পিঁপড়া
পিঁপড়া সময়গত পরিসীমা: অন্ত্য ক্রিটেশিয়াস–হলোসিন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
সেনা পিঁপড়াদের সেতু নির্মাণ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জগৎ: | Animalia | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পর্ব: | আর্থ্রোপোডা | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শ্রেণী: | পতঙ্গ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বর্গ: | Hymenoptera | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উপবর্গ: | Apocrita | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মহাপরিবার: | Vespoidea | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
পরিবার: | ফর্মিসিডি Latreille, ১৮০৯ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
Subfamilies | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ক্ল্যাডোগ্রাম
A phylogeny of the extant ant subfamilies.[১] |
পিঁপড়া বা পিপীলিকা হল ফর্মিসিডি (Formicidae) গোত্রের অন্তর্গত সামাজিক কীট বা পোকা। পিঁপড়া এদের ঘনিষ্ঠ প্রজাতি বোলতা ও মৌমাছির মত একই বর্গ হাইমেনপ্টেরার (Hymenoptera) অন্তর্গত। এরা মধ্য-ক্রেটাশাস পর্যায়ে ১১ থেকে ১৩ কোটি বছর পূর্বে বোলতা জাতীয় প্রাণী হতে বিবর্তিত হয় এবং সপুষ্পক উদ্ভিদের উদ্ভবের পর বহুমুখী বিকাশ লাভ করে। এখন পর্যন্ত অনুমান করা ২২,০০০-এরও বেশি পিঁপড়া প্রজাতির মধ্যে ১৫,৭০০ টিরও বেশি প্রজাতি এবং উপ-প্রজাতি শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে।[২][৩][৪][৫] কনুই-সদৃশ শুঙ্গ এবং গ্রন্থির মত যে কাঠামো দিয়ে তার সরু কোমর গঠিত হয় তার মাধ্যমে পিঁপড়াকে সহজেই শনাক্ত করা যায়।
পিঁপড়া উপনিবেশ তৈরি করে বাস করে যা প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্টি হওয়া কয়েক ডজন শিকারী পিঁপড়া থেকে শুরু করে বিশাল এলাকাজুড়ে বাস করা লক্ষ লক্ষ পিঁপড়ার সমন্বয়ে গঠিত হতে পারে। বড় দলগুলি প্রধানত অনুর্বর, পাখাবিহীন নারী পিঁপড়াদের সমন্বয়ে তৈরি হয় যারা কর্মী, সৈন্য এবং অন্যান্য বিশেষায়িত বাহিনীতে বিভক্ত থাকে। প্রায় সব পিঁপড়ার উপনিবেশেই কিছু প্রজননক্ষম পুরুষ পিঁপড়া (ড্রোন) এবং এক বা একাধিক উর্বর নারী পিঁপড়া থাকে, যাদের রাণী পিঁপড়া বলা হয়।
পিঁপড়াদের এই উপনিবেশকে কখনো কখনো সুপার-অর্গানিজম বা দলগতস্বত্তাও বলা হয়, কারণ এরা সবাই মিলে কেবল একটি প্রাণীর মত আচরণ করে এবং অস্তিত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ ভাবে সংগ্রাম করে।[৬]
পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র পিঁপড়ার দেখা মেলে, একমাত্র এন্টার্কটিকা ও এ ধরনের কিছু এলাকা ছাড়া। পিঁপড়া প্রায় যেকোনো বাস্তুসংস্থানে বিকাশ লাভ করতে পারে এবং এরা ভূমিগত বায়োমাসের প্রায় ১৫-২৫% গঠন করে। তাদের এই সাফল্যের কারণ হল তাদের সামাজিক সংগঠন, দ্রুত বাসস্থান পরিবর্তনের ক্ষমতা, রসদ জোগাড় করার দক্ষতা এবং নিজেদের রক্ষা করার পারদর্শিতা। অন্য প্রাণীদের সাথে তাদের দীর্ঘ দিনের সহবিবর্তনের ফলে অন্য প্রানীর আচরণ নকল/কপি করা, পরাশ্রয়ী, পরজীবী এবং মিথোজোবী সম্পর্কের পত্তন ঘটিয়েছে।[৭]
পিপীলিকা সমাজে শ্রমবিভাগ, ব্যক্তিগত পর্যায়ে যোগাযোগ এবং জটিল সমস্যা সমাধানের দক্ষতা রয়েছে। মানুষের সাথে এই সাযুজ্যগুলো তাদেরকে গবেষণার জন্য খুব আকর্ষণীয় প্রাণী করে তুলেছে। অনেক মানব সমাজে আবার পিঁপড়াকে খাদ্য, ঔষধ এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়। পিঁপড়ার কিছু প্রজাতি জৈব কীটনাশক হিসেবেও গুরত্বপূর্ণ। তবে পিঁপড়া মানুষের জন্যে মাঝে মাঝে ক্ষতিরও কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। পিঁপড়া ফসলের ক্ষতি করে এবং দালান-কোঠার ধ্বংস সাধন করে। এর কিছু প্রজাতি যেমন Red imported fire ant কে কোথাও কোথাও আগ্রাসী প্রজাতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ এরা ঘটনাচক্রে নতুন কোন পরিবেশে গিয়ে পড়লেও খুব সহজে সেখানে নিজেদের সুপ্রতিষ্ঠিত করে নিতে পারে।
শ্রেণিবিন্যাস ও বিবর্তন
[সম্পাদনা]
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
Phylogenetic position of the ফর্মিসিডি[৮] |
ফর্মিসিডি পরিবারটি হাইমেনপ্টেরা বর্গের অন্তর্ভুক্ত যে বর্গের মধ্যে পিঁপড়া ছাড়াও রয়েছে মৌমাছি, বোলতা এবং সফ্লাই। ভেসপয়েড বোলতাদের একটি বংশধারা থেকে পিঁপড়াদের বিবর্তন ঘটেছে।[৮] However, since Apoidea is a superfamily, ants must be upgraded to the same rank.[৯] জীবাশ্মের রেকর্ড থেকে জানা গেছে ১৫ কোটি বছর পূর্বে অর্থাৎ জুরাসিক যুগের শেষদিকেও তাদের অস্তিত্ব ছিল।
২০২০ সালে একটি আরও বিশদ মৌলিক শ্রেণিবিন্যাস প্রস্তাব করা হয়েছিল। বিলুপ্তপ্রায় মধ্য- ক্রিটাসিয়াস বংশের তিনটি প্রজাতি ক্যামেলোমেসিয়া এবং ক্যামেলোসফেসিয়াকে ফরমিসিডির বাইরে সাধারণ সুপারফ্যামিলি ফর্মিকয়েডিয়ার মধ্যে একটি পৃথক ক্লেডে বিন্যাস করা হয়েছিল , যা অ্যাপোডিয়ার সাথে একত্রে গঠন করে।[১০]
১০ কোটি বছর পূর্বে সপুষ্পক উদ্ভিদের বিকাশের পর তারা আরও বৈচিত্র্যময় হয়ে ওঠে এবং আনুমানিক ৬ কোটি বছর পূর্বে বাস্তুতান্ত্রিক প্রতিপত্তি অর্জন করে।[১১] ১৯৬৬ সালে ই ও উইলসন ও তার সহকর্মীরা অ্যাম্বারে ফাঁদে আটকে পড়া ক্রিটেশাস যুগের একটি পিঁপড়ার জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন যার প্রজাতির নাম Sphecomyrma freyi. ৮ কোটি বছরের পুরনো এই জীবাশ্মটিতে পিঁপড়া ও বোলতা উভয়ের বৈশিষ্ট্যই পাওয়া যায়।[১২] স্ফেকোমারমা সম্ভবত ভূপৃষ্ঠে বসবাসকারী সংগ্রাহক ছিল, অনেকে অবশ্য মনে করেন Leptanillinae এবং Martialinae শ্রেণীর প্রাণীদের মত প্রাচীন পিঁপড়ারা মাটির নিচে শিকার করে খেতো।
ক্রেটাশাস যুগে, প্রাচীন কিছু পিপড়ার কিছু প্রজাতি Laurasian সুপারকন্টিনেন্টে (উত্তর গোলার্ধ) ছড়িয়ে পড়ে। অন্য পতঙ্গের তুলনায় তাদের সংখ্যা ছিল অপ্রতুল, পুরো প্রতঙ্গের সংখ্যার তুলনায় ধরলে প্রায় ১% মত। Paleogene যুগের শুরুতে পিঁপড়েরা দ্রুত বিবর্তন ও উপজাতীকরনের কারনে প্রভাবশালী হতে থাকে। ওলিগোসিন এবং মিয়োসিন যুগে এসে তাদের সংখ্যা ২০-৪০% দাড়ায়। ইয়োসিন সময়ে পাওয়া প্রজাতিগুলোর ১০টির মধ্যে একটি প্রজাতি আজও দেখা যায়। যে সমস্ত প্রজাতি বেচে আছে তাদের ৫৬%ই বাল্টিক এমবার (ওলিগোসিনের প্রথম দিক) ফসিলে পাওয়া গিয়েছে এবং ডমিনিকান এমবারে (মিওসিনের প্রথমদিক) ৯২% ফসিল পাওয়া যায়।[১১][১৩]
Termites উইপোকাও কলোনিতে বাস করে কখনো কখনো এদের সাদা পিঁপড়া বলা হয় কিন্তু উইপোকারা পিঁপড়ে নয়। তারা ইসোপ্টেরার উপ-গোত্র এবং তেলাপোকাকে নিয়ে তারা অন্য একটি গোত্র ব্লাটোডি গঠন করে। পিঁপড়ের মত উইপোকারাও সামাজিক, অনুর্বর কর্মী নিয়ে গঠিত কিনতু তাদের প্রজনণের জিনগত বৈশিষ্ট্য ভিন্নl উইপোকা এবং পিঁপড়ের যে সামাজিক গঠন তার মিলকে কোভারজেন্ট ইভোলুসন বা সমগোত্রীয় কিন্তু স্বাধীন (একটি অপরটির সাথে কোন সম্পর্ক নেই) বলে।[১৪] ভেলভেট পিঁপড়া দেখতে বড় পিঁপড়ার মত কিন্তু তারা আসলে পাখাবিহীন স্ত্রী বোলতা।[১৫][১৬]
বন্টন ও অভিযোজন
[সম্পাদনা]অঞ্চল | প্রজাতির সংখ্যা[১৭] |
---|---|
নিওট্রপিকস | ২১৬২ |
নিআর্কটিক | ৫৮০ |
ইউরোপ | ১৮০ |
আফ্রিকা | ২৫০০ |
এশিয়া | ২০৮০ |
মেলানেশিয়া | ২৭৫ |
অস্ট্রেলিয়া | ৯৮৫ |
পলিনেশিয়া | ৪২ |
পিপড়ারা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছে। এদের সব মহাদেশেই দেখা যায় শুধুমাত্র এন্টার্কটিক ও কিছু দ্বীপ ছাড়া যেমন গ্রীনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, পলিনেশিয়ার কিছু অংশ এবং হাওয়াইয়ান দ্বীপ।[১৮][১৯] পিঁপড়ারা স্থানভেদে বিভিন্ন বাস্তুসংস্থান গড়ে তোলে এবং বিভিন্ন রকম খাদ্যের উপর নির্ভর করে যা তারা সরাসরি অথবা অন্যান্য শিকারী প্রানী, তৃণভোজী প্রানী বা শিকার করা প্রানীর অবশিষ্টাংশ খেয়ে থাকে এমন প্রানীদের থেকে সংগ্রহ করে। বেশিরভাগ পিঁপড়ার প্রজাতীই হল সর্বভুক কিন্তু কিছু প্রজাতী আছে যারা শুধু বিশেষ খাদ্যাভাসে নির্ভরশীল। স্থানভেদে এদের সংখ্যার তারতম্য দেখা যায়। এদের যেমন কঠিন পরিবেশে পাওয়া যায় তেমনি আর্দ্র গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে প্রচুর পরিমানে দেখতে পাওয়া যায়।[২০] বায়োম্যাস (কোন নির্দিষ্ট স্থানে সমগ্র জীবের সমষ্টি ভিত্তিক গনণা) পদ্ধতীতে ২০০৯ সালে কীটতত্ত্ববিদ ই. ও. উইলসন ধারণা করেন পিঁপড়ার মোট সংখ্যা ১ থেকে ১০ কোয়াড্রিলিয়ন এবং এই গনণা অনুসারে ধারণা করা যায় যে পিঁপড়ার বায়োম্যাস ও মানব জাতির বায়োম্যাস প্রায় কাছাকাছি।[২১]
পিঁপড়ার আকার ০.৭৫ থেকে ৫২ মিলিমিটার (০.০৩০-২.০ ইঞ্চি), সবচেয়ে বড় প্রজাতি হল জীবাশ্ম টাইটানোমাইর্মা গিগান্টিয়াম, যার রানী ছিল ৬ সেমি ( ২+১ ⁄ ২ ইঞ্চি) লম্বা যার ডানা ১৫ সেমি (৬ ইঞ্চি)।৬ সেমি (২+১⁄২ ইঞ্চি) ডানার মাপ ১৫ সেমি (৬ ইঞ্চি).[২২] পিঁপড়ার রং ভিন্ন হয়; বেশিরভাগ পিঁপড়া হলুদ থেকে লাল বা বাদামী থেকে কালো, তবে কিছু প্রজাতি সবুজ এবং কিছু গ্রীষ্মমন্ডলীয় প্রজাতির ধাতব দীপ্তি থাকে। গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে সর্বাধিক বৈচিত্র্য সহ ১৩৮০০ টিরও বেশি প্রজাতি[২৩] বর্তমানে পরিচিত (প্রায় ২২০০০ এর সম্ভাব্য অস্তিত্ব আছে হিসেবে অনুমান করা হয়)। ট্যাক্সোনমিক অধ্যয়নগুলি পিঁপড়ার শ্রেণিবিন্যাস এবং পদ্ধতিগত সমাধান করতে সাহায্য করে থাকে। AntWeb এবং Hymenoptera Name Server সহ পিঁপড়ার প্রজাতির অনলাইন ডাটাবেসগুলিপরিচিত এবং নতুন বর্ণিত প্রজাতির ট্র্যাক রাখতে সাহায্য করে৷[২৪] বাস্তুতন্ত্রে পিঁপড়াদের নমুনা এবং অধ্যয়ন করা যে আপেক্ষিক সহজতার সাথে জীববৈচিত্র্য অধ্যয়নে সূচক প্রজাতি হিসাবে তাদের উপযোগী করে তুলেছে।
গঠন
[সম্পাদনা]জেনিকুলেট (কনুইযুক্ত) অ্যান্টেনা , মেটাপ্লুরাল গ্রন্থি এবং নোডের মতো পেটিওলে তাদের দ্বিতীয় পেটের অংশ সংকুচিত হওয়ার কারণে পিঁপড়ারা তাদের আকারবিদ্যায় অন্যান্য পোকামাকড় থেকে আলাদা । মাথা, মেসোসোমা এবং মেটাসোমা শরীরের তিনটি স্বতন্ত্র অংশ (আনুষ্ঠানিকভাবে ট্যাগমাটা )। পেটিওল তাদের মেসোসোমা ( থোরাক্স এবং প্রথম পেটের অংশ, যা এটিতে মিশে যায়) এবং গ্যাস্টার (পেটিওলে পেটের অংশের চেয়ে কম পেট) এর মধ্যে একটি সরু কোমর তৈরি করে। পেটিওল এক বা দুটি নোড (দ্বিতীয় একা, বা দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পেটের অংশ) দ্বারা গঠিত হতে পারে।[২৫] টারগোস্টেরনাল ফিউশন, যখন একটি অংশ টারগাইট এবং স্টারনাইট একসাথে ফিউজ হয়, তখন দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ পেটের অংশে আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে ঘটতে পারে এবং সনাক্তকরণে ব্যবহৃত হয়। চতুর্থ পেটের টেরগোস্টেরনাল ফিউশনটি পূর্বে চরিত্র হিসাবে ব্যবহৃত হত যা তাদের ক্লেডের মধ্যে পোনেরোমর্ফ সাবফ্যামিলি, পোনেরিনা এবং আত্মীয়দের সংজ্ঞায়িত করেছিল, কিন্তু এটিকে আর সিনাপোমরফিক বৈশিষ্ট্য হিসাবে বিবেচনা করা হয় না।[২৬]
অন্যান্য আর্থ্রোপডের মতো পিঁপড়ার একটি এক্সোস্কেলটন আছে। যা শরীরের চারপাশে একটি প্রতিরক্ষামূলক আবরণ এবং পেশীগুলির জন্য সংযুক্তির বিন্দু প্রদান করে যা মানুষ এবং অন্যান্য মেরুদণ্ডী প্রাণীর অভ্যন্তরীণ কঙ্কালের থেকে ভিন্ন। পোকামাকড়ের ফুসফুস নেই ফলে অক্সিজেন এবং অন্যান্য গ্যাস, যেমন কার্বন ডাই অক্সাইড, স্পাইরাকল নামক ছোট ভালভের মাধ্যমে তাদের এক্সোস্কেলটনের মধ্য দিয়ে যায়। এছাড়াও পোকামাকড়ের রক্তনালী নেই পরিবর্তে তাদের শরীরের উপরের অংশে একটি দীর্ঘ, পাতলা, ছিদ্রযুক্ত টিউব থাকে (যাকে "ডোরসাল অ্যাওর্টা" বলা হয়) যা হার্টের মতো কাজ করে এবং হেমোলিম্ফকে মাথার দিকে পাম্প করে, এইভাবে অভ্যন্তরীণ তরলগুলির সঞ্চালন চালায়। স্নায়ুতন্ত্র একটি ভেন্ট্রাল নার্ভ কর্ড নিয়ে গঠিত যা শরীরের ছড়িয়ে আছে। এই কর্ডের মধ্যে বেশকিছু গ্যাংলিয়া এবং শাখা রয়েছে যা মাথা থেকে উপাঙ্গের প্রান্তে ছড়িয়ে আছে। [২৭]
মাথা
[সম্পাদনা]একটি পিঁপড়ার মাথায় অনেক সংবেদী অঙ্গ থাকে। বেশিরভাগ পোকামাকড়ের মতো, পিঁপড়ার যৌগিক চোখ রয়েছে যা একসাথে সংযুক্ত অসংখ্য ছোট লেন্স দিয়ে তৈরি। পিঁপড়ার চোখ তীব্র গতিবিধি সনাক্তকরণের জন্য ভাল, তবে উচ্চ রেজোলিউশনের ছবি অফার করে না। তাদের মাথার উপরে তিনটি ছোট ওসেলি (সরল চোখ) রয়েছে যা আলোর মাত্রা এবং পোলারাইজেশন সনাক্ত করে।[২৮] মেরুদণ্ডী প্রাণীদের তুলনায়, পিঁপড়ার দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়, বিশেষ করে ছোট প্রজাতির মধ্যে[২৯] এবং কিছু ভূগর্ভস্থ প্রজাতিগুলো সম্পূর্ণ অন্ধ।[৩০] যাইহোক, অস্ট্রেলিয়ার বুলডগ পিঁপড়ার মতো কিছু পিঁপড়ার চমৎকার দৃষ্টি রয়েছে এবং তারা প্রায় এক মিটার দূরে সরে যাওয়া বস্তুর দূরত্ব এবং আকার বুঝতে সক্ষম।[৩১] আলোর নির্বাচিত তরঙ্গদৈর্ঘ্যের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা আছে কিনা তা বোঝার জন্য পিপড়ার উপর পরিচালিত পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে জানা যায় ক্যাম্পোনোটাস ব্লান্ডাস, সোলেনোপসিস ইনভিক্টা এবং ফরমিকা কুনিকুলারিয়ার মতো কিছু পিঁপড়া প্রজাতির রঙ বুঝতে পারে।
দুটি অ্যান্টেনা ("ফিলার") মাথার সাথে সংযুক্ত। এই অঙ্গগুলি রাসায়নিক পদার্থ, বায়ু প্রবাহ এবং কম্পন সনাক্ত করে। এগুলি স্পর্শের মাধ্যমে সংকেত প্রেরণ এবং গ্রহণ করতেও ব্যবহৃত হয়। মাথার দুটি শক্তিশালী চোয়াল রয়েছে যাকে ম্যান্ডিবল বলা হয়। এটি খাদ্য বহন করতে, জিনিসপত্র চালাতে, বাসা তৈরি করতে এবং প্রতিরক্ষার জন্য ব্যবহৃত হয়। কিছু প্রজাতিতে, মুখের ভিতরে একটি ছোট পকেট (ইনফ্রাবুকাল চেম্বার) খাদ্য সঞ্চয় করে, তাই এটি অন্যান্য পিঁপড়া বা বহনকারীর লার্ভাতে স্থানান্তরিত হতে পারে। [৩২]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Ward, Philip S (২০০৭)। "Phylogeny, classification, and species-level taxonomy of ants (Hymenoptera: Formicidae)" (PDF)। Zootaxa। 1668: 549–563।
- ↑ "Hymenoptera name server. Formicidae species count."। Ohio State University। ১৮ জুন ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০১৩।
- ↑ La nueva taxonomía de hormigas. Pages 45–48 in Fernández, F. Introducción a las hormigas de la región neotropical. (পিডিএফ)। Instituto Humboldt, Bogotá। ২০০৩। অজানা প্যারামিটার
|coauthors=
উপেক্ষা করা হয়েছে (|author=
ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য) - ↑ জেইন্ড, জারা (২০২২-০৯-২০)। "পৃথিবীতে মোট কতটি পিঁপড়া বাস করে? বিজ্ঞানীরা তা বের করেছেন"। বিজ্ঞানবার্তা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-২১।
- ↑ Schultheiss P, Nooten SS, Wang R, Wong MKL, Brassard F, Guénard B (২০২২)। "The abundance, biomass, and distribution of ants on Earth"। Proceedings of the National Academy of Sciences। 119 (40)। ডিওআই:10.1073/pnas.2201550119। পিএমআইডি 36122199
|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। পিএমসি 17635 । - ↑ Oster GF, Wilson EO (১৯৭৮)। Caste and ecology in the social insects। Princeton University Press, Princeton। পৃষ্ঠা 21–22। আইএসবিএন 0-691-02361-1।
- ↑ Hölldobler & Wilson (1990), p. 471
- ↑ ক খ Johnson BR, Borowiec ML, Chiu JC, Lee EK, Atallah J, Ward PS (অক্টোবর ২০১৩)। "Phylogenomics resolves evolutionary relationships among ants, bees, and wasps"। Current Biology। 23 (20): 2058–62। ডিওআই:10.1016/j.cub.2013.08.050 । পিএমআইডি 24094856।
- ↑ Fernando Fernández; Roberto J. Guerrero; Andrés F. Sánchez Restrepo (এপ্রিল ২০২১)। "Systematics and diversity of Neotropical ants"। Revista Colombiana de Entomología (ইংরেজি ভাষায়)। 47 (1): e11082। hdl:11336/165214 । ডিওআই:10.25100/socolen.v47i1.11082।
- ↑ Brendon E. Boudinot; Vincent Perrichot; Júlio C. M. Chaul (ডিসেম্বর ২০২০)। "†Camelosphecia gen. nov., lost ant-wasp intermediates from the mid-Cretaceous (Hymenoptera, Formicoidea)"। ZooKeys (ইংরেজি ভাষায়) (1005): 21–55। ডিওআই:10.3897/zookeys.1005.57629 । পিএমআইডি 33390754
|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। পিএমসি 7762752|pmc=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। বিবকোড:2020ZooK.1005...21B। - ↑ ক খ Grimaldi D, Agosti D (২০০১)। "A formicine in New Jersey Cretaceous amber (Hymenoptera: Formicidae) and early evolution of the ants"। Proceedings of the National Academy of Sciences। 97 (25): 13678–13683। ডিওআই:10.1073/pnas.240452097। পিএমআইডি 11078527। পিএমসি 17635 । বিবকোড:2000PNAS...9713678G।
- ↑ Wilson E O, Carpenter FM, Brown WL (১৯৬৭)। "The first Mesozoic ants"। Science। 157 (3792): 1038–1040। ডিওআই:10.1126/science.157.3792.1038। পিএমআইডি 17770424। বিবকোড:1967Sci...157.1038W।
- ↑ Hölldobler & Wilson (1990), pp. 23–24
- ↑ Thorne BL (১৯৯৭)। "Evolution of eusociality in termites" (পিডিএফ)। Annu. Rev. Ecol. Syst.। 28 (5): 27–53। ডিওআই:10.1146/annurev.ecolsys.28.1.27। পিএমসি 349550 । ২০১০-০৫-৩০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Order Isoptera – Termites"। Iowa State University Entomology। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৪। ১৫ জুন ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০০৮।
- ↑ "Family Mutillidae – Velvet ants"। Iowa State University Entomology। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৪। ৩০ জুন ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০০৮।
- ↑ Hölldobler & Wilson (1990), p. 4
- ↑ Jones, Alice S। "Fantastic ants – Did you know?"। National Geographic Magazine। ৩০ জুলাই ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০০৮।
- ↑ Thomas, Philip (২০০৭)। "Pest Ants in Hawaii"। Hawaiian Ecosystems at Risk project (HEAR)। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০০৮।
- ↑ Fayle, Tom M.; Klimes, Petr (২০২২-১০-১৮)। "Improving estimates of global ant biomass and abundance"। Proceedings of the National Academy of Sciences (ইংরেজি ভাষায়)। 119 (42): e2214825119। আইএসএসএন 0027-8424। ডিওআই:10.1073/pnas.2214825119। পিএমআইডি 36197959
|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। পিএমসি 9586285|pmc=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। বিবকোড:2022PNAS..11914825F। - ↑ Holldobler B, Wilson EO (২০০৯)। The Superorganism: The Beauty, Elegance, and Strangeness of Insect Societies। New York: W. W. Norton। পৃষ্ঠা 5। আইএসবিএন 978-0-393-06704-0।
- ↑ Schaal, Stephan (২৭ জানুয়ারি ২০০৬)। "Messel"। Encyclopedia of Life Sciences। আইএসবিএন 978-0-470-01617-6। ডিওআই:10.1038/npg.els.0004143।
- ↑ AntWeb
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;AntWeb2
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Borror, Triplehorn & Delong (1989), p. 737
- ↑ Ouellette, Gary D.; Fisher, Brian L.; Girman, Derek J. (২০০৬)। "Molecular systematics of basal subfamilies of ants using 28S rRNA (Hymenoptera: Formicidae)"। Molecular Phylogenetics and Evolution। 40 (2): 359–369। hdl:10211.1/1549 । আইএসএসএন 1055-7903। ডিওআই:10.1016/j.ympev.2006.03.017। পিএমআইডি 16630727। বিবকোড:2006MolPE..40..359O।
- ↑ Borror, Triplehorn & Delong (1989), pp. 24–71
- ↑ Fent K, Wehner R (এপ্রিল ১৯৮৫)। "Oceili: a celestial compass in the desert ant cataglyphis"। Science। 228 (4696): 192–194। এসটুসিআইডি 33242108। ডিওআই:10.1126/science.228.4696.192। পিএমআইডি 17779641। বিবকোড:1985Sci...228..192F।
- ↑ Palavalli-Nettimi R, Narendra A (এপ্রিল ২০১৮)। "Miniaturisation decreases visual navigational competence in ants"। The Journal of Experimental Biology। 221 (Pt 7): jeb177238। ডিওআই:10.1242/jeb.177238 । পিএমআইডি 29487158।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Ward
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Eriksson ES (১৯৮৫)। "Attack behaviour and distance perception in the Australian bulldog ant Myrmecia nigriceps" (পিডিএফ)। Journal of Experimental Biology। 119 (1): 115–131। ডিওআই:10.1242/jeb.119.1.115 । ২০২২-১০-০৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ Eisner T, Happ GM (১৯৬২)। "The infrabuccal pocket of a formicine ant: a social filtration device"। Psyche: A Journal of Entomology। 69 (3): 107–116। ডিওআই:10.1155/1962/25068 ।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- Antweb from The California Academy of Sciences
- AntBlog a website dedicated to the study of ant colonies ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে
- AntBase - a taxonomic database with literature sources
- Discover Life—images, information and links
- BugGuide
- Global Ant Project
- Navajo Ant Project
- Article on ants
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |