সমযোজী একবন্ধন
রসায়নে একবন্ধন হল একধরনের রাসায়নিক বন্ধন যাতে দুটি পরমাণু নিজেদের একজোড়া যোজ্যতা ইলেকট্রন পরস্পর ব্যবহারের মাধ্যমে গড়ে তোলে।[১] এটি হল সমযোজী বন্ধনের একটি প্রকারভেদ। বন্ধন সৃষ্টিকারী ইলেকট্রন জোড়, বন্ধন গঠনের সময় পরমাণু দুটির যে দুটি পারমাণবিক কক্ষক পরস্পরের উপর আপতিত হয়েছিল তার মধ্যে অবস্থান করে। লুইস গঠনানুসারে, A:A বা A–A হল একটি একবন্ধন, যেখানে A কোনো মৌলের একটি পরমাণু।[২] এখানে প্রতিটি ডট একটি ইলেকট্রনকে নির্দেশ করে ও একটি দাগ একটি বন্ধন সৃষ্টিকারী ইলেকট্রন জোড়কে নির্দেশ করে।
তুলনা
[সম্পাদনা]প্রকৃতিতে আরও দু'রকমের সমযোজী বন্ধন পাওয়া যায়, যথাক্রমে দ্বিবন্ধন ও ত্রিবন্ধন। এক বন্ধনের শক্তি এদের তুলনায় খুব কম।
সিগমা বন্ধন ও পাই বন্ধন
[সম্পাদনা]এক বন্ধন সাধারণত একটি সিগমা বন্ধন দ্বারা গড়ে ওঠে। এখানে পাই বন্ধন দেখতে পাওয়া যায় না। অপরপক্ষে দ্বিবন্ধন এবং ত্রিবন্ধনে একটি সিগমা বন্ধন ও বাকিগুলো পাই বন্ধন হয়। পাই বন্ধন না থাকার কারণেই এর শক্তি অনেক কম হয়।
যদিও ব্যতিক্রম হিসেবে উল্লেখ করা যায় যে ডাইবোরেন যৌগে এক বন্ধনটি পাই বন্ধন।
ঘূর্ণন
[সম্পাদনা]একমাত্র একবন্ধনে ঘূর্ণন দেখতে পাওয়া যায়। একবন্ধন দ্বারা আবদ্ধ দুটি পরমাণুর একটি অপরটিকে কেন্দ্র করে ঘুরতে পারে। তাই এর ক্ষেত্রে ঘূর্ণাক্ষ দেখা যায়। অপরপক্ষে দ্বিবন্ধন বা ত্রিবন্ধনে সেটি দেখা যায় না, কারণ সেক্ষেত্রে বন্ধন ভেঙে যেতে পারে।
বন্ধন দৈর্ঘ্য
[সম্পাদনা]একবন্ধনের দৈর্ঘ্য দ্বিবন্ধন ও ত্রিবন্ধন অপেক্ষা অনেক বেশি হয়। কারণ, অপর দুটিতে আন্তঃনিউক্লিয় আকর্ষণ বল তুলনামূলক অনেক বেশি হয়।
উদাহরণ
[সম্পাদনা]বহু সমযোজী যৌগে একবন্ধনের অস্তিত্ব বর্তমান। যেমন – H2, F2, H2O, HCl, CH4 ইত্যাদি।
জৈব যৌগে সকল বন্ধনই যদি একবন্ধন হয়, তাদের অ্যালকেন বলা হয়। নামকরণের সময় অনুসর্গে -এন বসানো হয়। যেমন – মিথেন, মিথেন, সাইক্লোবিউটেন, হেপ্টেন ইত্যাদি।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "covalent bonding - single bonds"। Chemguide.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৮-১২।
- ↑ Steehler, Jack K. (ডিসেম্বর ২০০১)। "Chemistry: The Molecular Science (Moore, John W.; Stanitski, Conrad L.; Jurs, Peter C.)"। Journal of Chemical Education। 78 (12): 1598। আইএসএসএন 0021-9584। ডিওআই:10.1021/ed078p1598 ।