বিষয়বস্তুতে চলুন

শিরীণ আখতার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শিরীণ আখতার
প্রফেসর ড.শিরীণ আখতার
পেশাঅধ্যাপনা
নিয়োগকারীচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
উপাধিউপাচার্য
মেয়াদ৩ নভেম্বর ২০১৯ - ২০২৪ সাল
উত্তরসূরীমো. আবু তাহের

অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮তম ও প্রথম মহিলা উপাচার্য। ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা উপ-উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) এবং উপাচার্যের (রুটিন দায়িত্ব) দায়িত্ব পালন করেন।[]

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের জন্ম ১৯৫৬ সালে কক্সবাজারের ঈদগাঁওতে।[] তার বাবার নাম আফসার কামাল চৌধুরী এবং মা বেগম লুৎফুনহরার কামাল। তার স্বামী লতিফুল আলম চৌধুরী। তিনি এক ছেলে এবং এক মেয়ের জননী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬৯ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির জন্য চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে যে জনসভা হয়েছিল, তাতে শিরীণ আখতার বক্তব্য রাখেন। তখন তার বয়স ছিল ১৩ বছর।[][]

শিক্ষাজীবন

[সম্পাদনা]

শিরীণ আখতার ১৯৭৩ সালে কক্সবাজার সরকারি গার্লস স্কুল এসএসসি, ১৯৭৫ সালে চট্টগ্রাম সরকারি গার্লস কলেজ এইচএসসি এবং ১৯৭৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।[][] ১৯৮১ সালে তিনি একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।[][] এছাড়া ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রিও অর্জন করেন।[]

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার ১৯৮৪ সালে চট্টগ্রাম শহরের এনায়েত বাজার মহিলা কলেজে (১৯৮৪-১৯৯৬) প্রভাষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন।[] তিনি একাধারে কথাসাহিত্যিক, কবি ও কলামিস্ট। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদানের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন। পদোন্নতির মাধ্যমে ২০০৬ সাল থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন।[] ২০১৬ সাল থেকে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মহিলা উপ-উপাচার্য এবং ২০১৯ সালের ১৩ জুন থেকে রুটিন দায়িত্বে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন আচার্য ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ কর্তৃক নিয়োগের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮তম পূর্ণ উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন।[] চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র মহিলা উপ-উপাচার্য এবং উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।[][]

প্রকাশনা

[সম্পাদনা]
  • ২০০০, চন্দ্র অমাবস্যা: আরেফ আলী মনশ যাত্রা পাণ্ডুলিপী, বাংলা বিভাগ, সিইউ
  • ২০০০ "নজরুল-এর উপন্যাস" চির উন্নত শির "
  • ২০০০ "মানব জীবনে নদীর ভূমিকা ও সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহর নদী তাত্ত্বিক উপন্যাস" কোটাসাহিত্য ", কলকাতা।
  • ২০০১ "নজরুল উপন্যাসের কবি ভাবনা" নজরুল ইনস্টিটিউট জার্নাল, ঢাকা।
  • ২০০৫-২০০৬ 'উমরাতুল ফজল: এক স্নিগ্ধা দীপশিখা', "স্কুল অফ উইমেন স্টাডিজ পত্রিকা", জাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা।
  • ২০০৫-২০০৬, 'আমাদের ছোট গল্পে একুশ-এর চেতনা', "কথাসাহিত্য", মিত্র ও ঘোষ, কলকাতা।
  • ২০০৫-২০০৬, 'কল্পনায় দত্ত বিপ্লবী বৈভবে', "একসাথে", কলকাতা।
  • ২০০৫-২০০৬, 'চট্টগ্রামে মহিলা গীতি সোহেলা', 'একচেটিয়া' কলকাতা মহিলা পরিষদ পত্রিকা, কলকাতা, ভারত।
  • ২০০৭, 'শৈলবালা গোজাজয়ার উপন্যাস' শেখ আন্দু ', "পশ্চিমবাংলা বাংলা একাডেমী পত্রিকা", পশ্চিমবাংলা, ভারত।

সম্মেলন ও সেমিনার

[সম্পাদনা]
  • তিনি বাংলাদেশ রেডিও ও টেলিভিশনের শিল্প ও সাহিত্য প্রোগ্রেমের আলোচনায় অংশ নেন এবং সামাজিক সাহিত্য ও গণমাধ্যম ভিত্তিক কর্মসূচির সেমিনারে অংশ নেন।

গবেষণা ও সৃজনশীল কাজ

[সম্পাদনা]

সৃজনশীল বই

[সম্পাদনা]
  • চির উন্নত শির -২০০০
  • সেনোবিয়া রবীন্দ্রনাথ ও হিমেনাথ ইবঙ্গ অন্যান্য বিবেচনা - ২০০৪
  • যুগবানী ও নজরুল - নজরুল ইনস্টিটিউট - ২০০৬
  • বাংলাদেশি তিনজন উপন্যাসিক শওকত ওসমান, ওয়ালীউল্লাহ, আবু ইসহাক। বাংলা একাডেমী হতে প্রকাশিত, প্রথম সংস্করণ ১৯৯১, দ্বিতীয় সংস্করণ ২০১০।[]
  • শেখ আন্দু ২০১৫

ছোট গল্প বই

[সম্পাদনা]
  • সাথী নক্ষত্রের আলো ১৯৯৫
  • পরিব্রজ - ২০০৪
  • ছোটকার টোটকা গল্প -২৪
  • মৎস্য কন্যা - ২০১৩
  • যুদ্ধ জীবন - বেহলা বাংলা - ২০১৬
  • রোহিঙ্গা - অবিশেখর ২০১৬
  • লব্ধক-অবিশেখর ২০১৬

সম্মাননা

[সম্পাদনা]
  • কক্সবাজার অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক ১৯৯২ সালে তাকে কক্সবাজার সমিতির পুরস্কার দেওয়া হয়।
  • ২০০৬ সালে নজরুলের জন্মজয়ন্তীর কমিটি তাকে নজরুল পদককে ভূষিত করে।
  • ২০১৫ সালে, চট্টগ্রামের শিল্প ও সাংস্কৃতিক সংগঠন 'শাঁদীপানা' তাকে একুশে পদক প্রদান করেন।
  • ২০২০ সালে, বেগম রোকেয়া পদক বিজয়ী []

সদস্য

[সম্পাদনা]
  • আজীবন সদস্য, বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ।
  • বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইউটিএসএ-২০০৬-২০১০ প্রান্টিক এর উপ-প্রেসিডেন্ট।
  • নির্বাহী সদস্য, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইউটিএসএ-২০১১-২০১৩ প্রান্তিক।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "চবিতে প্রথম নারী ভিসি শিরীণ আখতার"। bdnews24। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০১৯ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "Dr Shirin Akter, first female Pro-VC of CU"দ্য এশিয়ান এজ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-০৭ 
  3. "Dr. Shireen Akhter CU"cu.ac.bd। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০১৯ 
  4. "চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদে যাদবপুরের প্রাক্তনী"। এইসময়.ইন্ডিয়া টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০১৯ 
  5. শিরীণ আখতার (১৯৯৩)। বাংলাদেশি তিনজন উপন্যাসিক শওকত ওসমান, ওয়ালীউল্লাহ, আবু ইসহাক। বাংলা একাডেমি। আইএসবিএন 9789840728480। ৭ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০১৯ 
  6. "রোকেয়া পদক পেলেন পাঁচজন"দৈনিক প্রথম আলো। ৯ ডিসেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০২১