বিভাস রায়চৌধুরী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
অনুবাদ
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৪৬ নং লাইন: ৪৬ নং লাইন:
রায়চৌধুরী ১৯৬৮ সালের ১লা আগস্ট ভারতের [[পশ্চিমবঙ্গ|পশ্চিমবঙ্গের]] [[উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলা|উত্তর চব্বিশ পরগণা]] জেলার সীমান্ত শহর [[বনগাঁ]]র বিহুতিপল্লীতে একটি শরণার্থী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবা-মা শ্যামদুলাল রায় চৌধুরী এবং বিথিকা রায় চৌধুরী ছিলেন মূলত [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] মানুষ। [[বঙ্গভঙ্গ (১৯৪৭)|বঙ্গভঙ্গের]] পর, অবিভক্ত বাংলাদেশে ধনী পরিবার হয়েও, তাঁরা ঘরছাড়া ও নিঃস্ব হয়ে পড়েছিলেন, এবং পূর্ণ-সময়ের শ্রমিক হয়ে বনগাঁতে বসবাস করতে থাকেন। রায়চৌধুরী [[বনগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়]], এবং [[গোবরডাঙ্গা হিন্দু কলেজ|গোবরডাঙ্গা হিন্দু কলেজে]] পড়াশুনো করেন। স্নাতক হবার পরে, চরম দারিদ্র্যের কারণে তিনি তাঁর উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যেতে পারেননি। শৈশবকাল থেকেই তিনি সংগীত, নাটক এবং কবিতায় গভীরভাবে আগ্রহী ছিলেন। তিনি গোবরডাঙা হিন্দু কলেজের বাংলা সাহিত্যের একজন শিক্ষক ঊষাপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে এবং কবি শুভঙ্কর পাত্রের কাছ থেকে কবিতা শিখেছিলেন। পরে [[বিনয় মজুমদার]] তাঁর পরামর্শদাতা ছিলেন।[[File:Roy Chowdhury in North Bengal 2018.jpg|thumb|বিভাস রায়চৌধুরী ২০১৮ সালে উত্তরবঙ্গে]]
রায়চৌধুরী ১৯৬৮ সালের ১লা আগস্ট ভারতের [[পশ্চিমবঙ্গ|পশ্চিমবঙ্গের]] [[উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলা|উত্তর চব্বিশ পরগণা]] জেলার সীমান্ত শহর [[বনগাঁ]]র বিহুতিপল্লীতে একটি শরণার্থী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবা-মা শ্যামদুলাল রায় চৌধুরী এবং বিথিকা রায় চৌধুরী ছিলেন মূলত [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] মানুষ। [[বঙ্গভঙ্গ (১৯৪৭)|বঙ্গভঙ্গের]] পর, অবিভক্ত বাংলাদেশে ধনী পরিবার হয়েও, তাঁরা ঘরছাড়া ও নিঃস্ব হয়ে পড়েছিলেন, এবং পূর্ণ-সময়ের শ্রমিক হয়ে বনগাঁতে বসবাস করতে থাকেন। রায়চৌধুরী [[বনগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়]], এবং [[গোবরডাঙ্গা হিন্দু কলেজ|গোবরডাঙ্গা হিন্দু কলেজে]] পড়াশুনো করেন। স্নাতক হবার পরে, চরম দারিদ্র্যের কারণে তিনি তাঁর উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যেতে পারেননি। শৈশবকাল থেকেই তিনি সংগীত, নাটক এবং কবিতায় গভীরভাবে আগ্রহী ছিলেন। তিনি গোবরডাঙা হিন্দু কলেজের বাংলা সাহিত্যের একজন শিক্ষক ঊষাপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে এবং কবি শুভঙ্কর পাত্রের কাছ থেকে কবিতা শিখেছিলেন। পরে [[বিনয় মজুমদার]] তাঁর পরামর্শদাতা ছিলেন।[[File:Roy Chowdhury in North Bengal 2018.jpg|thumb|বিভাস রায়চৌধুরী ২০১৮ সালে উত্তরবঙ্গে]]


==পেশাগত জীবন==

১৯৮০-এর দশকে রায়চৌধুরীর কবিতা নিয়মিতভাবে ''দৈনিক'' ''বসুমতী'', ''কৃত্তিবাস'', ''কবিসম্মেলন'' এবং [[দেশ (পত্রিকা)|''দেশের'']] মতো বেশ কয়েকটি বাংলা সাহিত্যে প্রকাশিত হত।<ref name="Desh Magazine">{{cite web|last1=Desh|first1=Magazine|title=Desh Mgazine|url=https://www.magzter.com/IN/ABP_Pvt_Ltd/Desh/Culture/|website=ABP|accessdate=26 March 2018}}</ref> তাঁর প্রথম কবিতা সংগ্রহ, ''নষ্ট প্রজন্মের ভাষণ'', ১৯৯৬ সালে কলকাতা বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছিল। তিনি ''উদ্বস্তু শিবিরের পাখি'' (১৯৯৬), ''শিমুল ভাষা, পলাশ ভাষা'' (১৯৯৯), ''জীবনান্দের মেয়ে'' (২০০২), ''চণ্ডালিকা গাছ'' (২০০৬), ''অনন্ত আশ্রম'' (২০১৫) ইত্যাদি অনেক কবিতার বই প্রকাশ করেছেন। তাঁর উপন্যাস ''অশ্রূধারা'' প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ২০০২ সালের ৪ নভেম্বর দেশ পত্রিকায়। তাঁর কবিতাগুলি কবি [[নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী]] সম্পাদিত হীরক খন্ডের মতো বইতে সংকলিত হয়েছে।<ref name="anthology">{{cite book|last1=Chakraborty|first1=Nirendranath|title=Hirak Sangraha|publisher=Ananda|location=Kolkata|isbn=978-93-5040-829-2|page=137|edition=first}}</ref>[[File:Bibhas roy chowdhury and shakti chattapadhyay.jpg|thumb|Bibhas Roy Chowdhury with [[Shakti Chattopadhyay]]]]

==লিখন শৈলী==

রায়চৌধুরী বলিষ্ঠ ভাষায় জীবন থেকে লেখেন, তিনি ছন্দোময় এবং গদ্যকবিতা উভয় মাধ্যমেই সিদ্ধহস্ত। তাঁর কবিতায়, তিনি প্রায়শই জীবনের আনন্দ এবং দুঃখ অন্বেষণ করেন, যার মধ্যে থাকে [[বঙ্গভঙ্গ (১৯৪৭)|বঙ্গভঙ্গের]] পরিণতি, শরণার্থী-জীবনের সংগ্রাম, মাতৃভাষার জন্য ভালবাসা এবং তাঁর নিজের মানুষের কষ্ট। তাঁর সাম্প্রতিক কবিতার বই, ''যশোর রোডের গাছ'' ([[যশোর (শহর)|যশোরের]] রাস্তার উভয় পাশের গাছগুলি), স্বার্থপরতা ও লোভের কারণে গাছের পতন, দূষণ এবং ধ্বংসের বর্ণনা দেয়। তিনি 'সাধারণ মানুষের ভাষা' ব্যবহার করেন তবে তাঁর রূপকগুলি পাঠকদের উপর এক গা ছমছমে প্রভাব ফেলে।<ref name="eminant Bengali poet praises Roy Chowdhury">{{cite book |last1=Goswami |first1=Joy |title=Gonsaibagan,Vol.2 |publisher=Prativas |location=Kolkata |pages=see page–193 }}</ref> তিনি মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যে জনপ্রিয় একটি একটি ছন্দোবদ্ধ ধরণ, পয়ার ছন্দ সহ সকল ধরণের কাব্যিক আকারে লেখেন। তাঁর কাব্যিক যাত্রার প্রথম দিকে তিনি [[জয় গোস্বামী]], শ্যামল কান্তি দাস, মৃদুল দাশগুপ্ত এবং নির্মল হালদার প্রভৃতি ১৯৭০ এর প্রখ্যাত বাঙালি কবি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন।<ref name="Interview in Epilogue by Kiririti Sengupta">{{cite book|last1=Roychowdhury|first1=Bibhas|title=Poem Continuous:Reincarnated Expression|publisher=Inner Child Press Lmt.|location=New Jersey,U.S.A|page=see -68}}</ref> [[File:At international poetry day.jpg|thumb|Roychowdhury (extreme right) at Jibananda Sabhaghar, Kolkata on International Poetry Day]] [[File:IMG 20180210 181345 HDR.jpg|thumb|Roychowdhury reading at [[Kolkata Book Fair]] 2018]]


==তথ্যসূত্র==
==তথ্যসূত্র==

১৩:৫০, ১৪ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

বিভাস রায়চৌধুরী
২০১৮ সালে বিভাস রায়চৌধুরী
২০১৮ সালে বিভাস রায়চৌধুরী
জন্ম (1968-08-01) ১ আগস্ট ১৯৬৮ (বয়স ৫৫)
বনগাঁ, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
পেশাকবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক
ভাষাবাংলা
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগোবরডাঙ্গা হিন্দু কলেজ
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারকৃত্তিবাস পুরস্কার (১৯৯৭), বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (২০১৩), নির্মল আচার্য স্বর্ণপদক
দাম্পত্যসঙ্গীকাকলি রায়চৌধুরী
সন্তানমৃত্তিকা শবনম রায়চৌধুরী

স্বাক্ষরBibhas Roychowdhury

'বিভাস রায়চৌধুরী (জন্ম: ১লা আগস্ট ১৯৬৮) একজন বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক এবং প্রাবন্ধিক। তিনি বিভিন্ন বাংলা সাহিত্য পত্রিকায় পাঁচটি উপন্যাস এবং অসংখ্য প্রবন্ধ সহ কুড়িটিরও বেশি গ্রন্থের রচয়িতা। তিনি ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার (পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি) সহ,[১] কৃত্তিবাস পুরস্কার (১৯৯৭) এবং কবিতার জন্য নির্মল আচার্য স্বর্ণপদক পেয়েছেন। তাঁর কয়েকটি কবিতা ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন সুপরিচিত কবি ও অনুবাদক ডঃ কিরীটী সেনগুপ্ত। হাওয়াকাল পাবলিশার্স (কলকাতা) এর সহযোগিতায় ইনার চাইল্ড প্রেস (নিউ জার্সি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) প্রকাশ করেছে পোয়েম কন্টিনিউয়াস: রিইনকারনেটেড এক্সপ্রেশন (২০১৪)।[২] তিনি কবিতা আশ্রম নামে বাংলা সাহিত্য পত্রিকার অন্যতম প্রধান উপদেষ্টা, এবং বঙ্গ নাট্য চর্চা কেন্দ্র 'নামে একটি থিয়েটার দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং পরিচালক। তিনি এখন একটি প্রকাশনা সংস্থায় কাজ করেন।

প্রথম জীবন

রায়চৌধুরী ১৯৬৮ সালের ১লা আগস্ট ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার সীমান্ত শহর বনগাঁর বিহুতিপল্লীতে একটি শরণার্থী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবা-মা শ্যামদুলাল রায় চৌধুরী এবং বিথিকা রায় চৌধুরী ছিলেন মূলত বাংলাদেশের মানুষ। বঙ্গভঙ্গের পর, অবিভক্ত বাংলাদেশে ধনী পরিবার হয়েও, তাঁরা ঘরছাড়া ও নিঃস্ব হয়ে পড়েছিলেন, এবং পূর্ণ-সময়ের শ্রমিক হয়ে বনগাঁতে বসবাস করতে থাকেন। রায়চৌধুরী বনগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়, এবং গোবরডাঙ্গা হিন্দু কলেজে পড়াশুনো করেন। স্নাতক হবার পরে, চরম দারিদ্র্যের কারণে তিনি তাঁর উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যেতে পারেননি। শৈশবকাল থেকেই তিনি সংগীত, নাটক এবং কবিতায় গভীরভাবে আগ্রহী ছিলেন। তিনি গোবরডাঙা হিন্দু কলেজের বাংলা সাহিত্যের একজন শিক্ষক ঊষাপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে এবং কবি শুভঙ্কর পাত্রের কাছ থেকে কবিতা শিখেছিলেন। পরে বিনয় মজুমদার তাঁর পরামর্শদাতা ছিলেন।

বিভাস রায়চৌধুরী ২০১৮ সালে উত্তরবঙ্গে

পেশাগত জীবন

১৯৮০-এর দশকে রায়চৌধুরীর কবিতা নিয়মিতভাবে দৈনিক বসুমতী, কৃত্তিবাস, কবিসম্মেলন এবং দেশের মতো বেশ কয়েকটি বাংলা সাহিত্যে প্রকাশিত হত।[৩] তাঁর প্রথম কবিতা সংগ্রহ, নষ্ট প্রজন্মের ভাষণ, ১৯৯৬ সালে কলকাতা বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছিল। তিনি উদ্বস্তু শিবিরের পাখি (১৯৯৬), শিমুল ভাষা, পলাশ ভাষা (১৯৯৯), জীবনান্দের মেয়ে (২০০২), চণ্ডালিকা গাছ (২০০৬), অনন্ত আশ্রম (২০১৫) ইত্যাদি অনেক কবিতার বই প্রকাশ করেছেন। তাঁর উপন্যাস অশ্রূধারা প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ২০০২ সালের ৪ নভেম্বর দেশ পত্রিকায়। তাঁর কবিতাগুলি কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী সম্পাদিত হীরক খন্ডের মতো বইতে সংকলিত হয়েছে।[৪]

চিত্র:Bibhas roy chowdhury and shakti chattapadhyay.jpg
Bibhas Roy Chowdhury with Shakti Chattopadhyay

লিখন শৈলী

রায়চৌধুরী বলিষ্ঠ ভাষায় জীবন থেকে লেখেন, তিনি ছন্দোময় এবং গদ্যকবিতা উভয় মাধ্যমেই সিদ্ধহস্ত। তাঁর কবিতায়, তিনি প্রায়শই জীবনের আনন্দ এবং দুঃখ অন্বেষণ করেন, যার মধ্যে থাকে বঙ্গভঙ্গের পরিণতি, শরণার্থী-জীবনের সংগ্রাম, মাতৃভাষার জন্য ভালবাসা এবং তাঁর নিজের মানুষের কষ্ট। তাঁর সাম্প্রতিক কবিতার বই, যশোর রোডের গাছ (যশোরের রাস্তার উভয় পাশের গাছগুলি), স্বার্থপরতা ও লোভের কারণে গাছের পতন, দূষণ এবং ধ্বংসের বর্ণনা দেয়। তিনি 'সাধারণ মানুষের ভাষা' ব্যবহার করেন তবে তাঁর রূপকগুলি পাঠকদের উপর এক গা ছমছমে প্রভাব ফেলে।[৫] তিনি মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যে জনপ্রিয় একটি একটি ছন্দোবদ্ধ ধরণ, পয়ার ছন্দ সহ সকল ধরণের কাব্যিক আকারে লেখেন। তাঁর কাব্যিক যাত্রার প্রথম দিকে তিনি জয় গোস্বামী, শ্যামল কান্তি দাস, মৃদুল দাশগুপ্ত এবং নির্মল হালদার প্রভৃতি ১৯৭০ এর প্রখ্যাত বাঙালি কবি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন।[৬]

Roychowdhury (extreme right) at Jibananda Sabhaghar, Kolkata on International Poetry Day
Roychowdhury reading at Kolkata Book Fair 2018

তথ্যসূত্র

  1. see Hirak Sangraha by Nirendranath Chakraborty, Kabi Porichiti, page-154
  2. Roychowdhury, Bibhas। "Poem continuous:Reincarnated Expression"The telegraph। Inner Child Press। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মার্চ ২০১৮ 
  3. Desh, Magazine। "Desh Mgazine"ABP। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০১৮ 
  4. Chakraborty, Nirendranath। Hirak Sangraha (first সংস্করণ)। Kolkata: Ananda। পৃষ্ঠা 137। আইএসবিএন 978-93-5040-829-2 
  5. Goswami, Joy। Gonsaibagan,Vol.2। Kolkata: Prativas। পৃষ্ঠা see page–193। 
  6. Roychowdhury, Bibhas। Poem Continuous:Reincarnated Expression। New Jersey,U.S.A: Inner Child Press Lmt.। পৃষ্ঠা see -68।