বিষয়বস্তুতে চলুন

রাধা কুণ্ড

স্থানাঙ্ক: ২৭°৩১′৩১″ উত্তর ৭৭°২৯′২৯″ পূর্ব / ২৭.৫২৫২৭৮° উত্তর ৭৭.৪৯১৩৮৯° পূর্ব / 27.525278; 77.491389
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রাধা কুণ্ড
Rādhākuṇḍa
শহর
উপর থেকে নিচে : রাধা কুণ্ড এবং শ্যাম কুণ্ড
রাধা কুণ্ড উত্তর প্রদেশ-এ অবস্থিত
রাধা কুণ্ড
রাধা কুণ্ড
রাধা কুণ্ড ভারত-এ অবস্থিত
রাধা কুণ্ড
রাধা কুণ্ড
ভারতের উত্তরপ্রদেশে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৭°৩১′৩১″ উত্তর ৭৭°২৯′২৯″ পূর্ব / ২৭.৫২৫২৭৮° উত্তর ৭৭.৪৯১৩৮৯° পূর্ব / 27.525278; 77.491389
Country ভারত
Stateউত্তরপ্রদেশ
Districtমথুরা
জনসংখ্যা (২০০১)
 • মোট৫,৮৮৪
Languages
 • Officialহিন্দি
সময় অঞ্চলIST (ইউটিসি+5:30)
যানবাহন নিবন্ধনUP85
ওয়েবসাইটhttp://mathura.nic.in/

রাধা কুণ্ড ( IAST : Rādhakuṇḍa , ইংরেজি: Radha ’s Pond ) হল ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মথুরা জেলার বৃন্দাবনের একটি শহর ও নগর পঞ্চায়েত। এটি মথুরার জনপ্রিয় পর্যটন স্থানের একটি। গোবর্ধন পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত এই কুণ্ডটি মথুরা হতে প্রায় ছাব্বিশ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। বর্তমানে এর অবস্থান গোবর্ধন তহশিলের আরিতা গ্রামে।[] রাধামাধব তথা পরমাত্মা শ্রীকৃষ্ণ এবং রাধারানীকে উৎসর্গীকৃত তীর্থস্থানগুলির মধ্যে একটি ।

কিংবদন্তি

[সম্পাদনা]
রাধা কুন্ডের সোপান।

ষোড়শ শতকের গোড়ার দিকে চৈতন্য মহাপ্রভুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী বৃন্দাবনের সাধক ও বৈষ্ণব ধর্মগুরু রূপ গোস্বামীর উপদেশ অনুসরণ করে বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের ভক্তবৃন্দ রাধা কুণ্ডকে সমস্ত পবিত্র স্থানের সর্বোচ্চ বলে গণ্য করেন। []

জনপ্রিয় কিংবদন্তি অনুসারে, মথুরার নরেশ কংস বালক কৃষ্ণকে হত্যা করতে একের পর এক রাক্ষসকে পাঠান। বালক কৃষ্ণ সমস্ত রাক্ষসকে একাই বধ করে। তারা পরাভূত হলে কংস কৃষ্ণকে বধ করতে অরিষ্টাসুরকে পাঠান। বালক কৃষ্ণ সে সময় মাঠে গরু চরাচ্ছিলেন, তাই দেখে অরিষ্টাসুর বাছুরের রূপ ধরে কৃষ্ণের গরুর দলে মিশে বৃষভাসুর নাম নেয় এবং কৃষ্ণকে হত্যা করার সুযোগ খুঁজতে থাকে, কিন্তু কোন সুযোগ না পেয়ে অরিষ্টাসুর ছোট ছোট বাছুরগুলিকে হত্যা করতে আরম্ভ করে। কৃষ্ণ কিন্তু গরুর দলে লুকিয়ে থাকা অরিষ্টাসুরকে চিনতে পেরে, তাকে মাটিতে আছড়ে ফেলে হত্যা করেন।[] এই ঘটনার কথা জানতে পেরে রাধারানী বলেন যে, অরিষ্টাসুর দানব হলেও সে গরুর রূপ ধারণ করেছিল। গোহত্যা করা মহাপাপ। সুতরাং সেই পাপ থেকে মুক্তি পেতে কৃষ্ণকে সব তীর্থের বিভিন্ন নদীতে স্নান করতে হবে।[] কৃষ্ণ রাধার কথা শুনে হেসে ফেলেও সম্পূর্ণ অবজ্ঞা না করে নারদ মুনির পরামর্শে কৃষ্ণ সব তীর্থক্ষেত্রকে ব্রজে আহ্বান করেন। সব তীর্থ জলের রূপ ধরে আবির্ভূত হলে কৃষ্ণ তার বাঁশি দিয়ে মাটি খুঁড়ে নির্মিত কুণ্ডে স্থান দেন। রাধাকে খুশি করতে সেই জলে স্নান করে গোহত্যার পাপ থেকে মুক্তি পান কৃষ্ণ। কৃষ্ণের গায়ের রঙ অনুসারে সেই কুণ্ডের জলের রঙ হয় কালো। এই জলাশয়টি শ্যাম কুণ্ড নামে পরিচিত হয়। শ্যাম কুণ্ডের বিপরীতে রাধারানী তার সখীদের নিয়ে নিজের হাতের চুড়ি দিয়ে মাটি খুঁড়ে আরও একটি কুণ্ড নির্মাণ করেন। সেই কুণ্ডে কৃষ্ণের শ্যাম কুণ্ডের পবিত্র জলে পরিপূর্ণ হয়। রাধারানীর গায়ের রঙ অনুসারে এই কুণ্ডের জল সাদা। কুণ্ডটিকে রাধার নামে নামকরণ করে রাধা কুণ্ড রাখা হয় যা 'কঙ্গণ কুণ্ড' নামেও পরিচিত হয়। [][][][][] কৃষ্ণ অতঃপর রাধা কুণ্ডে স্নান করেন এবং ঘোষণা করেন যে, যে কেউ রাধা কুণ্ডে স্নান করবে তার প্রতি রাধারাণীর যে তীব্র প্রেম (প্রেম-ভক্তি ) আছে, তিনি তা আশীর্বাদ রূপে প্রাপ্ত হবেন। অনুরূপভাবে, রাধারানীও শ্যাম কুণ্ডে স্নান করে ঘোষণা করেন যে, যে কেউ শ্যাম কুণ্ডে স্নান করবে সে তার প্রতি কৃষ্ণের ভালবাসায় আছে তা পেয়ে সে ধন্য হবে। অদ্যাবধি, রাধা-কৃষ্ণের প্রতি ভালবাসা কামনা করে লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী এই পবিত্র স্থানে শ্রদ্ধার সাথে স্নান করতে আসেন। পর্যায়ক্রমে, প্রথমে রাধা-কুণ্ডে, তারপরে শ্যাম-কুণ্ডে এবং তারপরে আবার রাধা-কুণ্ডে স্নান করেন। এই একটি তীর্থস্থানেই মধ্যরাতের স্নানটিকে শুভ স্নান হিসাবে মনে করা হয়। [১০][১১]

জনসংখ্যা

[সম্পাদনা]

ভারতের ২০০১ খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারি অনুসারে, [১২] রাধা-কুণ্ডেরর জনসংখ্যা হল ৫৮৮৯ জন। মোট জনসংখ্যার ৫৪% পুরুষ এবং ৪৬% মহিলা। রাধা-কুণ্ড এর সাক্ষরতার হার ৬৫%, যা সারা ভারতের সাক্ষরতার হার ৫৯.৫% এর চেয়ে বেশি। পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৭৬%, এবং মহিলাদের সাক্ষরতার হার ৫৩%। এই জনসংখ্যার ১৬% হল ৬ বছরের কম বয়সী।

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "এখানে স্নান করলে নাকি সব তীর্থের সমান পূণ্য! জানুন শ্যামকুণ্ড-রাধাকুণ্ডের কথা"। 
  2. Rupa Gosvami: Sri Upadeshamrita ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে, verse 9. Gaudiya Vedanta Publications, 2003.
  3. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; eis2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  4. MUKHERJEE, TARAPADA; HABIB, IRFAN (১৯৮৭)। "Akbar and the Temples of Mathura and its Environs"Proceedings of the Indian History Congress48: 234–250। আইএসএসএন 2249-1937জেস্টোর 44141685 
  5. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; eis3 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  6. Mohanty, Prafulla Kumar (২০১৩)। "WATER BODIES AND THE STATE — A STUDY IN THE CONTEXT OF ANCIENT AND EARLY MEDIEVAL ODISHA"Proceedings of the Indian History Congress74: 219–228। আইএসএসএন 2249-1937জেস্টোর 44158818 
  7. "radha kund"jaibhole.co.in 
  8. Singh, Rana P. B.; Haigh, Martin J. (২০১৪-১১-২১), "Hindu Pilgrimages: The Contemporary Scene", The Changing World Religion Map, Dordrecht: Springer Netherlands, পৃষ্ঠা 783–801, আইএসবিএন 978-94-017-9375-9, ডিওআই:10.1007/978-94-017-9376-6_39, সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-২৯ 
  9. Srila Bhaktivedanta Narayana Gosvami Maharaja: Sri Vrajmandala-Parikrama ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে, pages 139-144. Gaudiya Vedanta Publications, 2007.
  10. Prasad, Pushpa (২০০২)। "Vrindaban in Eighteenth Century: Side Lights from Nagari Documents"Proceedings of the Indian History Congress63: 415–422। আইএসএসএন 2249-1937জেস্টোর 44158110 
  11. Ghosh, Pika (২০০২)। "Tales, Tanks, and Temples: The Creation of a Sacred Center in Seventeenth-Century Bengal"Asian Folklore Studies61 (2): 193–222। আইএসএসএন 0385-2342জেস্টোর 1178971ডিওআই:10.2307/1178971 
  12. "Census of India 2001: Data from the 2001 Census, including cities, villages and towns (Provisional)"। Census Commission of India। ১৬ জুন ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০০৮