মুহাম্মাদ বিন শিরকুহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মুহাম্মাদ বিন শিরকুহ
হিমসের আমির
রাজত্ব১১৭৯–১১৮৬
পূর্বসূরিকেউ নয়
উত্তরসূরিমুজাহিদ
জন্মঅজ্ঞাত
মৃত্যু৪ মার্চ ১১৮৬
দাম্পত্য সঙ্গীসিত্তুশ শাম (সালাহুদ্দিন আইয়ুবীর বোন)
ধর্মসুন্নি ইসলাম

নাসরুদ্দিন আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে আসাদুদ্দিন শিরকুহ (কখনও কখনও নাসরুদ্দিন ইবনে শিরকুহ এবং মালিকুল কাহির নামে পরিচিত)[১] ১১৭৯ থেকে ১১৮৬ সাল পর্যন্ত হিমসের কুর্দি আইয়ুবীয় আমির ছিলেন।

ক্ষমতা[সম্পাদনা]

জেনগি সুলতান নুরুদ্দিন জেনগি ১১৬৪ সালে হিমস অঞ্চলটি শিরকুহকে দিয়েছিলেন। পাঁচ বছর পর শিরকুহের মৃত্যুর হলে নুরুদ্দিন শহরটি ফিরিয়ে নেন। পরে ১১৭৫ সালে হর্নস অফ হামাতে তার বিজয়ের পর, সালাহুদ্দিন আইয়ুবি শিরকুহের পুত্র মুহাম্মাদ ইবনে শিরকুহকে হিমস অঞ্চল প্রদান করেন।[২] তিনি তাকে পালমিরা এবং আর-রাহবাও দিয়েছিলেন।[৩] সালাহুদ্দিন মুহাম্মাদ ইবনে শিরকুহ সম্পর্কে এতটাই বেশি ভাবতেন যে, ১১৮৫ (৫৮১) সালে তিনি তাকে উত্তর ইরাকের মসুলের প্রধান কৌশলগত অঞ্চলও দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। যাইহোক, জেনগিদের কাছ থেকে শহরটি দখল করার অভিযান সফল হয়নি। আর তাকে তার বাহিনী প্রত্যাহার করতে হয়েছিল, তাই মুহাম্মদ ইবনে শিরকুহ সেটি পাননি।[৪]

পরিবার[সম্পাদনা]

মুহাম্মাদ বিন শিরকুহ সালাহুদ্দিনের এক বোনকে বিয়ে করেছিলেন। যিনি পারিবারিকভাবে তার নিজের চাচাতো বোন ছিলেন। তার এই স্ত্রী সিত্তুশ শাম ('সিরিয়ার সেরা রমণী', অর্থাৎ তার দেওয়া নাম নয়) নামে পরিচিত ছিলেন। তার পুরো নাম ছিল সিত্তুশ শাম জুমুররুদ খাতুন বিনতে নাজমুদ্দিন আইয়ুব। যখন তিনি মুহাম্মদ ইবনে শিরকুহকে বিয়ে করেছিলেন তখন তিনি লাজিন নামক সালাহুদ্দিনের একজন সামরিক কমান্ডারের বিধবা ছিলেন, যার দ্বারা তার একটি পুত্র ছিল যার নাম ছিল হুসানুদ্দিন উমর বিন লাজিন।[৫] সিত্তুশ শাম তার দাতব্য কাজের ধারা এবং উদারতার জন্য বিখ্যাত ছিলেন।[৬] তিনি মুহাম্মাদের উত্তরাধিকারী মুজাহিদের মা ছিলেন কিনা তা স্পষ্ট নয়। তবে সাধারণত ধারণা করা হয় যে তিনি ছিলেন না।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

১১৮৫ সালে মসুল অবরোধ করার সময় সালাহুদ্দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সিরিয়ায় ফিরে যেতে বাধ্য হন। তিনি যখন তার উত্তরাধিকারের ব্যবস্থা করতে শুরু করেন, তখন মুহাম্মাদ বিন শিরকুহ তার অঞ্চল সম্প্রসারিত করার একটি সুযোগ দেখতে পান। তিনি দ্রুত হিমসে চলে যান এবং দামেস্কের কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে সালাহুদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় তাদের শহরটি তার কাছে সমর্পণের ব্যবস্থা করেন।[৭]

তার কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই মুহাম্মাদ ইবনে শিরকুহ ৪ মার্চ ১১৮৬ (১০ জিলহজ ৫৮১) হিমসে আকস্মিকভাবে মারা যান।[৫] [১] তার মৃত্যুর কারণ ছিল অতিরিক্ত মদ্যপান।[৮] তিনি হিমসে তার তের বছর বয়সী পুত্র মালিকুল মুজাহিদ আসাদুদ্দিন শিরকুহ দ্বিতীয়কে উত্তরসূরী হিসেবে রেখে যান।[২] দ্বিতীয়বার বিধবা হওয়ার পর তার স্ত্রী সিত্তুশ শাম ত্রিশ বছরেরও বেশি সময় বেঁচে ছিলেন এবং ১২২০ (৬১৬ হিজরি) সালে দামেস্কে মারা যান।[৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Ibn Khallikan’s Biographical Dictionary Vol 1, Cosimo Inc. 2010 p.627
  2. Runciman S. Hunyadi Z., Laszlovszky J., The Crusades and the Military Orders: Expanding the Frontier of Medieval Latin Christianity, CEU Medievalia, 2001,p.62
  3. Humphreys, R.S. From Saladin to the Mongols: The Ayyubids of Damascus 1193-1260, SUNY Press 1977 p.51
  4. Humphreys, R.S. From Saladin to the Mongols: The Ayyubids of Damascus 1193-1260, SUNY Press 1977 p.56
  5. Necipoğlu G. (ed.) Muqarnas: An Annual on Islamic Art and Architecture vol. XI E>J> Brill, Leiden 1994 p. 47
  6. Frenkel, Miriam & Lev, Yaacov (eds.) Charity and Giving in Monotheistic Religions Walter de Gruyter GmbH, Berlin 2009, p.246
  7. Humphreys, R.S. From Saladin to the Mongols: The Ayyubids of Damascus 1193-1260, SUNY Press 1977 p.57
  8. Humphreys, R.S. From Saladin to the Mongols: The Ayyubids of Damascus 1193-1260, SUNY Press 1977 p.58