লাল বাহিনী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লাল বাহিনী
লাল বাহিনী
দেশ বাংলাদেশ
আনুগত্যবাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগ
ধরনআধাসামরিক
ভূমিকাদাঙ্গা-পুলিশ
ভ্যানগার্ডিজম

লাল বাহিনী (রেড গার্ডস) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শ্রমিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগের সশস্ত্র শাখা ছিল যা ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার আগে বা ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সক্রিয় ছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] লাল বাহিনীর নেতৃত্বে ছিল বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান।[১] এই বাহিনীটি মূলত তৎকালীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্যানগার্ড ছিল এবং শ্রমিকদের মধ্যে বিদ্রোহ দমন করতে ব্যবহৃত হত।

বাহিনী গঠনের আসল তারিখ অজানা। বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগের এই শাখাটি কখনই সরকারী বাহিনী হিসাবে সরকারের স্বীকৃতি পায় নি, তবে একটি জনসভায় শেখ মুজিবুর রহমান দলটিকে লাল ঘোড়া বলে অভিহিত করেছিলেন।[২]

লাল বাহিনীকে দেশের তেজগাঁও, টঙ্গী, আদমজী, কালুরঘাট প্রভৃতি শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক বিক্ষোভ দমনে নির্মমতার কারণে এবং শিল্পাঞ্চলে দাঙ্গা বাড়ানোর কারণে মানুষ ভয় পেত। লাল বাহিনী, জাতীয় রক্ষী বাহিনী এবং স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী শেখ মুজিব শাসনামলে একটি প্রচ্ছন্ন জোট গঠন করেছিল। তার তিন বছরের শাসনামলে যে কয়েক হাজার দাঙ্গা ঘটেছিল এবং তাতে হাজার হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল তার জন্য লাল বাহিনী দায়ী।[৩]

পটভূমি[সম্পাদনা]

নয় মাসব্যাপী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারী শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যাবর্তনের পরে, তিনি দেশের জন্য একটি সংবিধানের খসড়া তৈরির নির্দেশনা দিয়েছিলেন, যা একই বছরের ৪ নভেম্বর রাষ্ট্রীয় নীতির চারটি মূলনীতি- গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং ধর্মনিরপেক্ষতার সাথে গৃহীত হয়েছিল। এই চারটি রাষ্ট্রীয় নীতিমালার সবগুলোকে একসাথে মুজিববাদ বলা হয়।

সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আওয়ামী লীগ, ২৫ শে মার্চ ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ নং ১ কার্যকর করার পরে সরকার কর্তৃক গৃহীত সমস্ত ব্যাংক, বীমা, কলকারখানা এবং মিলগুলিকে জাতীয়করণ করেছিল। এতে দেশের প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ শিল্প সরকারের কার্যকর নিয়ন্ত্রণে আসে।[৪]

শিল্পগুলি অধিগ্রহণের ফলে প্রশাসনিক ক্ষমতার পাশাপাশি সরকার সেইসব শিল্পে কাজ করতে থাকা শ্রমিকদের কল্যাণেরও দায়িত্ব পেয়েছিল। এটি আওয়ামী লীগের শ্রমিক শাখাকে আগের চেয়ে বেশি প্রভাবশালী করে তুলেছিল। সরকারের সমর্থনে বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগ শীঘ্রই রাজনীতিতে একটি প্রধান শক্তি হয়ে ওঠে এবং স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী লাল বাহিনী গঠন করে যা ১৯৭২ সাল থেকে কাজ শুরু করে।

মতাদর্শ[সম্পাদনা]

লাল বাহিনীর সদস্যদের মতাদর্শ নিয়ে কিছুটা মাথা ব্যথা ছিল এবং এটি মূলত দেশের আশেপাশের শিল্প অঞ্চলগুলি থেকে বিরোধী শক্তি নির্মূল করার জন্য গঠিত হয়েছিল। এর নেতৃবৃন্দের প্রকাশ্য বক্তৃতা এবং শাসনকালে সংগঠনের কার্যক্রমগুলি ইঙ্গিত দেয় যে এই বাহিনীটি সম্ভবত নিজেদের বিপ্লবী ভ্যানগার্ড হিসেবে বিবেচনা করতো এবং প্রকৃতপক্ষে ভ্যানগার্ডিজমকে এর আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করেছিল। মার্কসবাদী বিপ্লবী সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে ভ্যানগার্ডিজম ধারণায় বিশ্বাস করা হয় যে কেবল একটি দলই প্রকৃতপক্ষে শ্রমিক শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। অক্টোবর বিপ্লবের পরে বলশেভিকরা শ্রমিক শ্রেণির প্রতিনিধি হওয়ার ভূমিকা পালন করেছিলেন।

লাল বাহিনীর লক্ষ্য ছিল শ্রমিক শ্রেণির একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগকে প্রতিষ্ঠিত করা। তবে এটি দেশের বৃহত্তম বা জনপ্রিয় শ্রমজীবী সংগঠন কোনোটাই ছিল না।

১৯৭৩ সালের নির্বাচনের পরে (যেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যে জয়ী হবে এটি নিশ্চিতভাবে জানাই ছিল) শ্রমিক ফ্রন্ট দেশের শিল্প অঞ্চল থেকে অন্য সকল ট্রেড ইউনিয়ন নেতাকর্মীদের বহিষ্কারের জন্য একটি প্রচারণা শুরু করেছিল। বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগের নেতাদের মতে:[৩]

আওয়ামী লীগ একটি সামগ্রিক বিজয় অর্জন করেছে এবং যেহেতু শ্রমিক শ্রেণীর কল্যাণে শিল্প কারখানাগুলোকে জাতীয়করণ করা হয়েছে এবং সরকার একটি সামাজিক অর্থনীতি তৈরি করেছে, তাই সামগ্রিক বিবেচনা করে অন্য কোনো ট্রেড ইউনয়নের প্রয়োজন নেই।

১৯৭২ সালের মার্চ মাসে শিল্পগুলি জাতীয়করণের পরে লাল বাহিনীর প্রধান আবদুল মান্নান ঘোষণা করেন যে এই শক্তিটি শ্রমিক শ্রেণীর সমাজতন্ত্র ও অর্থনৈতিক মুক্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারকে সহায়তা করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল।[৩]

তদুপরি, লাল বাহিনী সদস্যরা আমেরিকান বিরোধী বক্তৃতা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল যা তাদের আমেরিকানবিরোধী মানসিকতা তৈরি করতে বাধ্য করেছিল। ১৯৭৩ সালের ৩ মে বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগ ও শেখ ফজলুল হক মনি পাট মিল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানকে "মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ, জায়নিজম এবং নিউইয়র্কে বসে পাকিস্তানি পুঁজিবাদীদের এজেন্টদের কাছে পাট পাচারের" অভিযোগ করেছিলেন।[৫]

লাল বাহিনীর মূল সংগঠনের একটি শাখা বাংলাদেশ টেক্সটাইল ওয়ার্কার্স লিগ, ১৯৭৩ সালের[৬] ১৬ মে এর সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম স্বাক্ষরিত একটি আবেদনে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সাহায্যের জন্য অনুরোধ করেছিল।[৬]

গঠন[সম্পাদনা]

লাল বাহিনী গঠনের সঠিক তারিখ এবং সময় নির্ধারণ করা যায়নি কারণ এটি পুরোপুরি শাসকদলের সমর্থিত একটি স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী ছিল এবং এই বাহিনীর জন্য প্রতিষ্ঠানের কোনও নির্দিষ্ট পদ্ধতিও ছিল না।

আবদুল মান্নান, যিনি বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগের প্রধান ছিলেন, তিনি এই বাহিনী গঠনকে সুষ্ঠুভাবে সমন্বয় করেছিলেন বলে মনে হয়। সংগঠন থেকে দুজন শক্তিশালী শ্রমিক নেতা মোহাম্মদ শাহজাহান ও রুহুল আমিন ভূঁইয়ার পদত্যাগের পরে আবদুল মান্নান সংগঠনকে শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন কারণ তিনি কেবল শ্রমিক সংগঠনের সর্বকেন্দ্রিকই ছিলেন না, মূল সংগঠনেরও সর্বকেন্দ্রিক হয়েছিলেন।[৭]

১৯৭২ সালের মার্চ থেকে শিল্পগুলিকে জাতীয়করণের নীতি ঘোষণার পরে লাল বাহিনী তাদের 'বিরোধী দল' হিসেবে চিহ্নিত রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্মূল করার জন্য শুদ্ধি অভিযান শুরু করে। লাল বাহিনীর নেতারা আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থিত সরকারবিরোধী বিক্ষোভে জড়িত সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন।

১৯৭২ সালের ডিসেম্বরে লাল বাহিনীর শুদ্ধি অভিযানের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে এক জনসভায় শেখ মুজিবুর রহমান তথাকথিত শোষণকারীদের শেষ করতে তাঁর 'লাল ঘোড়া' মোতায়েনের হুমকি দিয়েছিলেন।[২]

প্রতিদ্বন্দ্বিতা[সম্পাদনা]

আওয়ামী লীগ শাসনামলে বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগ দেশের প্রায় সকল শ্রমিক সংগঠনের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছিল তবে ১৯৭২ সালের ৩১ শে অক্টোবর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠনের পরে তা নতুন মাত্রা পায়।

বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগের সবচেয়ে প্রভাবশালী ত্রয়ীর মধ্যে মোহাম্মদ শাহজাহান এবং রুহুল আমিন ভূঁইয়া ডিসেম্বরে তাদের হাজারো অনুগামীদের নিয়ে নবগঠিত জাসদের সমর্থনে সংগঠনটি ত্যাগ করেছিলেন যা সম্ভবত সংগঠনে থাকা একমাত্র নেতা আবদুল মান্নানকে পুনর্গঠন করতে বাধ্য করেছিল।[৭]

মোহাম্মদ শাহজাহান ও রুহুল আমিন ভূঁইয়া জাসদের নতুন শ্রমিক ফ্রন্ট গঠন করেন। শুরু থেকেই বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগের সাথে জাসদ সমর্থিত জাতীয় শ্রমিক লীগের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। এমনকি বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগের আবদুল মান্নানকে এমনও বলতে দেখা গেছে যে, "নতুন ফ্রন্ট যদি মুজিববাদের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করে তবে আমি তাদের জিহ্বা কেটে দেব"।[৮]

তদুপরি, শিল্পাঞ্চলের অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগ সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের উপর বামপন্থী বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের প্রভাবের কারণে একটি শক্তিশালী সমর্থন বেস তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছিল। বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি সমর্থিত বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র বিটিইউকেরও শ্রমিক শ্রেণির উপর প্রভাব ছিল।

নৃশংসতা[সম্পাদনা]

মোংলা বন্দর গণহত্যা[সম্পাদনা]

লাল বাহিনীর প্রথম প্রথম নৃশংসতা খুলনা বন্দরে (যা মংলা বন্দর নামে পরিচিত) সংঘটিত হয়েছিল যেখানে হাজার হাজার শ্রমিক কুলি হিসাবে কাজ করত। ধারণা করা হয়েছিল যে বামপন্থী শ্রমিক মোর্চা ও বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগের মধ্যে কুলিদের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার প্রতিযোগিতার ফলাফল হিসাবে এই গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে।

১৯৭২ সালের মার্চ মাসে লাল বাহিনী ও বামপন্থী শ্রমিকদের মধ্যে এই দাঙ্গা থেকে গণহত্যা ছড়িয়ে পড়ে। বিরোধী শ্রমিকদের নিশ্চিহ্ন করতে পুলিশ যখন লাল বাহিনীর পক্ষে জড়িত হয় তখন গণহত্যা শুরু হয়। সরকারের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি অনুসারে দাঙ্গার ফলে প্রায় ৩৬ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তবে প্রকৃত মৃত্যুর হার সরকার কর্তৃক বর্ণিত সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি ছিল। দাঙ্গা চলাকালীন বাংলাদেশে থাকা বিশিষ্ট সাংবাদিক অ্যান্টনি মাসকারেনহাসের মতে, সেদিন প্রায় ২০০০ মানুষ নিহত হয়েছিল এবং যে সব বামপন্থী শ্রমিকরা লাল বাহিনীর সদস্যদের অস্ত্রের মুখোমুখি হয়েছিল তারাই ক্ষতির স্বীকার হয়েছিল।[৯]

টঙ্গী হিংস্রতা[সম্পাদনা]

আরেকটি ভয়াবহ ঘটনা ছিল ৫ এপ্রিল টঙ্গী শিল্পাঞ্চলে বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের কর্মীদের উপর লাল বাহিনীর লোকদের দ্বারা হামলা। এই হামলার লক্ষ্য ছিল টঙ্গীর ন্যাপ (ভাসানী) সমর্থিত ফেডারেশন কর্মীদের প্রভাব শেষ করা। ঐ সময় বাংলাদেশের শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে এটি বৃহত্তম ছিল।[১০]

লাল বাহিনীর সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলায় হাজার হাজার শ্রমিক নির্যাতিত ও সহিংসতার স্বীকার হয়। এবং অজনা সংখ্যক শ্রমিকদের হত্যা করা হয়। লাল বাহিনী ক্যাডাররা বিপুল সংখ্যক শ্রমিককে বহিষ্কার করেছিল যারা বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনকে সমর্থন করত।[১১]

চট্টগ্রামে দাঙ্গা[সম্পাদনা]

লাল বাহিনীর সাথে কিছু সরকারি আধিকারিক কালুরঘাট শিল্পাঞ্চলে এবং চট্টগ্রামের আরআর জুট অ্যান্ড টেক্সটাইল মিলের দাঙ্গার জন্য প্রত্যক্ষ দায়ী ছিল। এই দাঙ্গার পেছনের প্রধান কারণ ছিল 'স্থানীয় ও অ-স্থানীয় সমস্যা' এবং 'জেলাবাদ' যা লাল বাহিনী সদস্যরা প্রবর্তন করেছিল এবং এটি শ্রমিকদের পার্থক্য করতে ব্যবহৃত হত।[১১]

চট্টগ্রাম যেহেতু একটি বন্দর নগরী ছিল এবং একটি শিল্পকেন্দ্র ছিল, তাই অন্যান্য জেলা থেকে কাজের সন্ধানে অনেক শ্রমিককে চট্টগ্রাম আসতে হয়েছিল। তারা সেই কারখানাগুলিতে বছরের পর বছর কাজ করে এবং কারখানাগুলির উৎপাদনে অবদান রেখেছিল।

১৯৭৩ সালের মে মাসে লাল বাহিনী সদস্যরা স্থানীয়-অ-স্থানীয় সমস্যাটি ব্যবহার করে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছিল।[১২] দাঙ্গায় চট্টগ্রামে কাজ করতে আসা শ্রমিকদের হত্যা করা হয়েছিল। কয়েকশ শ্রমিককে জবাই করা হয়েছিল এবং বেঁচে থাকা ব্যক্তিরা প্রাণভয়ে অন্যান্য জেলায় পালিয়ে যায়। কারখানাগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

আরো বেশ কয়েকটি দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছিল এবং মিলগুলির উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছিল। এই দাঙ্গার আগে শেখ মনি এবং আবদুল মান্নান তাদের অনুসারীদের এবং লাল বাহিনীর দলকে বলেছিলেন যে এই পাটগুলি কিছু সাম্রাজ্যবাদীদের এজেন্টদের কাছে পাচার করে দিচ্ছে। তাই তারা শুদ্ধি আন্দোলনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।[৫]

দাঙ্গার ক্রমবর্ধমান সংখ্যার ফলে সরকারের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং ১২ই মে অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন যে উৎপাদন ব্যাপকভাবে হ্রাস পাচ্ছে এবং অর্থনীতি পতনের দিকে যাচ্ছে। তিনি কারখানাগুলিতে কঠোর শ্রম শৃঙ্খলাবদ্ধতা এবং উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান।[১৩]


তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Karim, Syed A. (২০০৫)। Sheikh Mujib: Triumph and Tragedy। The University Press Limited। পৃষ্ঠা 288। আইএসবিএন 978-984-506-153-7 
  2. "Fighting against the enemy within"Abdul Gaffar Choudhury। ২৫ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০২০ 
  3. Ahmed, Moudud (১৯৮৪)। Bangladesh: Era of Sheikh Mujibur Rahman। Franz Steiner Verlag। পৃষ্ঠা 147। আইএসবিএন 3-515-04266-0 
  4. Ahmed, Moudud (১৯৮৪)। Bangladesh: Era of Sheikh Mujibur Rahman। Franz Steiner Verlag। পৃষ্ঠা 19। আইএসবিএন 3-515-04266-0 
  5. "Anti-Corruption Campaign"US Cable 1973DACCA01947_b। ১৭ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০২০ 
  6. "Textile Workers Request for ILGWU Help"US Cable 1973STATE171758_b। ৯ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০২০ 
  7. Ahmad, Mahiuddin, জাসদের উত্থান ও পতনঃ অস্থির সময়ের রাজনীতি, First published 2015, p. 89, Prothoma Prakashani, Dhaka
  8. Ahmad, Mahiuddin, জাসদের উত্থান ও পতনঃ অস্থির সময়ের রাজনীতি, First published 2015, p. 90, Prothoma Prakashani, Dhaka
  9. Anthony, Mascarenhas, Bangladesh: A Legacy of Blood, First published 1986, p. 25, Hodder and Stoughton, London, আইএসবিএন ৯৭৮-০-৩৪০-৩৯৪২০-৫
  10. "Labor Trouble in Bangladesh"US Cable 1973DACCA01529_b। ১৭ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০২০ 
  11. Ahmed, Moudud (১৯৮৪)। Bangladesh: Era of Sheikh Mujibur Rahman। Franz Steiner Verlag। পৃষ্ঠা 148। আইএসবিএন 3-515-04266-0 
  12. Weinraub, Bernard (১১ জুন ১৯৭৩)। "Rising Bangladesh unrest marked by 2000 killings"। The New York Times। পৃষ্ঠা 1, 4। 
  13. "Rumors of Cabinet Crisis"US Cable 1973DACCA02163_b। ১৩ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০২০