বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণ হচ্ছে এমন কিছু বর্ণ যারা অন্য কোনো বর্ণের সাহায্য ছাড়া নিজে নিজে উচ্চারিত হতে পারে না।[১] বিশ্বের প্রতিটি ভাষাতেই এধরনের কিছু বর্ণ রয়েছে। বাংলা ভাষায় ব্যঞ্জনবর্ণের সংখ্যা মোট ৩৯টি।

সংজ্ঞা[সম্পাদনা]

যেসব বাংলা বর্ণ উচ্চারিত হওয়ার সময় মুখগহ্বরের কোথাও না-কোথাও বাধাপ্রাপ্ত হয় তাদের বলা হয় বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণ।[২] ব্যঞ্জনবর্ণগুলো উচ্চারিত হতে অন্য বর্ণের সাহায্যের প্রয়োজন হয়; এরা অন্যান্য বর্ণের সাহায্যে (মূলতঃ স্বরবর্ণের) উচ্চারিত হয়ে থাকে।

ব্যঞ্জনবর্ণসমূহ[সম্পাদনা]

বাংলা ভাষায় মোট ৩৯টি ব্যঞ্জনবর্ণ রয়েছে। এর মধ্যে অনেকে দুটো 'ব' ছেঁটে একটা করার কথা বলেন যা যুক্তিগ্রাহ্য না হওয়ায় করা হয়নি। এর কারণ নিচে বর্ণিত আছে। 'ক্ষ' (ক্ + ষ) নিয়ে একটি পৃথক স্বাধীন বর্ণ গঠনের মত দেওয়া হলেও তা গৃহীত হয়নি কারণ 'ক্ষ' অন্যান্য যুক্তাক্ষরের মতই; তাই স্বাধীন বর্ণ হিসাবে ধরা যাবে না। ৎ, ং, ঃ ঁ - এগুলির মধ্যে ঁ -কে বর্ণ হিসেবে ধরা হয় না যেহেতু তা উচ্চারণে বাকি তিনটির মত নতুন কিছু যোগ করে না, শুধু উচ্চারণের নাসিক্যভবণ ঘটায় আর তাই, সেটি ব্যঞ্জনবর্ণ নয়। সুতরাং, ৩৯ টি বর্ণ হল:

ব্যঞ্জনবর্ণ
য় ড় ঢ়

এর মধ্যে দুটো 'ব' দেখতে পাচ্ছেন। প্রথমটি বর্গীয় ব, শেষেরটি অন্তস্থ ব।

দুই ব এর উচ্চারণগত পার্থক্য: বর্গীয় ব এর উচ্চারণ স্পষ্ট অর্থাৎ, ওষ্ঠ বর্ণ হওয়ার কারণে এই ব উচ্চারণ করতে হবে ঠোঁট দুটো বন্ধ করার পর ফাঁক করার মাধ্যমে, তবে অন্তস্থ ব এর উচ্চারণ স্থান ভেদে ভিন্ন হয়।

যেমন: বিশ্ব: এর উচ্চারণ বিশ্শ! অর্থাৎ, অন্তস্থ ব কোনো ব্যঞ্জনবর্ণের পরে বসলে সেই ব্যঞ্জনবর্ণের দ্বৈতোচ্চারণ হয়। অনুরূপভাবে অশ্ব, অশ্বিনী ইত্যাদি।

তবে অন্তস্থ ব স্বাধীনভাবে বসলে তার উচ্চারণ বর্গীয় ব এর মতই হয়। যেমন: বিবমিষা, বিমুখ, বাবর্চি (প্রথমটা বর্গীয় আর দ্বিতীয়টা অন্তস্থ ব হলেও এখানে উচ্চারণ এক), বিবাদ (পূর্বানুরূপ) ইত্যাদি।

সংশোধক বর্ণ[সম্পাদনা]

সংশোধক
চিহ্ন চিহ্নের নাম কাজ
খণ্ড ত "ত" এর খণ্ড রূপ
অনুস্বার "ঙ" এর খণ্ড রূপ
বিসর্গ "হ্" এর আরেকটি রূপ, র এবং স বিলুপ্ত হয়ে বানানে বিসর্গ আসতে পারে, যেমন পুনর>পুনঃ, নমস> নমঃ
চন্দ্রবিন্দু অনুনাসিক স্বর

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বর্ণ। স্নাতক বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি। ২০১০ সংস্করণ।
  2. বর্ণ। বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি (পাঠ্যবই)। অষ্টম শ্রেণী। ২০১৫ সংস্করণ।

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]