর্মীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি। তবে সেরি বাহলোলের পুরনো শহরের মতো এই নামটি তেমন পুরনো নয়, বরং কিছুটা আধুনিক কালের প্রয়োগ। গ্রামটি একটি টিলায় ৯ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। গ্রামের চারপাশে সুরক্ষার জন্য একটি পরিশীলিত পাথুরে দেয়াল বা প্রাচীর রয়েছে। প্রাচীরটি কুষাণ সাম্রাজ্যের সময়ে নির্মিত বলে ধারণা করা হয়।[১] প্রাচীরটি বেশ কয়েকটি জায়গায় ভাঙা এবং ক্ষতিগ্রস্ত। তবে কিছু জায়গায় এটি এখনও দৃশ্যমান। গ্রামের চারপাশে উর্বর ভূমি রয়েছে, যেখানে স্থানীয়রা চাষাবাদ করেন। বিগত কয়েক বছরে ব্যাপক জনসংখ্যা বৃদ্ধি সীমিত জমিকে ঘিরে ফেলেছে, যা খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]-
একজন কৃষক তার জমিতে কীটনাশক দিচ্ছেন
-
গ্রামের দৃশ্য
-
১৯১১-১৯১২ খ্রিষ্টাব্দের উৎখনন
-
ধ্যানী বোধিসত্ত্ব, শিস্ট, সেরি বাহলোল। পাটনা জাদুঘরে সংরক্ষিত
-
বক্তৃতারত বুদ্ধ
-
বোধিসত্ত্বের মাথা
-
বোধিসত্ত্ব
-
দণ্ডায়মান বোধিসত্ত্ব
-
বৌদ্ধ মূর্তি
-
বসা অবস্থায় বুদ্ধের ত্রিমূর্তি, সেরি বাহলোলের উৎখনন, ১৯১১-১৯১২
-
সেরি বাহলোলের মহাবুদ্ধ, ১৯০৯ এর উৎখনন (দণ্ডায়মান)
-
সেরি বাহলোলের উৎখনন, ১৯০৯-১৯১০, পেশোয়ার জাদুঘর
-
ব্রোঞ্জের বুদ্ধ, ব্রিটিশ মিউজিয়াম
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Unesco
- ↑ Katariya, Adesh (২০১২)। The Glorious History of Kushana Empire: Kushana Gurjar History। সংগ্রহের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ Conserving Fortified Heritage: The Proceedings of the 1st International Conference on Fortifications and World Heritage। Cambridge Scholars Publishing। ২০১৬। আইএসবিএন 9781443896375। সংগ্রহের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ Hassan Dani, Dr: The Peshawar
- ↑ FUSSMAN, Gérard (১৯৭৪)। "Documents Epigraphiques Kouchans"। Bulletin de l'École française d'Extrême-Orient। 61: 54–57। আইএসএসএন 0336-1519। জেস্টোর 43732476।
- ↑ Rhi, Juhyung। Identifying Several Visual Types of Gandharan Buddha Images. Archives of Asian Art 58 (2008). (ইংরেজি ভাষায়)। পৃষ্ঠা 53–56।
- ↑ The Classical Art Research Centre, University of Oxford (২০১৮)। Problems of Chronology in Gandhāran Art: Proceedings of the First International Workshop of the Gandhāra Connections Project, University of Oxford, 23rd-24th March, 2017। Archaeopress। পৃষ্ঠা 45, notes 28, 29।