সারা বেইরাও

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সারা বেইরাও
জন্ম
সারা দে ভাসকনসেলোস কারভালহো বেইরাও

(১৮৮০-০৭-৩০)৩০ জুলাই ১৮৮০
মৃত্যু২১ মে ১৯৭৪(1974-05-21) (বয়স ৯৩)
তাবুয়া
জাতীয়তাপর্তুগিজ
পেশালেখক, সাংবাদিক
পরিচিতির কারণনারীবাদী প্রচারণা

সারা বেইরাও (১৮৮০ - ১৯৭৪) ছিলেন একজন পর্তুগিজ লেখক, সাংবাদিক, নারী অধিকার কর্মী এবং সমাজসেবী। একজন লেখক হিসাবে, তিনি বিশেষ করে শিশু ও যুবকদের জন্য কথাসাহিত্য লিখে এবং নারীবাদী পত্রিকা আলমা ফেমিনিনা-র প্রকাশক ও সম্পাদক হিসাবে তাঁর কাজের জন্য পরিচিত ছিলেন।

প্রারম্ভিক বছর[সম্পাদনা]

সারা দে ভাসকনসেলোস কারভালহো বেইরাও (তিনি পেশাগতভাবে "সারা" ব্যবহার করতেন) ১৮৮০ সালের ৩০শে জুলাই পর্তুগালের তাবুয়াতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন মারিয়া জোসে দা কোস্টা ম্যাথিয়াস এবং ডাক্তার ফ্রান্সিসকো ডি ভাসকনসেলোস কারভালহো বেইরোর কন্যা। তিনি পোর্তোতে অধ্যয়ন করেছিলেন, সেই সময়ে খুব কম মেয়ের কাছেই শিক্ষার আলো পৌঁছেছিল। তিনি ১৮ বছর বয়সে সংবাদপত্রের জন্য কাজ করা শুরু করেন। তাঁর কাজ করা সংবাদপত্রগুলির মধ্যে ছিল তাঁর পিতার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সাময়িকী ও তাবুয়েন্স (পর্তুগিজ: O Tabuense)। পাশাপাশি বেইরা আলতা প্রদেশের সংবাদপত্র এবং হিউম্যানয়েড (পর্তুগিজ: Humanidade) পত্রিকায় লিখেছেন। তিনি পুরুষের ছদ্মনাম আলভারো ডি ভাসকনসেলোস ব্যবহার করে লিখতেন।[১]

সক্রিয়তা[সম্পাদনা]

১৯০৯ সালের মে মাসে, বেইরাও রিপাবলিকান কারণে সক্রিয়ভাবে জড়িত হয়েছিলেন, তাবুয়াতে অনুষ্ঠিত প্রথম প্রজাতন্ত্রী সমাবেশে সংগঠনে সহায়তা করেছিলেন এবং তাঁর বাবার সভাপতিত্বে সেন্ট্রো রিপাবলিকানো তাবুয়েন্সের উদ্বোধনে অংশ নিয়েছিলেন। সেই সময়ে পর্তুগালের রিপাবলিকানরা সাংবিধানিক রাজতন্ত্রকে একটি প্রজাতন্ত্র দ্বারা প্রতিস্থাপন করার লক্ষ্যে ছিল। একই মাসে, তিনি পর্তুগিজ লীগ অফ পিস-এ যোগ দেন, যেটি নারীদের প্রচেষ্টার মাধ্যমে শান্তি অর্জনের উপর জোর দেয়, সেইসাথে রিপাবলিকান লীগ অফ পর্তুগিজ উইমেন, তাবুয়া শাখার সভাপতি হন।

১৯১০ সালে, সারা বেইরাও বিয়ে করেন অ্যান্টোনিও ডা কস্টা কার্ভালহোকে। এই দম্পতি ১৯২৮ সালে পর্তুগিজ রাজধানী লিসবনে চলে যান। সেখানে সারা “গ্রুপ অফ থার্টিন” (পর্তুগিজ: Grupo das Treze) -এ যোগ দেন, এটি ছিল একটি নারীবাদী সংগঠন, যাদের লক্ষ্য ছিল পর্তুগিজ সমাজে জমে থাকা অজ্ঞতা ও কুসংস্কার এবং গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লড়াই করা এবং এর থেকে নারীদের মুক্ত করা। তিনি ১৯১৪ সালে ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ পর্তুগিজ উইমেনের (পর্তুগিজ: Conselho Nacional das Mulheres Portuguesas) সদস্য হয়েছিলেন, এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সক্রিয় কর্মী ও ডাক্তার অ্যাডিলেড ক্যাবেট। ক্যাবেটের মৃত্যুর পর সারা বেইরাও এর সভানেত্রী হন এবং ১৯৩৫ থেকে ১৯৪১ সাল পর্যন্ত এই পদে আসীন ছিলেন। এরপর ১৯৪২ সালে তিনি এর সাম্মানিক সভানেত্রী হন।

নারীর অধিকার এবং লিঙ্গ সমতার প্রতিরক্ষায় সক্রিয়তার পাশাপাশি, সারা বেইরাও ছিলেন একজন জনহিতৈষী। তিনি সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত শিশু এবং বয়স্কদের সাহায্য করার দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন। ১৯৬৪ সালে সারা বেইরাও এবং আন্তোনিও কোস্টা কারভালহোর প্রচেষ্টায় ফাউণ্ডেশন তৈরি করা হয়েছিল, অবসরপ্রাপ্ত শিল্পী এবং উভয় লিঙ্গের লেখকদের জন্য তাবুয়ায় একটি কেয়ার হোম পরিচালনা করার জন্য। এটি মূলত দীর্ঘমেয়াদী বাসিন্দাদের জন্য ছিল, যাঁদের শারীরিক বা অর্থনৈতিক অসুবিধা রয়েছে এবং এটি করা হয়েছিল ১৮ শতকের একটি ম্যানর হাউসে, যেটি ছিল বেইরাওয়ের ঠাকুর্দা-ঠাকুরমায়ের বাড়ি এবং তাঁর জন্মস্থান। বর্তমানে এই সংস্থা প্রায় ১০০ জন বাসিন্দা এবং ডে-কেয়ার রোগীর সহায়তা করে।[২][৩]

লেখা[সম্পাদনা]

সাহিত্যে, সারা বেইরাও প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশু উভয়ের জন্যই বেশিরভাগ কথাসাহিত্য লিখেছেন। ২০ শতকের সবচেয়ে সফল পর্তুগিজ লেখকদের একজন হিসাবে, তিনি ছোট গল্পের দুটি সংকলন সহ ১৬টি বই প্রকাশ করেছিলেন। ১৯৪৭ সালে মারিয়া লামাস এবং কনসেলহো ন্যাসিওনাল দাস মুলহেরেস পর্তুগেসাস দ্বারা আয়োজিত "নারীদের দ্বারা লেখা বই প্রদর্শনী"তে তাঁর কাজগুলি উপস্থাপন করা হয়েছিল। এটি ত্রিশটি দেশের ১৪০০ জন মহিলা লেখকের তিন হাজার বই একত্রিত করেছিল এবং লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেট হল অফ ফাইন আর্টসে এটি হয়েছিল। তিনি বেশ কয়েকটি সংবাদপত্র এবং পত্রিকায় অবদান রেখেছেন, যেমন পোর্তোতে ও প্রাইমিরো দে জেনেইরো, কোয়েমব্রায় দিয়ারিও দে কোইমব্রা এবং লিসবনের জর্নাল ডি নোটিসিয়াস এবং ডায়রিও ডি নোটিসিয়াস, সেইসাথে ব্রাজিলীয় প্রিন্ট মিডিয়ার জন্যও তিনি লিখেছেন। তাঁর নিবন্ধ এবং নিয়মিত কলামগুলি সাধারণত মহিলাদের লক্ষ্য করে লেখা হত। ১৯৩০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে তিনি কনসেলহো ন্যাসিওনাল দাস মুলহেরেস পর্তুগুয়েসাস দ্বারা প্রকাশিত আলমা ফেমিনিনা ম্যাগাজিনের পরিচালক এবং সম্পাদক হয়েছিলেন এবং ১৯৪৭ সালে কর্তৃত্ববাদী এস্তাদো নভো শাসন দ্বারা এই সংস্থাটি বন্ধ না করা পর্যন্ত নিয়মিত এর অবদানকারী ছিলেন। এর অনেক নিবন্ধ পর্তুগিজ নারীবাদীদের উৎসর্গ করা হয়েছিল, যাঁদের মধ্যে ছিলেন অ্যাডিলেড ক্যাবেতে, আনা দে কাস্ত্রো ওসোরিও এবং এলিনা গুইমারেস এবং সেই সাথে পর্তুগালের বাইরের ব্যক্তিরা, যেমন এভ্রিল ডি সেন্ট-ক্রোইক্স, জেন অ্যাডামস এবং সিমোন ডি বেউওয়ারকে[১][৪]

সারা বেইরাও ১৯৪৭ সালের ২১শে মে, ৯৩ বছর বয়সে, তাবুয়ায় মারা যান। তাঁকে সেই শহরে একটি পাবলিক গার্ডেন জার্ডিম সারা বেইরাও (পর্তুগিজ: Jardim Sarah Beirão) দ্বারা স্মরণ করা হয় এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি স্থানে রাস্তার নামকরণ তাঁর নামে করা হয়েছে।

প্রকাশনার তালিকা[সম্পাদনা]

সারা বেইরাওয়ের প্রকাশিত বই নীচে তালিকাভুক্ত করা হল।[৪]

  • সেরোস ডা বেইরা (১৯২৯);
  • সেনাস পর্তুগিজাস (১৯৩০);
  • আমোরে নো ক্যাম্পো (১৯৩১);
  • রাউল (১৯৩৪);
  • অস ফিডালগস ডা টরে (১৯৩৬);
  • ও সোলার দা বোয়া ভিস্তা (১৯৩৭)
  • ক্লারা (১৯৩৯)
  • সোজিনহা (১৯৪০);
  • সুরপ্রেসা বেন্দিতা (১৯৪১);
  • আলভোরাদা (১৯৪৩);
  • প্রমেটিডা (১৯৪৪);
  • ট্রিউনফো (১৯৫০);
  • ম্যানুয়েল ভাই করার মুণ্ডো (১৯৫০);
  • আম ডিভোর্সিও (১৯৫০);
  • ডেস্টিনোস (১৯৫৫);
  • এ লুটা (১৯৭২)।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Dª SARAH DE VASCONCELOS CARVALHO BEIRÃO"Fundação Sarah Beirão/António Costa Carvalho। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুন ২০২০ 
  2. "A NOSSA FUNDAÇÃO ESTÁ CHEIA DE HISTÓRIA"Fundação Sarah Beirão/António Costa Carvalho। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুন ২০২০ 
  3. "Fundação Sarah Beirão / António Costa Carvalho"Portal Municipal Tábua। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুন ২০২০ 
  4. Martins Pais, Fátima Maria। "Sarah Beirão - um exemplo de vida"Academia.edu। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুন ২০২০