পাক্কে কেসাং জেলা
পাক্কে কেসাং জেলা | |
---|---|
অরুণাচল প্রদেশের জেলা | |
রাষ্ট্র | ভারত |
রাজ্য | অরুণাচল প্রদেশ |
প্রতিষ্ঠা | ২০১৮ |
গেলাসদর | লেম্মি |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+০৫:৩০) |
ওয়েবসাইট | official website |
উত্তর পূর্ব ভারতে অবস্থিত অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যের ২৫ টি জেলার মধ্যে একটি হলপাক্কে কেসাং জেলা। [১][২] ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে পূর্ব কামেং জেলা থেকে আলাদা হয়ে নতুন জেলা পাক্কে কেসাং আত্মপ্রকাশ করে। উক্ত জেলার সর্বদক্ষিণের পাঁচটি প্রাদেশিক একক বা তহশিল তথা পিজিরিয়াং, পাসা উপত্যকা (লামডাং অবং রিলোহ গ্রামাঞ্চল), পাক্কে কেসাং অঞ্চল তথা পাক্কে উপত্যকা, দিশিং পাসো এবং সেইজোসা তহশিল (পাক্কে ব্যাঘ্র প্রকল্প এখানে অবস্থিত) ছাড়াও সেপ্পার নিকট অবস্থিত লেম্মি শহর নিয়ে নতুন জেলা গঠিত হয়।[৩]
জেলাটির অধিকাংশ ভূভাগ জুড়েই রয়েছে নামেরি জাতীয় উদ্যান৷ এছাড়া সমগ্র জেলাটিই ১৩ নং জাতীয় সড়ক তথা ট্রান্স অরুণাচল সড়কের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত৷
অবস্থান
[সম্পাদনা]পাক্কে কেসাং জেলার পশ্চিম দিকে রয়েছে পশ্চিম কামেং জেলা, উত্তর দিকে রয়েছে পূর্ব কামেং জেলা, পূর্ব দিকে রয়েছে পাপুম পারে জেলা এবং দক্ষিণ দিকে রয়েছে আসামের শোণিতপুর জেলা৷
প্রশাসনিক বিভাগ
[সম্পাদনা]অরুণাচল প্রদেশ পশ্চিম লোকসভা কেন্দ্রের একটি বিধানসভা হল পাক্কে কেসাং।[৪]
পর্যটক আকর্ষণ
[সম্পাদনা]সমগ্র জেলাটিই চিত্রানুগ সবুজে আবৃত পর্বতরাশির পাদদেশে অবস্থিত। পাসা উপত্যকা এবং পাক্কে উপত্যকাই পর্যটকদের অধিক আকর্ষণ করে। জেলাটির উত্তর দিকে পিজিরিয়াং থেকে লামডাং এবং রিলো অঞ্চল অবধি উপত্যকাটি পাসা উপত্যকা এবং তার পারিপার্শ্বিক অঞ্চল। আবার যে নারীর মধ্য এবং দক্ষিণ ভাগে রয়েছে পাক্কে উপত্যকা এবং তার পারিপার্শ্বিক অঞ্চল। এখানে অবস্থিত কিছু দর্শনীয় স্থান হল:[৫]
- লেম্মি (সেপ্পা), হল জেলাটির জেলা সদর, এখানে অনুষ্ঠিত আদিবাসী নৃত্য যথেষ্ট পর্যটকপ্রিয়।
- লামডাং, এটি সেপ্পা থেকে ২১ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এবং শীতকালে আগত পরিযায়ী পাখির জন্য বিখ্যাত।
- রিল্লো, সেপ্পা থেকে ৭৮ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এই স্থানটিও অন্যতম দর্শনীয় স্থান।
- সেপ্পা থেকে ১৪৪ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত পাক্কে কেসাং শৈল শহর যা শীতকালে অধিক শীতলতা এবং সারিবদ্ধ হিমালয় পর্বতমালা দেখার জন্য বিখ্যাত।
- পাক্কে কেসাং উপত্যকা
- পাক্কে ব্যাঘ্র প্রকল্প সেপ্পা থেকে ২২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং তেজপুর থেকে ৬৪ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত একটি বনাঞ্চল।
- কামেং নদী মৎস্য আহরণের জন্য প্রসিদ্ধ। এখানে মাছ ধরার জন্য জেলা সদর দপ্তর অফিস থেকে অনুমতি প্রাপ্ত হতে হয়। সেপ্পা থেকে নদীটি এই জেলায় প্রবেশ করে এবং উত্তর মধ্য অঞ্চল অতিক্রম করে এটি পশ্চিম দিকে বাঁক নিয়ে জেলার দক্ষিণে অবস্থিত পাক্কে ব্যাঘ্র প্রকল্পের বিকে প্রবেশ করে।
১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে কামেং জেলাতে ৮৬২ বর্গ কিলোমিটার বিস্তৃত পাখুই বা পাক্কে ব্যাঘ্র প্রকল্পের উন্মোচন করা হয়।[৬] পরবর্তীকালে নতুন জেলা সৃষ্টি হলে এটি পাক্কে কেসাং জেলার অন্তর্গত হয়।
সেইজোসা
[সম্পাদনা]সেইজোসা হলো পাক্কে কেসাং জেলার একটি ব্লক। এই ব্লকে এখন একজন অতিরিক্ত ভারপ্রাপ্ত কমিশনারের দপ্তর রয়েছে। এখানে মূলত নিশি জনজাতির বসবাস। পাক্কে নদীর তীরে সেইজোসা শহরটি অবস্থিত। প্রত্যেক বৃহস্পতিবার আসামের ইটাকোলা থেকে বহু ব্যবসায়ী শাকসবজি এবং জামাকাপড় বেচতে আসেন। আসামের বিশেষ কিছু অঞ্চলের সাথে সেইজোসার স্থানীয়দের সৌভ্রাতৃত্বপুর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। রাজ্যের রাজধানী ইটানগর-এর সাথে সড়ক পথে দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকার জন্য আসাম বন্ধের সময় এই জেলার স্থানীয়দের যে কোন প্রকার প্রশাসনিক কাজ করতে যথেষ্ট সুখ অসুবিধা হয়, এছাড়াও এখানে ইন্টারনেট পরিষেবা যথেষ্ট ভালো অবস্থায় নেই। দুর্বল সড়ক ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবের জন্য সেইজোসা থেকে সড়কপথে ভ্রমণ যথেষ্ট পীড়াদায়ক। তবে স্থানটি চরৈবেতি জন্য মনোরম যা প্রতিবছর যথেষ্ট সংখ্যায় পর্যটক আকর্ষণ করে। 2004 খ্রিস্টাব্দে বন্যা পরিস্থিতিতে এই অঞ্চলটি তার সৌন্দর্য হারিয়ে ফেললেও তা পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চলছে। আসাম সরকার এই অঞ্চলে সেচ বাঁধ নির্মাণ করে সাহায্য করেছেন। সেইজোসা থেকে বিভিন্ন দিকে প্রায়শই বন্যহাতি এবং অন্যান্য বন্য জীবজন্তুর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্টিত সেইজোসা স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া শাখাটি ওই শহর সংলগ্ন ও আসামের কিছু অঞ্চলের সাত হাজারের অধিক লোককে পরিষেবা দান করে আসছে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Arunachal Assembly Passes Bill For Creation Of 3 New Districts"। NDTV.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৮-৩০।
- ↑ "Arunachal Pradesh gets 25th district called Shi Yomi"। www.telegraphindia.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০২-১৬।
- ↑ Arunachal Assembly passes bill for creation of 3 new districts: List of Indian states that took birth post-independence, India Today, 30 Aug 2018.
- ↑ "Assembly Constituencies allocation w.r.t District and Parliamentary Constituencies"। Chief Electoral Officer, Arunachal Pradesh website। ১৩ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০১১।
- ↑ Tourist places.
- ↑ Indian Ministry of Forests and Environment। "Protected areas: Arunachal Pradesh"। ২৩ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১১।