রতনচন্দ্র কর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ডাঃ

রতনচন্দ্র কর
জন্ম১৯৫৭
জাতীয়তাভারতীয়
নাগরিকত্বভারতীয়
শিক্ষানীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাচিকিৎসক
কর্মজীবন১৯৮৩ - ২০১৪
দাম্পত্য সঙ্গীঅঞ্জলি কর
সন্তানতনুময় কর (পুত্র)
অনুময় কর (পুত্র)
মেডিকেল কর্মজীবন
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারপদ্মশ্রী (২০২৩)

ডাঃ রতনচন্দ্র কর হলেন আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চিকিৎসক। স্থানীয়দের কাছে 'জারোয়াদের ডাক্তার' নামে পরিচিত বাঙালি চিকিৎসক যিনি জীবনের অর্ধেকের বেশিরভাগ সময়ই জারোয়া জনজাতির চিকিৎসায় কাটিয়ে দেন। [১]চিকিৎসা ক্ষেত্রে তার নিরলস প্রচেষ্টার জন্য ভারত সরকার ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী  প্রদান করে। [২][৩][৪]

সংক্ষিপ্ত জীবনী[সম্পাদনা]

রতনচন্দ্র করের জন্ম পশ্চিমবঙ্গের অধুনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল মহকুমার মনসুকার সন্নিহিত বনহরিসিংহপুর গ্রামে। বিদ্যালয়ের পাঠ শেষে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ডাক্তারী পড়তে আসেন। ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে তিনি  চিকিৎসাশাস্ত্রে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক হন।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

কিছুদিন ডাঃ রতনচন্দ্র কর নাগাল্যান্ডে স্থানীয় কোন্যাক জনজাতির চিকিৎসার কাজে লিপ্ত থাকেন। তার সেই অভিজ্ঞতার কারণে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসন ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে স্থানান্তরিত করে। সেখানকার এক প্রত্যন্ত দ্বীপে জারোয়া জনজাতির বহু মানুষেরা সেসময় সংক্রামক ব্যাধি হামে আক্রান্ত হয়েছিল। জারোয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা বিষাক্ত ধনুক ও তীরে সজ্জিত থাকেন এবং তারা বহিরাগতদের প্রবেশ পছন্দ করে না। কাজেই সকলে নিরাপত্তার বিষয়ে চিন্তিত থাকেন। ডাঃ কর নাগাল্যান্ডে কাজ করার অভিজ্ঞতার উপর চ্যালেঞ্জ নিয়ে মধ্য আন্দামানের পোর্ট ব্লেয়ার হতে ৯০ কিলোমিটার দূরত্বে ৭০০ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত জারোয়া অধ্যুষিত জঙ্গলে কদমতলা হাসপাতালে যান। জারোয়াদের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার বিষয় মাথায় রেখে মাত্র চার থেকে পাঁচ মাসে তাদের ভাষা শেখেন ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হন এবং সুচিকিৎসায় তাদের সঙ্গে মিশে যান। তাদের হাম এবং অন্যান্য রোগ থেকে বাঁচিয়ে তোলেন। পরবর্তীতে তাদের শুধু রোগ নিরাময় নয়, বিলুপ্তির হাত থেকেও তাদের রক্ষা করেন। [১] ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দ হতে ২০০৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়ে জনজাতির সংখ্যার বৃদ্ধি হয়। ২০০৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি পোর্ট ব্লেয়ারের ফিরে আসেন,কিন্তু জারোয়াদের চিকিৎসার জন্য প্রায়শই প্রত্যন্ত স্থানে চলে যেতেন। ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কেন্দ্রশাসিত প্রশাসনের আদিবাসী কল্যাণ দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর হন এবং ২০১২ খ্রিস্টাব্দ হতে ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি নীল দ্বীপে স্থানান্তরিত হন। ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে অবসরের পর তিনি কিছুদিন আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের চাথাম দ্বীপে অবস্থিত এশিয়ার বৃহত্তম এবং প্রাচীন করাত কল চাথাম স মিল-এ চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করেন। ২০২২ খ্রিস্টাব্দ হতে তিনি ব্যাঙ্গালোরে বসবাস করছেন।[৫] আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের এই জনজাতির উপর ইংরাজীত-দ্য জারোয়াজ্ অফ দ্য আন্দামানস্ ও বাংলাতে - আন্দামানের আদিম জনজাতি জারোয়া গ্রন্থ রচনা করেছেন ডাক্তার কর।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "জারোয়াদের চিকিৎসায় দীর্ঘদিন জড়িয়ে, পদ্মশ্রী বাঙালি চিকিৎসক রতনচন্দ্র কর"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৩-১৫ 
  2. "Padma Awards 2023 announced"PIB। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০২৩ 
  3. "Ratan Chandra Kar, who was selected for the Padma Shri, said- 'I have no words to express my happiness'"। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০২৩ 
  4. "Doctor to the Jarawas on Padma list"https://www.ptinews.com/। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০২৩ 
  5. "West Bengal: Padma awardee Ratan Chandra Kar, feted for Jarawa measles care, hopes to inspire youth to work in remote areas" (ইংরাজী ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৩-১৫