রবাতক শিলালিপি
রবাতক শিলালিপি | |
---|---|
উপাদান | পাথর |
নির্মিত | দ্বিতীয় শতাব্দী |
বর্তমান অবস্থান | দে আফগানিস্তান মিল্লি মিউজিয়াম, কাবুল, আফগানিস্তান |
রবাতক শিলালিপি ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে আফগানিস্তানের রবাতক নামক স্থান থেকে আবিষ্কৃত ব্যাক্ট্রিয় ভাষায় গ্রিক লিপিতে উৎকীর্ণ একটি শিলালিপি। এই শিলালিপি থেকে কুষাণ সম্রাটদের বংশতালিকা ও কণিষ্কের শাসন সম্বন্ধে তথ্য পাওয়া যায়।
আবিষ্কারের ইতিহাস
[সম্পাদনা]১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে আফগানিস্তানের রবাতক গিরিপথের দক্ষিণ-পশ্চিমে কাবুল-মাজার সড়কপথের পাশে একটি কৃত্রিম পাহাড়ের শিখরের নিকটে একজন আফগান মুজাহিদিন একটি ট্রেঞ্চ খনন করার সময় এই শিলালিপি সহ বেশ কিছু পাথরের ভাস্কর্য্য খুঁজে পান।[১] এই অঞ্চলে কর্মরত হ্যালো ট্রাস্ট নামক একটি খনন প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মী এই আবিষ্কার নথিভুক্ত করেন ও শিলালিপিটির আলোকচিত্র তুলে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে পাঠান। সেখানে জো ক্রিব এই শিলালিপির গুরুত্ব উপলব্ধি করে স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের অধ্যাপক নিকোলাস সিমস-উইলিয়ামসের নিকট আলোকচিত্রটি পাঠান। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে ক্রিব ও সিমস-উইলিয়ামস এই শিলালিপির পাঠোদ্ধার করে ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করেন।[২]
২০০০ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসে এই শিলালিপিটিকে খুঁজে বের করার উদ্দেশ্যে ইংরেজ ঐতিহাসিক জোনাথন লী ও সোসাইটি ফর দ্য প্রিজার্ভেশন অব আফগানিস্তান'স কালচারাল হেরিটেজ নামক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রবার্ট ক্লুইভার মাজার-ই-শরিফ থেকে পুল-ই-খুমরি পর্য্যন্ত যাত্রা করেন, যেখানে খনন ও শিল্প বিভাগে সেটি পাওয়া যায়। লী পুনরায় এই লিপির আলোকচিত্র তুললে তা বিশ্লেষণ করে সিমস-উইলিয়ামস আরো নিঁখুত অনুবাদ করেন। ২০০০ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে এই শিলালিপিটিকে কাবুল নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে কাবুল মিউজিয়ামের একদল সদস্যদের সঙ্গে রবার্ট ক্লুইভার পুল-ই-খুমরির উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সেখান থেকে প্রায় পাঁচ শ কিলোগ্রাম ওজনের এই পাথরটিকে গাড়ীতে করে মাজার-ই-শরিফ এনে সেখান থেকে বিমানে করে কাবুল নিয়ে গিয়ে কাবুল মিউজিয়ামে প্রদর্শন করা হয়। কিন্তু কিছুদিন পরে তালিবানদের আপত্তির ফলে প্রাক-ইসলাম যুগের সমস্ত নিদর্শন প্রদর্শন বন্ধ করে দিতে হয়, যার ফলে কাবুল মিউজিয়াম বন্ধ হয়ে যায়। পরে তালিবান শাসনের অবসানের পর কাবুল মিউজিয়ামে পুনরায় এই শিলালিপি প্রদর্শিত হয়। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে সিমস-উইলিয়ামস সচক্ষে এই শিলালিপি দর্শন করে লিপিটির অপর একটি অনুবাদ প্রকাশ করেন।[৩]
মূল লিপি
[সম্পাদনা][— — —]νο βωγο στοργο ΚανηϷκε κοϷανο ραϷτογο λαδειγο χοαζαοαργο βαγο
εζνογο κιδι ασ[ο] Νανα οδο ασο οισποανο μι βαγανο ι Ραοδανι αβορδο κιδι ιωγο χϷονο
νοβαστο σαγωνδι βαγανο σινδαδο οτηια ι ιωναγγο οασο οζοαστο ταδηια αριαο ωσ-
ταδο αβο ιωγο χϷονο αβο [ι] Ιυνδο φροαγδαζο αβο Ϸατριαγγε Ϸαορε αγιτα κοο-
αδηανο οδο ι ωζοπο οδο [ι Ζ]αγηδο οδο ι Κωζαμβο οδο ι Παλαβοτρο οιδρα αδα αβο ι Ζιριτ-
αμβο σιδηιανο προβαο οδο μανδαρο ι στορανο αβο ι σινδο ωσταδο οτηια αρουγο
Ιυνδο αβο ι σινδο ωσταδο. ταδι Ϸαι ΚανηϷκε αβο Ϸαφαρο καραλραγγο φρομαδο
αβεινα [․․․․]ο βαγολαγγο κιρδι σιδι β {²vac.}² αβο ριζδι αβο μα κα {²vac.}² ραγα φαρειμοανο β-
αγανο κιδι μαρο κιρδανε ι μα v ο[φ]αρρο Ομμα οοηλδι ια αμσα Νανα οδο ια αμ-
σα Ομμα Αορομοζδο μοζδοοανο ΣροϷαρδο Ναρασαο Μιιρο. οτηια ουδοα-
νο πιδογιρβο φρομαδο κιρδι ειμοανο βαγανο κιδι μασκα νιβιχτιγενδι οτ-
ηια φρομαδο αβειμοανο Ϸαονανο κιρδι αβο Κοζουλο Καδφισο Ϸαο αβο ι φρ-
ονιαγο οδο αβο Οοημο Τακτοο Ϸαο αβο ι νιαγο οδο αβο Οοημο Καδφισο Ϸαο αβο
ι πιδα οδο αβο ι χοβσο αβο ΚανηϷκο Ϸαο. τα σαγωνδι Ϸαονανο Ϸαο ι βαγοποο-
[ρο] α[․․․․․․․] φρομαδο κιρδι ταδι Ϸαφαρε καραλραγγε κιρδο ειο βαγολαγγο
[․․․․․․․․] ο καραλραγγο οδο Ϸαφαρο καραλραγγο οδο Νοκονζοκο ιαϷτο ο-
α[στο πι ]δο ια φρομανο ειμιδβα βαγε κιδι μαρο νιβιχτιγενδι ταδανο αβο Ϸαον-
ανο Ϸαο αβο ΚανηϷκε κοϷανο αβο ιαοηδανι ζορριγι λρουγο αγγα[ο]αγγο οανινδ-
ο π[․․․․]ινδι οδ {²vac.}² δι βαγοποορο ασο ιωγο χϷονο αβο ιο α χϷονο ιυνδο αρουγο π-
αδα[χϷανο] ι βαγολαγγο αβο ιωγο χϷονο ασπαδο ταδι αβο ι αριαμοσο χϷονο αγγαρ {²vac.}²
[․․․․․․․․․․π]ιδο Ϸαο φρομανα αβισο ι παϷηνα λαδο αβισο ι ρα[․․․․․]λαδο αβισο [․․․]
[․․․․․․․․․․․․․]Ϸα ι μαδ {²vac.}² α αβο βαγανο λαδο οδο [․․․․]ο[․․․]αχαδ[․․․․․․․․]βαγο[․․․․]
[— — — — —]
লিপির বক্তব্য
[সম্পাদনা]রবাতক শিলালিপি থেকে কুষাণ সম্রাট কণিষ্ক সম্বন্ধে তথ্য পাওয়া যায়। এই লিপির শুরুতেই লেখা রয়েছে যে, নানা প্রভৃতি দেবতার ইচ্ছেয় কণিষ্ক একটি নতুন কালপঞ্জীর সূচনা করেন। কণিষ্ক গ্রিক ভাষা পরিত্যাগ করে ব্যাক্ট্রিয় ভাষারও প্রবর্তন করেন। এই লিপি অনুসারে, উজ্জয়িনী, সাকেত, কৌশাম্বী, পাটলিপুত্র ও শ্রী চম্পা নগরী পর্য্যন্ত তার সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল। এই লিপির শেষে কণিষ্কের পিতৃপুরুষদের নাম পাওয়া যায়। এই লিপি থেকেই জানা যায় যে, কণিষ্কের প্রপিতামহ ছিলেন কুজুল কদফিসেস, পিতামহ ছিলেন ভীম তক্তো এবং পিতা ছিলেন ভীম কদফিসেস।[২] বি.এন. মুখার্জি এই লিপির একটি অনুবাদ করেন, যেখানে তিনি কণিষ্কের পিতামহের নাম হিসেবে সদষ্কণের নামের উল্লেখ করেন[৪], কিন্তু সিমস-উইলিয়ামস রবাতক শিলালিপি পাঠ করে এই নাম খুঁজে পাননি।[২][৩]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ A History of Ancient and Early Medieval India: From the Stone Age to the 12th Century, Upinder Singh, Pearson Education India, 2008, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৩১৭-১১২০-০,
- ↑ ক খ গ Sims-Williams, Nicholas and Cribb, Joe 1996, "A New Bactrian Inscription of Kanishka the Great", Silk Road Art and Archaeology, volume 4, 1995-6, Kamakura, pp. 75–142.
- ↑ ক খ Sims-Williams, Nicholas (2008). "The Bactrian Inscription of Rabatak: A New Reading." Bulletin of the Asia Institute 18, 2008, pp. 53-68.
- ↑ Mukherjee, B.N., "The Great Kushana Testament", Indian Museum Bulletin, Calcutta, 1995
আরো পড়ুন
[সম্পাদনা]- Fussman, Gérard (1998). "L’inscription de Rabatak et l’origine de l’ère saka." Journal asiatique 286.2 (1998), pp. 571–651.
- S.R. Goyal "Ancient Indian Inscriptions" Kusumanjali Book World, Jodhpur (India), 2005.
- Sims-Williams, Nicholas (1998): "Further notes on the Bactrian inscription of Rabatak, with an Appendix on the names of Kujula Kadphises and Vima Taktu in Chinese.", Proceedings of the Third European Conference of Iranian Studies Part 1: Old and Middle Iranian Studies., pp. 79–93.