সরফরাজ আহমেদ রফিক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সরফরাজ আহমেদ রফিক
জন্ম(১৯৩৫-০৭-১৮)১৮ জুলাই ১৯৩৫
মৃত্যু৬ সেপ্টেম্বর ১৯৬৫(1965-09-06) (বয়স ৩০)
হলওয়ারা, ভারত
মাতৃশিক্ষায়তনসেন্ট এন্থনি উচ্চ বিদ্যালয়, লাহোর
সামরিক কর্মজীবন
জন্ম নামসরফরাজ আহমেদ রফিক
ডাকনামমণি
আনুগত্য পাকিস্তান
সেবা/শাখা পাকিস্তান বিমানবাহিনী
কার্যকাল১৯৫৩-১৯৬৫
পদমর্যাদা স্কোয়াড্রন লিডার
সার্ভিস নম্বরপিএএফ-৩৫৫০
ইউনিট১৪ নং শাহীন স্কোয়াড্রন/ ৫ নং ফ্যালকন স্কোয়াড্রন
যুদ্ধ/সংগ্রাম১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ
পুরস্কার হিলাল-ই-জুরাত
সিতারা-ই-জুরাত

স্কোয়াড্রন লিডার সরফরাজ আহমেদ রফিক (১৮ জুলাই ১৯৩৫ – ৬ সেপ্টেম্বর ১৯৬৫) ছিলেন পাকিস্তান বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান চালক। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধকালীন দুটি বায়ুযুদ্ধে তিনি বীরত্ব ও সাহসীকতার জন্য পরিচিত। স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে হিলাল-ই-জুরাত এবং সিতারা-ই-জুরাত খেতাবে ভূষিত করা হয়।

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

সরফরাজ আহমেদ রফিক ১৯৩৫ সালের ১৮ জুলাই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানে বাংলাদেশ) রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবারে তিনজন ভাই এবং একজন বোন ছিল। লাহোরের সেন্ট অ্যান্থনি উচ্চ বিদ্যালয়ে তার শিক্ষা জীবন শুরু হয় এবং ১৯৪৮ সালে তিনি মুলতান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিক পাশ করেন। তার পিতা চাকরিগত কারণে করাচিতে বদলি হলে তিনি করাচির ডিজে সিং বিজ্ঞান কলেজে ভর্তি হন। বড় ভাই ইজাজ রফিকের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে পরবর্তীতে তিনি পাকিস্তান বিমান বাহিনীর আরপিএএফ ১৩ গিডি(পি) কোর্সে যোগদান করেন, এবং ১৯৫৩ সালে রাইসালপুরে অবস্থিত আরপিএএফ কলেজ হতে স্নাতক সম্পন্ন করেন। সেখানে তিনি সেরা পাইলটের ট্রফি জয় করেন।

স্নাতক সম্পন্ন হবার পরে হকার সি ফিউরি বিমান চালনার জন্য তাকে মিরানশাহতে প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে উন্নত উড্ডয়ন কোর্সে এবং যুদ্ধাস্ত্র প্রশিক্ষণ কোর্সের জন্য নির্বাচিত হন। ১৯৬০ সালে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর ফাইটার লিডারস স্কুল হতে প্রশিক্ষণ লাভের পরে হকার হান্টার বিমানের বিকল্প পাইলট হিসেবে আরএএফের ১৯ নং স্কোয়াড্রনে যোগদান করেন তিনি।[১]

১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য হতে প্রত্যাবর্তনের পর তাকে ১৪নং স্কোয়াড্রনের ওসি হিসেবে ঢাকায় নিযুক্ত করা হয়। একবছর পরে তাকে ৫নং স্কোয়াড্রনের ওসি হিসেবে বদলি করা হয় এবং ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় তিনি সেই স্কোয়াড্রনের কমান্ডার ছিলেন।

১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ[সম্পাদনা]

১৯৬৫ সালে ১ সেপ্টেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১২তম ডিভিশন ভারতের আখনুরে হামলা করে। এই দিন সন্ধ্যায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গতিরোধ করার লক্ষ্যে ভারতীয় বিমানবাহিনী চাম্ব সেক্টরে হামলা শুরু করে। ভারতীয় বিমানবাহিনীর ৪৫নং স্কোয়াড্রনের ডি হ্যাভিল্যান্ড ভ্যাম্পায়ার বিমানগুলো তিনটি স্ট্রাইক ফরমেশনে হামলা চালায়। সেসময় রফিক এবং ফ্লাইট ল্যাফটেন্যান্ট ইমতিয়াজ ভাট্টি চাম্ব সেক্টরের ২০,০০০ ফিটের কাছাকাছি আকাশ পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তাদেরকে আক্রমণকারী যুদ্ধবিমানগুলোকে প্রতিহত করার নির্দেশ দেয়া হয়। সেদিন তারা দুজন মোট চারটি আক্রমণকারী শত্রু বিমানকে ভূপাতিত করেন (এর মধ্যে তিনটি বিমান ছিল একই ফরমেশনের), তার মধ্যে রফিক নিজে দুটি শত্রু বিমান ভূপাতিত করেন।[২] এই অভিযানের জন্য তাকে সিতারা-ই-জুরাত খেতাবে ভূষিত করা হয়।

সম্মাননা ও উত্তরাধিকার[সম্পাদনা]

পাকিস্তানের তৃতীয় বৃহত্তম রফিক বিমানঘাঁটির (শরকত সেনানিবাস) নামকরণ সরফরাজ আহমেদ রফিকের নামে করা হয়েছে। তার সম্মানে লাহোর সেনানিবাসের অন্যতম বৃহত্তম একটি রাস্তার নাম সরফরাজ রফিক সড়ক রাখা হয়েছে। করাচির রফিক শহীদ সড়কটিও তার নামে নামকরণ করা হয়েছে। পেশোয়ারের বায়ুসেনা সদরদপ্তর এবং পিএএফ স্কুল ও ডিগ্রি কলেজ রফিক সড়কের পাশে অবস্থিত।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Sqn Ldr Sarfaraz Ahmed Riafiqui(Hilal-E-Jurat)- A Man of Character in Peace, A Man of Courage in War"। Defence Journal, May 98। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১৮ 
  2. "Archived copy"। ৬ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১৩ 
  1. Boy ... We-ll Sort Them Out, from Defense Journal