সমর্পন মাইতি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সমর্পন মাইতি
জন্ম (1988-09-26) ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৮৮ (বয়স ৩৫)
জাতীয়তাভারতীয়
শিক্ষাস্নাতকোত্তর করেছেন ঝাড়্গ্রাম কলেজ ও বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়
মাতৃশিক্ষায়তনমেদিনীপুর কলেজ
পেশাক্যান্সার বিশেষজ্ঞ, মানবাধিকার কর্মী, মডেল
উচ্চতা৫ ফিট ৬ ইঞ্চি
পিতা-মাতাসুদর্শন মাইতি, সুষমা মাইতি
আত্মীয়সমর্পিতা মাইতি (বোন)
পুরস্কারমিঃ গে ওয়ার্লড ইন্ডিয়া (২০১৮)

সমর্পন মাইতি (জন্ম ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৮৮) একজন বিজ্ঞানী, মানবাধিকারকর্মী ও ভারতের ২০১৮ সালের মিঃ গে ওয়ার্ল্ড ইন্ডিয়ার শিরোপা বিজয়ী। তিনি বর্তমানে একই সাথে মডেলিং ও কলকাতা ইন্সটিউট অব ক্যামিকাল বায়োলজির রিসার্চ ফেলো হিসেবে কাজ করছেন।

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

পশ্চিমবঙ্গের ছোট গ্রাম সিদ্ধাতে সমর্পন জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সুদর্শন মাইতি ও সুষমা মাইতির বড় সন্তান তিনি। উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করার পরপরই তার পিতা মারা যান। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৭ বছর। সমর্পনের মা তখন সংসার চালানোর জন্য স্কুল শিক্ষকতায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। সমর্পণ বিদ্যালয় জীবন থেকেই বিভিন্ন টিপ্পনীর স্বীকার হতেন। কৈশোরে মেয়েদের প্রতি কিছুটা আকর্ষণ থাকলেও কলেজে উঠার পর নিজের অভিমুখিতা সম্বন্ধে তিনি সম্পূর্ণ ভাবে নিশ্চিত হন।[২]

পরবর্তী জীবন[সম্পাদনা]

সমর্পন যখন দশম শ্রেণিতে পড়তেন, তখন তাদের বাসায় প্রথম টিভি আসে। টিভিতে ফ্যাশন শো দেখে, তিনি বুঝতে পারেন, তার পুরুষের প্রতিই অনুরক্ততা বেশি। পিতার মৃত্যুর পর কলেজে (স্নাতক করার জন্য) ভর্তি হওয়ার পর, তার আর্থিক সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। সেসময় দেবাশীষ ঘোষ নামে একজনের সাথে তার বন্ধুত্ব হয়। যদিও তারা শুধুমাত্রই ভালো বন্ধু ছিলেন;কিন্তু সেই বন্ধুত্ব নিয়ে কলেজে নানা গুজব উঠে। কলেজ হোস্টেলে বলে দেওয়া হয়, যেন তারা একে অপরের সাথে কথা না বলে। এ নির্দেশ না মানলে কলেজ হোস্টেল থেকে তাদের বিতাড়ন করা হবে বলে জানানো হয়। তখন দেবাশীষ নিজে থেকেই এগিয়ে আসে এবং এ সিদ্ধান্তের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দুইজনই কলেজ হোস্টেল ত্যাগ করেন। তারা আলাদা বাসা নেন। [৩] পরবর্তীতে দেবাশীষের সাথেই সমর্পনের ছোট বোনের বিবাহ সম্পন্ন হয়।

পেশা[সম্পাদনা]

সমর্পন একাধারে বিজ্ঞানী ও মডেল। তবে পাশাপাশি তিনি বহুমাত্রিক লেখকও। লিখেছেন কবিতা, প্রবন্ধ, সম্প্রতি সমকামিতা ও তার সমান্তরাল যৌনতা নিয়ে গবেষণা ধর্মী বই লিখবেন বলে মনস্থির করেছেন। তিনি শেহেনাইয়া নামে একটি ক্ষুদ্রদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। যা কাশিস ফিল্ম এওয়ার্ডে কিউ-দৃষ্টি পদক পায়।[৪] তিনি গ্রুপ থিয়েটারে অভিনয় করেছেন, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য পর্যায়ে ধ্রুপদী সংগীতে (ক্লাসিকাল মিউজিক ফেস্টিভ্যাল) নিজের বিদ্যালয়কে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

পুরস্কার[সম্পাদনা]

সমর্পন ২০১৮ গে ওয়ার্ল্ড ইন্ডিয়া শিরোপা জয় করেন। ফাইনালের মঞ্চে বিচারক তাকে কেন ভালোবাসতে হবে এই মর্মে প্রশ্ন করেন। সমর্পন বাংলাতে প্রথমে উত্তরটা সাজিয়ে নেন, তারপর ইংরেজিতে বলেন, ভালোবাসা হলো এমন একটা বিষয়, যা নিজের আসল সত্তাকে পরিবর্তন না করে; ব্যক্তির ভিতর থেকেই খুঁজে নিতে হয়। সেসময় ইংরেজি বলতে গিয়ে তিনি একটু ইতস্তত বোধ করেন। যদিও সবাই তার দার্শনিক উত্তরে প্রীত বোধ করেন, কিন্তু অন্য বিচারক তার ইংরেজি দক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন। তখন উপস্থাপক রোহিনী রমনাথান সমর্পনকে সমর্থন করে বলেন, ইংরেজি কে ভুলে যান। এই ভাষাটা আমাদের কেন এত আবিষ্ট করবে? এই মঞ্চ কারো ইংরেজি-দক্ষতাকে বিচার করার মঞ্চ নয়।। ফলাফল ঘোষণার পর দেখা গিয়েছে ভারতের মিঃ গে ইন্ডিয়া ২০১৮ এর খেতাব সমর্পন মাইতিই অর্জন করেন।[৩]

পরিকল্পনা[সম্পাদনা]

সমর্পন মাইতির পরিকল্পনা হলো, সে গ্রামাঞ্চল গুলোতে যৌন সংখ্যালঘুদের জন্য কাজ করবে। সে এলাকার মানুষ জন শিক্ষায় জ্ঞানে পিছিয়ে থাকায় যৌনতার এই বিচিত্র ক্যানভাস সম্পর্কে অজ্ঞাত থাকে। তাই সমাজের পিছিয়ে পরা মানুষজন নিয়ে তিনি কাজ করবেন, তাদের কাউন্সেলিং করে নিজেদের যৌনতা নিয়ে যাতে তারা আত্মবিশ্বাসী হয়। এটা তার অন্যতম লক্ষ।[২][৫][৬]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

সমর্পনের সমর্পিতা নামে একজন বোন আছেন। তার ২০১৮ সালে, সমর্পনের কলেজ বন্ধু দেবাশীষ ঘোষের সাথে বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহের নিমন্ত্রণপত্রেও তিনি লিখেন, এই আমন্ত্রনপত্রে আমি আরেকটা বার্তা আপনাদের দিতে চাই, ভালোবাসার কোনো লিঙ্গভেদ হয় না। তাই বিবাহের সম অধিকারকে সমর্থন করুন, যাতে করে আমাদের সন্তানরা লিঙ্গবিভেদ অতিক্রম করে তাদের সঙ্গীর সাথে সুখী হয়। এ নিমন্ত্রণপত্র বেশ আলোচিত হয় [৭]

গবেষণা[সম্পাদনা]

গবেষণা প্রবন্ধ শনাক্তকারী শিরোনাম স্বত্ব প্রকাশের তারিখ
PMID 28703798 mTORC2 regulates hedgehog pathway activity by promoting stability to Gli2 protein and its nuclear translocation. Cancer Biology and Inflammatory Disorder Division, Council of Scientific and Industrial Research (CSIR)-Indian Institute of Chemical Biology, Kolkata, India.[৮]
PMID 27239959 PTEN negatively regulates mTORC2 formation and signaling in grade IV glioma via Rictor hyperphosphorylation at Thr1135 and direct the mode of action of an mTORC1/2 inhibitor. Cancer Biology and Inflammatory Disorder Division, Council of Scientific and Industrial Research (CSIR)-Indian Institute of Chemical Biology, Kolkata, India.[৯]
doi 10.1021 Porphyrin–Gold Nanomaterial for Efficient Drug Delivery to Cancerous Cells Cancer Biology and Inflammatory Disorder Division, Council of Scientific and Industrial Research (CSIR)-Indian Institute of Chemical Biology, Kolkata, India.[১০]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Mr. gay icon setting standards for men"streasbuster। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৮ 
  2. "বিজয় অর্জন"deccanchronicle। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৮ 
  3. "সমকামী বিজ্ঞানী মডেল গে আইকন"টাইমস অব ইন্ডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৮ 
  4. "কাশিস ২০১৭ এর বিজয়ীদের পুর্ণাঙ্গ তালিকা"। ২৮ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৮ 
  5. "নির্ভৃতচারী সমকামীদের আলোর পথে আনার লক্ষ্যে"inuth 
  6. "বিজয়ী সমর্পন মাইতি বৈষম্য নিরসনে আগ্রহী"ফায়ারপোস্ট। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৮ 
  7. "বোনের বিবাহের নিমন্ত্রণপত্রে সমতা বিবাহের আমন্ত্রন"ভেগাবোম্ব। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৮ 
  8. "mTORC2 regulates hedgehog pathway activity by promoting stability to Gli2 protein and its nuclear translocation"। nature। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৮ 
  9. "PTEN negatively regulates mTORC2 formation and signaling in grade IV glioma via Rictor hyperphosphorylation at Thr1135 and direct the mode of action of an mTORC1/2 inhibitor"। nature। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১১-২২ 
  10. "Porphyrin–Gold Nanomaterial for Efficient Drug Delivery to Cancerous Cells"। acs। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৮