বিষয়বস্তুতে চলুন

সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
জন্ম(১৮৮২-০২-১১)১১ ফেব্রুয়ারি ১৮৮২
কলকাতা, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু২৫ জুন ১৯২২(1922-06-25) (বয়স ৪০)
ছদ্মনামনবকুমার, কবিরত্ন, অশীতিপর শর্মা, ত্রিবিক্রম বর্মণ, কলমগীর
পেশাকবি
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারতীয়
সময়কালবাংলা সাহিত্যের তত্ত্ববোধিনী যুগ
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিফুলের ফসল (১৯১১), কুহু ও কেকা (১৯১২)

সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত (১১ ফেব্রুয়ারি ১৮৮২ – ২৫ জুন ১৯২২) বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় কবি ও ছড়াকার। রবীন্দ্র যুগের খ্যাতনামা "ছন্দরাজ" কবি। তাঁর কবিতায় ছন্দের কারুকাজ, শব্দ ও ভাষা যথোপযুক্ত ব্যবহারের কৃতিত্বের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে 'ছন্দের যাদুকর' নামে আখ্যায়িত করেন। মধ্যযুগে ভারতের ইতিহাস, সংস্কৃতি, পৌরাণিক প্রভৃতি বুদ্ধি- বৃত্তিবিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে তিনি সিদ্ধহস্তের অধিকারী ছিলেন।

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের জন্ম ১৮৮২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি কলকাতার নিকটবর্তী নিমতা গ্রামে৷ তাঁর পৈতৃক নিবাস বর্ধমান এর চুপী গ্রামে৷ পিতা রজনীনাথ দত্ত ছিলেন কলকাতার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, মাতা মহামায়া দেবী৷ পিতামহ অক্ষয় কুমার দত্ত ছিলেন তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার সম্পাদক৷ সত্যেন্দ্রনাথের কবিতায় নানা ভাষার শব্দ নিপুণ ছন্দে যুক্ত হয়েছে। এছাড়া তিনি বিভিন্ন ভাষা থেকে বাংলায় অনুবাদকর্মও করেছেন৷ সত্যেন্দ্রনাথ কলকাতার সেন্ট্রাল কলেজিয়েট স্কুল থেকে এন্ট্রান্স (১৮৯৯) এবং জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইনস্টিটিউশন (বর্তমান স্কটিশ চার্চ কলেজ) থেকে এফএ (১৯০১) পাস করেন৷ কিন্তু পরে বিএ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন।[]

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

কাব্যচর্চায় আত্মনিয়োগ করার আগে সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত পিতার ব্যবসায় যোগ দিয়েছিলেন৷ তিনি ছিলেন ভারতী পত্রিকাগোষ্ঠীর অন্যতম কবি৷ প্রথম জীবনে তিনি মাইকেল মধুসূদন দত্ত, অক্ষয় কুমার বড়াল প্রমুখের দ্বারা প্রভাবিত হন৷ পরে রবীন্দ্র অনুসারী হলেও তিনি স্বতন্ত্র হয়ে ওঠেন৷ বাংলা শব্দের সঙ্গে আরবি-ফার্সি শব্দের সমন্বিত ব্যবহার দ্বারা বাংলা কাব্যভাষার শক্তি বৃদ্ধির প্রাথমিক কৃতিত্ব তাঁরই৷ অনুবাদের মাধ্যমে তিনি বিশ্বের কাব্যসাহিত্যের সঙ্গে বাংলার যোগাযোগ ঘটান৷ নবকুমার, কবিরত্ন, অশীতিপর শর্মা, ত্রিবিক্রম বর্মণ, কলমগীর প্রভৃতি ছদ্মনামে তিনি কবিতা লিখতেন৷ দেশাত্মবোধ, মানবপ্রীতি, ঐতিহ্যচেতনা, শক্তিসাধনা প্রভৃতি তাঁর কবিতার বিষয়বস্তু৷ ১৯১৮ সালে ভারতী পত্রিকার বৈশাখ সংখ্যায় ছন্দ সম্পর্কিত তাঁর প্রসিদ্ধ রচনা ‘ছন্দ-সরস্বতী’ প্রকাশিত হয়৷ তাঁর অপর কৃতিত্ব বিদেশী কবিতার সফল অনুবাদ৷ আরবি-ফার্সি, চীনা, জাপানি, ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষার বহু কবিতা অনুবাদ করে বাংলাসাহিত্যের বৈচিত্র্য ও সমৃদ্ধি সাধন করেন৷ মেথরদের মতো অস্পৃশ্য ও অবহেলিত সাধারণ মানুষ নিয়েও তিনি কবিতা লিখেছেন৷[] কবিতায় ছন্দের সমৃদ্ধতার জন্য তিনি ছন্দের রাজা ছন্দের যাদুকর বলে খ্যাত।

দেহাবসান

[সম্পাদনা]

মাত্র চল্লিশ বছর বয়সে ১৯২২ সালের ২৫ জুন তারিখে কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত পরলোকগমন করেন৷[] সত্যেন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন—

“ তুমি বঙ্গভারতীর তন্ত্রী-‘পরে একটি অপূর্ব তন্ত্র এসেছিলে পরাবার তরে এ শুধু প্রিয়জনের প্রশংসা নয়, এ এক ঐতিহাসিক সত্য।”

সাহিত্যকর্ম

[সম্পাদনা]

কাব্যগ্রন্থ

[সম্পাদনা]
  • সবিতা (১৯০০)
  • সন্ধিক্ষণ (১৯০৫)
  • বেণু ও বীণা (১৯০৬)[]
  • হোমশিখা (১৯০৭)
  • ফুলের ফসল (১৯১১)
  • কুহু ও কেকা (১৯১২)[]
  • তুলির লিখন (১৯১৪)
  • মনিমঞ্জুষা (১৯১৫)
  • অভ্র-আবীর (১৯১৬)
  • হসন্তিকা (১৯১৭)
  • বেলা শেষের গান (১৯২৩)
  • বিদায় আরতি (১৯২৪)

অনুবাদ

[সম্পাদনা]
  • তীর্থ সলীল (১৯০৮)
  • তীর্থ রেণু (১৯১০)
  • ফুলের ফসল (১৯১১)[]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে দৈনিক আমারদেশ
  2. এই দিনে: কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত দৈনিক সকালের খবর
  3. সেলিনা হোসেন ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত; বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান; ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭; পৃষ্ঠা- ৩৯২।
  4. বেণু ও বীণা[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] ই-বাংলাসাহিত্য ডট কম
  5. কুহু ও কেকা[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] ই-বাংলাসাহিত্য ডট কম
  6. http://bengali.evergreenbangla.com/623[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]