মুসলেহ উদ্দিন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
গাজ্জালিয়ে জামান অধ্যক্ষ আল্লামা, মাওলানা
মুসলেহ উদ্দিন
মুসলেহ উদ্দিন
অধ্যক্ষ, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা
কাজের মেয়াদ
১৯৬৪-১৯৭৭
অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম ছোবহানিয়া কামিল মাদ্রাসা
কাজের মেয়াদ
১৯৭৭-২০০৮
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৯৩৮
জোয়ারা গ্রাম, চন্দনাইশ উপজেলা, চট্টগ্রাম জেলা
মৃত্যু২১ জানুয়ারি ২০১২
নাগরিকত্ববাংলাদেশি
জাতীয়তাবাংলাদেশি
যে জন্য পরিচিতঅধ্যক্ষ, ইসলামি ব্যক্তিত্ব
পুরস্কারচট্টগ্রাম জেলার শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ (২০০৩ ও ২০০৫)

আল্লামা মুসলেহ উদ্দিন বাংলাদেশি একজন আলেম, অধ্যক্ষ ও ইসলামি গবেষক ছিলেন।[১][২] তিনি জামাতে আহলে সুন্নত বাংলাদেশের মহাসচিব ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসাচট্টগ্রাম ছোবহানিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ছিলেন। মুসলেহ উদ্দিন ফতোয়া-ইসলামি আইন, রাজনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ছিলেন।[৩] এছাড়াও তিনি উর্দু, আরবি, ফার্সি ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষ ছিলেন। তার জ্ঞানের পরিসরের জন্য তিনি এই যুগের ইমাম গাজ্জালী নামে প্রসিদ্ধ লাভ করেছিলেন।[৪] তার কর্ম ও স্মৃতি নিয়ে আলোচনার জন্য চট্টগ্রামে অধ্যক্ষ আল্লামা মুসলেহ উদ্দিন (রহ.) ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে।[৫][৬]

জন্ম ও পরিচয়[সম্পাদনা]

মুসলেহ উদ্দিন ১৯৩৮ সালে চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলার জোয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

মুসলেহ উদ্দিন তার পিতা-মাতার নিকট থেকেই প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করে। এরপর ভর্তি হন হাশিমপুর মকবুলিয়া সিনিয়র মাদ্রাসায়, এই মাদ্রাসা থেকে ১৯৫৪ সালে দাখিল পাশ করেন। এরপর ১৯৫৬ সালে গারাংগিয়া আলিয়া মাদ্রাসা হতে আলিম পাশ করেন। এরপর চট্টগ্রাম শহরে এসে দারুল উলুম আলিয়া মাদ্রাসা চট্টগ্রামে ভর্তি হন। এই মাদ্রাসা থেকে ১৯৫৮ সালে ১৪তম স্থান নিয়ে ফাজিল ও ১৯৬০ সালে ৬ষ্ঠতম স্থান নিয়ে কামিল পাশ করেন।[৪]

তিনি মাদ্রাসা পড়া শেষ করে সাধারণ শিক্ষা গ্রহণ শুরু করেন। তিনি ১৯৬২ সালে চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৬৪ সালে চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ থেকে এইচ এস সি পাশ করেন। এরপর ভর্তি হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে, এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে ইতিহাস বিভাগে অনার্স সম্পন্ন করেন এবং ১৯৬৮ সালে আরবি বিভাগের মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন তিনি ১৯৬৪ থেকে শুরু করে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মূলত চট্টগ্রাম জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসাচট্টগ্রাম ছোবহানিয়া কামিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করে জীবন অতিবাহিত করেছেন। তিনি ১৯৭৭ থেকে শুরু করে ২০০৮ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম ছোবহানিয়া কামিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও ১৯৭৮-৭৯ সালে সল্পকালীন হিসাবে চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজে নৈশকালীন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তিনি তার অধ্যক্ষকালীন জীবনে ২০০৩ ও ২০০৫ সালে চট্টগ্রাম জেলার শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ নির্বাচিত হন।

লিখিত অবদান[সম্পাদনা]

মুসলেহ উদ্দিন একজন অধ্যক্ষ ও লেখক ছিলেন, তিনি পত্রিকায় কলাম ও বই লিখেছেন। উল্লেখযোগ্য বইসমূহ:

  • রাহমাতুল্লিল আলামিন
  • ইসতিজার আলাত্তা আত
  • কানযুল ঈমান নিরীক্ষক (এম. এ. মান্নানের অনুবাদ তাফসির)

মৃত্যু[সম্পাদনা]

মুসলেহ উদ্দিন ২০১২ সালের ২১ জানুয়ারি ইন্তেকাল করেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. প্রতিবেদক, নিজস্ব। "মানুষ গড়ার কারিগর ছিলেন অধ্যক্ষ আল্লামা মুসলেহ উদ্দিন"DailyInqilabOnline (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-২৬ 
  2. Azadi, Dainik (২০২২-০১-২১)। "অধ্যক্ষ আল্লামা মুসলেহ উদ্দিন স্মরণে"দৈনিক আজাদী (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-২৬ 
  3. ব্যুরো, চট্টগ্রাম। "অধ্যক্ষ মুসলেহ উদ্দিন রহ: ছিলেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেমে দ্বীন"Daily Nayadiganta। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-২৬ 
  4. মোহাম্মদ শাহজাহান, অধ্যাপক (২০২১-০১-২০)। "গজ্জালী-এ জমান অধ্যক্ষ আল্লামা মুসলেহ উদ্দিন (রহ.)"দৈনিক পূর্বদেশ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-২৪ 
  5. Das, Prianka (২০২২-০৪-২৬)। "আল্লামা মুসলেহ উদ্দিন ফাউন্ডেশনের সভা"দৈনিক পূর্বদেশ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-২৬ 
  6. Azadi, Dainik (২০২২-০৪-২৪)। "গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে আল্লামা মুসলেহ উদ্দিন (রহ.) ফাউন্ডেশনের সহায়তা"দৈনিক আজাদী (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-২৬