চতুর্দশ দালাই লামা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(Tenzin Gyatso, 14th Dalai Lama থেকে পুনর্নির্দেশিত)
তেনজ়িন গিয়াৎসো
བསྟན་འཛིན་རྒྱ་མཚོ་
তিব্বতের চতুর্দশ দলাই লামা
যুক্তকরে অভিবাদন করছেন
যুক্তকরে অভিবাদন করছেন
শাসনকাল ১৭ নভেম্বর ১৯৫০ – বর্তমান
পূর্বসূরী থুবতেন গিয়াৎসো
তিব্বতি བསྟན་འཛིན་རྒྱ་མཚོ
ওয়াইলি bstan ’dzin rgya mtsho
উচ্চারণ tɛ̃tsĩ catsʰo (IPA)
লিপ্যন্তর
(PRC)
Dainzin Gyaco
TDHL Tenzin Gyatso
চীনা 丹增嘉措
Pinyin Dānzēng Jiācuò
পিতা Choekyong Tsering
মাতা Diki Tsering
জন্ম (1935-07-06) ৬ জুলাই ১৯৩৫ (বয়স ৮৮)
Taktser, Qinghai, চিন

তেনজ়িন গিয়াৎসো (তিব্বতি: བསྟན་འཛིན་རྒྱ་མཚོ་, আ-ধ্ব-ব: [tɛ̃ ́tsĩ càtsʰo] তেঁছিঁ কিয়াছো বা তেঁৎসিঁ কিয়াৎস্‌হো) হলেন চতুর্দশ দালাই লামা। ইনি ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তিব্বত থেকে প্রস্থান করে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। তিব্বতে শান্তিরক্ষার ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনি ১৯৯০ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।

তার জন্মের নাম ছিল লামো থোঁডুপ (লাসা তিব্বতি: ལྷ་མོ་དོན་འགྲུབ་, আ-ধ্ব-ব: [l̥ámo tʰø̃ ̀ɖup] হ্লামো থ্যোঁডুপ্‌)।

নাম[সম্পাদনা]

"দালাই লামা" নামটি হল মঙ্গোলিক শব্দ দালাই এর সংমিশ্রণ যার অর্থ "সমুদ্র" বা "বড়" (মঙ্গোলিয়ান উপাধি দালাইয়িন কান বা দালাইন খান থেকে এসেছে, তিব্বতি ভাষায় গ্যাতসো বা রগ্যা-মৎশো হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে) এবং তানཾ শব্দ।  ་ (ব্লা-মা) অর্থ "গুরু, গুরু"।[১][২]

দালাই লামাকে তিব্বতি ভাষায় Rgyal-ba Rin-po-che ("মূল্যবান বিজয়ী") বা সহজভাবে Rgyal-ba নামেও পরিচিত।[৩]

জীবনী[সম্পাদনা]

তিব্বতের ধর্মীয় নেতা ১৪তম দালাইলামা এর ৮৮তম জন্মবার্ষিকী ৬ই জুন। দালাইলামা ১৯৩৫ সালের ৬ই জুন জন্মগ্রহন করেছিলেন। দালাই লামা হচ্ছে তিব্বতের আধ্যাতিক প্রধান। তিনিই তিব্বতের শাসনতন্ত্রের শীর্ষ পদাধিকারী। তিব্বতি বিশ্বাসানুসারে দলাই লামা করুণাময় বোধিসত্ত্ব অবলোকিতেশ্বরের অবতার। তিনি তিব্বতে রাজকীয় মর্যাদাপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব। তিব্বতের লাসা শহরে অবস্থিত বিলাসবহুল পোতালা প্রাসাদে দালাই লামা বসবাস করেন। বর্তমান চতুর্দশ দালাই লামা হলেন তেনজিন গিয়াৎসু। চীন কর্তৃক তিব্বত অধিগৃহীত হওয়ার পর ১৯৫৮ সালে চতুর্দশ দালাই লামা তার কিছু অনুগামীসহ গোপনে দেশত্যাগ করে ভারতে আগমন করেন এবং সেখানে আশ্রয় গ্রহণ করেন। তিনি তিব্বতে শান্তিরক্ষার ক্ষেত্রে অবদানের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেছেন। বর্তমান দালাইলামার জন্ম তিব্বতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আমদো প্রদেশের তাকসার গ্রামের একটি কৃষক পরিবারে। ১৯৩৫ সালের ৬ জুলাই জন্মগ্রহণকারী ১৪তম দালাইলামার আরও ১৫জন ভাইবোন রয়েছে। সে দেশের বর্ষীয়ান ধর্মীয় নেতারা দুই বছর বয়সী এই শিশুর মধ্যে দালাই লামা এবং দেশের প্রশাসক হওয়ার মতো লক্ষণ খুঁজে পেলে তাকে প্রাথমিকভাবে দালাই লামা নির্বাচন করা হয়। দালাই লামার পারিবারিক নাম তেনজিন গিয়াৎসু। এরপর বর্ষীয়ান ধর্মীয় নেতাদের তত্ত্বাবধানে বৌদ্ধ আশ্রমে রেখে তার পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হয়। পরবর্তী সময়ে তিনি বৌদ্ধ দর্শনে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি এ পর্যন্ত পৃথিবীর অর্ধশতাধিক দেশ এক বা একাধিকবার ভ্রমণ করেছেন। বিশ্বের অনেক দেশের রাষ্ট্রনায়কদের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎকার করেছেন। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রীও প্রদান করা হয়।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

মধ্য এশিয়ার বৌদ্ধ দেশগুলিতে, গত সহস্রাব্দ ধরে এটি ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয়েছে যে অবলোকিতেশ্বর, করুণার বোধিসত্ত্ব, তিব্বতের জনগণের সাথে একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে এবং দালাই লামাদের মতো পরোপকারী শাসক এবং শিক্ষক হিসাবে অবতারণা করে তাদের ভাগ্যে হস্তক্ষেপ করেন।  এটি কদাম্পা স্কুলের প্রধান পাঠ্য বই কদম অনুসারে, যেখানে প্রথম দালাই লামা, গেন্ডুন ড্রুপ প্রথম ছিলেন।  প্রকৃতপক্ষে, এই পাঠ্যটি তিব্বতিদের পরবর্তীকালে দালাই লামাদের অবলোকিতেশ্বরের অবতার হিসেবে চিহ্নিত করার ভিত্তি স্থাপন করেছে বলে জানা যায়।[৪]

এটি বোধিসত্ত্বের অবতারের কিংবদন্তীকে তিব্বতের প্রথম দিকের রাজা এবং সম্রাট যেমন সোংটসেন গাম্পো এবং পরে দ্রোমটোনপা (১০০৪-১০৬৪) হিসাবে চিহ্নিত করে।[৫]

নোবেল পুরস্কার গ্রহণ[সম্পাদনা]

১৯৮৯ সালের ৫ই অক্টোবর চতুর্দশ দালাই লামা তেনজিন গিয়াৎসু নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। নোবেল কমিটির ভাষ্যমতে, তাঁর অনুসারীদের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য সহনশীলতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পরামর্শ দেওয়ার জন্য তাঁকে এ সম্মান দেওয়া হয়।

চিত্র[সম্পাদনা]

পাদটীকা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. 陈庆英 (২০০৫)। 达赖喇嘛转世及历史定制英। 五洲传播出版社। পৃষ্ঠা 16–। আইএসবিএন 978-7-5085-0745-3 
  2. এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকায় Dalai Lama
  3. Petech, Luciano (১৯৭৭)। The Kingdom of Ladakh, c. 950–1842 A.D. (পিডিএফ)। Instituto Italiano Per il Medio ed Estremo Oriente – academia.edu-এর মাধ্যমে। [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. Thubten Jinpa (১৫ জুলাই ২০০৮)। "Introduction"The Book of Kadam। Wisdom Publications। আইএসবিএন 978-0-86171-441-4Available textual evidence points strongly toward the 11th and 12th centuries as the period during which the full myth of Avalokiteśvara's special destiny with Tibet was established. During this era, the belief that this compassionate spirit intervenes in the fate of the Tibetan people by manifesting as benevolent rulers and teachers took firm root 
  5. Thubten Jinpa (৪ জুলাই ২০০৮)। "Introduction"The Book of Kadam। Wisdom Publications। আইএসবিএন 978-0-86171-441-4Perhaps the most important legacy of the book, at least for the Tibetan people as a whole, is that it laid the foundation for the later identification of Avalokiteśvara with the lineage of the Dalai Lama 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]