সুফফা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মসজিদে নববীতে সুফফা।

আল-সুফফাহ ( الصفة ) বা দিক্কত আল-আগাওয়াত ( دكة الأغوات ) একটি স্থান যা মদিনা যুগে মসজিদে নববীর ( মুহাম্মদ ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মসজিদ) পিছনের দিকে ছিলো। এটা প্রথমদিকে মসজিদ উত্তর-পূর্ব কোণায় ছিলো এবং মুহাম্মদ ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আদেশ দেন এটাকে পাতার পাতার ছাউনি দিয়ে ছেয়ে দিতে তখন থেকে এটা পরিচিতি পায় আল-সুফফা বা আল-জুল্লাহ (الظلة) নামে; এর অর্থ ছায়া। [১] এটি কয়েক দশক পরে সম্প্রসারণ প্রকল্পের সময় মসজিদের অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়।

গৃহহীন এবং অবিবাহিত মুহাজির ( সাহাবী যারা মুহাম্মাদ ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাথে মক্কা থেকে হিজরত করেন।) যাদের কোন আত্মীয় ছিল না মদিনা নগরীতে, আল-সুফফাায় বাস করে তারা প্রধানত কুরআন এবং সুন্নাহ শিখতে থাকেন। এই লোকেরা "আসহাব আল-সুফফাহ" নামে পরিচিত ছিল, যা অনুবাদ করলে অর্থ হয় "সুফফা ভ্রাতৃত্ব"। সুফফা ইসলামের ইতিহাসে প্রথম পূর্ণাঙ্গ ও আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।[২]

মুহাম্মদ ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের সাথে বসতেন, একসঙ্গে আলাপ করতেন এবং তাদের খাবার খেতে ডেকে আনতেন এবং পানীয় একসঙ্গে ভাগ করে খেতেন। ফলে তাদেরকে তার উপর নির্ভরশীল হিসেবে গণ্য করা হত। সাহাবারা আসহাবে সুুফফার দুই বা তিনজনকে নিজেদের ঘর থেকে খাবার খাওয়াতেন।। এছাড়াও সাহাবারা সর্বোত্তম খেঁঁজুর নির্বাচন করে আল-সুফফার ছাদে আসহাবে-সুফফাদের খাওয়ানোর জন্য ঝুলিয়ে রাখতেন।

বাণিজ্য প্রত্যাখ্যান এবং সামরিক হুমকির সমন্বয়ে সৃষ্ট কাজের অভাবের কারণে,[৩] আসহাবে সুফফাদের আয় খুব কম ছিল। ধারণা করা হয় যে, এক সময়ে ৩০০ জন সুফফায় ছিল, কিন্তু তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং হ্রাস পেয়েছিল। [৪] তারা প্রায় মোট ৪০০ সদস্যের কাছে পৌঁছায় এবং মুহাম্মদ ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর মৃত্যুর আগে তারা ধনী হওয়ার আগ পর্যন্ত এটি প্রায় নয় বছর স্থায়ী হয়। পরে, তাদের প্রত্যেকেই শাসক বা আমির হয়ে যায়।

অবস্থান[সম্পাদনা]

সূফফা মূলত মসজিদের উত্তর-পূর্ব কোণে অবস্থিত ছিল। যখন মুহাম্মাদ আল্লাহর আদেশে ক্বিবলা (প্রার্থনা দিক) মক্কা দিকে পরিবর্তন করেন যা মদিনা থেকে দক্ষিণে অবস্থিত। এর ফলে সুফফা মসজিদের পেছনের অংশে পড়ে যায়।

উমাইয়া খলিফা আল-ওয়ালীদ ইবনে আবদুল মালিক যখন মসজিদটি প্রসারিত করেছিলেন তখন আল-সুফাহের অবস্থান পরিবর্তিত হয়। যা এখন এটি দিক্কত আল-আগাওয়াত নামে পরিচিত।

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Richard A. Gabriel (২২ অক্টোবর ২০১৪)। Muhammad: Islam's First Great General। University of Oklahoma Press। পৃষ্ঠা 25–। আইএসবিএন 978-0-8061-8250-6 
  2. খসরু, আতাউর রহমান (৬ জানুয়ারি ২০২২)। "শিক্ষার সহযাত্রায় ইসলামী সভ্যতার বিকাশ"দৈনিক কালের কণ্ঠ 
  3. "Ahl Al Suffah أهل الصفة"Islamic Encyclopedia। ১৩ অক্টোবর ২০১৪। ১৫ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০১৭ 
  4. "Ashab us-Suffah platform"Islamic Landmarks (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৩-১১