রোসাঘর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মহাপ্রসাদ (বড়)

রসোই ঘর হল ভারতের ওড়িশা রাজ্যের পুরী জগন্নাথ মন্দিরের একটি ঐতিহ্যবাহী পাকশালা। এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাকশালা।

প্রসাদ রন্ধন করা হয় সৌর ( মহাসৌর বা সুপকার নামেও পরিচিত) সম্প্রদায়ের দ্বারা যাদের মন্দিরের শুরু থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। [১]রোসঘরে রান্না করা খাদ্য নিরামিষ এবং পেঁয়াজ, রসুন, আলু এবং লাউ ব্যবহার নিষিদ্ধ। [২] কুড়ুয়া নামে পরিচিত এক বিশেষ ধরনের মাটির পাত্র রন্ধনকার্যে ব্যবহৃত হয়। রান্নাঘরের কাছে গঙ্গাযমুনা নামক দুটি কূপের পানি রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়। রাজ ভোগ, ছত্র ভোগ এবং যজমানী ভোগ সহ ৫০০ এরও বেশি প্রকারের খাদ্য রান্না করা হয় যা জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রাকে মন্দিরের পাদদেশ রত্নবেদীতে এবং দিনে পাঁচবার পাদদেশ ভোগ মণ্ডপে অর্পণ করা হয়। [৩]চপনভোগ, ৫৬ প্রকারের রান্না করা খাদ্য প্রায় প্রতিদিনই দেওয়া হয়। [৪]জগন্নাথকে নিবেদনের পর সেই প্রসাদ আনন্দবাজারে অব্ধ হিসেবে বিক্রয় করা হয়। আনন্দ বাজার হল একটি মুক্ত বাজার বা মুক্তাঙ্গন যা মন্দির কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে সিংহদ্বারের (প্রধান প্রবেশদ্বার) উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। রোসাঘরে প্রতিদিন ৫০০০-১০০০০ জনের খাবার রান্না করা হয়। বিশেষ অনুষ্ঠানে ১ কোটিরও বেশি মানুষের খাবার রান্না করা হয়।[৫]

পাকশালা থেকে খাবার বের করার জন্য দুটি পথ রয়েছে-প্রথমটি বৃহত্তর কোঠা ভোগ এবং ছত্র ভোগের জন্য ভোগ মণ্ডপ , অন্যটি কোঠা ভোগ নৈবেদ্যের জন্য মন্দিরের অভ্যন্তরীণ স্থানে যায়।[৬] সৌর ছাড়া কাউকে রান্নাঘরের কাছে যেতে দেওয়া হয় না বা এমনকি খাবার স্পর্শ করার অনুমতি দেওয়া হয় না যতক্ষণ না প্রস্তুত খাদ্য মন্দিরে নিবেদন করা হয়। [৩]

অবস্থান[সম্পাদনা]

রসোইঘর মন্দিরের দক্ষিণ-পূর্বে বাহিরের প্রাঙ্গণে অবস্থিত। [৩]

রন্ধনস্থান[সম্পাদনা]

রন্ধনস্থানটি ১৫০ ফুট লম্বা, ১০০ ফুট চওড়া এবং প্রায় ২০ ফুট উঁচু। এতে ২৫০টি মাটির চুলা সহ ৩২টি কক্ষ রয়েছে। প্রায় ৬০০ জন পাচক এবং ৪০০ জন সহকারী একসাথে প্রতিদিন রান্না করে। রন্ধনশালায় তিন ধরণের চুলা রয়েছে; আনা চুলি অন্নের চুলা, আহিয়া চুলি এবং পিঠা চুলি মিষ্টান্ন চুলা। অন্নের চুলা ৪ ফুট লম্বা ২.৫ ফুট চওড়া এবং ২ ফুট উঁচু। দুটি অন্নের চুলার মধ্যে যে আয়তক্ষেত্রাকার স্থান তৈরি হয়েছে তাকে অহিয়া বলা হয়। মসুর ডাল এবং অন্যান্য তরকারি যেমন বেসারা, মহুর অহিয়া চুলিতে রান্না করা হয়। রোসাঘরে দশটি সিমেন্টের পিঠা চুলি রয়েছে। [৭]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

কিংবদন্তি[সম্পাদনা]

কিংবদন্তি বলে, মহাসৌরের কাজটি লক্ষ্মী দ্বারা তত্ত্বাবধান করা হয় যেখানে রান্নার প্রতি লক্ষ্মীর কোনো অসন্তুষ্টি থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে তা সমাধিস্থ করা এবং পুনরায় নতুনভাবে রন্ধন শুরু করার প্রথা রয়েছে। [১]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Kitchen of Lord Jagannath - Devotee Care Center"devoteecare.fullorissa.com। ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১২If the dog is seen, all the food must be buried and prepared again 
  2. "Jagannath Temple, Jagannath Puri, Jagannath Temple Puri, Jagannath Temple of Puri, Jagannath Temple Odisha, Jagannath Temple Orissa"visitodisha.net। ২০১২। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১২The Prasad is prepared in a very traditional way, without using onion, garlic, chillies 
  3. Narayan Miśra (১ জানুয়ারি ২০০৭)। Annals and Antiquities of the Temple of Jagannātha। Sarup & Sons। পৃষ্ঠা 120–। আইএসবিএন 978-81-7625-747-3 
  4. M.K.V. Narayan (১ জানুয়ারি ২০০৯)। Exploring the Hindu Mind: Cultural Reflections and Symbolisms। Readworthy। পৃষ্ঠা 248–। আইএসবিএন 978-93-5018-101-0 
  5. Saroj Kumar, Panda (২০০৬)। The Kitchen of Srimandir: Biggest in the World (পিডিএফ)। Department of Information and Public Relations, Government of Odisha। পৃষ্ঠা 80-81। সংগ্রহের তারিখ ২২ মে ২০২১ 
  6. L.S.S. O'malley (১ জানুয়ারি ২০০৭)। Bengal District Gazetteer : Puri। Concept Publishing Company। পৃষ্ঠা 118–। আইএসবিএন 978-81-7268-138-8 
  7. Saroj Kumar, Panda (২০০৬)। The Kitchen of Srimandir: Biggest in the World (পিডিএফ)। Department of Information and Public Relations, Government of Odisha। পৃষ্ঠা 80-81। সংগ্রহের তারিখ ২২ মে ২০২১